চিড়া খাওয়ার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা জানুন
চিড়া খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি জানতে চান? চিড়া খেলে কি মোটা হয় এ বিষয়ে জানতে আপনি নিশ্চয়ই আগ্রহী? তাহলে বলবো আজকের এই আর্টিকেলটি ধৈর্য সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নিন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ চিড়া খাওয়ার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা
- চিড়া খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা
- চিড়া খাওয়ার অপকারিতা
- খালি পেটে চিড়া খাওয়ার কিছু উপকারিতা
- গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার উপকারিতা
- ওজন কমাতে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা
- রাতে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা
- চিড়া খেলে কি মোটা হয়
- বাচ্চাদের চিড়া খাওয়ার যত উপকারিতা
- লাল চিড়া খাওয়ার উপকারিতা
- দই চিড়া খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা
- চিড়া ভিজিয়ে খেলে কি হয়
- চিড়া কলা খাওয়ার উপকারিতা
- সম্পর্কে আমার মন্তব্য
চিড়া খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা
চিড়া খাওয়ার একাধিক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে যা হয়তো আপনি নিজেও জানেন না। মূলত ধান থেকে চিড়া তৈরি হয় এবং বিভিন্ন রকমের খাবারের অংশ হিসেবে ব্যবহৃত হয় এই চিড়া। তো চলুন চিড়া খেলে আপনি কি কি স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে পারেন তা জেনে নিন-
আরো পড়ুনঃ সাবুদানা খাওয়ার ২০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
- পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ চিড়াঃ চিড়াতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যেমন হয় আমিন নিয়াসিন এবং ভিটামিন বি৬। এই সকল প্রশ্ন উপাদান আপনার শরীরকে তৎক্ষণাৎ শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম।
- হজমের সহায়ক হিসেবে চিড়াঃ চিড়ার মধ্যে থাকা ফাইবার আপনার পাচনতন্ত্রের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শুধু তাই নয় এই ফাইবার আপনার হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে পারে। ফলে নিয়মিত চিড়া খেলে আপনার পেট ব্যথা গ্যাস এবং পাচনতন্ত্রের অন্যান্য সমস্যা কমতে শুরু করে।
- দ্রুত শক্তি প্রদান করেঃ আপনি যদি সকালের নাস্তায় চিড়া খান তাহলে চিড়ার কার্বোহাইড্রেট আপনার শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করতে পারে এবং সেই সাথে সারাদিনের জন্য আপনার শরীর সতেজ ও চাঙ্গা থাকে।
- হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমেঃ নিয়মিত চিড়া খেলে আপনার হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।কারণ, চিড়াতে রয়েছে সোডিয়াম ও অল্প পরিমাণ ফ্যাট যা আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে বিশেষভাবে কার্যকরী।
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতেঃ চিড়াতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম। আর এই পটাশিয়াম সোডিয়াম এর প্রভাব কমাতে সাহায্য করে এবং আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- চিড়ার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যঃ চিড়ার কিছু কিছু উপাদান আপনার শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে আর এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার শরীরেকে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
- দাঁত ও হাড় ভালো রাখেঃ আপনি আপনার হাড়ের জয়েন্টের ব্যথা দূর করতে এবং দাঁত মজবুত করতে চান? তাহলে আজ থেকেই নিয়ম করে চিড়া খাওয়া শুরু করুন।কারন,চিড়া ক্যালসিয়াম ও ফসফরাসদের একটি দুর্দান্ত উৎস।এই উপাদান গুলো আপনার দাঁত ও হাড়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ চিড়াতে রয়েছে ভিটামিন এবং মিনারেল যা আপনার মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং সেই সাথে স্মৃতিশক্তি বাড়াতেও কাজ করে। সুতরাং আপনার হারানো স্মৃতিশক্তি ফিরে পেতে এখন থেকে চিড়া খাওয়ার অভ্যাস করুন।
