শুশনি শাকের ১৫টি কার্যকরী অপকারিতা ও উপকারিতা
শুশনি শাকের অপকারিতা আমরা অনেকেই জানিনা। শুশনি শাক কিভাবে খায় জানেন কি? যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেল পড়ে তা জেনে নিন।
আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেলে আলোচনা করব শুশনি শাকের কিছু অপকারী দিক এবং আপনি এই শাক কিভাবে খাবেন সে সম্পর্কে। সাথে আরো আলোচনা করব পুষ্টিগুণে ভরপুর এই শুশনি শাকের উপকারিতা সম্পর্কে।
পোস্ট সূচিপত্রঃ শুশনি শাকের অপকারিতা ও উপকারিতা
শুশনি শাক
শুশনি শাকের অপকারিতা আমাদের অনেকেরই অজানা। আমাদের গ্রাম বাংলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানান প্রজাতির সব শাকসবজি ও ভেষজ উদ্ভিদ যা প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর। শুশনি শাক তেমনি একটি শাক। আমরা অনেকেই শুশনি শাক চিনে থাকলেও এর গুনাগুন সম্পর্কে আমাদের তেমন একটা জানা শোনা নেই। আবার অনেকেই আছেন যারা এই শুশুনি শাকের সাথে একেবারেই পরিচিত নন।
শুশনি শাকের গাছ খানিকটা ক্ষুদ্রাকৃতির হওয়ায় অনেকে আবার আগাছা ভেবেও বসে থাকেন। তবে গ্রামবাংলায় শুশনি শাকের বেশ পরিচিতি রয়েছে। সাধারণত মাটি থেকে দুই ইঞ্চি পরিমাণ লম্বা হয় এই শুশনি শাকের গাছ। শুশনি শাক লতানো উদ্ভিদ এবং মাটিতে ছড়িয়ে পড়ে। শুশনি শাকের আগায় থাকে মোট চারটি গোলাকৃতির পাতা এবং পাতা চারটি পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে। প্রত্যেকটি পাতার মাঝে একটি খাঁজ কাটা থাকে।
শুশনি শাকের পাতা গাড় সবুজ বেশ নরম প্রকৃতির এবং পাতলা হয়ে থাকে। এই শাকের বৃন্ত ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়। শুশনি শাক খেতে সামান্য মিষ্টি স্বাদ যুক্ত। আয়ুর্বেদিক মতে ডায়াবেটিস কোষ্ঠকাঠিন্য সহ বিভিন্ন রোগের মহৌষধ হলো এই শুশনি শাক। স্থানভেদে শুশনি শাক নানান নামে পরিচিত। যেমন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার গ্রামগুলোতে সুশনি শাক আবুল ঘাস নামে পরিচিত।
স্থানীয় আদিবাসীরা একে বলে শুশনি শাক আবার বসাক অধিবাসীরা একে শুনশুনি শাক বলে থাকে।রাজশাহী জেলার পবা উপজেলাধীন বড়গাছি নামক স্থানে এই শাক শুশনি নামে বহুল পরিচিত। আবার মৌলভীবাজারের চা বাগানের সাঁওতালদের কাছে শুশনি শাক শুনশুনিয়া নামে পরিচিতি লাভ করেছে।অনেকে আবার এই শাককে চৌপতিয়া বা চতুম্পত্রীও বলে থাকেন।
শুশনি শাকের পাতা গাড় সবুজ হওয়ায় সৌন্দর্য বর্ধক হিসেবে অনেকেই বাড়ির আঙ্গিনায় বা আনাচে-কানাচে ব্যবহার করে থাকেন। আমাদের দেশের গ্রামের মানুষদের বিশেষ করে যাদের আর্থিক সঙ্গতি ততটা ভালো নয় তারা তাদের ক্ষুধা নিবারণে এই শাক খেয়ে থাকেন।এতে করে তাদের ক্ষুধা নিবারণের পাশাপাশি শরীরে পুষ্টির চাহিদাও দূর হয়।
শুশুনি শাকের বৈজ্ঞানিক নাম
শুশনি শাকের বৈজ্ঞানিক নাম হল Marsilea Minuta.এই গন প্রজাতির সংখ্যা রয়েছে ৮০ টি যার বেশিরভাগই বিরুৎ জাতীয়। শুশনি শাক মারসি পরিবারের জলজ জাতীয় একটি উদ্ভিদ। এর পাতার রং গাড়ো সবুজ ও সরু ডাল বিশিষ্ট হয়। একটি ডালে একটি পাতা হয় এবং ধোকা থোকা জন্মে থাকে। একেক দেশে এই শাক একেক নামে পরিচিত। যেমন
- ভারত- sushni নামে পরিচিত
- তামিল- aalaik keerai নামে পরিচিত এবং
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র- Four leaf clovers,European Waterclover নামে পরিচিত।
