সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি জানতে চান? টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয় জানেন কি? না জেনে থাকলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।
পোস্ট সূচিপত্রঃ সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার স্বাস্থ্য উপকারিতা
- সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
- খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার কিছু অপকারিতা
- সকালে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
- কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
- প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি ক্ষতি হয়
- কালোজিরার তেল ও মধু খাওয়ার উপকারিতা
- রাতে কালোজিরা খেলে কি হয়
- কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয়
- টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয়
- সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
- সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
- প্রতিদিন কতটুকু কালোজিরা খাওয়া উচিত
- সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমার মন্তব্য
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে আপনি বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে পারেন। কালোজিরার গুণের কথা আমাদের সকলেরই জানা। সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে আপনি কি কি উপকারিতা পাবেন চলুন তা জেনে নিন--
আরো পড়ুনঃ আমলকির ২০টি অলৌকিক উপকারিতা ও অপকারিতা
- হজম ক্রিয়াঃ আপনি কি বদ হজমের সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা খান। কারণ এর এন্টি ইনফ্লামেটরি ও হজম সহায়ক বৈশিষ্ট্য আপনার পাকস্থলীর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। ফলে, সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
- রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণঃ সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে কালোজিরার থাইমোকুইনন উপাদান আপনার রক্তে শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ইনসুলিনের কার্যকারিতা ও বৃদ্ধি করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ কালোজিরার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে, যদি আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেতে পারেন।
- ডিটক্সিফিকেশনঃ সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার ফলে এটি আপনার শরীরের টক্সিন অপসারণে সাহায্য করে। এতে করে আপনার লিভার ও কিডনির কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেঃ আপনি যদি নিয়মিত নিয়ম করে সকালে খালি পেটে কালোজিরা খান তাহলে হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে রক্ষা দিতে পারেন। কারণ, কালোজিরার মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আপনার রক্তচাপ কমাতে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আপনার অনেকটাই কমে যায়।
- ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ আপনি কি আপনার বাড়তি ওজন নিয়ে চিন্তায় আছেন? তাহলে বলব আজ থেকেই সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়া শুরু করুন। কারণ, কালোজিরাতে বিদ্যমান ফ্যাট ব্লাস্টিং বৈশিষ্ট্য আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, এটি আপনার শরীরের অতিরিক্ত চর্বি ঝরাতে এবং মেটাবলিজম বাড়াতেও সহায়ক।
- মানসিক চাপ কমাতেঃ কালোজিরার এন্ট্রি স্ট্রেস বৈশিষ্ট্য আপনার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে। আর এর জন্য আপনাকে সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতেঃ আপনি কি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে এখন থেকেই সকালে কালোজিরা খান। কারণ, কালোজিরাতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা আপনার রক্তচাপ কমাতে পারে।
- অ্যাজমা ও শ্বাসযন্ত্রের সমস্যাঃ কালোজিরার অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি গুণাবলী আপনার শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা কমাতে বেশ কার্যকরী হতে পালন করে।