- মেটাবলিজম বৃদ্ধি করেঃ চিড়ার ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আপনার মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে নিয়মিত চিড়া ফেলে এটি আপনার শারীরিক দুর্বলতা দূর করে শরীরে অতিরিক্ত শক্তি উৎপাদন করতে পারে।
- শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেঃ প্রচন্ড গরমে শরীর শীতল রাখতে আপনি খেতে পারেন চিড়া।কারণ চিড়া আপনার শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে এবং শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- ইমিউন সিস্টেমঃ চিড়াতে থাকা পুষ্টি উপাদান আপনার শরীরের এম এম সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। এর ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ সংক্রমণ থেকে আপনার শরীর খুব সহজে রক্ষা পেতে পারে।
- পেটের সমস্যা দূর করেঃ আপনি কি দীর্ঘদিনের পেটের সমস্যায় ভুগছেন? নানা রকম ওষুধ খেয়েও আপনার আপনার পেটের সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। তাহলে বলব আপনি এখন থেকে চিড়া খেতে শুরু করুন। কারণ চিড়া হালকা এবং সহজ প্রাচ্য হওয়ায় এটি আপনার হজম প্রক্রিয়াকে প্রশমিত করে এবং অন্ত্রকে শীতল রাখে।
- প্রাকৃতিক এনার্জির উৎসঃ চিড়া খেলে এর প্রাকৃতিক শর্করা আপনার শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করতে পারে।যা আপনার দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য অত্যন্ত জরুরী।
- শরীরের ডিটক্সিফিকেশনঃ নিয়মিত চিড়া খেলে চিড়ার ফাইবার আপনার কিডনি ও লিভারের কাজকে সহজ করে এবং শরীর থেকে নানা ধরনের বিষাক্ত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিসে চিড়াঃ ডায়াবেটিস রোগীটাও নিশ্চিন্তে চিড়া খেতে পারেন। কারণ চিড়াই কম গ্লাইসে থাকার কারণে এটি আপনার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে বিশেষভাবে কার্যকরী।
- প্রাকৃতিক আন্টি ইনফ্লামেটরি হিসেবেঃ চিড়াই কিছু কিছু উপাদান রয়েছে যা আপনার শরীরে প্রাকৃতিক ভাবে এন্টি ইনফ্লামেটরির প্রভাব বজায় রাখে।যা আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ কমাতে কাজ করে।
চিড়া খাওয়ার অপকারিতা
চিড়ার উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতাও রয়েছে এ কথা ঠিক।কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে চিড়া দীর্ঘদিন যাবত খেতেই থাকেন তাহলে আপনার শরীরে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে। এবার চলুন অতিরিক্ত চিড়া খাওয়ার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নিন-
আরো পড়ুনঃ ভাতের মাড়ের ১৭টি কার্যকরী স্বাস্থ্য উপকারিতা
- হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়েঃ অতিরিক্ত পরিমাণে চিড়া খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস পেতে থাকে। আর ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রার হ্রাস পেলে আপনার হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক গুণ বেড়ে যায়।
- ডায়াবেটিসের সমস্যাঃ চিড়াতে ট্রাই গ্লিসারাইডের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। ফলে প্রতিদিন অধিক পরিমাণে চিড়া খেলে এটি আপনার ডায়াবেটিসের জন্য ক্ষতিকর।
- ওজন বৃদ্ধিতেঃ যারা ওজন কমাতে চান তাদের পরিমিত পরিমাণে চিড়া খাওয়াটাই উত্তম। কারণ চিড়াতে কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালোরির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। ফলে এই দুটি উপাদান আপনার ওজনকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
- পেটের প্রদাহ বাড়াতেঃ মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে চিড়া খাওয়ার ফলে এটি আপনার পেটে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন পেট ফাঁপা,গ্যাস বা হজম ক্রিয়ার বিঘ্ন ঘটাতে পারে। এতে করে আপনার ডায়রিয়াও হতে পারে।
- মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট এর অভাবঃ অনেক সময় চিড়া প্রক্রিয়াজাত হওয়ার ফলে এতে কিছু ভিটামিন এবং খনিজ উৎপাদনের পরিমাণ কম থাকতে পারে। আর এই প্রক্রিয়াজাতকরণ চিড়া খেলে আপনার দীর্ঘমেয়াদি পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে।
- উচ্চমাত্রার ফাইবারঃ চিড়াতে উচ্চ মাত্রার ফাইবার থাকে। আর অনেকের পেটেই এই উচ্চমাত্রার ফাইবার সহ্য হয় না।ফলে অতিরিক্ত ফাইবার গ্রহণের কারণে পেটের অস্বস্তি মলবহুলতা ডায়রিয়াও দেখা দিতে পারে।
- ডায়েটারি ভারসাম্য নষ্ট করেঃ প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে চিড়া খাওয়ার ফলে এটি আপনার খাদ্য তালিকায় অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান গুলির অভাব সৃষ্টি করতে পারে। যেমন ধরুন-প্রোটিন ভিটামিন এবং খনিজ উপাদানের।
- দাঁত নষ্ট করেঃ অনেকেই চিনি যুক্ত চিড়া খেতে পছন্দ করেন। আর এই চিনি যুক্ত চিড়া খেলে এটি আপনার দাঁতের গহবরে প্লাক তৈরি করতে পারে এবং দাঁতের সমস্যার সৃষ্টি করে।
সর্বোপরি বলব চিড়ার উপকারিতা পেতে আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে না খেয়ে প্রতিদিন সঠিক উপায়ে এবং পরিমিত পরিমাণে চিড়া খান। এতে করে চিড়ার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আপনার শরীরে দেখা দেবে না।
খালি পেটে চিড়া খাওয়ার কিছু উপকারিতা
চিড়া আপনি খালি পেটেও খেতে পারেন। খালি পেটে চিড়া খেলে কি উপকার পাওয়া যায় তা অনেকেই জানেন না। খালি পেটে চিড়া খাওয়ারও বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। তাছাড়া আপনার পেটে আগের রাতে গন্ডগোল হয়েছে।কোন কিছু খেতে ইচ্ছা করছে না, বা পেট ভারী হয়ে আছে এমন পরিস্থিতিতে আপনি সকালে খালি পেটে চিড়া খেতেই পারেন। এতে আপনার পেট ঠান্ডা থাকবে। এবার চলুন খালি পেটে চিড়া খেলে কি কি উপকারিতা পাবেন সে সম্পর্কে জেনে নিন--
আরো পড়ুনঃ আলকুশি বীজ চূর্ণ খাওয়ার ১০টি কার্যকরী উপকারিতা
- সকালে খালি পেটে চিড়া খেলে এটি খুব দ্রুত আপনার শরীরে শক্তি সরবরাহ করতে থাকে। ফলে দিনের শুরুতে আপনার সারাদিনের কাজের জন্য শরির সক্রিয় হয়ে ওঠে।
- চিড়া খেলে এটি খুব সহজে হজম হয়ে যায় এবং হজমের কোন অসুবিধা সৃষ্টি করে না।বরং খালি পেটে চিড়া খেলে এটি আপনার পেটের জন্য স্বস্তিদায়ক হতে পারে।
- আপনারা যারা সকালের নাস্তায় উচ্চশক্তি কিন্তু কম ক্যালোরি যুক্ত খাবার চান,তাদের জন্য চিড়া হতে পারে একটি উপযুক্ত খাবার। সে হিসেবে আপনি সকালে এক বাটি দড়ি চিড়াও খেতে পারেন। কারণ একবাটি তৈরিতে রাতে মাত্র 300 ক্যালরি থাকে।
- আপনার পেটের দীর্ঘদিনের সমস্যা থাকলে আপনি নিয়মিত সকালে খালি পেটে চিড়া খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে আপনার পেটের সমস্যা দূর হবে
- সকালে খালি পেটে চিড়া খেলে এটি আপনার মেটাবলিজম কে ত্বরান্বিত করে। এর ফলে আপনার শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়া খুব তাড়াতাড়ি শুরু হয়ে যায়।
- নিয়মিত খালি পেটে চিড়া খেলে এটি আপনার এনার্জি স্তর সঠিকভাবে বজায় রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে যদি সকালে ফিরা খান সেক্ষেত্রে একটি দীর্ঘ সময় ধরে আপনার পেট ভরে রাখে।
সম্মানিত পাঠক,চিড়ার এই উপকারিতা গুলো পেতে আপনি চেষ্টা করুন প্রতিদিন সকালে খালি পেটে চিড়া খেতে। এতে করে আপনার পেট ভালো থাকবে এবং সেই সাথে শরীরেও অতিরিক্ত এনার্জি পাবেন।
গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় আপনার এবং আপনার গর্ভস্থ সন্তানের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য সঠিকভাবে নির্বাচন করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই পুষ্টিকর খাবারের মধ্যে চিড়া একটি হতে পারে। গর্ভাবস্থায় চিড়ার বিশেষ কিছু উপকারিতা রয়েছে একজন গর্ভবতী মা এবং তার অনাগত সন্তানের জন্য অত্যন্ত জরুরী। যেমন--
- মর্নিং সিকনেস কমাতেঃ গর্ভকালীন সময়ে মর্নিং সিকনেস প্রায় প্রত্যেক গর্ভবতী মায়েরই একটি সাধারণ সমস্যা। এই মর্নিং সিকনেস দূর করতে আপনি সকালে খেতে পারেন চিড়া। কারণ সকালে চিড়া খেলে এর কার্বোহাইড্রেট এবং প্রাকৃতিক শর্করা আপনার শরীরের দ্রুত শক্তি সরবরাহ করতে থাকে।