শুশনি শাকের বিস্তার
শুশনি শাকের উপকারিতা জানলেও এর অপকারিতা অনেকেই জানেন না। উদ্ভিদ দক্ষিণ ইউরোপ, পশ্চিম সাইবেরিয়া আফগানিস্তান, দক্ষিণ-পশ্চিম ভারত, জাপান এবং ভিয়েত নামে সচরাচর পাওয়া যায়। আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঞ্চলে একটি আগাছা হিসেবে বিবেচিত হয়। আমাদের দেশে সুশনি সাধারণত স্যাঁতশেতে ভূমি জলাশয়ের ধারে,
ধান ক্ষেতে, পরিত্যক্ত জমি বা পুকুরের কিনারায় জন্মে থাকে। এর শিকড় লতার গাট থেকে বের হয়ে মাটিতে আষ্টেপৃষ্ঠে আঁকড়ে ধরে বিস্তার লাভ করে। ভারত এবং বাংলাদেশ শুশনি শাকের মূল আবাসস্থল। নানা রকম ভেষজ চিকিৎসায় এবং স্বাদ হিসেবে বাংলাদেশ এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে।
শুশনি শাকের চাষ পদ্ধতি
শুশনি শাকের উপকারিতার থেকে অপকারিতা একেবারেই নগণ্য। অন্যান্য শাকের মতো শুশনি শাকের বিশেষ কোনো চাষের প্রয়োজন পড়ে না কারণ রেনুর মাধ্যমে বা অঙ্গজ পদ্ধতিতে এরা বংশবিস্তার করে। এই এই শাকের শিকড় সহ গিট যেকোন খেতে জায়গায় রোপন করলেই খুব সহজেই বংশ বিস্তার ঘটে।
এই শাকের গাড় ও বাদামি বর্ণের স্পোরোকার উৎপন্ন হয় যার মধ্যে রেণু থাকে। আমাদের দেশে সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে এবং বর্ষাকালে বাড়ির আনাচে-কানাচে জলাধারের কিনারায় শুশনি শাক প্রচুর পরিমাণে জন্মে থাকে। তবে গ্রামাঞ্চলে ইরি মৌসুম শুরু হওয়ার সাথে সাথে এই শাক জমিতে কম দেখা গেলেও বাড়ির আশেপাশের দেখা যায়।
শুশনি শাকের পুষ্টিগুণ
শুশনি শাকের অপকারিতা ও উপকারিতা অনেক। প্রকৃতিতে অনাদরে অবহেলায় জন্মে থাকা এই শুশনি শাক পুষ্টিগুণে ভরপুর যা মানব দেহের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এর পুষ্টি উপাদান গুলোর মধ্যে রয়েছে -
- ভিটামিন বি
- ভিটামিন বি১
- ভিটামিন বি ১২
- ভিটামিন এ
- ভিটামিন সি
- তাপ শক্তি (19 কিলো ক্যালরি)
- ক্যালসিয়াম
- ফসফরাস
- কপার
- জিংক এবং
- আইরন
শুশনি শাক কিভাবে খায়
শুশনি শাক কিভাবে খেতে হয় অনেকেই জানেন না। তাহলে জেনে রাখুন, শুশনি শাক প্রথমে বেছে নিয়ে কুচি কুচি করে কেটে জলে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর অন্যান্য শাকের মতোই তেল, মরিচ, পেঁয়াজ, রসুন, লবণ, হলুদ দিয়ে ভেজে খাওয়া হয়। তবে এলাকা ভেদে এই শাকের রান্না এবং ব্যবহারে ভিন্নতা রয়েছে। যেমন, ময়মনসিংহের গারো ও কোচ উপজাতিরা ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে এই শাকের পাতার
রস
ব্যবহার করে থাকেন কাশি এবং শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত রোগের হিসেবে মহৌষধ
হিসেবে। কেউ কেউ আবার এই শাক চিনির মিছরি দিয়ে বেটে খান উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে। আকারে ছোট হওয়ার কারণে একসাথে অনেকগুলো শাক সংগ্রহ করাটাও বেশ কষ্টসাধ্য ব্যাপার। তাই অনেকে বতুয়া শাক, ডাটা শাক, নুনিয়া শাক, মেছতা শাক প্রভৃতি স্বাদ একসাথে মিশে ভাজি করে খান। এতে শাকে আয়রনের পরিমাণ অটুট থাকে।
শুশনি শাকের ঔষধি ব্যবহার
শুশনি শাকের অপকারিতা জানার আগে এর কিছু ঔষধি গুন জেনে রাখুন। যুগ যুগ ধরে শুশনি শাক উপকারী শাক হিসেবে পরিচিত হয়ে আসছে। এই শাকের অনেক ঔষধি ব্যবহার রয়েছে যা আমাদের অনেকেরই অজানা। তাহলে চলুন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্র মতে শুশনি শাকের ঔষধি ব্যবহার গুলো জেনে নেই
