কলা দিয়ে চুল সিল্কি করার উপায় সম্পর্কে জানুন

-
কলা দিয়ে চুল সিল্কি করার উপায় সম্পর্কে জানতে চান? চুলের যত্নে কলার খোসা ঠিক কতটা কার্যকরী জানেন কি? যদি না জেনে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। 
কলা-দিয়ে-চুল-সিল্কি-করার-উপায়-সম্পর্কে-জানুন
আজকে আমরা আলোচনা করব আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে কলা দিয়ে কিভাবে চুল সিল্কি করবেন সে সম্পর্কে। তাহলে চলুন দেরি না করে চটজলদি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আর্টিকেলটি পড়ে নিন।

পোস্ট সূচিপত্রঃ  কলা দিয়ে চুল সিল্কি করার উপায়

কলা দিয়ে চুল সিল্কি করার উপায়

কলা দিয়ে চুল সিল্কি করার উপায় আমরা অনেকেই জানিনা। ঝলমলে এবং সিল্কি চুল আমাদের সৌন্দর্যকে অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু অনাদার অবহেলা আর অযত্নে আপনার চুল যদি হয় উস্ক, রুক্ষ এবং শুষ্ক সেক্ষেত্রে সৌন্দর্যকে আর ধরে রাখা সম্ভব হয় না। যারা রুক্ষ শুষ্ক চুলের সমস্যায় ভুগছেন তারা এভাবেই ঘরোয়া পদ্ধতিতে কলা দিয়ে আপনার চুল সিল্কি করে নিতে পারেন--
কলা ও মধুর হেয়ার মাস্ক
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
  • পাকা কলা - ১ টি এবং
  •  মধুর পরিমাণ- ২ টেবিরদল চামচ
প্রস্তুত প্রণালীঃ
প্রথমে আপনি একটি পরিষ্কার পাত্রে একটি পাকা কলা ভালো করে চোটকে মিহি করে নেবেন। অতঃপর তাতে ২ টেবিল চামচ মধু ভালো করে মিশিয়ে নিন এবং একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। তৈরি হয়ে গেলে এটি আপনার ভেজা চুলে এবং মাথার ত্বকে খুব ভালো করে লাগান। মিশ্রণটি আপনার চুলে ৩০ থেকে ১ ঘন্টার মত রেখে শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
ব্যবহারঃ
আপনি সপ্তাহে এক থেকে দুইবার পাকা কলা এবং মধুর এই হেয়ারমাক্স ব্যবহার করতে পারেন এতে করে আপনি আপনার চুলে ভালো ফল পাবেন।
কলা, দই এবং অলিভ অয়েলের হেয়ার মাস্ক
কলা, দই এবং অলিভ অয়েলের হেয়ার মাক্স টি আপনার চুলকে ঝলমলে এবং সিল্কি করতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তাহলে চলুন কলা, দই এবং অলিভ অয়েল এর হেয়ার মার্চ আপনি কিভাবে ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক--
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
  • ১টি পাকা কলা
  • ২ টেবিল চামচ টক দই এবং
  • ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল।
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্রে আপনি একটি পাকা কলা নিয়ে সেটিকে চোটকে ভালো করে মিহি করে নিবেন। অতঃপর চটকানো কলায় দই এবং অলিভ অয়েল খুব ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। মিশ্রণটি তৈরি হয়ে গেলে আপনার চুলে এবং মাথার ত্বকে ভালো করে মশ্চারাইজার করুন। মিশ্রণটি চুলে লাগানোর ৩০ মিনিট পরে সামান্য শুকিয়ে এলে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
কলা-দিয়ে-চুল-সিল্কি-করার-উপায়-সম্পর্কে-জানুন
ব্যবহার বিধি
আপনি সপ্তাহে এক থেকে দুইবার কলা, অলিভ অয়েল এবং দইয়ের হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।
কলা এবং লেবুর রসের হেয়ার মাস্ক
কলা এবং লেবুর রস  আপনার চুলকে সতেজ এবং ঝলমলে  করতে বেশ উপযোগী একটি প্যাক। আপনি যদি নিয়মিত নিয়ম করে এই ব্যক্তি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে এবং সিল্কি। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক, কলা এবং লেবুর রসের হিয়ার মাস্ক কিভাবে আপনার চুলে আপনি ব্যবহার করবেন--
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
  • পাকা কলা- ১টি
  • লেবুর রসের পরিমাণ - এক টেবিল চামচ
  • পানির পরিমাণ- এক কাপ
প্রস্তুত প্রণালী
প্রথমে আপনি একটি পাত্রে পাকা কলা একইভাবে চটকে মিহি করে নেবেন তারপর তাতে লেবুর রস এবং এক কাপ পরিমাণ পানি মিশিয়ে নিন। তৈরি হয়ে গেলে সেটি আপনার চুলে ব্যবহার করুন।
ব্যবহার বিধি
আপনি ভালো ফল পেতে চাইলে সপ্তাহে এক থেকে দুইবার কলা এবং লেবুর রসের এই হেয়ার প্যাকটি  ব্যবহার করতে পারেন।
কলা এবং নারকেল তেলের হেয়ার ট্রিটমেন্ট
কলা এবং নারিকেল তেলের হেয়ার প্যাকটি আপনি কিভাবে ব্যবহার করবেন চলুন তা জেনে নেওয়া যাক--
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
  • পাকা কলা- ১টি
  • নারিকেল তেলের পরিমাণ- 2 টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালী
একইভাবে আপনি একটি পরিষ্কার পাত্রে একটি পাকা কলা নিয়ে সেটিকে চটকে মিহি করে নিবেন। অতঃপর তাতে নারিকেল তেল মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। ব্যাস তৈরি হয়ে গেলে সেটি আপনার মাথার ত্বকে খুব ভালো করে মেসেজ করুন। এরপর ৩০ মিনিট রেখে আপনি শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
ব্যবহার বিধি
কলা এবং নারকেল তেলের হেয়ার ট্রিটমেন্টের এই প্যাকটি আপনি সপ্তাহে এক থেকে দুইবার ব্যবহার করবেন।

