প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৪ বিস্তারিত জানুন

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৪ সম্পর্কে জানতে চান? প্রবাসী কল্যান ব্যাংক লোন সুদের হার কত জানেন কি? হয়তো বা জানেন না। তাহলে বলবো পুরো আর্টিকেলটি একবার পড়ে নিন।
প্রবাসী-কল্যাণ-ব্যাংক-লোন-নিয়ম-২০২৪-বিস্তারিত-জানুন
কারন,  আজকে আমাদের আর্টিকেল থেকে আপনি প্রবাসী কল্যান ব্যাংকের লোন নিয়ম এবং সুদের হার জানতে পারবেন। সাথে আরো জানতে পারবেন ঋণ পেতে আপনার কি কি ডকুমেন্টস প্রয়োজন  হবে। তাহ্লে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের মত আলোচনা শুরু করি।

পোস্ট সুচিপত্রঃ প্রবাসী কল্যাণ  ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৪ 

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক

 প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৪ জানার আগে এই ব্যাংক সম্পর্কে আপনার কিছু তথ্য জেনে নেওয়া জরুরী। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক একটি রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক যা প্রবাসীদের জন্য বিশেষায়িত একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ৩০ জুলাই ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে তফসিলি বিশেষায়িত ব্যাংক রূপে অধিভুক্ত করে।
 ২০১০ সালের ৫৫ নং আইন দ্বারা মহান জাতীয় সংসদে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়। ১০০ কোটি টাকা মূলধন নিয়ে 2010 সালে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক যাত্রা শুরু করে। মূলত প্রবাসীদের অথবা ফেরত আসা কর্মীদের সহজ শর্তে জামানত প্রদান করে থাকে এ ব্যাংকটি। এই ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য হল কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বিদেশ গমনে ইচ্ছুক বেকার যুবকদের আর্থিকভাবে সহায়তা করার। 
 
তবে প্রবাসীদের ছাড়াও দেশের বিভিন্ন শ্রেণীর নাগরিকদের এই ব্যাংক ঋণ সেবা দিয়ে থাকে। এই ব্যাংকের প্রধান উদ্দেশ্য হল কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বিদেশ গমনেত্র বেকার যুবকদের আর্থিকভাবে সহায়তা করা। সেইসাথে প্রবাসীদের দেশে প্রত্যাগমন এর পরে কর্মসংস্থানের জন্য আর্থিক সুবিধা প্রদান করা এবং আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুত এবং সহজ পন্থায় রেমিটেন্স প্রেরণে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সাহায্য করা। 
 
এই পর্যন্ত প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক ৫৩০০০৩১৬ জনকে 760 কোটি টাকা ঋণ প্রদান করেছে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সৌদি আরব সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাই্‌ ব্রুনাই, কাতার ইতালি এবং ইউরোপের জন্য নয় শতাংশ হারে দুই বছরের জন্য ঋণ প্রদান করে থাকে তবে সিঙ্গাপুরের ক্ষেত্রে এই ঋণ এক বছরের জন্য প্রযোজ্য। ২০২৪ সাল থেকে ব্যাঙ্ক অনলাইন কার্যক্রম শুরু করেছে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের লোনের প্রকারভেদ

 প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৪ আলোচনা করবো। কিন্ত আপনি কি জানেন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোনের কতকগুলো প্রকারভেদ রয়েছে। তাহলে চলুন প্রথমেই এই লোন কত প্রকার কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন-
অভিবাসন ঋণ বা মাইগ্রেশন ঋণঃ সাধারণত ভিসা পাওয়ার জন্য বিদেশ গমনের উদ্দেশ্যে আপনি যে ঋণ নেবেন সেটিকে অভিবাসন ঋণ বা মাইগ্রেশন ঋণ বলা হয়। অর্থাৎ আপনি ভিসা পাওয়ার পরে যদি টাকার কারণে বিদেশ যেতে না পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি এই অভিবাসন ঋণ নিতে পারবেন। প্রবাসীরা সর্বোচ্চ তিন বছর মেয়াদে এক থেকে তিন লক্ষ টাকার অভিবাসন ঋণ গ্রহণ করতে পারে।