- প্রথমেই বলি শুশনি শাকে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য আঁশ যা আপনার শরীরের বাড়তি মেদ ঝরিয়ে আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
- আমাদের শরীরে কোলেস্টেরনের মাত্রা বেড়ে গেলে নানা রকম রোগের বিস্তার ঘটে। কিন্তু আপনি যদি নিয়মিত শুশনি শাক খান তাহলে আপনার শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে এবং বিভিন্ন রকম রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা ও কমে যাবে।
- আপনি যদি ডায়াবেটিসে ভুগে থাকেন তাহলে সুশনি শাক খেতে পারেন,কেননা শুশনি শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ আন্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার ব্লাড সুগারকে কমিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। আবার শুশনি শাক খেলে এটি ৭২ ঘণ্টায় ব্লাড সুগার লেভেল ৭ থেকে ৭০ শতাংশ কমাতে পারে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে শুশনি শাক বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- শুশনি শাকের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার ত্বকের নিচে জমে থাকা ফ্রি রেডিক্যালস গুলো কমাতে সাহায্য করে এতে করে আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে।
- একটু বয়স হলেই আমাদের কম বেশি সকলেরই হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা শুরু হয়ে যায়। আবার অনেকের দাঁতের গোড়া দুর্বল হয়ে যায়। আপনি যদি আপনার শরীরের দাঁত ও হাড়কে মজবুত শক্তিশালী করতে চান তাহলে সুশনি শাক খান নিয়ম করে। কারণ শুশনি শাকই রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যা আপনার দাঁত ও হাড়ে শক্তি যোগাবে। বিশেষ করে হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধিতে শুশনি শাক বেশি কার্যকরী
- দীর্ঘদিন যাবৎ যারা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন সুশনি শাক তাদের জন্য একটি উপদেয় ঔষধ। এটি নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
- যাদের বদহজম এবং এসিডিটির সমস্যা রয়েছে তারা শুশনি শাক খেলে ভালো ফল পাবেন। শুশনি শাক আপনার শরীরের মেটাবলিজম ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।ফলে আপনার পেট পরিষ্কার থাকে এবং বদহজম ও এসিডিটির ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
- এই শাক যকৃতের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে এবং জন্ডিস নিরাময়ে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
- আপনি শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় যদি ভুগে থাকেন তাহলে পরিমিত মাত্রায় শুশনি শাকের রস গরম করে পান করুন। এতে আপনার শ্বাসকষ্ট দূর হবে এবং ভালো ঘুমও হবে।
- আপনি যদি কাঁচা শুশনি শাক পেটে পানি ও চিনি মিশিয়ে খান তাহলে আপনার শরীরের রক্তচাপ আপনার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
- শরীর জ্বালাপোড়া করলে শুশনি শাকের রস সারা গায়ে মেখে স্নান করলে শরীরের জ্বালাপোড়া দূরীভূত হয়।
- আবার অনেক পুরনো কুষ্ঠ রোগ, মেহ এবং জ্বর সারাতে শুশনি শাক বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে।