কলা দিয়ে চুলের যত্ন নেওয়ার উপায়

কলা দিয়ে চুল সিল্কি করার উপায় আমরা আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি। কলাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম ভিটামিন এ, ভিটামিন ই এবং প্রাকৃতিক থাকে যা আপনার চুলের স্বাস্থ্যের জন্য অতীব  উপকারী। আর তাই নিয়মিত কলা ব্যবহারের ফলে আপনার চুল হয়ে উঠবে মসৃণ, শক্তিশালী এবং ঝলমলে। তাহলে চলুন কলা দিয়ে চুলের যত্ন নেওয়ার আরও কিছু উপায় সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক --
কলা হেয়ার মাস্ক
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
  • পাকা কলা ১
  • মধুর পরিমাণ ১ টেবিল চামচ এবং
  • দইয়ের পরিমাণ ১ টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালী
একটি পরিষ্কার পাত্রে আপনি কলা মধু এবং দই ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। যতক্ষণ না পর্যন্ত মসৃণ পেস্ট তৈরি হয় ততক্ষণ পর্যন্ত খুব ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। মিশ্রণটি তৈরি হয়ে গেলে এটি আপনার স্ক্যাল্প এবং চুলে মেসেজ করে পেস্টটি লাগিয়ে নিন। ব্যাস লাগানো হয়ে গেলে ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর আপনি আপনার চুল ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
কলা হেয়ার মাস্ক
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
  • পাকা কলা ১টি
  • এবং পানির পরিমাণ ২ কাপ।
প্রস্তুত প্রণালী
এই প্যাকটি ব্যবহার করার জন্য আপনি একটি পরিষ্কার পাত্রে কলা এবং পানি একসাথে ফুটিয়ে নিন। মনে রাখবেন চুলার আজ আপনি কমিয়ে পাঁচ মিনিটের মত এটিকে ফুটিয়ে নেবেন। ফুটানো হয়ে গেলে মিশ্রণটি ঠান্ডা করে নেবেন। অতঃপর আপনার চুল ধোয়ার পরে শেষ ধোলাইয়ের পানি হিসেবে এই ঠান্ডা কলা পানি মিশ্রণটি ব্যবহার করবেন।
কলা হেয়ার ট্রিটমেন্ট
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
  • পাকা কলা ১টি এবং
  • নারিকেল তেলের পরিমাণ 1 টেবিল চামচ।
প্রস্তুত প্রণালী
আপনি একটি পরিষ্কার পাত্রে কলা এবং নারিকেল তেল ভালো করে মিশিয়ে নিন যতক্ষণ না পর্যন্ত এটি একটি মোস্ট ক্রিম পেস্ট তৈরি না হয়। অতঃপর আপনার চুলে মেসেজ করে পেস্টটি লাগান। পেস্টটি লাগানোর ঠিক এক ঘণ্টা পর আপনি আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন।

