ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি পাওয়ার উপায় ২০২৪
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি সম্পর্কে আপনি জানতে চান ? ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন কত টাকা দেয় সে বিষয়ে জানতে আপনি অনেক খোঁজাখুঁজি করছেন কিন্তু সঠিক তথ্য খুঁজে পেতে ব্যর্থ হচ্ছেন। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন।
কারন, আপনি আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক এর প্রবাসী লোন পদ্ধতি জানার পাশাপাশি এই ব্যাংক কত টাকা লোণ দেয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। সাথে আরো জানবেন প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি
- ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করার নিয়ম
- ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
- ইসলামী ব্যাংক থেকে যারা প্রবাসী লোন পাবেন
- ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন কত টাকা দেয়
- যে কারণে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করে
- কোন খাতে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করে
- ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর সময়সীমা
- ইসলামী ব্যাংকের লোন এবং প্রচলিত ব্যাংকের লোনের পার্থক্য
- ইসলামী ব্যাংকের লোনের ইন্টারেস্ট রেট
- ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের উদ্দেশ্য
- ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতির সুবিধা
- ইসলামী ব্যাংকের লোন পদ্ধতি এবং সতর্কতা
- ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি সম্পর্কে আমার মন্তব্য
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করার নিয়ম
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি সম্পর্কে সম্মুখ ধারণা না থাকায় আমরা অনেকেই জানিনা এই লোনের জন্য কিভাবে আবেদন করতে হয়। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের সেরা ব্যাংকগুলোর মধ্যে একটি। আপনি চাইলে ইসলামী ব্যাংক থেকে দেশে লেনদেন করার পাশাপাশি প্রবাসী লোন নিতে পারবেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য আপনি কিভাবে আবেদন করবেন-
- প্রথমেই বলি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পাওয়ার জন্য আপনাকে সরাসরি ইসলামী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় যেয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদনের জন্য যা যা প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস ,কাগজপত্র এবং যে যোগ্যতা গুলো প্রয়োজন হবে সেগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে মিলিয়ে তারপর যাবেন
- আপনি যদি নিজের নামে লোন নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনার ভোটার আইডি কার্ড কিংবা জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হবে এবং আপনি যার নামে লোন তোলার জন্য ফর্ম পূরণ করবেন তারও ভোটার আইডি কার্ড থাকতে হবে।
- অতঃপর ব্যাংকে উপস্থিত হয়ে সেখান থেকে লোনের জন্য আপনি একটি আবেদন ফরম সংগ্রহ করবেন এবং ফর্ম সংগ্রহের পর সঠিক তথ্য দিয়ে ফর্মটি পূরণ করবেন।
- ফরম পূরণ করার পরে আপনি আপনার সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন ভিসার ফটোকপি, পাসপোর্ট এর ফটোকপি,ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি এবং অন্যান্য সকল ডকুমেন্টস ফর্মের সাথে সংযুক্ত করে ব্যাংকে কর্মরত কোন ব্যক্তির কাছে জমা দিবেন।
- মনে রাখবেন লোন প্রত্যাশার আবেদন পত্রের সঙ্গে আপনি অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট এর ফটোকপি এবং ভিসার ফটোকপি সংযুক্ত করতে ভুলবেন না। প্রয়োজনে আপনার যদি আরো জানার দরকার পড়ে তাহলে আপনি এই নাম্বারে ফোন করে জেনে নিতে পারেন ০৯৬১১০১৬২৫৯।
