বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয়
বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় জানেন কি? বিড়াল কামড়ালে কয়টি ভ্যাকসিন দিতে হয় সে সম্পর্কে আপনি জানতে চান? তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ বিড়াল কামড়ালে কয় দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয়
- বিড়াল কামড়ালে কয় দিনের মধ্যে টিকা দেওয়া উচিত
- বিড়ালের কামড়ের পর করণীয়
- বিড়ালের আঁচড়ে কি ভ্যাকসিন দিতে হয়?
- বিড়াল কামড়ালে কয়টি ভ্যাকসিন দিতে হয়
- বিড়াল আচর দিলে কি ক্ষতি হয়
- বাচ্চা বিড়াল কামড়ালে কি ভ্যাকসিন দিতে হয়
- জলাতঙ্ক রোগের টিকা কত দিনের মধ্যে দিতে হয়
- বিড়ালের নখের আচরে কি সমস্যা হয়
- বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে জলাতঙ্ক হয়
- বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিনের নাম
- বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায়
- একবার রেবিস টিকা দেওয়ার পর কতদিন পর্যন্ত কুকুর-বিড়ালের কামড়ের টিকা দিতে হয় না
- রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম
- রেবিস ভ্যাকসিন এর দাম বাংলাদেশে
- বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় এই সম্পর্কে আমার মন্তব্য
বিড়াল কামড়ালে কয় দিনের মধ্যে টিকা দেওয়া উচিত
বিড়াল কামড়ালে ঠিক ২৪ ঘন্টার মধ্যে টিকা দিতে হয়। কারণ, এসব পোষ্য প্রাণীর কামড়ে জলাতঙ্ক হওয়ার আশঙ্কা সবথেকে বেশি থাকে। আর তাই জলাতঙ্ক থেকে রেহাই পেতে আপনাকে যত দ্রুত সম্ভব মাংসপেশী বা চামড়ায় টিকা নিতে হবে। সাধারণত বাঁদুর, ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, খরগোশ, কুকুর, বন্য গেছ প্রাণী, বিড়াল ইত্যাদি পশু কামড়ালে জলাতঙ্ক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আরো পড়ুনঃ চিরতরে ছারপোকা দূর করার উপায়
তবে শিশুর ক্ষেত্রে কামড়ানোর ১ম, ৩য়, ৭ম, ১৪তম ও ২৮তম দিনে টিকা দিতে হয়। একটি কথা মনে রাখবেন, এই সমস্ত প্রাণী আপনার চামড়ায় যদি শুধুমাত্র স্পর্শ করে বা শরীর অক্ষত থাকে সেক্ষেত্রে টিকার কোন প্রয়োজন নেই। তবে, রক্তপাতহীন ক্ষত হলেও আপনাকে প্রাথমিক চিকিৎসার পাশাপাশি ভ্যাকসিন নিতে হবে। বিড়ালের কামড়ে সাধারণত দুই ধরনের ভ্যাকসিন নেওয়া যায়।
একটি হল আপনি চামড়ায় টিকা নিতে পারেন এবং অন্যটি হলো আপনি মাংসপেশিতে টিকা নিতে পারেন। চামড়ায় টিকা দেওয়াটা বেশি কার্যকর এবং এতে আপনার খরচও কম হবে, অপরদিকে মাংসপেশিতে টিকা নিলে খরচ বেশি পড়বে এবং এক্ষেত্রে একজন দক্ষ চিকিৎসক লাগবে টিকা দেওয়ার জন্য। বিড়াল কামড়ালে টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন ধরুন,
- বিড়ালে কামড়ানোর 24 ঘন্টার মধ্যেই আপনি টিকার গ্রহণ করবেন। যদি ২৪ ঘন্টার মধ্যে টিকার গ্রহণে ব্যর্থ হন সেক্ষেত্রে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে টিকা গ্রহণ করবেন।
- বিগত পাঁচ বছরে এই রোগের কোন টিকা দেওয়া হয়নি এমন ব্যক্তি বা শিশুর ক্ষেত্রে কামড়ানোর ১ম দিন, ৩য় দিন, ৭ম দিন, ১৪তম দিন এবং ২৮তম দিনে টিকা গ্রহণ করতে হবে।
- যদি পাঁচ বছরের মধ্যে আপনি কোন টিকা নিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে প্রথম এবং তৃতীয় দিনে বুস্টার ডোজ নিলেই চলবে।
- আপনি যদি ইমিউনোগ্লোবিন টিকা না পান তাহলে প্রথমদিনেই আপনার দুই পেশীতে ২টি টিকা নিতে হবে।
- এরপর ৩য়, ৭ম, ১৪তম এবং ২৮তম দিনে বাকি টিকা গ্রহণ করবেন।