চুলের যত্নে কলার খোসা

চুলের যত্নে কলার খোসার উপকারিতাও কম নয়। বর্তমানে বায়ু দূষণ ধুলাবালি এবং এই দূষণের প্রভাব শুধুমাত্র যে আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর পড়ে তা কিন্তু নয় বরং এর প্রভাব আমাদের ত্বক এবং চুলের ওপরেও পড়ে। যার কারনে আজকাল ছেলে-মেয়ে উভয়ই চুলের নানান সমস্যায় জর্জরিত। আমাদের অনেকেরই চুল পড়ার সমস্যা রয়েছে।
 
আবার আমরা অনেকেই চুল পড়া সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেক রকম পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকি। অনেকে আবার চুলের যত্নের জন্য অনেক পণ্য প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকেন। এতে করে চুলের  কোন উপকার তো হয় ই না বরং একটা সময় এসে এসব পণ্য ব্যবহারের ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে শুরু করে।
কলা-দিয়ে-চুল-সিল্কি-করার-উপায়-সম্পর্কে-জানুন
তাই আপনি যদি কোনরকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার চুলকে লম্বা সুন্দর এবং ঝলমলে সিল্কি করতে চান সেক্ষেত্রে কলার খোসাকে বেছে নিতে পারেন। চুলের যত্নে কলার ব্যবহার আপনি নিশ্চয়ই শুনেছেন। কিন্তু আপনি কি জানেন কলার খোসা আপনার চুলের জন্য কতটা উপকারী হতে পারে? তাহলে চলুন জেনে নেই আপনার চুলে কলার খোসা কিভাবে ব্যবহার করবেন--
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
  • কলার খোসা ২ টি এবং
  • পানির পরিমাণ ২ গ্লাস
প্রস্তুত প্রণালী
কলার খোসার পানি তৈরি করতে প্রথমে একটি পরিষ্কার পাত্রে পানি নিন। অতঃপর তাতে একবার দুই গ্লাস পানি মিশিয়ে সেটি অর্ধেক না হওয়া পর্যন্ত ফুটিয়ে নিন। পানি হালকা গরম হয়ে এলে আপনি তাতে দুইটি কলার খোসা রেখে সারারাত ভিজিয়ে রাখুন। কলার খোসার পানি তৈরি হয়ে গেলে এটি পরদিন সকালে আপনি ভালো করে মিশিয়ে একটি স্প্রে বোতলে ভরে নেবেন। 
 