- ব্যথা উপশম করেঃ নিয়মিত সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে এর প্রদাহ বিরোধী বৈশিষ্ট্য আপনার মাংসপেশী এবং জয়েন্টের ব্যথা কমাতে কাজ করে।
- শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করেঃ সকালে কালোজিরা খাওয়ার ফলে এটি আপনার শরীরে শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং সারা দিনের জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে।
- ত্বক ও চুল ভালো রাখেঃ সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়া আপনার ত্বক চুলের জন্যও উপকারী। এতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান যা আপনার ত্বকের ব্রণ জ্বালাপোড়া এবং অন্যান্য সমস্যা হ্রাস করতে পারে। এটি আপনার চুলের অস্বাস্থ্যকর অবস্থা দূর করতে এবং চুল বৃদ্ধি করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
- এসিডিটি কমাতেঃ নিয়মিত নিয়ম করে সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে এটি আপনার পেটের ব্যথা এবং এসিডিটির সমস্যা কমাতে সহায়ক হতে পারে।
- এলার্জি কমাতেঃ আপনার শরীর কি অতিরিক্ত এলার্জি প্রবণ? এলার্জির সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনি সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেতে পারেন। কারণ নিয়মিত কালোজিরা খাওয়া এলার্জি লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে।
- খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্র কমায়ঃ নিয়মিত কালোজিরা খাবার ফলে এটি আপনার রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা তুমি আপনার শরীরকে সুস্থ করে তোলে।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেঃ সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার মাধ্যমে আপনি ক্যান্সার নামক মরণব্যাধির হাত থেকেও রেহাই পেতে পারেন। বিশেষ করে কালোজিরাতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার শরীরে ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধিতে বাধা প্রদান করে।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ আপনারা যারা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে চান তারা নিয়মিত কালোজিরা খান। কারণ কালোজিরাতে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক ও এন্টিবায়োটিক উপাদান যা আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে।
- মাথা ব্যথা দূর করেঃ আপনি কি মাঝে মধ্যেই মাথা ব্যথার সমস্যায় ভুগে থাকেন। তাহলে আজ থেকেই সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে আপনার মাথা ব্যথার সমস্যা দূর হবে।
- হাড় শক্ত করেঃ কালোজিরা কালোজিরাতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ক্যালসিয়াম ও আয়রন, যা কিনা আপনার হাড় শক্ত করতে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
- যৌন ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ নিয়মিত সকালে কালোজিরা খাওয়ার ফলে একটি নারী পুরুষ উভয়ের যৌন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে পুরুষদের জন্য কালোজিরা অত্যন্ত উপকারী। নিয়মিত কালোজিরা সেবনে পুরুষত্বহীনতা থেকেও আপনি রক্ষা পেতে পারেন।
খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার কিছু অপকারিতা
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা আপনাকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছি।কালোজিরার তেমন একটা অপকারিতা নেই বললেই চলে। কালোজিরার যা অপকারিতা রয়েছে তা এর উপকারিতা থেকে একেবারেই নগণ্য।যেমন--
আরো পড়ুনঃ লবঙ্গের ২০টি কার্যকরী স্বাস্থ্য উপকারিতা ও অপকারিতা
- খালি পেটে মাত্রাতিরিক্ত কালোজিরা খাওয়ার ফলে আপনার পেট ফাঁপা ও এসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- সকালে খালি পেটে অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা সেবন করলে আপনার শরীরের রক্ত জমাট বাধা কমে যেতে পারে। এতে করে আপনার রক্তপাত হওয়ার যোগ্য আরো বেড়ে যাবে।
- প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিমাণ কালোজিরা খাওয়ায় এটি আপনার পেটের ব্যথা বা অস্বস্তি কারণ হতে পারে।কারণ কালোজিরা আপনার পেটের মিউকোসার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে,ফলে আপনার পেটে অস্বস্তি সৃষ্টি হতে পারে।