- গৃহপালিত পশুর ক্ষেত্রে কামড়ানোর ১০ দিন পর যদি প্রাণী সম্পন্ন সুস্থ থাকে তাহলে ১৪তম এবং ২৮তম দিনের টিকা না নিলেও সমস্যা নেই।
তদুপুরি, রোগের সংক্রমণ পরিস্থিতি ও বিড়ালের স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনা করে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গ্রহণ করা উচিত।
বিড়ালের কামড়ের পর করণীয়
বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় তা ইতিমধ্যেই আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি। বিড়ালের কামড়ের পরে প্রাথমিকভাবে আপনার কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। কারণ, বিড়ালের কামড় আপনার সংক্রমণ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। এবার চলুন বিড়াল কামড়ের পর আপনি প্রাথমিকভাবে কি কি করবেন সে সম্পর্কে জেনে নিন--
ক্ষত পরিষ্কার করুন- দ্রুত ক্ষতস্থান ধোয়া বিড়ালের কাপড়ের পর আপনি যত দ্রুত সম্ভব পারেন ক্ষতস্থানটি পরিষ্কার করে ফেলুন। এর জন্য প্রথমেই আপনি সাবান এবং পানিতে ক্ষতস্থানটি ভালোভাবে ধুয়ে নিন এতে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই কম হবে। মনে রাখবেন, জলাতঙ্ক বা রেবিস ভাইরাস এর জীবাণু রোধে সবথেকে বেশি কার্যকরী হলো সাবান পানি। অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক সলিউশনও এই জীবাণু ধ্বংস করতে পারে না।
- ধোয়ার পর ক্ষত স্থানে আপনি অ্যান্টিসেপটিক সলিউশন যেমন- হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, সেভলন বা ডেটল ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে স্যাভলন ও ডেটল বেশি কার্যকর।তবে,আপনি কোন রকম মলম বা ক্রিম ব্যবহার করবেন না।
- ব্যান্ড এইড ব্যবহার করুন রক্তপাত হলে বিড়ালের কামরে রক্তপাত হলে বন্ধ করতে আপনি সরাসরি ব্যান্ড এইড লাগিয়ে নিন। কারণ, বাতাস চলাচল বন্ধ হলে অনেক সময় আপনার ক্ষতস্থানটি ধনুষ্টংকারের জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হতে পারে।
- ক্ষতস্থান পরিষ্কার রাখুন বিড়ালের কামড়ানো স্থানটি আপনি সব সময় শুকনো এবং পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করবেন। এতে করে আপনার সংক্রমণের ঝুঁকি কিছুটা কম হতে পারে।
- বিড়াল কামড়ানোর পরে আপনি ক্ষতস্থানটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করুন। আপনার ক্ষতস্থানে লালচে,ফোলাভাব, ব্যাথা বা অন্য কোন লক্ষণ দেখা দিলে আপনি দ্রুত একজন চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
- যদি বিড়ালের কামড়ের গভীরতা বেশি হয় এবং ক্ষতস্থানটি বেশি রক্তাক্ত হয়,সেক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা অত্যন্ত জরুরি।
- ক্ষতস্থান থেকে যদি অতিরিক্ত রক্তপাত হয় বা রক্ত প্রবাহ বন্ধ না হয় তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
- বিড়ালের কামড়ানোর স্থানে যদি অতিরিক্ত ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব করেন সেক্ষেত্রে এটি সংক্রমণ বা অন্য কোন জটিলতার লক্ষণ হতে পারে।
- রেবিস টিকাঃ আপনাকে কামড়ানো বিড়ালটি যদি র্যাবিশ আক্রান্ত হয় বা টিকা দান না করা থাকে তাহলে আপনার জন্য র্যাবিসের টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক। এ ব্যাপারে একজন চিকিৎসকই আপনাকে সঠিক সময় টিকা নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন।
- অ্যান্টিবায়োটিকসঃ প্রয়োজনে চিকিৎসক আপনার ক্ষত স্থানের সংক্রমণ প্রতিরোধে এন্টিবায়োটিকও প্রেসক্রাইব করতে পারেন।
বিড়ালের আঁচড়ে কি ভ্যাকসিন দিতে হয়?
