আলকুশি বীজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
আলকুশি বীজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আপনি নিশ্চয়ই জানতে চাচ্ছেন? আলকুশি বীজের পাউডার খাওয়ার নিয়ম জানেন নি? হয়তো জানেন না। যদি না জেনে থাকেন তাহলে বলবো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে চটজলদি একবার পড়ে নিন।
আজকে আমাদের এই আর্টিকেল থেকেই আপনি জানতে পারবেন আলকুশি বীজ চূর্ণ খাওয়ার শারীরিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং এর পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। সাথে আরো জানবেন আলকুশি বীজের উপকারিতা। তো চলুন আলোচনা শুরু করি।
পোস্ট সূচিপত্রঃ আলকুশি বীজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- আলকুশি বীজ কি
- আলকুশি বীজের বৈজ্ঞানিক নাম
- আলকুশি বীজ চূর্ণের পুষ্টি উপাদান
- আলকুশি বীজের পাউডার খাওয়ার নিয়ম
- আলকুশি বীজ চূর্ণ খাওয়ার উপকারিতা
- আলকুশির পাতা ও শিকড়ের উপকারিতা
- পুরুষশক্তিতে আলকুশি বীজের উপকারিতা
- আলকুশি বীজের পাউডার কোথায় পাওয়া যায়
- আলকুশি পাউডারের দাম
- আলকুশি বীজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
- পরিশেষে আলকুশি বীজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
আলকুশি বীজ কি
আলকুশি বীজ কি? আলকুশি হলো একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা ১০ থেকে ১২ সেন্টিমিটার এর মতো লম্বা হয়ে থাকে। আলকুশি ফল অনেকটা সিম বীজের মত এবং ছোট ছোট মোম দ্বারা আবৃত থাকে। এর প্রত্যেকটি ফলে ৪-৬ টা পর্যন্ত বীজ থাকে এবং বীজের রঙ কালো আকৃতির হয়ে থাকে। আলকুশির বীজগুলো ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লোম দ্বারা আবৃত থাকে যা সহজেই একটি থেকে আরেকটি পৃথক করা যায়।
এর ফলের খোসা ও পাতায় সেরাটোনিন থাকার কারণে ত্বকের সংস্পর্শে এলে মারাত্মক চুলকানির সৃষ্টি করে। শুকনো ১০০ টি আলকুশি বীজের ওজন প্রায় থেকে ৫৫ থেকে ৮৫ গ্রাম। প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড, স্টার্চ এবং অ্যামিনো এসিডের প্রধান উৎস বলা যেতে পারে এই আলকুশি বিচকে। প্রচলিত ভাষায় আলকুশি উদ্ভিদ বিলাই চিমটি বা বিড়ালের চিমটি বা বিড়ালের খামচি হিসেবে বেশ পরিচিত।
আলকুশি বীজের বৈজ্ঞানিক নাম
আলকুশি বীজের বৈজ্ঞানিক নাম Mucuna pruiens(মুকুণা পুরিয়ান) এবং এটি ফেবাসী পরিবারের একটি উদ্ভিদ। পুড়িয়েন শব্দটি ল্যাটিন ভাষা থেকে আগত যার অর্থ চুলকানির অনুভূতি। ইংরেজিতে আলকুশি velvet bean, Cowitch,Cowitch, Cowhage, Kapikachu, Nescafe,sea bean নামে পরিচিত। এর ফল লম্বাটে মাথার দিক খানিকটা বাঁকানো।
আলকুশির প্রতিটি বীজের অজন প্রায় ৫৫-৮৫ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। মধ্য আমেরিকায় কফির বিকল্প হিসেবে এই আলকুশি বীজ আগুনে ভেজে খাওয়া হয়। যার জন্য ব্রাজিল সহ আরো অন্যান্য দেশে এর প্রচলিত নাম হলো নেস ক্যাফে। আবার গুয়েতে মালাই পেঁচি সম্প্রদায়ের মানুষজন আল-কুশি বীজকে খাদ্যশস্য হিসেবেও আবাদ করে থাকে।
আলকুশি বীজ চূর্ণের পুষ্টি উপাদান