- আপনি ইসলামী ব্যাংকের যেকোনো শাখায় যাওয়ার আগে মনে করে অবশ্যই আপনার ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, আপনার পাসপোর্ট এর ফটোকপি এবং ভিসার ফটোকপি নিয়ে যেতে অবশ্যই ভুলবেন না। আর সেই সাথে আপনি যাকে নমিনি করবেন সেই নমিনির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং তথ্যগুলো অবশ্যই সংগ্রহ করে তবেই ব্যাংকে যাবেন।
- ব্যাস, আপনার কাজ এতোটুকুই। আপনি ফরম ফিলাপ করে সকল কাগজপত্র ব্যাংকে জমা দেওয়ার পর আপনার দেওয়া তথ্য গুলো ইসলামী ব্যাংক যাচাই-বাছাই করবে । আপনি যদি সঠিক তথ্য দিয়ে থাকেন এবং লোন পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হন তাহলে আপনাকে ইসলামী ব্যাংক লোন প্রদান করবে।
- এক্ষেত্রে আপনাকে বলে রাখি,ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করার সময় অবশ্যই আপনার সকল কাগজপত্র গুলো ভ্যালিড কিনা সেটা আপনি নিশ্চিত করবেন এবং সেই সাথে আপনার নমিনিনের তথ্যগুলো সঠিকভাবে প্রদান করবেন।
ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নিতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি আবেদন করার নিয়ম ইতিমধ্যেই জেনেছেন। ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন পাওয়ার জন্য আপনাকে যে সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপনার সংগ্রহে রাখতে হবে চলুন সেগুলো জেনে নেওয়া যাক--- আপনি যদি লোন নিয়ে বিদেশ গমন করেন অথবা অনেক আগে থেকেই বিদেশে থাকেন এই দুটি ক্ষেত্রেই আপনার ভিসা এবং পাসপোর্ট আপনার সাথে থাকতে হবে এবং যেকোনো সময় এগুলো প্রয়োজন হতে পারে।
- আপনি যদি দেশের বাইরে থেকে ইসলামী ব্যাংকে প্রবাসী লোন নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনি প্রবাসে যে কোম্পানিতে কাজ করছেন সেই কোম্পানির নিয়োগ পত্র এবং মাসিক বেতনের রশিদ আপনাকে জমা দিতে হবে।
- আপনি যদি ব্যবসা করেন তাহলে সেই ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হবে
- আপনি যে সেক্টরে লোন নিবেন তার পূর্ণ বিবরণী প্রদান করবেন
- আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি এবং দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রয়োজন হবে। ছবির ক্ষেত্রে অবশ্যই নতুন ছবি তুলেছেন এমন ছবি হতে হবে কারণ পুরাতন ছবি দিলে আপনার আবেদনটি অনেক সময় নাকচও হয়ে যেতে পারে।
- আপনার TIN সার্টিফিকেট প্রয়োজন হবে।
- ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট থাকতে হবে যেখানে আপনার ভিসা সংক্রান্ত সকল তথ্য সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ থাকবে।
- সামি ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য অবশ্যই ইসলামী ব্যাংকে আপনার একটা একাউন্ট থাকতে হবে।
- আপনাকে ব্যাংক একাউন্টের ছয় মাসের একটা স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে।
- আপনাকে আপনার আয়ের প্রমাণপত্র প্রদান করতে হবে যেমন রেমিটেন্স সার্টিফিকেট।
- আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন নিতে চান সেক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই দুজন সচ্ছল গ্যারেন্টার থাকতে হবে
মনে রাখবেন,আপনি যদি ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোন গ্রহণ করতে চান সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার সর্বনিম্ন ৫ লক্ষ টাকার একটি এফডিআর থাকতে হবে অথবা ৫ লক্ষ টাকার স্থায়ী সম্পদ দেখাতে হবে। যদি আপনার ৫ লক্ষ টাকার কোন এফ ডি আর না থাকে এবং সমপরিমাণ মূল্যের স্থায়ী সম্পদও না থাকে সেক্ষেত্রে আপনি কোনভাবেই ইসলামী ব্যাংকের এই লোনটির জন্য আবেদন করতে পারবেন না।