আপনারা অনেকেই জানতে চান বিড়ালের আঁচড়ে ভ্যাকসিন দিতে হয় কিনা। দেখুন সাধারনভাবে বিড়ালের আঁচড়ে সরাসরি ভ্যাকসিন দেওয়ার তেমন কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই। কিন্তু বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে আপনার ভ্যাকসিন বা অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এবার চলুন আপনি কি লক্ষণ দেখে বুঝবেন বিড়ালে কামড়ালে আপনাকে ভ্যাকসিন নিতে হবে সে সম্পর্কে জেনে নিন--
ইনফেকশনের লক্ষণ
- জ্বালা বা লালচে ভাবঃ আপনার আঁচড়ের স্থানটি যদি লাল হয়ে ফুলে যায় জ্বালা করতে থাকে তাহলে এটি ইনফেকশনের চিহ্ন হতে পারে।
- ফোসকা বা পুঁজের সৃষ্টিঃ আপনার আচরের স্থানে যদি বা ফুচকা দেখা যায় তাহলে বুঝবেন এটি এক ধরনের ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন এবং এতে চিকিৎসার প্রয়োজন।
- জ্বরের অনুভূতিঃ বিড়ালের আঁচড়ের পরে যদি আপনার শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায় বা জ্বর আসে,সেক্ষেত্রে বুঝে নিতে হবে এটি ইনফেকশনের চিহ্ন হতে পারে।
- অস্বস্তি বা ব্যথাঃ বিড়ালে আঁচড়ের ক্ষতস্থানটি যদি প্রচন্ড ব্যথা সৃষ্টি করে তাহলে এটি গুরুতর ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে।
- অন্যান্য লক্ষণঃ বিড়ালের আঁচড়ের পর আপনার শরীরের অন্যান্য অংশে কোন অস্বাভাবিক লক্ষণ যদি বুঝতে পারেন যেমন- মাথাব্যথা, মাংসপেশির ব্যথা বা অবসাদ এমনটা হলে বুঝবেন আপনাকে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।
- টেটানাসঃ বিড়ালের কামড়ের আঁচলটি যদি গভীর হয় এবং আপনার টেটানাসের জন্য ভ্যাকসিনেশন করা না থাকে তাহলে আপনার টিটেনাস ভ্যাকসিন নেওয়া প্রয়োজন হতে পারে। সাধারণত টেটনাসের জন্য প্রতি ১০ বছরে একটি ডোজ গ্রহণ করা উচিত।
রেবিস আক্রান্ত বিড়াল
বিড়ালের আঁচড়ের পর আপনাকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে বিড়ালটি রেবিসে আক্রান্ত কিনা। যদি বিড়ালটি রেবিসে আক্রান্ত হয়,সে ক্ষেত্রে আপনাকে রেবিসের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা এবং ভ্যাকসিনেশন গ্রহণ করতে হবে। এখন আপনি কিভাবে বুঝবেন বিড়ালটি রেবিসে আক্রান্ত কিনা। এটি বোঝার জন্য কতগুলো লক্ষণ রয়েছে। যেমন-
- বিড়ালের আচরণে পরিবর্তন আসবে এবং আগ্রাসী হয়ে উঠবে
- বিড়ালটি ঘনঘন শ্বাস নিতে থাকবে।
- বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা ঝরবে এবং এর গলার স্বরে পরিবর্তন আসবে।
- মনে রাখবেন,র্যাবিশে আক্রান্ত বিড়াল সাধারণত বেশি দিন বাঁচে না। তবে বিড়ালটি যদি ৮-১০ দিন সুস্থ থাকে তাহলে বুঝবেন বিড়ালটির আক্রান্ত ছিল না।
যদি এই লক্ষণ গুলি আপনি অনুভব করেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হবে।আর বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় ইতিমধ্যেই আপনি তা জেনে গেছেন। এর জন্য আপনি একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন তিনি আপনার সঠিক পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন এবং প্রয়োজনে ভ্যাকসিন বা অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেবেন।
বিড়াল কামড়ালে কয়টি ভ্যাকসিন দিতে হয়
বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় তা উপরের আলোচনায় জেনেছেন। এবার আপনাকে জানাব বিড়াল কামড়ালে কয়টি ভ্যাকসিন দিতে হয় সে সম্পর্কে। আসলে বিড়াল কামড়ালে কতটি ভ্যাকসিন দেয়া প্রয়োজন তা মূলত নির্ভর করে বিড়ালের কামড়ের প্রকৃতি এবং বিড়ালের স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিশেষ করে বিড়ালটি যদি রেবিস আক্রান্ত হয় সেক্ষেত্রে।
সাধারণত বিড়ালের আঁচড়ে দুইটি প্রধান ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হয়ে থাকে এর একটি হল রেবিস ভ্যাকসিন এবং অন্যটি টিটেনাস ভ্যাকসিন। এবার চলুন এই দুই ধরনের ভ্যাকসিনের ডোজ সম্পর্কে আপনাকে জানিয়ে দেই--