আলকুশি বীজের নানান পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানার আগে আপনাকে জানিয়ে দেবো এই বীজের পুষ্টিগুণ। আলকুশি বীজের পুষ্টি উপাদান জানলে আপনি হয়তো আজ থেকেই এই বীজ সেবন শুরু করে দেবেন। তো চলুন জেনে নিন আলকুশির পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে।
আরো পড়ুনঃ আমলকির ২০টি অলৌকিক উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রতি ৪ গ্রাম অর্থাৎ ১ চামচ পাউডারের পুষ্টি উৎপাদন গুলো হল
- ফ্যাট- ০.০১ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট- ৩.২৪ গ্রাম
- প্রোটিন- ০.৩৪ গ্রাম এবং
- ভিটামিন সি- ১৭ গ্রাম।
এছাড়াও প্রতি 100 গ্রাম আলকুশি বীজে পুষ্টি উপাদান গুলো হল
- ফ্যাট- ৭%
- স্যাচুরেটেড ফ্যাট- ৩%
- পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট- ৫%
- মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট- ২%
- কার্বোহাইড্রেট- ২৫%
- ফাইবার- ১৪%
- সুগার- ২%
- প্রোটিন - ১০%
- ক্যালসিয়াম- ২৬%
- খনিজ উপাদান- ১১%
- পটাশিয়াম- ২৭%
- থায়ামিন- ৫%
- ভিটামিন সি- ৭% এবং
- ভিটামিন ই- ৪.৬%
এছাড়াও আলকুশি বীজে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালরি এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাট থাকার কারণে একে পুষ্টির রাজা হিসেবেও অভিহিত করা হয়।
আলকুশি বীজের পাউডার খাওয়ার নিয়ম
আলকুশি বীজের পাউডার খেয়ে এর থেকে অপকারিতা এড়াতে আপনাকে নিয়ম মেনে আলকুশি পাউডার খেতে হবে। আলকুশি বীজ চূর্ণ কিভাবে খেতে হয় সে নিয়ম আমাদের অনেকেরই অজানা। তবে একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষের জন্য সপ্তাহে একবার কি দুবার ১৫ থেকে ২০ গ্রাম আলকুশি বীজ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণই উপকারী। তাহলে চলুন আপনি আলকুশি বীজ কিভাবে খেতে পারবেন তা জেনে নিন--
- বীজ হিসেবে- আপনি শিম বীজ যেভাবে রান্না করে খান ঠিক একই ভাবে আলকুশি বীজকেও রান্না করে তরকারি হিসেবে খেতে পারেন। আবার তাজা বীজ আপনি সিদ্ধ করে সালাদ হিসেবেও খেতে পারেন।
- চায়ের মতো করে- আমরা বাঙালিরা প্রত্যেকেই সকাল বিকাল চা খেতে বেশ অভ্যস্ত। আপনি গরম পানিতে দারুচিনি গুড়া চিনি এবং আলকুশি পাউডার মিশিয়ে চায়ের মত করে খেতে পারেন। এক্ষেত্রে বলে রাখি, এক চামচ আলকুশি পাউডার ১-২ চামচ দারুচিনি এবং এক চামচ চিনি গরম পানিতে দুই মিনিট ফুটিয়ে আপনি দুই কাপ চা তৈরি করতে পারবেন। যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে।
- ক্যাপসুল হিসেবে- আলকুশি বীজ কে আপনি ক্যাপসুল হিসেবেও খেতে পারেন। সাধারণত ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে আলকুশি বীজের ক্যাপসুল বাজারে পাওয়া যায়। তবে ক্যাপসুল গ্রহনের পূর্বে আপনি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
- পাউডার হিসেবে- আপনি যদি আলকুশি বীজকে ক্যাপসুল হিসেবে চায়ের মত করে খেতে না পারেন সেক্ষেত্রে পাউডার হিসেবেও এটিকে খেতে পারেন। পাউডার হিসেবে খাওয়ার জন্য আপনি আলকুশি বীজ দুধের সাথে শোধন করে সেটিকে শুকিয়ে পাউডার করে নিতে পারেন। এই পাউডার আপনি আবার রুটি বানানোর সময় আটার সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন। আবার এই পাউডার আপনি গরম দুধ বা গরম জলের সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন।