- পেটের অস্বস্তি দূর করতেঃ গর্ভাবস্থায় চূড়া খেলে এটি আপনার পেটের অস্বস্তি দূর করতে পারে।তাছাড়া চিড়া ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি আপনার হজম ক্রিয়াকে সহজ করে এবং গর্ভকালীন সময়ের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেন।
- অতিরিক্ত পুষ্টির যোগানঃ চিড়াতে ভিটামিন বি গ্রুপ আইরন এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান রয়েছে যা একজন গর্ভবতী মায়ের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া গর্ভাবস্থায় চিড়া খেলে ভিটামিন বি গ্রুপ আপনার শারীরিক ও মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে।
- খাবারের অস্বস্তি কমাতেঃ গর্ভাবস্থায় অনেক সময় খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি চিড়া একটি সহজ এবং হালকা নাস্তা হিসেবে খেতে পারেন।
- মেটাবলিজম এর উন্নতিতেঃ চিড়ায় উপস্থিত কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার আপনার মেটাবলিজমকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে সাহায্য করে। ফলে এটি গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের স্বাভাবিক পুষ্টি বিপাকীয় প্রক্রিয়া বজায় রাখতেও সক্ষম।
- গর্ভাবস্থায় ওজন নিয়ন্ত্রণেঃ চিড়াতে তুলনামূলকভাবে কম ক্যালরি থাকায় এটি গর্ভকালীন সময়ে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে থাকে।আর তাই গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি এড়াতে চাইলে আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় চিড়া রাখতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় চিড়া খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা
- গর্ভকালীন সময়ে চিড়া খাওয়ার সময় আপনি এতে অতিরিক্ত চিনি,মিষ্টি অথবা তেল মিশিয়ে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
- আপনার যদি এলার্জির জন্য কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে চিড়ার খাবার আগে একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে তবে খাবেন।
- চিড়াকে গর্ভাবস্থায় একমাত্র পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে খাওয়া একেবারেই ঠিক নয়। এতে আপনার শরীরে অন্যান্য পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে।
- গর্ভকালীন সময়ে আপনি অতিরিক্ত চিড়া খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন এবং পরিমিত পরিমাণে চিড়া খান।
ওজন কমাতে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা
ওজন কমাতে চিড়া আপনার জন্য একটি উপযোগী খাদ্য হতে পারে। চিড়ায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা আপনার ওজন কমাতে সহায়ক হতে পারে। তো চলুন এবারে ওজন কমাতে চিড়ার উপকারিতা গুলো কি কি হতে পারে জেনে নিন--
- চিড়া মূলত কম ক্যালোরি এবং কম ফ্যাট যুক্ত একটি খাদ্য উপাদান। বিশেষ করে আপনি যখন ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন,তখন চিড়া নাস্তা হিসেবে খেতে পারেন।কারন কম ক্যালোরি গ্রহণ আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
- নিয়মিত নিয়ম করে চিড়া খেলে এর ফাইবার আপনার পেট পূর্ণ রাখতে সাহায্য করে। আর পেট পূর্ণ থাকলে অন্যান্য খাবার খাওয়ার প্রতি আপনার চাহিদা অনেকটাই কমে যায়। এতে করে আপনার ওজনও কমতে থাকে।
- এমন একটি খাদ্য উপাদান যার সহজে হজম যোগ্য এবং পেটের অসভ্য কমাতে সহায়ক। ফলে চিড়া খেলে এটি দ্রুত শক্তি সরবরাহ করার পাশাপাশি এটি আপনাকে ওজন কমানোর জন্য সঠিক গুষ্টি প্রদান করে।
- চিড়ায় এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যেমন ভিটামিন বি গ্রুপ এবং আয়রন যা আপনার মেটাবলিজম কে সঠিক ভাবে ত্বরান্বিত করে।আর স্বাস্থ্যকর মেটাবলিজম ওজন কমাতে বিশেষভাবে কাজ করে।
- ওজন কমাতে আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় চিড়া বিভিন্ন প্রোটিন যুক্ত খাবার যেমন- বাদাম,শুকনো ফল বা বীজ জাতীয় খাদ্য উপাদান ইত্যাদির সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন। যা আপনার ওজন কমাতে সহায়ক হবে।
- অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের তুলনায় চিড়া তুলনামূলকভাবে কম প্রক্রিয়াজাত এবং প্রাকৃতিক একটি খাদ্য উপাদান। আর তাই ওজন কমাতে আপনি অন্যান্য প্রক্রিয়াজাত উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবার না খেয়ে নিয়মিত চিড়া খেতে পারেন।
- ওজন কমানোর ক্ষেত্রে চিড়া একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসেবে বিবেচিত হবে তখনই যখন আপনি এটি অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি ছাড়া খাবেন। আর তাই সকালের নাস্তা হিসেবে আপনি চিনি,মিষ্টি ছাড়া চিড়া খান,যা আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে।
সম্মানিত পাঠক, আর এই চিড়া আপনার ওজন কমাতে একটি সহায়ক খাদ্য হতে পারে, যদি আপনি এটিকে সুষম খাদ্যের অংশ হিসেবে বিবেচনা করেন
রাতে চিড়া খাওয়ার উপকারিতা
অনেকেই আছেন যারা রাতে চিড়া খেতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। তবে রাতে চিড়া খাওয়ারও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা রয়েছে। যা জানলে আপনি আজ থেকেই রাতে চিড়া খাওয়া শুরু করে দিবেন। তো চলুন রাতে চিড়া খেলে কি কি উপকার পাবেন তা জেনে নিন --
- চিড়া সাধারণত একটি হজম যোগ্য খাবার। যা কিনা খুব সহজে পেটে হজম হয়ে যায়। তাই আপনাদের যাদের রাতে খাবার পর হজমে সমস্যা হয় এ সমস্যা দূর করতে আপনি বিকল্প খাবার হিসেবে খেতে পারেন চিড়া।
- রাতের খাবারের পর কি প্রতিনিয়তই আপনার পেটে অস্বস্তি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দেয়? তাহলে বলবো আপনি আজ রাত থেকেই চিড়া খাওয়া শুরু করুন। কারণ যাদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বা পেটের অস্বস্তি ভাব রয়েছে তাদের জন্য ক্রীড়া বিশেষভাবে উপকারী।
- সারাদিন কাজের পর রাতে আপনার শরীরে হয়তো একটা ক্লান্তি ভাব চলে আসে।শরীরের এই ক্লান্তি দূর করতে আপনি খেতে পারেন চিড়া।কারণ চিড়ায় থাকা কার্বোহাইড্রেট গুলি আপনার শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করতে পারে। এতে করে আপনার শরীরের ক্লান্তি ভাব দূর হতে পারে।
- ফাইবারের উৎস হাওয়ায় এটি আপনার পেট পরিপূর্ণ রাখতে সাহায্য করে এবং রাতে খাবারের পরও অতিরিক্ত ক্ষুধার প্রবণতা কমায়। ফলে আপনার বারবার খিদে পায় না এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- রাতে হালকা নাস্তা হিসেবে আপনি চিড়া খেতে পারেন। এটি আপনার ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক হতে পারে।
- ইনটেক্স কম থাকার কারণে এটি আপনার রক্তে শর্করার স্তরের ঊর্ধ্বগতি প্রতিরোধে কাজ করে। ফলে রাতে খাবারের পরে রক্তে শর্করার মাত্রার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য চিড়া আপনার জন্য একটি ভালো বিকল্প খাদ্য উপাদান হতে পারে।
- চিড়াতে কিছু পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম এবং অন্যান্য খনিজ উপাদান থাকে যা আপনার স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত রাখে। ফলে আপনার ঘুম ভালো হয়।
সুতরাং রাতে চিড়া খাওয়ার মাধ্যমে আপনি আপনার শরীরের সঠিক পুষ্টি খুব সহজেই ধরে রাখতে পারেন।তবে একটি কথা মনে রাখবেন,রাতে চিড়া খাওয়ার সময় এর পরিমাণের প্রতি খেয়াল রাখবেন।কারন অত্যধিক পরিমাণে চিড়া খেলে একটি রাতে আপনার পেটে অসুবিধার সৃষ্টি করতে পারে।
চিড়া খেলে কি মোটা হয়
চিড়া খেলে কি মোটা হয়? এ প্রশ্ন আপনাদের অনেকের মনেই।আপনারা অনেকেই মনে করেন চিড়া খেলে মোটা হওয়া যায়। বিশেষ করে যারা একটু স্বাস্থ্য সচেতন তারা মোটা হয়ে যাওয়ার ভয়ে চিড়া খেতেও চান না। কিন্তু এই ধারণা একেবারে সঠিক নয়। কারণ চিড়া খেয়ে মোটা হওয়ার সম্ভাবনা নির্ভর করবে প্রধানত আপনার খাওয়ার পরিমাণ এর ওপর। চিড়া মূলত একটি কম ক্যালরি এবং কমফ্যাট যুক্ত খাবার।
এটি খেলে এর প্রাকৃতিক শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট অতি দ্রুত আপনার শরীরে শক্তি সরবরাহ করতে থাকে।তবে একটি কথা,আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে চিড়া খান বিশেষ করে এটি যদি অতিরিক্ত চিনি,মিষ্টি বা তেল দিয়ে খান তবে এতে ক্যালরির পরিমাণ অনেকটাই বেড়ে যায়। আর অতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণের ফলে আপনার ওজনও বেড়ে যেতে পারে।