রেবিস ভ্যাকসিন এর ডোজঃ আপনাকে বিড়ালে কামড়ানোর পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ২৪ ঘন্টার মধ্যে এই রেবিস ভ্যাকসিন নিতে হবে। রাবিশ ভ্যাকসিনের ডোজ গুলো হল -
- প্রথম ডোজঃ আপনাকে যেদিন বিড়াল কামড়াবে ঠিক ওই দিন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রথম গ্রহণ করবেন।
- দ্বিতীয় ডোজঃ প্রথম ডোজ গ্রহণের তিনদিন পর আপনি রেবিস ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজটি গ্রহণ করবেন।
- তৃতীয় ডোজঃ আপনি যেদিন প্রথম ডোজ নিয়েছেন সেই হিসেবে প্রথম ডোজের ঠিক ৭ দিন পরে রেবিস ভ্যাকসিনের তৃতীয় ডোজ গ্রহণ করবেন।
- চতুর্থ ডোজঃ প্রথম ডোজ নেওয়ার ঠিক ১৪ দিন পর আপনি র্যাবিনেস ভ্যাকসিনের সর্বশেষ ডোজ অর্থাৎ এই চতুর্থ ডোজটি গ্রহণ করবেন।
ভ্যাকসিনের নাম
- Rabavert
- Imovax Rabies
টেটানাস ভ্যাকসিন এর ডোজঃ বিড়ালে কামড়ানোর স্থানটি যদি গভীর হয় এবং আপনার টেটানাসের জন্য ভ্যাকসিনেশন না নেওয়া থাকলে, সেক্ষেত্রে টেটানাস ভ্যাকসিন প্রয়োজন হতে পারে। টিটেনাস ভ্যাকসিনের দুইটি ডোজ রয়েছে। যেমন-
- প্রথম ডোজঃ আপনার যদি বিগত ১০ বছরের মধ্যে টিটেনাস ভ্যাকসিন না নেওয়া থাকে,সেক্ষেত্রে টিটেনাস ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হলে একটি ডোজ গ্রহণ করতে হবে।
- দ্বিতীয় ডোজঃ সাধারণত প্রতি ১০ বছর পরে একটি ডোজ কোন পুনঃপ্রদান করা হয়।
ভ্যাকসিনের নাম
- Tdap (Tetanus,Diphtheria,Pertussis)
- Td (Tetanus,Diphtheria)
বিড়ালের কামড়ের পরে সঠিক ভ্যাকসিনেশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ করে রেবিস এবং টিটেনাস এর ক্ষেত্রে। শুধু ভ্যাকসিন নয়, বিড়ালের কামড়ের স্থান অতিরিক্ত ইনফেক্টেড হলে এন্টিবায়োটিকসও আপনাকে দেওয়া হতে পারে। আর সঠিক ভ্যাকসিনেশন নিশ্চিত করতে আপনি একজন চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
বিড়াল আচর দিলে কি ক্ষতি হয়
বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় তা আজকের আলোচনা থেকে জেনেছেন নিশ্চয়ই।বিড়ালের আঁচড়ে বা বিড়াল কামড়ালে আপনার বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি বা সমস্যা হতে পারে তা কি জানেন? যা আপনার শরীরে ইনফেকশন থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। সম্মানিত পাঠক, এবার চলুন বিড়াল আঁচড় দিলে আপনার কি কি ক্ষতি হতে পারে তা জেনে নিন-
ইনফেকশন
- বিড়ালের আতরের মাধ্যমে আপনার শরীরে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করতে পারে এবং ক্ষতস্থানে ইনফেকশন সৃষ্টি করতে পারে।
- এই ইনফেকশনের কারণে আপনার আসরের স্থানটি লাল হয়ে ফুলে যেতে পারে।
- কখনো কখনো ইনফেকশনের কারণে ক্ষতস্থানে পুঁজ এবং ফোসকা সৃষ্টি হতে পারে।
হেলিন ক্যাট স্ক্র্যাচ ফিভার
- বিড়ালের আঁচড়ে এক বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে যা Bartonella henselae নামে পরিচিত এবং এই ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে আপনার ফেলিন ক্যাট স্ক্রাচ ফিভার দেখা দিতে পারে।
- এই ব্যাকটেরিয়ার প্রভাবে আপনার জ্বর মাথাব্যথা এবং অন্যান্য শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিতে পারে।
- শুধু তাই নয়, এই ব্যাকটেরিয়ার কারণে আপনার আঁচড় এর নিকটবর্তী লসিকা গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে।
- অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া যেমন-স্টাফাইলকক্কাস বা স্ট্রেপ্টোকোক্কাস আঁচড়ের মাধ্যমে আপনার শরীরে সংক্রমিত হতে পারে।
প্রচন্ড ব্যথা ও অস্বস্তি ভাব
- বিড়ালের আঁচলের কারণে আপনার ক্ষতস্থানে প্রচন্ড ব্যথা এবং অস্বস্তি হতে পারে যা আপনার দৈনন্দিন কার্যকলাপকে প্রভাবিত করতে পারে।
- এলার্জির প্রতিক্রিয়া