পুনর্বাসন ঋণঃ পুনর্বাসন ঋণ হলো, আপনি বিদেশ যাওয়ার পরে যদি কোন কারণে দেশে ফিরে আসেন সেই ক্ষেত্রে আপনার এই বিদেশ যাওয়া এবং আসার মাঝে বেশ কিছু টাকা খরচ হয়ে যায় যার ফলে পরবর্তীতে দেশে ফিরে নিজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চান কিন্তু পর্যাপ্ত মূলধনের অভাবে করতে পারছেন না সে ক্ষেত্রে আপনি এই পুনর্বাসন ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি জামানত বিহীন সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা ঋণ নিতে পারবেন।
প্রবাসী-কল্যাণ-ব্যাংক-লোন-নিয়ম-২০২৪-বিস্তারিত-জানুন
আর জামানতের বিপরীতে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা পেতে পারেন। যার মেয়াদকাল সর্বোচ্চ ১০ বছর। যদি আপনি কৃষি প্রকল্পের জন্য পুনর্বাসন ঋণ নিতে চান তাহলে আপনি এই ধরনের ঋণ নিতে পারেন। যেমন, গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প, মাছ চাষ প্রকল্প, কৃষি ঋণ প্রকল্প, একটি বাড়ি খামার প্রকল্প, বায়ো গ্যাস প্লান্ট প্রকল্প, সৌর জ্বালানি খাত প্রকল্প, দুধ উৎপাদনকারী খামার প্রকল্প  এবং মাঝারি ধরনের কৃষি নির্ভর শিল্প ঋণ প্রকল্প।

বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণঃ বাংলাদেশী কোন নাগরিক বৈধভাবে চাকরির উদ্দেশ্যে বিদেশে অবস্থান করলে ওই ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল পরিবারের যে কোন সদস্য অথবা বিদেশ হতে প্রত্যাগমন করলে সেক্ষেত্রে ওই ব্যক্তির নির্ভরশীল পরিবারের যে কোন সদস্য যেমন মা বাবা ভাই, বোন, স্ত্রীকে ব্যাংক সহজ শর্তে জামানত বিহীন বা জামান ত সহ বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবারের ঋণ হিসেবে প্রদান করে থাকে। বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণ সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন, প্রকল্প ঋণ এবং চলতি পুঁজি বা নগদ ঋণ।

বিশেষ পুনর্বাসন ঋণঃ বিশেষ পুনর্বাসন ঋণ মূলত ২০২০ সালের করনা মহামারীর পর থেকে চালু করা হয়। বিশেষ করে করনাকালীন সময়ে যেসব প্রবাসী কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন এবং অনেকে দেশে ফিরে এসেছেন তাদের পরিবারকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করাই হল বিশেষ পুনর্বাস ঋণের প্রধান উদ্দেশ্য। নিতে পারবেন যার মেয়াদকাল তিন বছর। তবে গ্রুপ ঋণের ক্ষেত্রে প্রত্যেকে ৫ লক্ষ টাকা করে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন।
সম্মানিত পাঠক, জানিয়ে দিলাম প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোনের ধরন সম্পর্কে। আপনি আপনার সুবিধা মত উপরিউক্ত লোণগুলোর জন্য আবেদন করতে পারেন।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা ও প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন পেতে আপনার বেশ কিছু কাগজ পত্রের  দরকার পড়বে। এবার চলুন কোন লোনের জন্য আপনার কি কি লাগবে তা বিস্তারিত জেনে নিন-
 
অভিবাসন ঋণঃ অভিবাসনের ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে আপনার খুনের যোগ্যতা এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র লাগবে তা নিচে উল্লেখ করা হলো,