আলকুশি বীজের উপকারিতা
আলকুশি বীজ চূর্ণ খাওয়ার বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তেমনি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও রয়েছে। যা হয়তো অনেকেই জানেন না। সম্মানিত পাঠক, এবার চলুন এই বীজের উপকারী দিকগুলো হল-
- অনেক সময় আমাদেরকে বিভিন্ন বিষাক্ত পোকামাকড় যেমন ভিমরুল মৌমাছি দংশন করলে বা হুল ফুটিয়ে দিলে প্রচন্ড যন্ত্রণার সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার ক্ষতস্থানে আলকুশি বীজের গুড়া লাগান তাহলে আপনার যন্ত্রণা অনেকটাই লাঘব হবে।
- যাদের বাতের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য আলকুশি বীজ হতে পারে একটা উপাদেয় ঔষধ। আপনি যদি এর বীজ চিনি ও দুধ সহ সিদ্ধ করে খেতে পারেন তাহলে বাতের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন সেই সাথে এটি আপনার শারীরিক দুর্বলতাকেও দূর করবে।
- আমাদের অনেকেরই মাঝে মধ্যে হাত-পায়ে ঝিনঝিন ধরে, কাঁপতে থাকে ,আবার কখনো বা অসাড়ও হয়ে যায়। এক্ষেত্রে আপনি ৬-৮ টি আলকুশি বীজ থেতো করে ছাগলের দুধে ফুটিয়ে নিয়ে অল্প মধুসহ যদি সকাল সন্ধ্যা দিনে দুবার খেতে পারেন তাহলে মাস খানিকের মধ্যে আপনার এই সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
- যারা পেটের সমস্যায় ভোগেন তারা আলকুশি বীজ গুড়া মধুসহ খেলে বেশ উপকার পাবেন।
- আলকুশি বীজে রয়েছে নোট ন্যুট্রপিক উপাদান যা আপনার মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কে বাড়িয়ে দেয়। আলকুশি বীজের সবথেকে শক্তিশালী ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট হল লেভোডোপা নামক একটি অ্যামাইনো এসিড যা ডোপামিন বৃদ্ধির কাজ করে। আর ডোপামিন হলো একটি নিউরোট্রান্সমিটার যা আমাদের স্নায়ু সংকেত প্রেরণ করতে সাহায্য করে। ফলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতেও আলকুশি বীজের ভূমিকা অনন্য।
- মানবদেহে ডোপামিনের অভাবে পারকিনসন্স ডিজিজ স্নায়ুতন্ত্র কে বেশ প্রভাবিত করে। পারকিনসন্স রোগের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে পেশির অনমনীয়তা, কাঁপুনী এবং সীমিত নড়াচড়া। কিন্তু আলকুশি বীজ আপনার শরীরে ডোপামিনের মাত্রাকে বাড়িয়ে আপনাকে পারকিনসন্স ডিজিজ থেকে মুক্তি দিতে পারে।
- যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আলকুশি বীজ বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে। এতে বিদ্যমান অ্যালকালয়েড যা আপনার টেস্টোস্টেরন সংশ্লেষণকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে। ফলে এটি আপনার শুক্রানুর সংখ্যা গতিশীলতা এবং কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