- বিড়ালের আতরের ফলে আপনার শরীরে এলার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে এবং এটি আপনার আঁচড়ের স্থানেও প্রভাব ফেলতে পারে।
- আঁচড়ের স্থানে চুলকানি অনুভব করবেন এবং ক্ষতস্থানটি ফুলে যেতে।
ঘূর্ণনশীল আঘাত
- বিড়ালের আঁচড়ের পর আপনার ঘূর্ণনশীল আঘাতের সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।বিশেষ করে যদি আচরটি গভীর হয় এবং আপনি যথাযথভাবে চিকিৎসা না করান।
- বিড়াল আচড় দিলে আপনার শরীরে কি প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে বা কি ক্ষতি হতে পারে আশা করছি বুঝতে পেরেছেন। বিড়ালের আঁচড়ের পর যদি এই সমস্ত লক্ষণ গুলো দেখা যায়, তাহলে অতি দ্রুত আপনি একজন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
বাচ্চা বিড়াল কামড়ালে কি ভ্যাকসিন দিতে হয়
বিড়াল কামড়ালে কয় দিনের মধ্যে টিকা দেওয়া উচিত তা ইতিমধ্যেই জেনেছেন। আপনারা অনেকেই জানতে চান বাচ্চা বিড়াল কামড়ালে ভ্যাকসিন নিতে হয় কিনা। দেখুন, বাচ্চা বিড়াল কামড়ালেও সাধারণত র্যাবিস বা টিটেনাস এর মত ঝুঁকি থেকেই যায়। তবে এই ঝুঁকি গুলো বিভিন্ন বিষয়ের উপরে নির্ভর করে।
যদি কামড়ের পরে বিড়ালটির রেবিস বা টিটেনাসের ঝুঁকি থাকে তখন আপনার জন্য একটি নির্দিষ্ট ভ্যাকসিনেশনের প্রয়োজন হতে পারে।কিন্তু বিড়ালটি যদি টিকা দান করা থাকে সেক্ষেত্রে রেবিশ বা টিটেনাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম থাকে।তবে, একটি বিষয় খেয়াল রাখবেন আপনার কামড়ের স্থানটি যদি গভীর হয় বা ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দেয়,
তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। রেবিস ভ্যাকসিন সাধারণত কামড়ের পর তাড়াতাড়ি ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিতে হয় যদি বিড়ালটির রেবিশের ঝুঁকি থাকে। সাধারণত চারটি ডোজে রেবিশের টিকা দেওয়া হয় যা আমরা ইতিমধ্যেই আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি।
অন্যদিকে আপনার টিটেনাস ভ্যাকসিনেশনের স্ট্যাটাসের উপর নির্ভর করে দেওয়া হয় এই টিকা। বিশেষ করে আপনার কামড়ের স্থানটি যদি দীর্ঘস্থায়ী গভীর হয় এবং আপনার শেষের পর দশ বছর পেরিয়ে গেছে সেক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিনটির প্রয়োজন পড়ে। আশা করছি এবার বুঝতে পেরেছেন বাচ্চা বিড়াল কামড়ালে ভ্যাকসিন নেওয়া কেন প্রয়োজন।
জলাতঙ্ক রোগের টিকা কত দিনের মধ্যে দিতে হয়
বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় তা তো জানেন। বিড়ালের কামড়ের মত ঠিক জলাতঙ্ক রোগের টিকাও সাধারণত কামড়ের বা সংক্রমণের পরপরই দ্রুততম সময়ে দেওয়া উচিত। মূলত কামড়ের পর প্রথম ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আপনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করা উচিত। তবে এই সময়ের মধ্যে যদি ভ্যাকসিন নিতে না পারেন যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু
করা যাবে ততই আপনার জন্য ভালো। সাধারণভাবে জলাতঙ্ক রোগের টিকা প্রথম ডোজে কামড়ের দিন দেওয়া হয় এবং এটি একটি সিরিজের অংশ হিসেবে চারটি ডোজে সম্পূর্ণ করা হয়।প্রথম ডোজের পর ৩য়, ৭ম এবং ১৪তম দিন পরে পরপর বাকি ডোজ গুলো পর্যায়ক্রমে দেওয়া হয়। মনে রাখবেন, তাড়াতাড়ি চিকিৎসা
শুরু করা হলে এই ভ্যাকসিনটি সবচেয়ে কার্যকর এবং জলাতঙ্ক রোগের বিরুদ্ধে আপনার সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারবে। এছাড়া আপনার কামড় যদি খুবই গুরুতর হয় সেক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসার অংশ হিসেবে র্যাবিস ইমিউনোগ্লোবুলিনও দেওয়া হতে পারে। জলাতঙ্ক রোগের টিকা কত দিনের মধ্যে দিতে হয় আশা করছি উত্তরটি পেয়ে গেছেন।
বিড়ালের নখের আচরে কি সমস্যা হয়
বিড়াল কামড়ালে কয়টি ভ্যাকসিন দিতে হয় তা ইতিমধ্যেই জেনেছেন আজকের আলোচনায়। বিড়ালের কামড় যেমন ক্ষতিকর, ঠিক তেমনি এর নখের আঁচড়ও আপনার জন্য ক্ষতিকর। বিড়ালের নখের আঁচড়ের কারণে আপনার নানা ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন-