- খালি পেটে অতিরিক্ত কালোজিরা খাওয়ায় আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ কমতে পারে। ফলে যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে তারা কালোজিরা খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে তবেই সেবন করবেন।
- মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা খাওয়ার ফলে এটি আপনার শরীরের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে আপনার শরীরে গরম অনুভুতি বা জ্বালা সৃষ্টি হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় খালি পেটে কালোজিরা খেলে এতে আপনার গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়তে পারে, কারণ কালোজিরা কিছু ঔষধের সাথে বিক্রিয়া করে।
অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা সেবনের ফলে আপনার উপরিউক্ত এই সমস্যা গুলো দেখা দিতে পারে। তাই কালোজিরা খাওয়ার আগে আপনি নিয়মিত নিয়ম মেনে সঠিক পরিমাণে কালোজিরা খান।
সকালে কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
কালোজিরা থেকে উপকারিতা পেতে আপনাকে সঠিক নিয়মে এবং সঠিক সময়ে কালোজিরা খেতে হবে। কালোজিরা একটি প্রাকৃতিক সুপারফুড যা সঠিক নিয়মে খাওয়ার মাধ্যমে আপনি নানান স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে পারেন। তাহলে চলুন, আপনি কালোজিরা কোন সময় এবং কিভাবে খাবেন সে নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন--
আরো পড়ুনঃ ভিটামিন বি কমপ্লেক্স ট্যাবলেট এর ১০ উপকারিতা
খাওয়ার সময়
- প্রথমেই আপনাকে কালোজিরা খাবার সঠিক সময় সম্পর্কে জানিয়ে দিই। আপনি কালোজিরা সর্বদা সকালে খাওয়ার চেষ্টা করবেন। কারণ, সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়া সবচেয়ে উত্তম। এতে করে কালোজিরার উপাদান গুলো আপনার শরীরের দ্রুত শোষিত হতে পারে এবং শরীরের পুষ্টি উপকারিতা বৃদ্ধি পায়।
সকালে কালোজিরা খাবার নিয়ম
- আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে শুধুমাত্র ১ চা চামচ পরিমাণ কালোজিরা বীজ চিবিয়ে খেতে পারেন।
- আপনার যদি কালোজিরা বীজ খেতে অসুবিধা হয় সেক্ষেত্রে আপনি কালোজিরা পাউডারও খেতে পারেন। আপনি এক দুই চা চামচ কালোজিরা পাউডার এক কাপ পানির সাথে মিশিয়ে খেয়ে নিন। আপনি ইচ্ছে করলে এটি দই বা মধুর সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন।
- আবার, আপনি চাইলে কালোজিরা তেলও সরাসরি খেতে পারেন। এর জন্য ১ চা চামচ কালোজিরা তেল সরাসরি খেয়ে নিন।
- সকালে কালোজিরা সঙ্গে আপনি মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এই মধু ও কালোজিরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে চমৎকার কাজ করে।
- আপনার নিয়মিত পেট খারাপের সমস্যা থাকলে কালোজিরা সামান্য ভেজে নিয়ে গুড়ো করে সেটি ৭-৮ চা চামচ দুধে মিশিয়ে টানা ৭ দিন সকালে খাবেন। এতে আপনার পেটের সমস্যা দূর হবে এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
আপনি প্রতিদিন সকালে এই নিয়মে কালোজিরা খাওয়ার চেষ্টা করুন,কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে কখনোই খাবেন না। কারণ সকল খাদ্য উপাদানই পরিমিত পরিমাণে খাওয়াটাই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
পরিমাণ
- সাধারণভাবে ১/২-১/৪ চা চামচ কালোজিরা পাউডার বা কালোজিরা বীজ একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন খেতে পারেন। আর কালোজিরা তেলের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ১ চা চামচ কালোজিরা তেল খাওয়াই আপনার জন্য যথেষ্ট।
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা পেতে আপনি কালোজিরা চিবিয়েও খেতে পারেন।কালোজিরা খাবার অনেকগুলো নিয়ম রয়েছে যা ইতোমধ্যে আমরা আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি। তবে এই নিয়মগুলোর মধ্যে কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়া সবচেয়ে স্বাস্থ্যসম্মত। এবার চলুন কালোজিরা চিবিয়ে খেলে আপনি কি কি উপকারিতা পাবেন তা জানুন-
- কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে আপনি এর স্বাস্থ্য উপকারিতা দ্রুত পেতে পারেন। কারণ কালোজিরা চিবিয়ে খেলে এর পুষ্টি উপাদানগুলি যেমন- থাইমোকুইনোন, ফ্যাটি এসিড এবং এন্টিঅক্সিডেন্টস আপনার শরীরে সরাসরি প্রবাহিত হতে পারে। যা আপনার ত্বকের জন্য ভালো।