ব্যাস আপনার লম্বা চুলের জন্য কলার খোসার পানির একেবারে প্রস্তুত। কলার খোসা থেকে প্রাপ্ত এই পানি আপনি কন্ডিশনার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। কলার খোসার এই পানি আপনি চুলে স্প্রে করে কিছুক্ষণ রেখে দিন। পরে হালকা শ্যাম্পু করে চুল ধুয়ে ফেলুন। আপনি চুল ভালো করে চেপে তাতে কলার খোসার জল লাগাবেন।
 
এরপরে চুলে প্রায় বিশ মিনিটের জন্য জল রেখে দিন এবং সবশেষে ঠান্ডা পানিতে চুল ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। আপনি আপনার চুলে নিয়মিত নিয়ম করে কলার খোসার এই জল ব্যাবহারের চেষ্টা করুন। আপনার চুল যদি রুক্ষ শুষ্ক হয় তাহলে কলার খোসার সাহায্যে আপনি পেতে পারেন লম্বা সতেজ, ঝলমলে সুন্দর চুল।

প্রাকৃতিক উপায়ে আমাদের চুল সিল্কি হয় কিভাবে

কলা দিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে কিভাবে চুল সিল্কি করা যায় সে উপায় আপনি ইতিমধ্যেই জেনেছেন। আমাদের মাথার ত্বকে রয়েছে ফলিকল যার উপর ভিত্তি করে মাথার চুল উৎপন্ন হয়ে থাকে। আবার এই ফলিকল গুলোর মধ্যে কিছু কোষ থাকে যেগুলোকে আমরা পিগমেন্ট বলে থাকি। এই পিগমেন্ট গুলোর উপরেই আমাদের মাথার চুলের রঙ এবং উজ্জ্বলতা নির্ভর করে।
 
আমরা যে খাবার প্রতিনিয়ত গ্রহণ করি তার থেকে নিউট্রেশন এবং অক্সিজেন আমাদের রক্তের মাধ্যমে মাথার ফলিকলে পৌঁছায় এবং সেখানে থেকে আমাদের চুলে পৌঁছায়। তাই প্রাকৃতিক উপায়ে অর্থাৎ ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনি যদি আপনার চুলকে সিল্কি করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার দৈনন্দিন জীবনের খাদ্যাভ্যাস এর দিকে নজর দেওয়া বিশেষ জরুরী।

চুলের রুক্ষতা দূর করতে আপনি যা করবেন

চুলের যত্নে আপনি কলার খোসা  কিভাবে ব্যবহার করতে পারেন সে বিষয়ে আমরা ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছি। আপনি কিভাবে আপনার চুলের রুক্ষতা শুষ্কতা দূর করতে পারেন সে সম্পর্কে চলুন জেনে নেওয়া যাক-
  • আপনি প্রতিবার যখন চুল ধোবেন থিক ততবার  কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন
  • প্রতিদিন আপনার চুলে শ্যাম্পু করা থেকে বিরত থাকুন।
  • আপনি আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনের নির্বাচন করে ব্যবহার করুন।
  • আপনার চুলের সঠিক ময়শ্চারাইজ করবে এমন ধরনের ময়েশ্চারাইজিং পণ্য ব্যবহার করুন।
  • আপনি আপনার চুলকে কম করে ঘনঘন ব্লো ড্রাই করুন।
  • আপনার চুলের রুক্ষতা ভাবকে দূর করতে ফ্ল্যাট আইরন কার্লিং আইরন এবং বৈদ্যুতিক রোলার অবশ্যই এড়িয়ে চলবেন।
  • আপনার চুলের দীপ্তি এবং কোমলতা যোগ করতে আপনার চুলে তেল বা লিভ ইন কন্ডিশনেরও ব্যবহার করতে পারেন।
  • আপনি অবশ্যই রাসায়নিকভাবে চুলের চিকিৎসা করলে সেটি এড়িয়ে চলুন।
  • সূর্যের অতি রশ্মি এবং প্রচন্ড তাপ থেকে আপনার চুলকে রক্ষা করুন।
উপরিউক্ত পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করে আপনি খুব সহজে আপনার চুল থেকে রুক্ষ ভাবকে দূরে সরিয়ে দিতে পারেন। আর যদি বিশেষ কোনো শারীরিক সমস্যার জন্য আপনার চুল রুক্ষ হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেন।