ইসলামী ব্যাংক থেকে যারা প্রবাসী লোন পাবেন
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি দিনকে দিন ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করছে। এর প্রধান কারণ হলো আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষের ভাবনাচিন্তা কিন্তু তার এই জমাকৃত টাকাটা ব্যাংকে বিনিয়োগ করা হচ্ছে এবং সেই জমাকৃত টাকা থেকে সে পরবর্তীতে মুনাফা ফেরত পাচ্ছে। আর ঠিক এই কারণেই মানুষের মনে একটা মানসিক স্বস্তির জায়গা তৈরি হয়েছে। এবার তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কারা ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন পাবেন-
- প্রথমত--যে সকল প্রবাসী ইসলামী ব্যাংকের সাথে নিয়মিত টাকা লেনদেন করে থাকেন তাদের জন্য ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। তবে সকল দেশের শ্রমিক বা কর্মজীবী প্রবাসীরাই ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পেতে পারেন।
- দ্বিতীয়ত-- মনে করেন,আপনার একটি বৈধ ভিসা আছে ঠিক তখন আপনি যদি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের জন্য আবেদন করেন তাহলে খুব সহজেই আপনি এই লোনটি পেয়ে যাবেন।
- তৃতীয়ত-- ইসলামী ব্যাংকে যদি আপনার একটি একাউন্ট থাকে এবং সেই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আপনি যদি নিয়মিত অর্থ লেনদেন করে থাকেন এবং প্রবাস যেতে চান সেক্ষেত্রে ব্যাংক আপনাকে লোন দিতে আগ্রহ প্রকাশ করবে।
- চতুর্থত-- আপনি যদি প্রবাসে বসবাস করেন এবং আপনার বাড়িতে পরিবারের একটি লোন প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক আপনাকে অনায়াসে লোন দিবে। তবে, এক্ষেত্রে হয়তো ইসলামী ব্যাংক আপনাকে টাকা আদান প্রদান করার শর্ত দিতে পারে।
- পঞ্চমত-- যারা দীর্ঘদিন যাবত প্রবাসে বসবাস করছেন তারা সরাসরি ব্যাংকে এসে একাউন্ট তৈরি করতে পারবেন না কিংবা লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে প্রবাসরত ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট যারা মেইনটেইন্স করছে কিংবা প্রবাসী থাকা ব্যক্তির মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তান, ভাই, বোন তারা এই লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। মনে রাখবেন, লোনের জন্য আবেদন করতে আপনার বয়স অবশ্যই ১৮ থেকে ৬০ এর মধ্যে হতে হবে।
সবশেষে ইসলামী ব্যাংক থেকে এই প্রবাসী লোন পাওয়ার জন্য আপনার কমপক্ষে দুইজন গ্যারেন্টার বা জিম্মাদার থাকতে হবে এবং তাদেরকে আর্থিকভাবে বেশ সচ্ছল হতে হবে যা দিয়ে তারা ভবিষ্যতে লোন পরিশোধ করতে পারবে। আর তা না হলে লোনের জন্য আপনি বিবেচিত হবার সম্ভাবনা একেবারেই কম।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন কত টাকা দেয়
যেহেতু ইসলামী ব্যাংকে প্রবাসী লোনকে সরাসরি লোন হিসেবে বিবেচনা করছে না বরং তারা এটিকে ইনভেস্টমেন্ট বা বিনিয়োগ হিসেবে দেখছে। সেই হিসেবে আপনি ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রবাসী লোন আপনার প্রয়োজন মত নিতে পারবেন। আপনার কাজের জন্য ইসলামী ব্যাংক আপনাকে ০.০৫ মিলিয়ন থেকে ১০০ মিলিয়ন পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারে।
অর্থাৎ সহজ ভাষায় যদি বলি ইসলামী ব্যাংক আপনাকে সর্বনিম্ন ০.০৫ মিলিয়ন থেকে ১০০ মিলিয়ন পর্যন্ত পর্যন্ত লোন দিতে পারে। আবার আপনি আপনার ইচ্ছামত যত টাকা ঋণ চাইবেন তত টাকা ঋণ আপনি পাবেন না। কারণ, ব্যাংক আপনাকে ঠিক কত টাকা ঋণ দেবে সেটা নির্ভর করবে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, লেনদেন, অর্থ জমার পরিমাণ সহ আরো বেশ কিছু ক্রাইটেরিয়ার ওপর।
