শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার ১০টি কার্যকরী উপায়
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে আপনি জানতে চান? মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় কি হতে পারে জানেন কি? না জানলে আজকের এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন।
কারন, আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায়, এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে। তাহলে চলুন আজকের আলোচনা শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার ১০টি কার্যকরী উপায়
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়
শরীর ও মন ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে অবশ্যই আমাদের জেনে রাখা উচিত। মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় কি হতে পারে তা আমরা অনেকেই জানিনা। কিন্তু শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য একে অপরের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত তা কি জানেন? অনেককেই দেখা যায় শরীর ঠিক থাকলেও মানসিক স্বাস্থ্যে ভাল রাখার দিকে একেবারেই নজর দেন না।
আবার দৈনন্দিন জীবনের কর্মব্যস্ততায় মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে অনেকে ভাববারও সময় পান না। কিন্তু এটি মোটেও উচিত নয়। এতে করে আপনার মানসিক রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে। সম্মানিত পাঠক, আজকে আলোচনা শুরুতেই আপনাকে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার কিছু উপায় সম্পর্কে জানিয়ে দেবো। তো চলুন উপায় গুলো কি সে সম্পর্কে জেনে নিন-
আরো পড়ুনঃ চিরতরে মেছতা দূর করার ২০টি উপায়
- নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করুনঃ আপনি কি মানসিকভাবে খুবই হতাশাগ্রস্থ? তাহলে আজ থেকে নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলুন কারণ ব্যায়াম করলে আপনার শরীরে এন্ডরফিন নামক একটি হরমোন ক্ষরণ হয় আপনার মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই মন ভালো রাখতে আপনি প্রতিদিন ৩০ মিনিটের মতো হালকা ব্যয়াম যেমন-ধরুন হাটা বা দৌড়ানো, সাঁতার কাটা ইত্যাদি পন্থা বেছে নিতে পারেন।
- পর্যাপ্ত ঘুমের যত্ন নিনঃ বর্তমান ডিজিটাল সময়ে আমাদের হাতে হাতে ছোট বড় সকলেরই একটি এন্ড্রয়েড ফোন রয়েছে। আর এই ফোন ব্যবহারের সুবাদে অনেকেই আছেন যারা না ঘুমিয়েই রাত পার করে ফেলেন।যা আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে।কেননা একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির প্রতিদিন রাতে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন।আর এই পর্যাপ্ত ঘুম এনে দিতে পারে আপনার মানসিক প্রশান্তি। তাই অহেতুক রাত না জেগে আপনি আপনার পর্যাপ্ত ঘুমের দিকে নজর দিন।
- স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট এর কৌশল রপ্ত করুনঃ অনেক সময় যোগব্যায়াম,মেডিটেশন,ব্রেথিং অনুশীলন করলে এটি আপনার মানসিক চাপ কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। আর তাই কিছু সময় অন্তর নিজেকে বিশ্রাম দেওয়া এবং পছন্দের কাজ করার মাধ্যমে আপনি আপনার মানসিক চাপ অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারেন।
- সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখুনঃ আপনি একগুয়ে, এক ঘরে না থেকে আপনার নিকট আত্মীয়,পরিবার পরিজন,বন্ধু-বান্ধব এবং প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।এতে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