চুলকে সিল্কি করতে পাকা কলা এবং মধুর প্যাক

কলা দিয়ে চুল সিল্কি করার বিশেষ একটি উপায় হলো পাকা কলা ও মধুর প্যাক।  পাকা কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে জৈব তেল। এছাড়াও পাকা কলাতে বিদ্যমান পটাশিয়াম এবং ভিটামিন ও পাওয়া যায় যা আমাদের চুলের শুষ্ক এবং রুক্ষভাবে অনেকটাই দূর করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। চুলের যত্নে পাকা কলা এবং মধুর প্যাক এর ব্যবহারটা কিভাবে করতে হয় চলুন তা জেনে নিন-
ব্যবহারবিধি
একটি পরিষ্কার পাত্রে একটি পাকা কলাকে আপনি ভালোভাবে চোটকে মিহি করে নিন। অতঃপর এতে দুই চামচ মধু ভালো করে মিশে একটি মিশ্রণ বা পেস্ট তৈরি করুন। এই মিশ্রণটি আপনার চুলে ৩০ মিনিটের মত রেখে তারপর শ্যাম্পু ব্যবহার করে আপনার চুল ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। আশা করছি উপরের টিপস গুলো আপনার রুক্ষ চুলের যত্ন নিতে বেশ সহায়ক হবে।

চুল পড়া ও ডগা ফাটা রোধে কলার ব্যবহার

কলা দিয়ে চুল সিল্কি করার উপায় তো জানলেন। এবার আপনাকে জানাবো চুল পড়া ও ডগা ফাটা দুর করতে কলা কিভাবে ব্যবহার করবেন। দেখুন, বর্তমানে দূষণের মাত্রা যে হারে বাড়ছে তাতে করে চুলের অবস্থা নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে আমাদের কমবেশি সকলেরই। যার ফলে চুল হয়ে যাচ্ছে রুক্ষ শুষ্ক এবং ঝরে পড়ছে প্রতিনিয়ত। অনেক সময় আমরা অনেক রাসায়নিক প্রোডাক্ট চুলে ব্যবহার করে থাকি।
 
ফলে কিছুদিন পর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দেয় ডগা ফাটা এবং চুল পড়ার সমস্যা। আপনার যদি ডগা ফাটা এবং চুল পড়ার সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনি ঘরে বসে একটিমাত্র উপাদানে কলার মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কলা দিয়ে তৈরি কিছু আরো কিছু হেয়ার প্যাক ---

কলা এবং ডিমের হেয়ার প্যাক
কলা এবং ডিমের হেয়ার প্যাকটি তৈরি করতে প্রথমে আপনি একটি পাকা কলা নিয়ে সেটি ভাল করে চটকে নিন। তারপর তাতে দুটো ডিম, এক চামচ অলিভ অয়েল এবং এক চামচ মধু মিশে একটি মিশ্রণ বা পেস্ট তৈরি করুন। এবার এই পেস্ট স্ক্যাল্পসহ চুলে লাগিয়ে এক ঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। কলা এবং ডিমের এই হেয়ার প্যাকটি নিয়মিত ব্যবহারে আপনার চুলের ঔজ্জ্বল্য যেমন বাড়বে তেমনি আপনার চুল হবে ঝলমলে এবং সিল্কি।
কলা এবং এলোভেরার হেয়ার প্যাক
এলোভেরা জেল এবং একটি পাকা কলা ভালো করে ব্লেন্ড করে পেস্ট করে নিন। তারপর পেজটি আপনার শ্যাম্পু করা চলে গোড়া থেকে নিচ পর্যন্ত লাগিয়ে রাখুন। প্রায় ২ ঘণ্টার মতো রেখে শ্যাম্পুতে ধুয়ে ফেলুন। কলা এবং এলোভেরার এই ব্যক্তি ব্যবহারের ফলে আপনার চুলের খুশকি সমস্যা দূর হবে সেই সাথে চুলের অকালপক্কতাও আটকাবে।