- কালোজিরা চিবিয়ে খেলে এর প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক গুণ বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে আপনার দাঁত ও মাড়িতে রক্ষা করতে পারে।
- চিবিয়ে কালোজিরা খেলে এতে আপনার মেটাবলিজম বৃদ্ধি পায় যা কিনা আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ সহায়ক হতে পারে।
- কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে এর এন্টি ইনফ্লামেটরি আপনার ত্বকের প্রদাহ কমাতে এবং ত্বককে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।
- শুধু তাই নয়, চিবিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে কালোজিরার গুনাগুন আরো কার্যকরী ভাবে আপনার শরীরে শোষিত হয়। এর ফলস্বরূপ পেস্ট জাতীয় আকারে থাকা কালোজিরার সব উপাদান আপনার পাচনতন্ত্রে প্রবাহিত হয় এবং শারীরিক প্রদাহ, উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
- কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে এর তিক্ত স্বাদ কম হতে পারে এবং এটি আপনার হজম প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কাজ করে। ফলে আপনার পেটে যাবতীয় সমস্যা দূর হয়।
কালোজিরা চিবিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে আপনি এই সমস্ত উপকারগুলো পেতে পারেন, যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণই জরুরী।
প্রতিদিন কালোজিরা খেলে কি ক্ষতি হয়
প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে অর্থাৎ ১/২-১/৪ চা চামচ পরিমাণ কালোজিরা খাওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ। তবে, দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা খেলে আপনার কিছু শারীরিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন ধরুন, প্রতিদিন প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা খাওয়ার ফলে এটি আপনার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা যেমন- পেটের ব্যথা, গ্যাস, ডায়রিয়া বা বদহজম সৃষ্টি করতে পারে।
কিছু কিছু মানুষের ক্ষেত্রে আবার অতিরিক্ত কালোজিরা খাওয়ার ফলে এলার্জির প্রবণতা দেখা দেয়।আবার, গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে উচ্চ পরিমাণে কালোজিরা ব্যবহারের ফলে প্রসবকালীন সম্ভাব্য ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত পরিমাণে কালিজিরা খেলে এটি আপনার রক্তের স্রাব বা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে কালিজিরা না খেয়ে নিয়ম মেনে সঠিক পরিমাণে কালিজিরা খান। এতে আপনি উপকারিতাই পাবেন।
কালোজিরার তেল ও মধু খাওয়ার উপকারিতা
কালোজিরার উপকারিতা বেশি পাওয়া যায় সকালে খালি পেটে খেলে। কালোজিরার তেল এবং মধু একসাথে মিশিয়েও আপনি খেতে পারেন। কালোজিরা তেল ও মধু একসাথে খাওয়ার বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। যেমন-
- ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করেঃ কালোজিরার তেল এবং মধু একসাথে খেলে এটি আপনার ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। তাছাড়া কালোজিরার অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান এবং মধুর এন্টিব্যাকটেরিয়াল গুন মিলিতভাবে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয়।
- হজম সহজ করেঃ মধু ও কালোজিরা তেল হজমে সহায়ক। কারণ, কালোজিরা তেল আপনার পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং মধু আপনার পেটের সুরক্ষা প্রদান করে।
- ত্বক ভালো রাখেঃ কালোজিরার তেল আপনার ত্বকের ময়েশ্চারাইজিং এবং পুনর্গঠনে সাহায্য করে এবং মধু আপনার ত্বকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া কালোজিরা তেল এবং মধু একসাথে ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বক হয়ে ওঠে উজ্জ্বল ও মসৃন।
- প্রদাহ কমাতেঃ কালোজিরার তেল আপনার বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ কমাতে পারে এবং মধুর এন্টিইনফ্লেমেটরি গুণ আপনার প্রদাহ জনিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন- আর্থাইটিস ও মাংসপেশির ব্যথা কমাতে কাজ করে।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ মধু ও কালোজিরা তেল একসাথে খেলে এটি আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। কারণ, মধুতে থাকা পটাশিয়াম আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।আর কালোজিরার তেল আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ মধু প্রাকৃতিকভাবে শর্করা সমৃদ্ধ তবে এর কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর কারনে এটি আপনার রক্তের শর্করা স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। অন্যদিকে, কালোজিরার তেল রক্তের শর্করা স্তর কমাতে সাহায্য করে।