শুশুনি শাকের উপকারিতা
শুশনি শাকের অপকারিতা নেই বললেই চলে। কারন এই শাকের উপকারিতাই বেশি। এতক্ষন আমরা জানলাম শুশুনি শাকের ঔষধি ব্যবহার সম্পর্কে এবার চলুন জেনে নেয়া যাক শুশনি শাক খেলে কি কি উপকার হয়-
- অনেক সময় দৈনন্দিন জীবনের নানান দুশ্চিন্তায় আমাদের ঘুম হতে চায় না। আমরা নিদ্রাহীনতায় ভুগি। আবার স্বাভাবিকভাবে অনেকের চোখে ঘুম কম হয়। চোখে ঘুমের ভাব আসলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুম হয় না ফলে শারীরিক দুর্বলতা দেখা দেয়। যাদের ঘুম কম হয় এবং নিদ্রাহীনতায় ভোগেন তাদের জন্য শুশনি শাক একটি মহা ঔষধ।
- ঘুমের এই সমস্যা দূর করতে আপনি যদি কাঁচা শুশনি শাক ১৫ গ্রাম পরিমাণ বেটে খান অথবা ৩ থেকে ৪ গ্রাম শুকনো শুশনি শাকের গুঁড়ো তিন থেকে চার কাপ পরিমাণ জলে সিদ্ধ করে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে রোজ সন্ধ্যা বেলায় খান তাহলে আপনার অনিদ্রা ভাব অনেকটাই চলে যাবে এবং ভালো ঘুম হবে।
- বিভিন্ন রকম বিষাক্ত কীট পতঙ্গ যেমন মৌমাছি, ভিমরুল এরা কামড় দিলে বা হুল ফুটিয়ে দিলে প্রচন্ড জ্বালাপোড়া করে এবং যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে ওই ক্ষতস্থানে যদি শুশনি শাকের পাতার রস দেওয়া হয় তাহলে জ্বালা যন্ত্রণা অনেকটাই লাঘব হয়।
- শুশনি শাকের মধ্যে বিদ্যমান ফাইবার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
- আপনার প্রসাবে জ্বালাপোড়া এবং তার সাথে কিছু ক্ষরণ হলে আপনি শুশনি শাকের রস খান। এতে ভালো উপকার পাবেন।
- স্মৃতিশক্তি বর্ধক রূপে কাজ করে এই শুশনি শাক। একটু বয়স হয়ে গেলেই আমরা অনেক সময় অনেক পুরনো কথা স্মরণ করতে পারি না কারণ আমাদের স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়ে যায়। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য আধা কাপ দুধে পরিমাণ মতো চিনি ও ১ গ্রাম শুকনো শুশনি শাকের গুঁড়ো মিশিয়ে যদি আপনি তিন থেকে চার মাস নিয়মিত খেতে পারেন তাহলে আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে শুশনি শাক টনিক এর মত কাজ করে
- হাঁপানি শ্বাসকষ্ট এবং এলার্জিজনিত যে কোন সমস্যায় এটি বেশ কার্যকরী। আপনি শুশনি শাকের রস ৪-৫ চা চামচ পরিমাণ কুসুম গরম করে খেলে আপনার শ্বাসকষ্ট দূর হবে।
- শুশনি শাকে প্রচুর পরিমাণ নিউট্রিয়েন্ট থাকায় তা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দ্বিগুণ পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
- শুশুনি সাত চুলপড়া রোধ করতে সাহায্য করে। শুশনি শাক খেলে চুলের কোয়ালিটি ও স্ট্রাকচার বেশ উন্নত মজবুত এবং শক্তিশালী হয়।
- আবার বয়স জনিত কারণে ত্বকের সমস্যায় ভীষণ উপকারী এই শুশনি শাক।
- নিয়মিত নিয়ম করে এই শাক খেলে মাথাব্যথা মাথা ঘোরা এবং মাথার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ।
- তাছাড়া স্কিন ক্যান্সার বলুন, আর অ্যাজমা বলুন না কেন প্রভৃতি প্রতিরোধে সুশনি শাকের ভূমিকা অনবদ্য। এছাড়াও সোরিয়াসিস প্রতিরোধেও সক্ষম এই শুশুনি শাক।
- সন্তান জন্ম দানের পর শুশনি শাক খেলে মায়ের দুগ্ধ ক্ষরণ বেড়ে যায় ।
- শুশনি শাকের পাতার রস ডায়রিয়া নিরাময়ে বেশ কার্যকরী।