অভিবাসন বা মাইগ্রেশন লোন পাওয়ার যোগ্যতা
  • আপনাকে অবশ্যই ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী বাংলাদেশী নাগরিক হতে হবে।
  • অভিবাসন লোন গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রথম শর্ত হলো আপনাকে বিদেশে চাকরির জন্য ভিসা করতে হবে।
  • জামিনদার ব্যক্তিকে অবশ্যই আর্থিকভাবে সচ্ছল হতে হবে এবং লোন পরিশোধের সক্ষম হতে হবে।
  • চাকরিজীবী হলে কর্মরত প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়ন পত্র ও পরিচয় পত্রের স্পষ্ট ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
  • লোন গ্রহণের জন্য আবেদনকারী ব্যক্তির ভিসা যাচাইয়ের জন্য লাগবে পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি এবং তার ব্যবহারিত ফোন নম্বর।
  • অভিবাসন বা মাইগ্রেশন লোন পেতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস/কাগজপত্র
  • সর্বপ্রথম আপনাকে ব্যাংক কর্তৃক বিনামূল্যে সরবরাহকৃত ব্যাংকের ফর্মে একটি আবেদন দাখিল করতে হবে। ঋণ আবেদনকারীর চার কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে।
  • ব্যাংকের তিনটি চেকের পাতা জামিনদারের যেকোনো একজন কর্তৃক স্বাক্ষরিত হতে হবে।
  • ভিসা পাসপোর্ট ও বিএনটি কার্ডের ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
  • লোন গ্রহণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখায় একটি হিসাব খুলতে হবে।
  • সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সাতদিনের মধ্যে ঋণের বিষয়ে আপনাকে অবগত করা হবে।
পুনর্বাসন লোন পাওয়ার যোগ্যতা
  • এই ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বিদেশ ফেরত হতে হবে এবং দেশে ফেরত আসার পাঁচ বছরের মধ্যে বৈধ কাগজপত্রসহ আবেদন।
  • করতে ব্যাংকের নিয়ম মেনে একজন ঋণ গ্রহণকারী জামানতকৃত সম্পত্তির মালিকানা দলিল প্রদান করতে হবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
পুনর্বাসন ঋণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস/কাগজপত্র
  • আবেদনকারীর শব্দ তোলা ২ কপি পাসপোর্ট ছবি সহ জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
  • জামিনদারের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং ২ কপি পাসপোর্ট ছবি।
  • বিদেশ থেকে প্রত্যাগমন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট।
  • ঋণ গৃহীতার স্বাক্ষর সহ তার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তিনটি চেক পাতা।
  • পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন কর্তৃক প্রাপ্ত নাগরিক সনদপত্র।
  • এছাড়াও ব্যাংকের শর্তসাপেক্ষে অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করতে হবে।
  • বঙ্গবন্ধু অধিবাসী বৃহৎ পরিবার ঋণের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস/কাগজপত্র
  • আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এবং তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
  • দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি।
  • তিনটি চেকের পাতা স্বাক্ষর করে ব্যাংকে প্রদান করতে হবে।
  • ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি জমা দিতে হবে।
  • জামানতকারীর সকল সম্পত্তির দলিলের ফটোকপি প্রদান করতে হবে।
  • আপনি ব্যবসা পরিচালনার জন্য যে স্থান নির্বাচন করেছেন সেটি নিজের হলে দলিল জমা দিতে হবে এবং ভাড়ায় হলে লীজের চুক্তিপত্র ফটোকপি জমা দিতে হবে।
  • আবেদনকারীর নিজ এলাকার পৌরসভা বা ইউনিয়ন থেকে প্রাপ্ত সনদপত্র জমা দিতে হবে।
বিশেষ পুনর্বাসন লোন পাওয়ার যোগ্যতা
  • কেবলমাত্র করোনাকালীন সময়ে অর্থাৎ ২০২০ সালের পয়লা জানুয়ারির পর থেকে যেসব অভিবাসী দেশে ফিরে এসেছেন তাদের জন্য এই ঋণ প্রযোজ্য হবে।
  • বিশেষ পুনর্বাসন ঋণের জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট/কাগজপত্র
  • আবেদনকারীর পাসপোর্ট বহির্গমন ও আগমনের ফিলযুক্ত থাকবে।
  • আবেদনকারী যদি অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে লোন গ্রহণ করে থাকেন তবে সেটার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদান করতে হবে।
  • আবেদনকারী এবং জামিনদারের যথাক্রমে তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রদান করতে হবে।
  • আবেদনকারী ও জামিনদারের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা এবং পৌরসভা বা ইউনিয়ন থেকে প্রাপ্ত সনদপত্র দিতে হবে।
  • ঋণ গৃহীতার স্বাক্ষরিত তিনটি চেক পাতা প্রদান করতে হবে।
  • ট্রেড লাইসেন্স এর কপি প্রদান করতে হবে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোনের সুবিধা