কলার হেয়ার প্যাক ব্যবহারের উপকারিতা

কলা দিয়ে চুল সিল্কি করার উপায়  আমরা এতক্ষণ জেনেছি। এবার চলুন জেনে নিই চুলের যত্নে কলার হেয়ার প্যাক ব্যবহারের উপকারিতা গুলো কি কি হতে পারে-
  • কলাতে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন যেমন- ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং সিলিকন। যা আমাদের চুলের জন্য ভীষণ উপকারী
  • কলাতে বিদ্যমান সিলিকন কম্পাউন্ড যা আপনার চুলের কিউটিকলকে মজবুত করে তুলতে পারে। এটি আপনার চুলের উপর তৈরি করে সুরক্ষায় স্তর ফলে সহজেই আপনার চুলের ক্ষতি হয় না।
  • কলায় রয়েছে এন্টি মাইক্রোবায়াল উপাদান। যা আপনার স্ক্যাল্পের ফাংগাল সংক্রমণ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে এবং খুশকির সমস্যা থেকেও আপনাকে মুক্তি দিতে পারে।
  • চুলের আগা ফাটা সমস্যাও সারিয়ে তোলে এই কলা। তাছাড়া চুলের যত্নে কলার খোসাও ব্যবহার করতে পারেন।

কলার হেয়ার প্যাক ব্যাবহারে  সতর্কতা

কলা দিয়ে চুল সিল্কি করার উপায় খানিক আগেই জেনেছেন। কিন্ত একটি কথা, আপনার চুলে কলা ব্যাবহারের পূর্বে কিছু সতর্কতা মেনে ব্যবহার করা উচিত। যেমন ধরুন-
  • আপনার ত্বকে এলার্জির সমস্যা আছে কিনা সেটি জানার জন্য কলা ব্যবহারের পূর্বে আপনি আপনার কোন এর ভেতরের অংশে অল্প পরিমাণ লাগিয়ে দেখুন।
  • কলার এই হেয়ার প্যাক আপনি যদি নিয়মিত নিয়ম করে ব্যবহার করেন তাহলে বেশ ভালো ফলাফল পাবেন।
  • আপনার চুলের সমস্যা যদি দীর্ঘস্থায়ী হয় সেক্ষেত্রে আপনি একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

কলা দিয়ে চুল সিল্কি করার উপায় প্রসঙ্গে আমার মন্তব্য

আমাদের দেশের একটি সহজলভ্য ফল এবং সারা বছরই আমাদের দেশে এটি পাওয়া যায়। এই কলা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য যেমন উপকারী তেমনি চুলের জন্যও ভীষণ উপকারী। তাছাড়া কলাতে কার্বোহাইড্রেট পটাশিয়াম প্রাকৃতিক তেল এবং ভিটামিন থাকে যা আপনার চুলকে গোড়া থেকে মোলায়েম, ঝলমলে এবং উজ্জ্বল করে তোলে। 

এতক্ষণ আমরা কলার যে হেয়ার প্যাক গুলো নিয়ে আলোচনা করলাম আপনি যদি এগুলি নিয়মিত ব্যবহার করেন তাহলে আপনার চুলের জেল্লা বৃদ্ধির সাথে সাথে চুলের পুষ্টি ও দ্বিগুণ বৃদ্ধি পাবে। তাছাড়া আমরা আমাদের চুলকে তিনটি ঘরোয়া উপায়ে সিল্কি করে তুলতে পারি। যেমন- নিয়মিত চুলের যত্ন করে ,পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করে এবং বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url