- আপনি যদি নিয়মিত নিয়ম করে এই শাক খান তাহলে আপনার বাতের সমস্যা,পায়ের পেশির অনিয়ন্ত্রিত সংকোচন প্রভৃতি দূর হবে।
- আদাসহ শুশনি শাকের রস খেলে শ্বাসনালীর প্রদাহ কমে যায়।
- নিয়মিত এই শাক খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
- যাদের মুখে সব সময় অরুচি ভাব লেগে থাকে খেতে পারেন না তারা এই শাক খেলে উপকার পাবেন এবং অচিরেই মুখের অরুচি দূর হবে।
- অগ্নিমান্দ্য, অরুচি, পিপাসা থাকলে এই শাকের রস অথবা শাক বেটে শরবত করে খেলে ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে ভালো ফল পাওয়া যায়।
- চোখের রোগ নিরাময়ে এর পাতার রস বেশ কার্যকর।
- সাপের কামড়ে এই শাকের পাতার রস ব্যবহৃত হয়ে আসছে সেই প্রাচীন কাল থেকে।
শুশনি শাকের অপকারিতা
শুশনি শাকের উপকারিতার পাশাপাশি এই শাকের কিছু অপকারিতাও রয়েছে। এবার চলুন শুশনি শাকের অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন-
- যদিও শুশনি শাকের উপকারী দিকটাই বেশি তবু এর কিছু অপকারিতাও রয়েছে।অপকারিতা গুলো কি কি চলুন জেনে নেয়া যাক
- মাত্রাতিরিক্ত এই শাক খাওয়ার ফলে আপনার অতিরিক্ত ঘুম হতে পারে।
- অনেক সময় অতিরিক্ত মাত্রায় শুশনি শাক খেলে পাতলা পায়খানা হতে পারে।
- শুশনি শাকের গাছে স্পোর তৈরি হয়। এই স্পোর গুলি আপনার এলার্জির কারণ হতে পারে।
সাবধানতা
শুশনি শাকের নানাবিধ অপকারিতা এড়াতে আপনাকে এই শাক খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে।যেমন-
- শুশনি শাক খুব নরম প্রকৃতির ফলে শাক তোলার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।
- গাছে স্পোর তৈরি হলে এই শাকের যে মিষ্টি যুক্ত স্বাদ সেটি নষ্ট হয়ে যায়। ফলে খেতে খুব একটা ভালো লাগে না।
- এই শাক তোলার পর বেশি সময় রাখা যায় না। কারণ পাতা নরম বলে কিছু সময়ের মধ্যেই চুপসে যায় তাই শাক তোলা মাত্রই রান্না করে ফেলবেন।
- এই স্বাদ জলাধারের পাশে এবং স্যাতস্যাতে জায়গায় বেশি জন্মে থাকে বিধায় রান্নার পূর্বে খুব ভালোভাবে ধুয়ে তবেই রান্না করবেন।
- অনেকে আবার আমরুল শাকের সাথে শুশনি শাক মিলিয়ে ফেলেন। আমরুল ও শুশনি শাক দেখতে অনেকটা একরকম হলেও কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। যেমন শুশনি শাক চার পাতা বিশিষ্ট কিন্তু আমরুল শাক হৃদয়াকৃতির তিন পাতা বিশিষ্ট এবং আমরুলের থেকে শুশনি শাকের পাতাগুলো বেশ বড় হয়। সুশনি শাক এবং আমরুল শাকের মধ্যে স্বাদ এবং গন্ধেও তফাৎ রয়েছে। শুশনি শাক সামান্য মিষ্টি স্বাদযুক্ত এবং আমরুল শাক সামান্য টক স্বাদযুক্ত।
শেষ কথা
শুশনি শাকের অপকারিতা আপনি নিশ্চয়ই আজকের আর্টিকেল থেকে জানতে পেরেছেন। শুশনি শাকে শরীরের সপ্ত ধাতুর পুষ্টি গুণ থাকায় আয়ুর্বেদিক ভাষায় একে রসায়ন বলা হয়ে থাকে। নিয়মিত শুশনি শাক খেলে আপনি হাজারো স্বাস্থ্যগুণ ও এর উপকারিতা লাভ করবেন। তাই আজ থেকে আপনার খাদ্য তালিকায় যোগ করে নিন এই শুশনি শাক যা মানব দেহের নানা রোগ নিরাময়ে কার্যকরী।
সম্মানিত পাঠক, আশা করছি আমাদের আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি শুশনি শাকের উপকারিতা অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন এবং পরবর্তী আর্টিকেল পেতে চোখ রাখুন আমাদের পিন পয়েন্ট মাক্স ওয়েবসাইটে। আর্টিকেলটি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url