আবার চিড়াতে ক্যালরির পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম থাকলেও অতিরিক্ত চিড়া খাওয়ার ফলে এর ক্যালোরি আপনার পেটে জমে শরীরের ফ্যাটে পরিণত হতে পারে। এছাড়াও আপনি যদি অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খাবার ছাড়া শুধুমাত্র চিড়াকেই প্রধান খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন,তাতেও আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আর তাই আপনি চিড়া খাওয়ার সময় অবশ্যই পরিণত পরিমাণে খাবেন।মোটকথা শুধুমাত্র চিড়া আপনার মোটা হওয়ার কারণ হতে পারে না।বরং মোটা হওয়া এটি ক্যালরির পরিমাণ,খাবারের ধরন এবং আপনার খাদ্য তালিকার প্রভাবের উপর অনেকটাই নির্ভর করে। চিড়া খেলে মোটা হওয়া যায় কিনা আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
বাচ্চাদের চিড়া খাওয়ার উপকারিতা
বাচ্চাদের চিড়া খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে।চিড়া বাচ্চাদের জন্য একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর খাদ্য উপাদান হতে পারে। বাচ্চাদের চিড়া খাওয়ালে যেসব উপকারিতা পেতে পারে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে-
- এটি আপনার বাচ্চার পেটের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। কারণ বাচ্চাদের চিড়া খাওয়ালে পেট ফাঁপার সমস্যা দূর হয়ে যায়।
- বাচ্চাদের চিড়া খাওয়ালে চিড়ার কার্বোহাইড্রেট এবং প্রাকৃতিক শর্করা নিমেষের মধ্যেই আপনার বাচ্চার শরীরে শক্তি সরবরাহ করতে থাকে।যা বাচ্চাদের সারা দিনের কার্যকলাপ এবং খেলার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি প্রদান করে।
- বাচ্চাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও চিড়া বিশেষভাবে উপকারী। আবার বাচ্চাদের চিড়া খাওয়ালে এটি আপনার বাচ্চার পেট ভরা রাখে এবং স্বাভাবিক মলত্যাগে সাহায্য করে।
- আপনার শিশুকে চিড়া খাওয়ানোর ফলে এটি আপনার শিশুর অন্ত্রের কার্যকারিতা ঠিক রাখতে কাজ করে।
- চিড়ায় বিদ্যমান ভিটামিন বি আয়রন এবং অন্যান্য খনিতে উপাদান যা আপনার শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই পুষ্টি উপাদান গুলো আপনার শিশুর মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং হাড় পুনর্গঠনে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
- বাচ্চাদের চিড়া খাওয়ানোর সময় আপনি অতিরিক্ত তেল বা তিনি ব্যবহার না করে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে হালকা রোস্টিং বা বেকিং করে খাওয়াতে পারেন।
লাল চিড়া খাওয়ার উপকারিতা
চিড়া সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে একটি লাল এবং অপরটি সাদা চিড়া। এই লাল চিড়ার নিজস্ব কিছু পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা রয়েছে যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এবার চলুন লাল চিড়া খেলে আপনি কি কি উপকারিতা পাবেন সে সম্পর্কে জানুন-
- লাল চিড়া উচ্চমানের ফাইবারের একটি দুর্দান্ত উৎস যা খাবার ফলে এটি আপনার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এবং সেই সাথে পেটকে স্বস্তি দিতে পারে।
- লাল চিড়া তে ক্যালোরি এবং ফ্যাটের পরিমাণ প্রাকৃতিকভাবে কম থাকে যা আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য উপকারী হতে পারে।
- এছাড়াও লাল চিড়া তে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যেমন-থায়ামিন, রিবোফ্লেভিন এবং নায়াসিন থাকে যা আপনার মেটাবলিজমের গতিকে ত্বরান্বিত করে এবং সেই সাথে শরীরের শক্তি স্তর বাড়াতে সাহায্য করে।
- নিয়মিত লাল চিড়া খেলে এটি আপনার স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং এর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে।
- লাল চিড়াতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে।ফলে লাল চিড়া খেলে আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের স্তর ঠিক থাকে এবং এর ফলস্বরূপ আপনি রক্তাল্পতা বা এনিমিয়া থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