আবার প্রবাসীদের ইসলামী ব্যাংক সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ 10 লাখ টাকা পর্যন্ত লোন প্রদান করে থাকে। ইসলামী ব্যাংকের যারা গ্রাহক রয়েছেন তারা প্রবাস গমনের সময় ইসলামী ব্যাংক থেকে এই ইনভেসমেন্ট নিতে পারেন। তাহলে ইসলামী ব্যাংক থেকে আপনি কত টাকা প্রবাসী লোণ পেতে পারেন আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
যে কারণে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করে
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু কারণ এবং ক্ষেত্র নির্ধারণ করে দিয়েছে। এক্ষেত্রে আপনি যদি উক্ত কারণ গুলোর জন্য প্রবাসী লোন এর আবেদন করেন, তবে খুব সহজেই আপনার লোনটি পেয়ে যাবেন। তো চলুন ইসলামী ব্যাংক যে কারণ গুলোর জন্য লোন প্রদান করে থাকে সেগুলো জেনে নিন--
- নিজস্ব ব্যাংকিং ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে প্রবাসীদের বিনিয়োগ সুবিধা বৃদ্ধি করার ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করে থাকে।
- অর্থ পাচার রোধ এবং দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে অংশগ্রহণ এক্ষেত্রে ব্যাংক প্রবাসী ঋণ প্রদান করবে।
- বিদেশ থেকে প্রবাসী ভাইয়েরা ফিরে যাতে আত্মনির্ভরশীল হয়ে নিজেদের কর্মসংস্থান গড়ে তুলতে পারে সেই সুযোগ প্রদান করার জন্য ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী ঋণ দিয়ে থাকে।
- নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে সহায়তা মূলক কর্মসূচিতে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করে।
- ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসীদের রেমিটেন্স প্রদানে উৎসাহী করে তোলা। এক্ষেত্রেও ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন দিয়ে থাকে।
কোন খাতে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করে
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি সম্পর্কে আপনাকে আমরা জানিয়ে দিয়েছি। কিন্তু আপনি কি জানেন, ইসলামী ব্যাংক ইসলামী শরীয়া মোতাবেক আরো বিভিন্ন খাতে লোন বা বিনিয়োগ করে থাকে সেগুলো হল---
- গাড়ি লোন স্কিম (CIS)
- ছোট ব্যবসা লোন স্কিম(SBIS)
- মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লোন স্কিন (MIIS)
- রিয়াল এস্টেট লোন program (REIP)
- ইসলামী ব্যাংক কৃষি লোন স্কিম
- মহিলা উদ্যোক্তা লোন স্কিম (WEIS)
- হাউজহোল্ড লোন স্কিম
- প্রবাসী লোন ( এনআরবি)
- উদ্যোক্তা লোন স্কিম(NEIS)
- রিয়েল এস্টেট লোন (বাণিজ্যিক এবং কার্যকরী মূলধন)
- ট্রান্সপোর্ট লোন স্কিম(TIS)
- কৃষি বাস্তবায়ন লোন স্কিম(AIIS)
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর সময়সীমা
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা রয়েছে। ইসলামী ব্যাংক আপনাকে যে লোন প্রদান করবে এবং তার সময়কাল কত হবে সেটা নির্ভর করবে মূলত আপনাকে ঠিক কত টাকা লোন দেওয়া হচ্ছে তার ওপর। আবার অনেক সময় আপনি কোন কাজের জন্য ঋণ গ্রহণ করছেন সেটির উপরেও নির্ভর করে আপনার ঋণের সময়সীমা।
সুতরাং সহজ ভাষায় বলতে গেলে ব্যাংক আপনার ওপর যত টাকা বিনিয়োগকরবে কিংবা আপনাকে যত টাকা ঋণ দেওয়া হবে তার পরিমাণ যদি কম হয় তাহলে আপনার ঋণের সময়কালও কম হবে। আবার আপনার উপর আরোপিত ঋণ যদি বেশি হয় সে ক্ষেত্রে আপনার ঋণের সময়সীমাও দীর্ঘমেয়াদি হবে। তবে স্বাভাবিকভাবে ইসলামী ব্যাংকের লোনের সময়সীমা
সর্বনিম্ন এক বছর থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত হয় । ইসলামী ব্যাংকের এই লোনের সময়কাল সাধারণত তিনটি ক্রাইটেরিয়া অনুসরণ করে হয়ে থাকে যেমন স্বল্প মেয়াদী লোন, মধ্য মেয়াদী লোন এবং দীর্ঘমেয়াদী লোন। আশা করছি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর সময়সীমা সম্পর্কে সম্মুখ ধারনা পেয়েছেন।