- শক্তি বৃদ্ধিতেঃ মধু এবং কালোজিরা একসাথে খেলে আপনার শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে। কারণ মধু একটি দ্রুত শক্তির উৎস এবং কালোজিরার তেল আপনার শরীরের সামগ্রিক শক্তি ও স্থিতি বাড়াতে সাহায্য করে, যা দিনভর আপনার শরীরে পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।
এই উপকারিতা গুলো পেতে আপনি প্রতিদিন সঠিক পরিমাণে কালোজিরার তেল এবং মধু সেবন করতে থাকুন।
রাতে কালোজিরা খেলে কি হয়
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি রাতে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতাও অনেক। আপনারা অনেকেই জানতে চান রাতে কালোজিরা খেলে কি হয়? তাহলে জেনে রাখুন রাতে কালোজিরা খাওয়া বেশ স্বাস্থ্যসম্মত। রাতে কালোজিরা খেলে এটি আপনার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন দিককে প্রভাবিত করতে পারে।
কালোজিরার তেল বা পাউডার আপনি যদি রাতে খান তাহলে এটি আপনার হজম প্রক্রিয়াকে সহজেতর করে।কারণ এর এন্টি ইনফ্লামেটরি গুণ আপনার পাচনতন্ত্রের কাজ ত্বরান্বিত করে এবং রাতের খাবারের পর হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও রাতে কালোজিরা খাওয়ার ফলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য আপনার শরীরের নানান প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
ফলে আপনার ঘুম ভালো হয়।নিয়মিত রাতে কালোজিরা খাওয়ার ফলে এটি মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমিয়ে আপনার জন্য মানসিক প্রশান্তি বয়ে নিয়ে আসে। তবে একটি কথা,অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা খেলে রাতে এতে আপনার শরীরের উপর চাপ ফেলতে পারে ফলে পেটের সমস্যা বা বদহজম দেখা দিতে পারে। সুতরাং রাতে কালোজিরা খাওয়ার আগে এর পরিমাণ এবং আপনার শরীরের প্রতিক্রিয়া বিবেচনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয়
কালোজিরা খেলে কি গ্যাস হয়? এই প্রশ্ন কমবেশি আমাদের সকলের মনেই। দেখুন আপনি যদি সঠিক পরিমাণে নিয়ম মেনে কালোজিরা খান সেক্ষেত্রে গ্যাস হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। কিন্তু আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা বীজ বা কালোজিরা তেল খান সেক্ষেত্রে আপনার গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কারণ, এর কিছু উপাদান যেমন- ফাইবার এবং আন্টি ইনফ্লেমেটরি আপনার হজমে বাধা প্রদান করতে পারে। তাছাড়া কালোজিরার তিক্ত স্বাদ এবং তেল জাতীয় বৈশিষ্ট্য আপনার পেটের গ্যাস এবং পেট খোলা ভাব সৃষ্টি করতে পারে। আর এই সমস্যা বেশি হয় বিশেষ করে যারা পেটের সমস্যা বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যায় ভুগছেন।
এছাড়াও কালোজিরা অত্যাধিক ব্যবহার আপনার পেটের ভিতর গ্যাসের পরিমাণ বাড়াতে পারে, যা পেটের অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। সুতরাং, কালোজিরা ব্যবহার করার পূর্বে আপনি অবশ্যই সঠিক পরিমাণে ব্যবহার করবেন এবং যদি কোন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় সে ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করবেন। কালোজিরা খেলে গ্যাস হয় কি হয় না আশা করি এর উত্তর আপনি পেয়ে গেছেন।
টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয়
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার নানান উপকারিতা তো রয়েছেই, সাথে টানা ৭ দিন কালোজিরা খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে ইতিবাচক প্রভাব দেখা দিতে পারে। যেমন-
- টানা সাত দিন ধরে কালিজিরা খেলে এটি আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে।
- আপনি একটা না সাত দিন কালোজিরা খেলে এটি আপনার হজম ক্ষমতা উন্নত করে এবং সেই সাথে পেটের গ্যাস, বদহজম, পেট ফাঁপা ও অম্বলের সমস্যাও দূর করতে পারে।