- লাল চিড়া তে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম যা আপনার হাড় ও মাংসপেশি স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে কাজ করে।
- শুধু তাই নয় লাল চিড়াতে কম পরিমাণে সেচুরেটেড ফ্যাট থাকে যা আপনাকে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে পারে।
দই চিড়া খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা
চিড়ার উপকারিতা পেতে আপনি দই এবং চিড়া একসাথেও খেতে পারেন। কারণ, চিড়া এবং দই একসাথে খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণই উপকারী। প্রচন্ড গরমের দাবদাহ থেকে বাঁচতে আপনার শরীরকে শীতল রাখতে আপনি খেতে পারেন দই চিড়া। এই দই চিড়া খাওয়ার ফলে আপনার পেট যেমন ঠান্ডা থাকে তেমনি শরীর মনও সতেজ থাকে। এবার চলুন দই চিড়া খেলে কি কি উপকার পাবেন তা আপনাকে জানিয়ে দিচ্ছি--
- দই এ মূলত প্রবায়োটিক্স থাকে যা আপনার তন্ত্রের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।আর চিড়ার সাথে আপনি যদি দই মিশিয়ে একসাথে খান সে ক্ষেত্রে এটি আপনার হজম প্রক্রিয়াকে আরো ত্বরান্বিত করবে এবং সেই সাথে পেটের সকল সমস্যাও দূর করবে।
- দই ও চিড়া একত্রে খাওয়ার ফলে এই দুটি উপাদান আপনার শরীরকে প্রয়োজনীয় প্রোটিন,ক্যালসিয়াম এবং ফাইবার সরবরাহ করে থাকে।দই প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস,যখন চিড়া ফাইবার এর একটি উচ্চতর উৎস হিসেবে কাজ করে।
- আপনি আপনার শরীরের শক্তি দ্রুত বৃদ্ধি করতে চান?তাহলে বলব আপনি প্রতিদিন দই ও চিড়া একসাথে খাওয়ার অভ্যাস করুন। কারণ দইয়ের প্রোটিন ও চিড়ার কার্বোহাইড্রেট আপনার শরীরে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম।
- দুই এবং ক্রীড়া কম ক্যালরিযুক্ত এবং সমৃদ্ধ খাদ্য উপাদান যা দীর্ঘক্ষণ আপনার পেট পূর্ণ রাখে এবং অতিরিক্ত খাবারের প্রতি খাওয়ার প্রবণতা কমিয়ে আনে। এতে করে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রিত হয়।
- দই ক্যালসিয়ামের একটি দুর্দান্ত উৎস যা আপনার হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করে।আর চিড়ার সাথে দই মিশিয়ে খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের পরিমাণ আরো বেড়ে যায়, যা আপনার হাড়ের ভঙ্গরতা প্রতিরোধ করে।
- দই এর প্রোবায়োটিকস এবং চিড়ার ভিটামিন ও মিনারেল সমন্বিতভাবে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। শুধু তাই নয় এই দুটি উপাদান বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ এবং রোগ প্রতিরোধেও সক্ষম।
- দইয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম থেকে যা আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।ফলে চিড়া দই একসাথে খেলে এটি আপনার শরীরে রক্তের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
দই চিড়া কিভাবে খাবেন
দই চিড়া খাওয়ার জন্য আপনি বাটিতে এক কাপ চিড়া পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং ১০-১৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। পানিতে চিড়া ভালোভাবে ভিজে যাওয়ার পর চিড়াগুলো আপনি ছেকে নিন এবং এর অতিরিক্ত পানি ফেলে দিন। এবার একটি বাটিতে এক কাপ পরিমাণ দই নিন। দই যদি খুব টক হয়ে থাকে তবে এর সাথে সামান্য পরিমাণ আপনি চিনি যোগ করতে পারেন।
আবার দই যদি খুব ঘন হয় তাহলে এর সাথে একটু পানি মিশিয়ে আপনি পাতলা করে নিতে পারেন। এবার ভেজানো চিড়া দইয়ের মধ্যে দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল দই চিড়া। এবার এই দই চিড়া আপনি খেতে পারেন।
চিড়া ভিজিয়ে খেলে কি হয়
চিড়া ভিজিয়ে খেলে কি হয় জানেন কি? হয়তো জানেন না। অনেকেই আছেন চিড়া ভিজিয়ে খেতে পছন্দ। কারণ চিড়া ভিজিয়ে খেলে শরীরের জন্য এর বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। যেমন
- চিড়া ভিজিয়ে রাখলে এটি আরো নরম হয়ে যায় ফলে আপনার হজম ক্রিয়া আরো সহজ হয়। আপনার পেটের জন্য স্বস্তিদায়ক এবং আরামপ্রদ হয়।