- মহিলাদের বন্ধ্যাত্ব রোগ দূর করতে পারে এই আলকুশি বীজ চূর্ণ। সাধারণত কম টেস্টোস্টেরন অস্বাভাবিক ফলিকল-স্টিমুলেটিং হরমোন(FSH) এবং প্রলাক্টিনকে বন্ধত্বের প্রধান কারণ হিসেবে ধরা হয়। তাই আলকুশি বীজ চূর্ণ গ্রহণ আপনার শরীরের (FSH) এবং প্রলাক্টিন কমাতে পারে এবং দূর হতে পারে আপনার বন্ধ্যাত্বের সমস্যা।
- আপনি যদি নিয়ম করে আলকুশি বীজ গ্রহণ করেন তাহলে এটি আপনাকে ক্যান্সারের হাত থেকেও রক্ষা করতে পারে। এটি আপনার শরীরের সুপার অক্সাইড ডিসমুটেজ গ্লুটাথিয়ন এবং ক্যাথালিজ এর মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়। ফলে খুব সহজেই এরা শক্তিশালী এন্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফ্রী রেডিকেলের আঘাত থেকে আপনার কোষকে রক্ষা করতে পারে। সুতরাং আপনার খাদ্য তালিকায় আজই আলকুশি বীজ অন্তর্ভুক্ত করুন যা আপনার জন্য ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করবে।
- আবার,আলকুশি বীজের মিথানল উপাদান টিউমারের বৃদ্ধিকে রোধ করতে পারে।
- আলকুশি বীজের পাউডারে বিদ্যমান ডি-চির-ইনোসিটল যা ইনসুলিনের প্রভাব অনুকরণ করতে পারে এবং আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা কে কমিয়ে দিতে পারে। এছাড়াও এর লেভোডোপা যা আপনার রক্তে শর্করা এবং কোলেস্টেরলের স্বাস্থ্যকর মাত্রা বজায় রাখতে সহায়তা করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
আলকুশির পাতা ও শিকড়ের উপকারিতা
আলকুশি বীজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আপনাকে আমরা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছি। শুধু আলকুশি বীজ নয়। বরং এর পাতা এবং শিকড়ও বেশ ঔষধি গুণসম্পন্ন। এতক্ষণ তো আমরা আলকুশি বীজ চূর্ণের স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে জানলাম, এবার চলুন এর পাতা এবং শিকড়ের উপকারিতা গুলো জেনে নিন-
- যারা সর্দি কাশির সমস্যায় জর্জরিত তাদের জন্য আলকুশি গাছের শিকড় একটি মহৌষধ কারণ আলকুশি গাছের শিকড়ের রস খেলে সর্দি কাশি দূর হয়ে যায়। সেই সাথে এটি আপনার মূত্র যন্ত্রের রোগ নিরাময়েও বেশ কার্যকরী।
- যাদের পেটের সমস্যা বিশেষ করে আমাশয় রোগ রয়েছে তারা আলকুশি শিকড়ের রস এক চামচ করে একমাস খেলে আমাশয় রোগ সেরে যাবে।
- অনেক সময় আমাদের শরীরে ফোড়া উঠে এবং তাতে প্রচন্ড ব্যথা হয়। ফোড়ার এই সমস্যা দূর করার জন্য আপনি আলকুশি ব্যবহার করতে পারেন। কারণ আলকুশি পাতার রস ফোড়ায় দিলে অচিরেই সেটি ফেটে যায়।
- যাদের গোদ রোগের সমস্যা রয়েছে তারা আলকুশির মূলের রস যদি এক চামচ পরিমাণ সকালে খালি পেটে নিয়মিত খান এবং সামান্য জলসহ বাটা মুলটি উক্ত স্থানে লাগান তাহলে আপনার গোদ রোগের উপশম হবে।
- আলকুশির কাণ্ডের রস চোখের বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রেও বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- এর শিকড়ের রস পশু পাখির ক্ষতস্থানে লাগালে সেই ক্ষতস্থান দ্রুত সেরে যায়।
- বুকে জমে থাকা কফ দূর করতে সাহায্য করে আলকুশির শিকড়। আপনি যদি আলকুশির মূল পানি দিয়ে সিদ্ধ করে সকাল বিকাল নিয়মিত খান তাহলে আপনার বুকে জমে থাকা কফ খুব সহজেই দূর হয়ে যাবে।