- নিয়মিত নিয়ম করে টানা সাত দিন কালিজিরা খেলে এতে আপনার ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়ে ওঠে এবং এবং আপনার ত্বকের হারানো জেল্লা ফিরে আসতে শুরু করে।
- আপনাদের যাদের রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা টানা ৭ দিন কালোজিরা খেয়েই দেখুন না!! এটি আপনার রক্তচাপ ও রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করবে।
- নিয়মিত টানা ৭ দিন কালোজিরা খাওয়ার ফলে এটি আপনার শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে, ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে এবং আপনার দৈনন্দিন কার্যকলাপের জন্য আরও অতিরিক্ত শক্তি সরবরাহ করতে থাকে।
- কালোজিরায় প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে যা আপনার শরীরের টিস্যু তৈরিতে সাহায্য করে। নিয়মিত সাত দিন কালোজিরা খেলে এর ওমেগা৩ এবং ওমেগা৬ ফাটি অ্যাসিড আপনার হার্ট সুস্থ রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে দেয়।
- টানা ৭ দিন কালোজিরার ব্যবহারে এটি আপনার মেটাবলিজমের গতি বৃদ্ধি করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করে।
টানা ৭ দিন কালোজিরা খাওয়ার ফলে আপনি উপরিউক্ত এই উপকারিতা গুলো পেতে পারেন। তবে খাওয়ার সময় অবশ্যই নিয়ম মত সঠিক পরিমাণে খাবেন। তা না হলে আপনার পেটে এসিডিটির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম
টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয় তা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছেন। সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার জন্য আপনি যদি সঠিক নিয়ম অনুসরণ করেন সেক্ষেত্রে এর থেকে আপনি সর্বাধিক উপকারিতা পাবেন। সকালে খালি পেটে মধু ও কালিজিরা কিভাবে খেতে হয় এই নিয়ম আমরা অনেকেই জানিনা। এবার চলুন আপনি সকালে খালি পেটে মধু ও কালিজিরা কতটুকু পরিমাণ এবং কিভাবে খাবেন সে সম্পর্কে জেনে নিন--
সঠিক সময়- মধু ও কালোজিরা খাওয়ার সঠিক সময় হল সকালে ঘুম থেকে উঠে। এতে করে আপনার শরীর দ্রুত শোষণ করতে পারে।
- কালোজিরাঃ প্রতিদিন আপনার জন্য ১/২-১/৪ চা চামচ কালোজিরা পাউডার বা কালোজিরা বীজ খাওয়াটাই যথেষ্ঠ হবে।
- মধুর পরিমাণঃ কালোজিরা ও মধু একসাথে খেতে আপনি কালোজিরা সাথে ১ চা চামচ পরিমাণ মধু খাবেন।
- মধু ও কালোজিরা একসাথে খাওয়ার জন্য আপনি প্রথমে কালোজিরা সামান্য ভেজে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে পাউডার বানিয়ে নিন।
- এবার একটি পরিষ্কার পাত্রে ১ চা চামচ মধু এবং ১/২-১/৪ চা চামচ কালোজিরা পাউডার নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিন। এবার এই মিশ্রণটি আপনি খেয়ে ফেলুন।
- আপনি চাইলে মধু এবং কালোজিরা পাউডারের এই মিশ্রণটি এক কাপ পানির সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন।
- আবার, আপনি যদি চিবিয়ে খেতে চান সেক্ষেত্রে গোটা কালোজিরা দিয়ে মধুর সাথে মিশে চিবিয়েও খেতে পারেন।
- মধু ও কালোজিরা খাওয়ার পর আপনি অন্তত ৩০ মিনিট অন্য কোন খাবার খাবেন না বা পানীয় পান করবেন না। যাতে করে এর কার্যকারিতা পুরোপুরি আপনার শরীরের কাজে লাগে।
- মধু এবং কালোজিরা খাওয়ার পর সাথে সাথে খাবার খেলে এর কার্যকারিতা অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। ফলে, মধু কালোজিরা খাওয়ার পর আধা ঘণ্টা মতো খাবার পরিহার করুন।
সকালে খালি পেটে মধু ও কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা
টানা ৭ দিন কালোজিরা খেলে কি হয় তা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছি। এবার চলুন, আপনাদের জানাবো সকালে খালি পেটে মধু এবং কালিজিরা খেলে আপনি কি কি উপকারিতা পেতে পারেন--
শক্তি ও সতেজতা বৃদ্ধি
- মধুঃ মধুর প্রাকৃতিক সুগার গ্লুকোজ ও ফ্রুকটোজ এর একটি ভালো উৎস যা অতি দ্রুত শরীরে শক্তি প্রদান করে। পেছনে সকালবেলা খালি পেটে মধু খেলে এটি আপনাকে দ্রুত সতেজ করে তোলে এবং সারাদিনের জন্য শক্তি সরবরাহ করতে থাকে।
- কালোজিরাঃ খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার ফলে এটি আপনার শরীরের মেটাবলিজম উন্নত করে এবং সেই সাথে শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
হজম প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে
- মধুঃ সকালে খালি পেটে মধু খেলে এটি আপনার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং পেটের গ্যাস ও অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করে।