- চিড়া ভিজিয়ে রাখলে এটি পানি শোষণ করে এর পুষ্টিগুণ আরো বৃদ্ধি পায়। যা আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
- চিড়া ভিজিয়ে খেলে একটু ফাইবারের পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পায় যা আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
- চিড়া ভিজিয়ে খেলে চিড়ার কার্বোহাইড্রেট আপনার শরীরের দ্রুত শোষিত হতে পারে এবং এতে আপনার শারীরিক শক্তিও বৃদ্ধি পাবে।
- ভিজানো চিড়াতে পানি শোষণের ফলে এর ক্যালরির ঘনত্ব কম হতে পারে,যা আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। আর তাই ওজন কমাতে চাইলে আপনি চিড়া ভিজিয়ে খান।
- আপনি যদি রাতে চিড়া খান সেক্ষেত্রে চিড়া ভিজিয়ে খেলে এটি আপনার পেটের পক্ষে বেশি স্বস্তিদায়ক হবে।
- চিড়া ভিজিয়ে খেলে এটি খেতে আরও বেশি সুস্বাদু লাগে।
- নিয়মিত ভেজানো চিড়া খেলে এটি পুষ্টি উপাদান সহজে শোষণ করে যা আপনার শরীরের জন্য অধিক পুষ্টিকর হতে পারে।
- সর্বোপরি,চিড়া ভিজিয়ে খাওয়ার ফলে চিড়ার গুণগতমান আরো বেড়ে যায়।
- চিড়ার এই সমস্ত উপকার পেতে আপনি হালকা কুসুম গরম পানিতে বা ঠান্ডা পানিতে চিড়া ভিজিয়ে খেতে পারেন। এতে একদিকে চিড়াটি যেমন পরিষ্কার হবে তেমনি এটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হবে।
চিড়া কলা খাওয়ার উপকারিতা
চিড়া এবং কলা একত্রে খাওয়া একটি পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু খাদ্য যা আপনার শরীরের জন্য উপকারী। এই চিড়া এবং কলা একসাথে খেলেও এর থেকে আপনি বেশ কিছু উপকারিতা পেতে পারেন।কারণ চিড়া কলা উভয়ই নিজ নিজ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। চিড়ার প্রাকৃতিক ফাইবার ও কার্বোহাইড্রেট এর সমৃদ্ধ উৎস যা আপনার শরীরকে দ্রুত শক্তি সরবরাহ করে এবং পেট পূর্ণ রাখে।
অপরদিকে,কলা প্রাকৃতিক শর্করা পটাশিয়াম এবং ভিটামিন বি ৬ এর একটি ভালো উৎস যা আপনার শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণই উপকারী। আবার, কলা আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং পেশির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। যেখানে চিড়ার ফাইবার আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য সহ পেটের সমস্যা প্রতিরোধ সহায়ক।
আর তাই এই দুটি খাদ্য উপাদান একসাথে খাওয়া হলে আপনার শরীরে একে অপরের পুষ্টিগুণ বাড়িয়ে দেয়। এছাড়াও কলা এবং চিড়া এই দুটি খাদ্য উপাদানের অতি সহজলভ্য যা আপনি যখন তখন আপনার হাতের নাগালেই পেতে পারেন। আপনি আপনার সকালের নাস্তায় কলা চিড়া একসাথে খেতে পারেন।কলা চিড়া খাওয়ার এটি একটি উপযুক্ত সময়। তাছাড়া এই কলা জোড়া দিনের যেকোনো সময় পেলেও এটি আপনার শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করবে এবং পূর্ণ তৃপ্তি দেবে।
লেখকের মন্তব্য
চিড়া খাওয়ার উপকারি দিক সম্পর্কে আমাদের দেশে একসময় অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত ছিল। কিন্তু আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি নিশ্চয়ই চিড়া খেলে কি কি উপকার পাবেন সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন।এটি একটি প্রাকৃতিক ও সুস্বাদু খাবার যা আমাদের গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাদ্য তালিকায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।বর্তমান সময়ের তরুণ প্রজন্মরা টোস্ট,ওটস,কনফ্লেক্স খেতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করে।
কিন্তু পুষ্টিবিদদের মতে,ওটস কিংবা কর্নফ্লেক্স এর থেকে অনেক গুণ এগিয়ে এই চিড়া। তাই ওটস কিংবা কর্নফ্লেক্স না খেয়ে আপনি এবং আপনার পরিবারের সদস্যদের চিড়া খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সহজলভ্য পুষ্টিগুণ সম্পন্ন এই খাদ্য উপাদানটি আজ থেকে আপনার খাদ্য তালিকায় ডায়েটে যোগ করে নিতে পারেন। নিয়মিত চিড়া খান এবং পেতে থাকুন চিড়ার যত গুনাগুন। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং পরবর্তী আর্টিকেল পেতে আমাদের www.pinpointmax.comওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url