- আপনার যদি রক্তপিত্ত হয় তাহলে ২০ গ্রাম আল-কুশী বীজ আগের রাতে ভিজিয়ে নেবেন। পরের দিন ভিজিয়ে রাখা বীজ খোসা ছাড়িয়ে সামান্য থেতো করে পাঁচ থেকে ছয় গ্রাম পানিতে সিদ্ধ করে আনুমানিক তিন কাপ করে নেবেন। এই নিয়মে খেলে আপনার রক্তপাত বন্ধ হবে।
পুরুষ শক্তিতে আলকুশি বীজের উপকারিতা
পুরুষ শক্তিতে আলকুশি বীজের উপকারিতাও কম নয়। বহু প্রাচীনকাল থেকেই
পুরুষের যৌন স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আলকুশি বীজ চূর্ণ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এবার
চলুন পুরুষের ক্ষেত্রে এই বীজের কি কি উপকারিতা রয়েছে তা জেনে নিন--
- আপনি যদি আলকুশি বীজের গুড়া অল্প ঘি ও মিছরির সাথে মিশিয়ে খান তাহলে আপনার শুক্র তারুণ্য দূর হবে।
- নিউরোট্রান্সমিটার হিসেবে কাজ করে আলকুশিতে যার যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
- যারা অলিগোস্পার্মিয়াতে আক্রান্ত তাদের শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করে এই আলকুশি বীজ চূর্ণ। এছাড়াও আলকুশি বীজ স্পার্ম বা শুক্রাণু তৈরিতেও সাহায্য করে।
- লিঙ্গ শৈথিল্য ,ধাতু দর্পণ্য প্রভৃতিতে আপনি ৫-৬ টি আলকুশি বীজ থেতো করে ১০০ মিলি লিটার দুধে অল্প পরিমাণ চিনিসহ ফুটিয়ে নেবেন। শোবার আগে সেদ্ধ বীজ ও দুধ উভয়ই ১০ থেকে ১২ দিন টানা খাবেন। এতে করে আপনি ভালো ফল পাবেন
- আলকুশি বীজ নারীদের রক্ত স্বল্পতার কারণে পিরিয়ডের সময় কম রক্তপাতের সমস্যা দূর করে।
আলকুশি বীজের পাউডার কোথায় পাওয়া যায়
আলকুশি বীজ চূর্ণ খাওয়ার এতসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও উপকারিতা জানার পর এবার আপনি নিশ্চয়ই এই বীজের পাউডার কোথায় পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জানতে চান। আলকুশি পাউডার কোথায় পাওয়া যায় এটি আমাদের অনেকেরই প্রশ্ন। বর্তমানে আমরা ঘরে বসেই বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম যেমন দারাজ এর মাধ্যমে আলকুশি পাউডার ক্রয় করতে পারি। দারাজ থেকে ক্রয় করার সুবিধা একটাই
আপনি যদি আসল আলকুশি পাউডার না পান সেক্ষেত্রে সাত দিনের মধ্যে আপনি আপনার পণ্য ফেরত দিয়ে পুনরায় নতুন পণ্য গ্রহণ করতে পারবেন। আবার আপনি বিভিন্ন হারবাল ঔষধের দোকানে গেলেও আলকোশি পাউডার পেতে পারেন। তাছাড়া বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম,সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতেও বর্তমানে আলকুুুশি পাউডারের অনেক রিভিউ দেখা যায়।
আলকুশি পাউডারের দাম
আলকুশি বীজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জেনেছেন। কিন্তু আলকুশি পাউডার এর দাম সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানিনা। বর্তমানে বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে আলকুশি বীজ বা আলকুশি বীজের পাউডার পাওয়া যায়। প্রত্যেকটি ওয়েবসাইট আবার দামেরও ভিন্নতা থাকে। ফলে কোনটি আসল পণ্য এবং কোনটি নকল পণ্য সেটি কিনতে আমাদের বেশ বেগ পোহাতে হয়।