- কালোজিরাঃ সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে এর থাইমোকুইনন উপাদান আপনার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে এবং শারীরিক প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
- মধুঃ মধু এন্টিঅক্সিডেন্টের একটি দুর্দান্ত উৎস, যা নিয়মিত সকালে খাওয়ার ফলে এটি আপনাকে বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
- কালোজিরাঃ কালোজিরায় বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও আন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়ক।
ওজন কমাতে সাহায্য করে
- মধুঃ খালি পেটে মধু খেলে এটি আপনার শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট জমতে বাধা প্রদান করে এবং বিপাকক্রিয়া বাড়ায়। যা আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।
- কালোজিরাঃ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে,সকালে খালি পেটে কালোজিরা খেলে এটি শারীরিক মেটাবলিজম বৃদ্ধির পাশাপাশি মেদ কমাতে সাহায্য করে।
ত্বক ও চুল ভালো রাখে
- মধুঃ ত্বকে মধু ব্যবহারে এটি আপনার ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং ত্বকের নানা সমস্যা যেমন- শুষ্কতা, ত্বকের কালো দাগ ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে।
- কালোজিরাঃ কালোজিরা আপনার চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং স্ক্যাল্পের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত কালোজিরার তেল ব্যবহারে আপনার চুল হয়ে ওঠে ঘোড়া থেকে মজবুত শক্তিশালী এবং উজ্জ্বল।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
- মধুঃ মধু খাওয়ার ফলে এটি আপনার রক্তের গ্লুকোজ এর স্তর বাড়ানোর পরিবর্তে শরীরের শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।
- কালোজিরাঃ অপরদিকে কালোজিরা খাবার ফলে এটি আপনার রক্তে গ্লুকোজের স্তর নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
মধু ও কালোজিরা একত্রে ব্যবহারের উপকারিতা
- মধু ও কালোজিরার মিশ্রণ ব্যবহারে এটি আপনার শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে বিশেষ করে পেটের মেদ।
- মধু ও কালো চুলার মিশ্রণ উভয়ই আপনার ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।
- সকাল বেলা খালি পেটে মধু ও কালোজিরার মিশ্রণ খাওয়ার ফলে এটি আপনার শরীরকে সতেজ এবং শক্তিশালী করে তোলে।
প্রতিদিন কতটুকু কালোজিরা খাওয়া উচিত
আপনি প্রতিদিন কতটুকু পরিমান কালোজিরা খাবেন সেটি নির্ভর করবে আপনার শারীরিক অবস্থার ওপর। তবে, সাধারণত একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ১ চা চামচ অর্থাৎ ২-৩ গ্রাম কালোজিরার বীজ খেতে পারেন। প্রতিদিন এক চা চামচ কালোজিরার বীজ খাওয়া আপনার স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ এবং কার্যকরী বলে মনে করা হয়। তবে, আপনার শারীরিক প্রতিক্রিয়া এবং স্বাস্থ্যে পরিস্থিতি বিবেচনায় এই পরিমাণ পরিবর্তিত হতে পারে।
আরেকটি কথা, আপনি যদি প্রথম বারের মত কালোজিরা সেবন করে থাকেন সেক্ষেত্রে,প্রথমে খুব অল্প পরিমাণে যেমন ধরুন, ১/২ চা চামচ করে খাওয়া শুরু করুন।পরবর্তীতে কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস হয়ে গেলে তখন ধীরে ধীরে এর পরিমাণ বাড়িয়ে নিতে পারেন। আপনি প্রতিদিন কতটুকু কালিজিরা খাবেন আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমার মন্তব্য
সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণে অবগত হয়েছেন। মসলা হিসেবে কালোজিরা ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হলেও ইউনানী মতে নারীদের বিভিন্ন রোগে কালোজিরা এক অব্যর্থ মহৌষধ।সেই প্রাচীনকাল থেকেই কালোজিরা আয়ুর্বেদ, ইউনানী,কবিরাজি ও লোকজ নানান রোগের চিকিৎসায় প্রতিরোধক এবং প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
হাজারো রোগ থেকে মুক্তির জন্য কালোজিরার গুণের কথা আপনার নিশ্চয়ই অজানা নয়! তাছাড়া কালোজিরা থেকে আপনি সর্বাধিক উপকারিতা পেতে পারেন,যদি আপনি এটি সকালে খালি পেটে খেতে পারেন। তাই আর দেরি নয় আপনি নিজের সুস্বাস্থ্যের কথা ভেবে আজ থেকেই সকালে খালি পেটে কালোজিরা খাবার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url