- বিড়ালের নখের আঁচড়ের মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া আপনার শরীরে প্রবেশ করে ক্ষতস্থানে ইনফেকশন সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে আঁচড়ের স্থান লালচে,ফুলে যাওয়া এবং পুজ বা ফোসকা সৃষ্টি হতে পারে।
- বিড়ালের নখের আঁচড়ের কারণে এই ইনফেকশন গুলি সাধারণত আপনার দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা বা অস্বস্তির কারণ হতে পারে।
- এছাড়া বিড়ালের নথের আচরের মাধ্যমে Bartonella henselae নামক ব্যাকটেরিয়া আপনার শরীরে প্রবেশ করে ফেলিন ক্যাট স্ক্র্যাচ ফিভার সৃষ্টি করতে পারে।
- বিড়ালের নখের আঁচড়ের মাধ্যমে আপনার শরীরে Bartonella henselae ব্যাকটেরিয়া প্রবেশের ফলে আপনার জ্বর, মাথা ব্যথা, লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- বিড়ালের নখের আঁচড় যদি গুরুতর হয় সেক্ষেত্রে আপনার শরীরে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে জলাতঙ্ক হয়
বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে জলাতঙ্ক হতে পারে এই প্রশ্ন আমাদের অনেকেরই। তাহলে জেনে রাখুন, বিড়াল কামড়ানোর পর সাধারণত ১ থেকে ৩ মাসের মধ্যে আপনার শরীরে জলাতঙ্কের লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যদিও জলাতঙ্ক হওয়ার এই সময়কাল কামড়ের স্থান এবং ভাইরাসের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে কিছুটা কম বেশি হতে পারে।
জলাতঙ্ক ভাইরাস কামড়ের মাধ্যমে আপনার শরীরে প্রবেশ করার পর এটি ধীরে ধীরে স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে আপনার মস্তিষ্কে পৌঁছায়,যা সাধারণত ১ থেকে ৩ মাসের মধ্যে জলাতঙ্কের উপসর্গ সৃষ্টি করতে পারে। ভাইরাসটি কামড়ের স্থান থেকে আপনার স্নায়ুতন্ত্রে প্রবেশ করে এবং এর উপসর্গ হিসেবে আপনার জ্বর, মাথাব্যথা, শারীরিক অসুস্থতা এবং আচরণগত পরিবর্তন দেখা দিতে পারে।
আর এই জলাতঙ্কের উপসর্গ একবার শুরু হলে কোন চিকিৎসাই তেমন কার্যকরী হয় না এবং এটি এক পর্যায়ে প্রাণঘাতী রোগে রূপ নেয়। তাই বিড়াল কামড়ালে ঠিক কতটি টিকা নেওয়া উচিত তা আপানকে জানিয়ে দিয়েছি। বিড়ালের কামড়ের পর জলাতঙ্কের ঝুঁকি কমাতে দ্রুত ভ্যাকসিনেশন এবং সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ অতীব জরুরী।
বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিনের নাম
বিড়াল কামড়ে বা আঁচড়ে দিলে পরবর্তী চিকিৎসা হিসেবে এর ভ্যাকসিনের নাম গুলো আমাদের সকলেরই জেনে রাখা দরকার। এবার চলুন বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিনের নাম গুলো কি কি জেনে নিন-
ভ্যাকসিন এর নামঃ বিড়ালের কামড়ের পর সাধারণত জলাতঙ্কের প্রতিষেধক হিসেবে রেবিস ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হয়। এই রেবিস ভ্যাকসিনের প্রধান নাম গুলি হল-
- Rabavert (ওয়ালগ্রেভ্স, জার্মানি)
- Imovax Rabies (সানোফি,ফ্রান্স) এবং
- Rabivac (ভারত)
উপরিউক্ত এই ভ্যাকসিন গুলি সাধারণত জলাতঙ্ক ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে এবং কামড়ের পর প্রাথমিকভাবে দেওয়া হয়। এই ভ্যাকসিনগুলি আবার চারটি ডোজে প্রদান করা হয়। এর প্রথম ডোজ কামড়ের দিন, দ্বিতীয় তৃতীয় এবং চতুর্থ ডোজ যথাক্রমে প্রথম ডোজের ৩য় ৭ম এবং ১৪তম দিন পর দেওয়া হয়।
বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায়
বিড়াল কামড়ালে কয় দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় এটা জানা যেমন জরুরী, তেমনি বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায় এটি জানাও জরুরি। বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায় তা আমরা অনেকেই জানিনা। বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিন কোথায় পাওয়া যায় এটি জানা থাকলে আপনি অতি অল্প সময়ের মধ্যে এই ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে পারবেন। এবার চলুন বিড়ালের কামড়ের ভ্যাকসিন আপনি কোথায় কোথায় পাবেন সে সম্পর্কে জেনে নিন-
- সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজঃ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজের জরুরি বিভাগ এবং ইনফেকশন কন্ট্রোল ইউনিট থেকে আপনি রেবিস ভ্যাকসিন পেয়ে যাবেন। তাছাড়া বড় বড় শহরের হাসপাতাল গুলিতে প্রাথমিক চিকিৎসা ও ভ্যাকসিনেশনও দেওয়া হয়।
- জেলা হাসপাতালঃ সাধারণত গ্রামের দিকে বা ছোট শহরগুলির জেলা হাসপাতাল থেকেও আপনি র্যাবিস ভ্যাকসিন পেতে পারেন।
- স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও ক্লিনিকঃ বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং কিছু বেসরকারি ক্লিনিকেও আপনি এই জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন পেতে পারেন।
- প্রাইভেট ক্লিনিক ও হাসপাতালঃ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল এবং প্রাইভেট ক্লিনিক গুলিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা রেবিস ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়। আপনি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে এই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে তুলনামূলকভাবে দ্রুত সেবা পাবেন।
- ইমারজেন্সি মেডিকেল সেন্টারঃ বিভিন্ন শহরে ইমার্জেন্সি মেডিকেল সেন্টারে দ্রুত প্রতিকারমুলক চিকিৎসার জন্য র্যাবিশ ভ্যাকসিন পাওয়া যায়। আপনি চাইলে অতি দ্রুত সময়ে ইমারজেন্সি মেডিকেল সেন্টার থেকেও এই ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে পারেন।
- ট্রাভেল ক্লিনিক ও ভ্যাকসিনেশন সেন্টারঃ যারা বিদেশে ভ্রমন করেন তাদের জন্য ট্রাভেল ক্লিনিক এবং বিশেষ ভ্যাকসিনেশন সেন্টার গুলোতে জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন পাওয়া যায়।
- জেলা স্বাস্থ্য বিভাগঃ আপনি আপনার জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ বা স্বাস্থ্য অফিসে যোগাযোগ করেও জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন পেতে পারেন। সেখানে না পেলেও তারা আপনাকে এই ভ্যাকসিনের প্রাথমিক তথ্য এবং কোথায় পাবেন সে সম্পর্কে নির্দেশনা দিয়ে সাহায্য করবে।
- জনস্বাস্থ্য প্রোগ্রাম ও ক্যাম্পঃ অনেক সময় স্বাস্থ্য সংস্থা বিশেষ ক্যাম্পের মাধ্যমে জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন বিতরণ করে থাকে।
- ফার্মেসিঃ আপনার হাতের নাগালে বড় কোন ফার্মেসী বা হাসপাতালের ফার্মেসিতে এই রেবিস ভ্যাকসিনের সরবরাহ থাকতে পারে। যদিও এটি সাধারণত হাসপাতাল বা ক্লিনিক এর মাধ্যমে সরাসরি প্রদান করা হয়।
রেবিস ভ্যাকসিন প্রদানকারী বাংলাদেশের কিছু হাসপাতালের নাম--
- ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
- রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
- খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
- বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
- সিলেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
- স্যার সলিমুল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
- চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং
- ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।
আপনি চাইলে আপনার সুবিধামতো এই সরকারি হাসপাতালগুলো থেকেও জলাতঙ্ক ভ্যাকসিন সংগ্রহ করতে পারেন।
একবার রেবিস টিকা দেওয়ার পর কতদিন পর্যন্ত কুকুর-বিড়ালের কামড়ের টিকা দিতে হয় না
একবার টিকা দেওয়ার পর ঠিক কতদিন পর্যন্ত আপনাকে কুকুর বিড়ালের কামড়ের টিকা নিতে হয় না জানেন কি? হয়তো জানেন না। তাহলে জেনে রাখুন, একবার রেবিস টিকা নেওয়ার পর সাধারণত ৫ বছর পর্যন্ত অতিরিক্ত কোন টিকা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এই সময়ের মধ্যে আপনাকে কুকুর বা বিড়াল কামড়ালেও পুনরায় নতুন করে ভ্যাকসিন নিতে হবে না,