২০২৪ সালে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার নিয়ম আমরা ইতিমধ্যেই আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি। আপনি কি জানেন প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোনের বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। এবার আপনাকে জানাবো প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোনের সুবিধা সম্পর্কে-
  • আপনি প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে কোন প্রকার আর্থিক সংকটে পড়লে সেই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য ব্যাংক আপনাকে প্রয়োজনীয় ঋণ প্রদান করবে।
  • আপনি চাকুরী বা অন্য কোন কাজের জন্য বিদেশ ভ্রমণকালে এই ব্যাংক আপনাকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে।
  • জামানত সহ ও জামানতবিহীন লোন আপনি খুব সহজেই পাবেন এই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে।আপনি সর্বনিম্ন তিন লক্ষ টাকা এবং সর্বোচ্চ পঞ্চাশ লক্ষ টাকার ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
  • অনেক সময় প্রবাসীরা বিভিন্ন সমস্যার কারণে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে নিজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক আপনাকে ঋণ প্রদান করে সাহায্য করবে।
  • এই ব্যাংকের ডকুমেন্ট ফি সার্ভিস চার্জ অন্যান্য ব্যাংকে থেকে তুলনামূলক কম।
  • এই ব্যাংকের সুদের পরিমাণ কম অর্থাৎ চার থেকে শুরু করে নয় শতাংশ পর্যন্ত।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন সুদের হার

  • অভিবাসন বা মাইগ্রেশন লোনঃ অভিবাসন লোনের ক্ষেত্রে নয় শতাংশ হারে সুদ প্রদান করা হয়। এক্ষেত্রে লোনের সময়সীমা দুই বছর এবং লোনের পরিমাণ ১ থেকে 3 লক্ষ টাকা হয়ে থাকে।
  • পুনর্বাসন লোনঃ পুনর্বাসন লোনের ক্ষেত্রে ১০ বছর ৯ শতাংশ হারে সুদ প্রদান করা হয় এবং লোনের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা।
  • বঙ্গবন্ধু অভিবাসী বৃহৎ পরিবার লোনঃ ক্ষেত্রে ব্যাংক নয় শতাংশ হারে সুদ প্রদান করে সম্ভবত ১০ বছরে এবং লোনের পরিমাণ সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা হয়ে থাকে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার নিয়ম

  • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন গ্রহণের জন্য আপনি প্রথমে ব্যাংকের সকল শর্ত মেনে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো নিয়ে আপনার নিকটস্থ প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক শাখায় যোগাযোগ করবেন। অথবা আপনি অনলাইনের মাধ্যমে লোন এপ্লিকেশন ফর্ম ডাউনলোড করে সেটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় সঠিকভাবে পূরণ করে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক শাখাই জমা দিন।
  • লোন নেওয়ার জন্য পরবর্তী ধাপগুলো আপনার এ ব্যাংকের নিকটস্থ শাখায় একটি সেভিং একাউন্ট খুলতে হবে। কারণ ব্যাংক লোন সরাসরি নগদে না দিয়ে একাউন্টে জমা দেয় এবং পরবর্তীতে সে একাউন্ট থেকে আপনি টাকা উত্তোলন করতে পারবেন।
  • সঠিক এবং নির্ভুলভাবে আবেদন ফরম পূরণ করে তাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করে ব্যাংকের একজন দায়িত্ব রত কর্মকর্তার নিকট জমা দিন।
  • সঠিকভাবে পূরণকৃত আবেদন ফরম এবং সকল প্রয়োজনও ডকুমেন্ট জমা দেওয়ার পর লোনের অনুমতিনের জন্য আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে তিন দিনের মধ্যে আপনি লোনের অনুমোদন পাবেন। তবে কাগজপত্রে কোন ভুল ত্রুটি থাকলে লোন পেতে সর্বোচ্চ সাত দিনও লাগতে পারে।
  • সর্বশেষ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা এবং ম্যানেজার আপনার আবেদন যাচাই-বাছাই করবে তা ঠিক আছে কিনা, সকল তথ্য আপনি যা ফর্মে উল্লেখ করেছেন সেগুলো ঠিক আছে কিনা। সবকিছু সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনাকে লোন প্রদানের যোগ্য বলে গণ্য করবে অন্যথায় আপনার আবেদনটি না মঞ্জুর করে দিবে।
  • আপনার লোন অনুমোদিত হয়ে গেলে আপনার মোবাইল ফোনে একটি খুদে বার্তার মাধ্যমে আপনাকে অবগত করা।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোনের অসুবিধা

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোনের বেশ কিছু অসুবিধা রয়েছে। হয়তো অনেকেই জানেন। তো চলুন এবারে এই লোন অসুবিধা কি কি হতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নিন-
  • সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করতে না পারলে জরিমানা প্রযোজ্য হবে।
  • অনেক সময় ঋণের উপর বিভিন্ন ফি আরোপ করা হয়ে থাকে।
  • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণের শর্তাবলী অনেক সময় জটিল হয়। বিশেষ করে কিছু ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহিতাকে বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্টস এবং প্রমাণপত্র সরবরাহ করতে হয় যা বেশ সময় সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে।
  • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে একজন ঋণ গ্রহীতা যে লোন পায় তা খুবই সীমিত হয়ে থাকে। ফলে বড় প্রকল্প ব্যবসা শুরু করতে চাইলে আপনার জন্য এই ঋণ পর্যাপ্ত নাও হতে পারে।
  • অনেক সময় এই ঋণের সুধার অন্যান্য ঋণের তুলনায় তুলনামূলকভাবে বেশি হয়। 
  • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ঋণ শুধুমাত্র প্রবাসী কর্মীদের জন্যই প্রযোজ্য। অর্থাৎ যারা বিদেশে কাজ করছেন তারা ছাড়া অন্য কেউ এই ঋণ পাবেন না। ফলে অনেকেই এই ঋণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন।
  • কখনো কখনো ঋণ পেতে আপনার দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে। কারণ ঋণের আবেদন থেকে  ঋণ পাওয়া পর্যন্ত ধাপে ধাপে কিছুটা সময় লাগে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৪ সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম ২০২৪ আজকের  আর্টিকেলে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি।সম্মানিত পাঠক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার সব থেকে বড় সুবিধা হল আপনি প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে কাজ করেও ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। এছাড়াও বিদেশ থেকে ফেরত আশা বেকার প্রবাসীরা এই ব্যাংকের সহায়তা নিয়ে কৃষি কুটির শিল্প ব্যবসা ইত্যাদি ক্ষেত্রে নিজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবেন।
 
 যেহেতু এই ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের ঋণ প্রদান করে থাকে তাই ঋণের নিয়ম অনুযায়ী ঋণের ধরনও ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। তবে আর্থিক সহায়তার জন্য বিশেষ করে বিদেশগামি এবং প্রবাসী ভাইদের জন্য এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কিভাবে লোন নেবেন লোন গ্রহণের জন্য যে সকল তথ্য আপনার জানা প্রয়োজন তা আমরা যথাসাধ্য উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url