তাই বলে রাখি এক্ষেত্রে আপনি অবশ্যইভাল এবং বিশ্বস্ত সাইট থেকে আলকুশি পাউডার ক্রয় করবেন।বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রতি ১০০ গ্রাম আল খুশি পাউডারের দাম পড়ে ২৩০ টাকা। তবে অনেক সময় এই দাম আবার কম বেশি হয়ে থাকে। সুতরাং আলকুশি পাউডার কেনার সময় আপনি যাচাই বাছাই করে এবং সঠিক দাম জেনে তবেই ক্রয় করবেন। এতে করে আপনি প্রতারিত হবেন না।
আলকুশি বীজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
আলকুশি বীজ খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি এর আবার কিছু অপকারিতাও রয়েছে। বিশেষ করে আপনি যদি নিয়ম মেনে না খান বা অতিরিক্ত পরিমানে খান। মাত্রাতিরিক্ত আলকুশি বীজ খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে কিছু বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। যেমন ধরুন-
- আপনাদের যাদের নিউরোপ্যাথিক সাইকোসিস এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের চিকিৎসা চলমান তাদের অন্তত আলকুশি বীজ খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখা উচিত।
- আলকুশির মধ্যে থাকা লেভোডোপা সিরাম যা লিভারের রোগকে আরো প্রভাবিত করে। ফলে লিভার রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা আলকুশি বীজ খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন।
- মাত্রাতিরিক্ত আলকুশি বীজ সেবনের ফলে আপনার উচ্চমাত্রার এল-ডোপা হতে পারে। যার ফলে, আপনার মধ্যে হ্যালুসিনেশন, বিভ্রান্তি এবং সিজোফ্রোনিয়ার মত লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- আলকুশি বীজে টানিন, ফেনল ইত্যাদি থাকার কারণে এটি খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে শোধন করে তবেই খাবেন।
- আলকুশি বীজে জরায়ু উদ্দীপক প্রভাব থাকার কারণে অনেক সময় জরায়ু ফেটে রক্তপাতও হতে পারে। তাই গর্ভকালীন সময়ে আলকুশি বীজ খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখাটাই সব থেকে উত্তম। কেননা এটি গর্ভের ব্রুনের ক্ষতি করতে পারে। সুতরাং যারা গর্ভবতী মহিলা তারা আলকুশি খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন।
- আবার অতিরিক্ত আলকুশি পাউডার খাওয়ার পরে বমি বমি ভাব বা ত্বকের চুলকানি এমনকি ডায়রিয়াও দেখা দিতে পারে।
পরিশেষে আলকুশি বীজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
আলকুশি বীজের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আপনি এতক্ষণে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন। আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন। সেই প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন রোগের মহা ঔষধ হিসেবে আলকুশি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এক কথায় বলতে গেলে আলকুশি বীজ স্বাস্থ্য এবং পুষ্টিগুণে অনন্য।
ব্যাপক ঔষধি গুণাবলী থাকার কারণে আল-কুশি বীজকে পুষ্টির রাজাও বলা হয়ে থাকে। তাই বলবো নিজের সুস্থতার কথা ভেবে আপনি আজ থেকেই আলকুশি বীজ চূর্ণ সেবন শুরু করে দিন। তো আজ এ পর্যন্তই। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। এই রকম আরো তথ্যসমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে আমাদের পিন
পয়েন্ট ম্যাক্স ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url