কারণ, প্রাথমিক টিকাই আপনাকে যথেষ্ট সুরক্ষা প্রদান করবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে যেমন ধরুন, আপনার টিকার তারিখ পেরিয়ে গেছে সেক্ষেত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়। তখন আপনি তৎক্ষণাৎ একজন চিকিৎসকের সাথে অতিরিক্ত টিকার গ্রহণের বিষয় পরামর্শ করে নিতে পারেন।
রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম
রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়মগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ, এটি একটি প্রাণঘাতী রোগের বিরুদ্ধে কার্যকরী প্রতিরোধ গড়ে তোলে।রেবিস ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়মগুলি প্রধানত দুটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। এবার চলুন এই ভ্যাকসিন দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন-
- প্রথম ডোজঃ আপনাকে যেদিন কামড়াবে ঠিক সেইদিন এই ডোজ নিতে হবে।
- দ্বিতীয় ডোজঃ প্রথম ডোজের ঠিক ৩ দিন পর।
- তৃতীয় ডোজঃ প্রথম ডোজের ৭ দিন পর তৃতীয় ডোজটি গ্রহণ করতে হবে।
- চতুর্থ ডোজঃ প্রথম ডোজ গ্রহণের 14 দিন পর অর্থাৎ দুই সপ্তাহ পরে দেওয়া হয়।
- প্রথম ডোজঃ প্রথম ডোজ নির্দিষ্ট সময় মতো শুরু করা হয়।
- দ্বিতীয় ডোজঃ প্রথম ডোজ গ্রহণের ঠিক ৭ দিন পরে দ্বিতীয় ডোজ প্রদান করা হয়।
- তৃতীয় ডোজঃ প্রথম ডোজের ২১ বা ২৮ দিন পরে তৃতীয় ডোজটি প্রদান করা হয়।
- ইন্ট্রা মাসকুলার (IM)- এই পদ্ধতিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কাদের পেশীতে ভ্যাকসিন ইনজেক্ট করা হয়।
- ইন্ট্রা ডারমাল (ID)- এই পদ্ধতি অনুযায়ী কিছু দেশে ডোজে ভ্যাকসিন প্রদান করা হয়।
- যদি পূর্বের ভ্যাকসিনেশন পাঁচ বছর বা তার থেকে বেশি সময় আগে দেওয়া হয় অথবা টিকার তারিখ অতিক্রম করে, সেক্ষেত্রে কোন ভ্যাকসিনেশনের প্রয়োজন হতে পারে।
রেবিস ভ্যাকসিন এর দাম বাংলাদেশে
রেবিস ভ্যাকসিনের দাম মূলত নির্ভর করে এই ভ্যাকসিনটি কোন ব্র্যান্ড থেকে তৈরি করা হয়েছে তার ওপর। বাংলাদেশে আপনি বিভিন্ন ধরনের কোম্পানির রেবিস ভ্যাকসিন পাবেন। এবার চলুন আপনি কোন কোম্পানির ভ্যাকসিন কত দামে পাবেন তার একটি তালিকা দেখে নিন--
কোম্পানির নাম | ভ্যাকসিনের নাম | দাম |
---|---|---|
Popular Pharmaceuticals Ltd. | Rabivax Vaccine (2.5 IU/MI) | ৪৫০-৫০০ টাকা |
Incepta | Rabix Vaccine (2.5 IU/Ml) | ৫০০ টাকা |
Synovia Pharma PLC | Verorab Vacine (2.5 IU/Ml) | ১০০০ টাক |
এই ভ্যাকসিনগুলো কেনার সময় অবশ্যই আপনি আসল হলফনামা দেখে কিনবেন, এতে করে আপনার ঠকার সম্ভাবনা থাকবে না। কারণ অনেক সময় অনেক অসাধু ব্যবসায়ীরা নকল ভ্যাকসিনো বিক্রি করে থাকে। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় এই সম্পর্কে আমার মন্তব্য
বিড়াল কামড়ালে কত দিনের মধ্যে টিকা দিতে হয় আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা পেয়েছেন। জলাতঙ্কের সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে এবং রোগের বিস্তার রোধ করতে বিড়াল বা কুকুরের কামড়ের পর প্রাথমিক চিকিৎসা এবং ভ্যাকসিনেশন একান্ত প্রয়োজন। ভ্যাকসিনের পূর্ণ কোর্স সাধারণত চারটি ডোজ নিয়ে গঠিত যা যথাক্রমে ১ম, ৩য়, ৭ম এবং ১৪তম দিন পরে দেওয়া হয়।
এছাড়াও, গুরুতর কামড় এর ক্ষেত্রে রেবিস এমিউনোগ্লোবুলিন ব্যবহার করা হয়। রেবিস একটি প্রাণঘাতী রোগ তাই সঠিক সময়ে এবং সঠিকভাবে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি আপনার কাছে বোধগম্য হয়েছে। এরকম আরো তথ্য সমৃদ্ধ আর্টিকেল পেতে প্রতিনিয়ত চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে। ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url