ইসলামী ব্যাংকের লোন এবং প্রচলিত ব্যাংকের লোনের পার্থক্য
সম্প্রতি বাংলাদেশে প্রচলিত ধরার বেশকিছু ব্যাংকে ইসলামী ধারার অর্থ ব্যবস্থা কে অনুসরণ করে ব্যাংকগুলোতে একটি বিশেষ ইসলামিক ব্যাংকিং উইন্ডো খোলা হয়েছে। তাহলে আপনি এখন ভাবতে পারেন ইসলামী ব্যাংকিং এবং অন্য ধারার প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের মধ্যে মূল পার্থক্যটা কোথায়? সম্প্রতি এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের শিক্ষিকা
তসলিমা খান জানান দুই ধারার ব্যাংকগুলোর মূল পার্থক্যের জায়গাটা হচ্ছে সুদ এবং মুনাফার হিসেবে ক্ষেত্রে। তাসলিমা খান আরো জানান, "মূলধারার সব ব্যাংকিংয়ে সুদের বিষয়টা থাকে। তবে আমরা যখন ব্যাংকের টাকা জমা রাখি তখন একটা নির্দিষ্ট হারে কিন্তু সুদ দেওয়াই হচ্ছে। পরিশেষে সেখানে ব্যাংকের লাভ বা ক্ষতি যাই হোক আমরা যারা সেখানে টাকা জমা রাখছি
আমাদের কাছে কিন্তু ব্যাংকের লাভ লস বিবেচ্য বিষয় না। ইসলামী মূলধারের ব্যাংকগুলো পি এল এস অর্থাৎ প্রফিট লস শেয়ারিংয়ে চলে কিন্তু ট্র্যাডিশনাল ব্যাংক বা প্রচলিত ব্যাংকে এটা একটা স্টেটড রেট থাকে। তবে ইসলামের ক্ষেত্রে বলা হয়ে থাকে ব্যাংকিং এর সেক্টর টা একটা শেয়ারিং মেথড হবে। আচ্ছা আমি ব্যাংকে এই প্রফিট লস শেয়ারিং বিদ্যমান।
অর্থাৎ ব্যাংক যেহেতু আমাদের কাছ থেকে আমানত রাখছে, তাই ব্যাংকের যদি লাভ হয় তাহলে আমার আমানতের উপর লভ্যাংশ পেতে পারি। কিন্তু ব্যাংকের যদি ইনভেস্টে ক্ষতি হয় তাহলে আমরা লোভ্যাংশ পাওয়ার জন্য যোগ্য হবো না। এটাই প্রচলিত এবং ইসলামী ধারার ব্যাংকের মধ্যে মূল পার্থক্য।"
ইসলামী ব্যাংকের লোনের ইন্টারেস্ট রেট
ইসলামী ব্যাংকের লোনের ইন্টারেস্ট রেট বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হতে পারে। যেমন আপনি যদি ব্যক্তিগত লোন বা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে লোন নিন সে ক্ষেত্রে এটির ইন্টারেস্ট রেট একরকম আবার আপনি কি পরিমান লোন নিচ্ছেন সেই লোনের পরিমাণের ওপরও ইন্টারেস্ট রেট ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত ইসলামী ব্যাংকের লোনের ইন্টারেস্ট রেটব্যবসায়ীক লোনের ক্ষেত্রে প্রায় ১২% থেকে ২৫% হতে পারে এবং ব্যক্তিগত লোনের ক্ষেত্রে ইন্টারেস্ট রেট ১০% থেকে ২০% হতে পারে।
আপনি বাড়ি নির্মাণের লোনের জন্য উল্লেখিত হেঁটে এই ঋণ পেতে পারেন যেমন ১৬% । এক্ষেত্রে বলে রাখি মহানগর শহরের জন্য সাধারণত ২৫ কোটি টাকা এবং তার আশেপাশে জেলা শহর বা অন্যান্য অঞ্চলের জন্য দেড় কোটি টাকাপর্যন্ত লোন আপনাকে প্রদান করা হতে পারে। আপনি আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী উক্ত অঞ্চলের জন্য উপযুক্ত ঋণ পদ্ধতি নির্বাচন করবেন এবং অবশ্যই ব্যাংকের সকল নির্দিষ্ট শর্তাদি সাপেক্ষে আপনাকে
ঋণের জন্য আবেদন করতে হবে। তাছাড়া আপনি যে লোনটি নিবেন সেই লোনের বিশেষ কোনো শর্তাবলী আছে কিনা, লোন পরিশোধের সময়সীমা, অন্যান্য ব্যাংক থেকে ইসলামী ব্যাংকের আলাদা হতেই পারে। সেক্ষেত্রে আপনি আপনার নিকটস্থ কোনো ইসলামী ব্যাংকে যোগাযোগ করে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিবেন
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের উদ্দেশ্য
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের উদ্দেশ্য সম্পরকে অনেকেই জানতে চান। মূলত বেশ কিছু উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে সামনে রেখে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করে থাকে । তাহলে চলুন ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন এর উদ্দেশ্য গুলো কি কি তা জেনে নেওয়া যাক--
- ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোনের প্রধান উদ্দেশ্য হল আমাদের সমাজের ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা। তাদেরকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করতেই এই লোন প্রদান করা হয়।
- মানুষের দারিদ্র বিমোচন এবং হার্ধা টুনি পরিশ্রম করে ডলার পাঠানো প্রবাসী উন্নয়নকে উৎসাহিত করতে এই লোন প্রদান করা হয়।
- বাংলাদেশী নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করা হয়।
- যারা দীর্ঘদিন যাবত প্রকাশে বসবাস করছেন তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করতে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন প্রদান করে থাকে।
- এছাড়াও বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসীদের বৈদেশিক রেমিটেন্স প্রদানে উৎসাহিত করা হয় এবং দেশের অর্থ পাচার রোধ করা হয়।
- দীর্ঘদিন প্রবাস জীবন শেষে সকল প্রবাসী এবং তাদের সন্তানদের জন্য কর্মসংস্থানের নতুন সুযোগ সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন দিয়ে থাকে।
ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতির সুবিধা
ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতির বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। যেমন--
- প্রথমত ইসলামী ব্যাংকের লোন পদ্ধতি ইসলামী নীতিমালা অনুসরণ করে যার ফলে গ্রাহকরা ধর্মীয়ভাবে স্বস্তি পান এবং তারা অনুধাবন করেন তাদের ঋণ প্রদান অত্যন্ত প্রাকৃতিক এবং হালাল।
- দ্বিতীয়ত মুদারাবাহ্ এবং মুরাবাহাহ পদ্ধতিতে ঋণ প্রদান সাধারণত সম্পদের মাধ্যমে প্রদান করা হয়ে থাকে যার ফলে গ্রাহকরা তাদের অর্থ ব্যবস্থাপনা এবং ব্যবসায়িক সম্পদ উন্নত করতে পারে।
- তৃতীয়ত এই ব্যাংক পদ্ধতির উপকারিতা হলো গ্রাহকদের ধার্মিক বিশেষত্ব রক্ষা করা এবং হালাল অর্থ লোন এর বিনিময়ে সুন্দর মূল্যায়ন পরিপূর্ণ করা।
- চতুর্থত ইসলামী ব্যাংক ইসলামী শরিয়া অনুযায়ী স্বল্প সুদে গ্রাহকদের সুবিধাজনিত ব্যবস্থাপনা প্রদান করে যাতে ঋণ প্রদান করা হয়।
ইসলামী ব্যাংকের লোন পদ্ধতি এবং সতর্কতা
ইসলামী ব্যাংক লোন পদ্ধতি মূলত একটি ধর্মীয় ব্যাংক সিস্টেম। যেখানে ব্যাংক আপনাকে ঋণ প্রদান করার সময় শরীয়তের মান অনুসরণ করে তবেই প্রদান করবে। বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের লোন পদ্ধতি শব্দটি দ্বিতীয় এবং প্রাচীন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেশ সুনামি হয়ে উঠেছে। অনেক সময় এই পদ্ধতি গুলো ইসলামী নীতিমালা অনুসরণ করে ফলে অর্থনীতি এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ সামঞ্জস্যতা সৃষ্টি হয়।
ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি সম্পর্কে আমার মন্তব্য
গ্রাহক সংখ্যা বলুন কিংবা অন্যান্য সুবিধার দিক থেকেই বলুন ইসলামী ব্যাংক পিএলসি বাংলাদেশের ব্যাংক গুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা একটি ব্যাংক। ইসলামী ব্যাংকের ব্যাংকিং সিস্টেমে আপনি চাইলে বিদেশে থেকেও প্রবাসী লোন নিতে পারবেন। তাছাড়া দারিদ্র বিমোচন এবং প্রবাসীদের কল্যাণে ইসলামী ব্যাংকের প্রবাসী লোন পদ্ধতি দারুন কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
আশা করছি ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন নেওয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে আপনি আমাদের আর্টিকেল থেকে সঠিকভাবে জানতে পেরেছেন। আর তাই ব্যাংকিং সেক্টরের লোন সম্পর্কিত সকল তথ্য প্রতিনিয়ত পেতে পিন পয়েন্ট ম্যাক্সের সাথেই থাকুন। ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন। আর্টিকেলটি এতক্ষণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url