- বিভিন্ন সৃজনশীল কার্যকলাপে অংশ নিনঃ বিভিন্ন ধরনের সৃজনশীল কার্যকলাপ যেমন ধরুন-গান গাওয়া,ছবি আঁকা, লেখা বা যে কোন সৃজনশীল কাজ করার মাধ্যমে আপনি আপনার মানসিক প্রশান্তি আনতে পারেন। কারণ এই ধরনের কার্যকলাপ আপনার মনের অনুভূতিগুলো সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারে।
- প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটানঃ আপনি সর্বদা ইট পাথরের চার দেয়ালের ঘরে বন্দী না থেকে কিছুটা সময় প্রকৃতির সাথে কাটানোর অভ্যাস করুন।কারণ,প্রকৃতির সাথে সময় কাটালে মন ভালো থাকে এবং তাতে মানসিক প্রশান্তিও আসে।যেমন ধরুন- আপনি প্রতিদিন কিছুটা সময় কোন পার্কে হাঁটাহাঁটি করলেন।
- পুষ্টিকর খাবার খানঃ পুষ্টিকর খাবার খাওয়া শুধু আপনার শরীরের জন্য উপকারী নয় বরং এটি আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখে। আপনার মেজাজ পরিবর্তন বা খিট খিটে হওয়ার অন্যতম কারণ কিছু খনিজ উপাদান যেমন- আয়রন,ভিটামিন বি'১২। তাই আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় সুষম খাদ্য যোগ করুন। তাছাড়া,আপনি যদি অতিরিক্ত মাত্রায় খিটখিটে মেজাজ,উদ্বিগ্ন,বা হতাশায় ভুগতে থাকেন তাহলে অতিরিক্ত কফি খাওয়া কমিয়ে দিন।
- অ্যালকোহল,ধূমপান ও মাদক পরিহার করুনঃ অনেকে আছেন যারা মানসিকভাবে হতাশ হয়ে ধূমপান মাদক বা অ্যালকোহলের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। আপনি হয়তো জানেন না এগুলো আপনার মানসিক হতাশা কখনো কাটাতে পারেনা বরং আপনার শরীর ও মনের ওপর একটি বিরূপ প্রভাব ফেলে।তাই অ্যালকোহল,ধূমপান ও মাদক যতটা সম্ভব পরিহার করে চলার চেষ্টা করুন।
- সূর্যের আলো আপনার গায়ে লাগানঃ সূর্যের আলোতে রয়েছে ভিটামিন ডি যা আমরা সকলেই জানি আর এই ভিটামিন আপনার শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি প্রতিদিন অন্তত দুই ঘন্টা আপনার শরীরে সূর্যের আলো লাগান। এটা আপনার মস্তিষ্কের ক্ষতিকর পদার্থ অপসারিত হবে এবং মেজাজ আরো উন্নত হবে। কারণ সূর্যের আলোতে গেলে আপনার শরীরে এটি এন্ডরসিন ও সেরোটোনিন উৎপাদন অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।যা আপনি মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে অত্যন্ত জরুরি।
- দুশ্চিন্তা দূর করুন দৈনন্দিন জীবনের কাজে-কর্মে নানা ধরনের দুশ্চিন্তা আমাদের মাথায় ভর করে। এসব দুশ্চিন্তার সঠিক সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন।অযথা অলীক কল্পনায় আপনি ডুবে থাকবেন না।
- অন্যের সাহায্যে এগিয়ে আসুনঃ অনেক সময় দেখবেন অন্যকে যে কোন কাজে সাহায্য করার ফলে নিজের মধ্যেও একটা ভালো লাগার অনুভূতি কাজ করে। আর তাই আপনি পারলে অন্যের জন্য কিছু করার চেষ্টা করুন।বিশেষ করে,কোন দরিদ্র মানুষকে আপনি হয়তো পোশাক কিনে দিলেন বা একবেলা ভালো-মন্দ খাওয়ালেন, সামান্য অর্থ দিয়ে সাহায্য করলেন আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী। এতে দেখবেন আপনার মন দুশ্চিন্তার ঘোর থেকে বেরিয়ে অনেকটাই ভালো হয়ে যাবে।
- প্রাণ খুলে হাসুনঃ আপনার হয়তো হাসার মত কোন পরিস্থিতি নেই। কারণ প্রচন্ড রকমের মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। তবুও বলবো,আপনি হাসার চেষ্টা করুন।কারণ হাসি আপনার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে এবং মনের বিষন্নতা দূর করবে।
- অন্যের সাহায্য নিনঃ আপনি যখন মানসিকভাবে খুব বেশি অস্বস্তি বোধ করবেন তখন একেবারে মুখ বুজে কুলুপ এঁটে না থেকে বরং আপনার অসুবিধার কথা আপনার পরিবার বা বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করুন। কারণ অত্যধিক মানসিক চাপে চুপ থাকলে আপনি বিকারগ্রস্থও হয়ে পড়তে পারেন। অনেকে আবার ভাবেন মানসিক অস্বস্তিতে ভুগছেন এটা কাউকে জানালে সে আপনাকে পাগল ভাববে। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ভুল।এই ভ্রান্ত ধারণা থেকে আপনি সরে আসুন।
মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার মৌলিক বিষয়গুলো কি
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে জানতে হলে হলে আপনাকে আগে জানতে হবে মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার মৌলিক বিষয়গুলো সম্পর্কে। তবেই আপনি মানসিক স্বাস্থ্যের সুস্থতা রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন।মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার মৌলিক বিষয়গুলো মূলত নির্ভর করবে আপনার যথাযথ শারীরিক যত্ন,সঠিক খাদ্যাভ্যাস,পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ মোকাবেলার কৌশল সম্পর্কে আপনি কতটুকু জানেন তার উপর।
মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার মৌলিক বিষয়গুলো এইরকম বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে গঠিত। যেমন ধরুন মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষায় আপনার একটি সুস্থ এবং ভারসাম্যপূর্ণ জীবন যাপন অত্যন্ত প্রয়োজন। এর মধ্যে আপনার নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম বা শরীর চর্চা,সঠিক সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং অবশ্যই পর্যাপ্ত ঘুম অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।
মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে আপনি নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ যেমন- হাঁটা,দৌড়ানো,যোগ ব্যায়াম করা ইত্যাদি করতে পারেন যা আপনার মনকে সতেজ ও প্রফুল্ল রাখবে। তদুপুরি,একটি স্বাস্থ্যকর সুষম খাদ্যাভ্যাসও আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের সুস্থতার জন্য অপরিহার্য। এর অংশ হিসেবে আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের তাজা ফলমূল,শাকসবজি,প্রোটিন জাতীয় খাবার এবং
স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার যোগ করতে পারেন। শুধুমাত্র খেলে এবং শরীর চর্চা করলে চলবে না বরং এর সাথে আপনাকে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। কারণ পর্যাপ্ত ঘুমের মাধ্যমে আপনার মস্তিষ্কের বিশ্রাম নিশ্চিত করতে হবে,যা আপনার মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক হবে। এছাড়াও মানসিক চাপ মোকাবেলার জন্য আপনার যে কাজটি করতে ভালো লাগবে সে কাজের প্রতি মনোযোগ দেওয়া,
আপনার প্রিয় মানুষদের সাথে কিছু সময় কাটানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।সামাজিক সংযোগ বজায় রাখা,বন্ধু-বান্ধব এবং পরিবার পরিজনের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং প্রয়োজনে পেশাদার মানসিক স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করাও আপনার মানসিক চাপ এবং উদ্বেগের পরিমাণ কমাতে সহায়ক হতে পারে।এই সমস্ত বিষয় গুলো একসাথে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সামাজিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে জানার পর, আপনি এবার নিশ্চয়ই সামাজিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে জানতে চান।সামাজিক স্বাস্থ্য কথাটির অর্থ আপনি জানেন কি? হয়তোবা এই কথাটির সাথে আপনি খুব একটা পরিচিত নন।তাহলে জেনে রাখুন,সামাজিক স্বাস্থ্য মানে হল মানুষের সাথে সুস্থ ইতিবাচক এবং একটি সুন্দর সম্পর্কে আবদ্ধ থাকা।
যা সমাজে আপনার প্রতি ভালোবাসা,সমর্থন এবং সহযোগিতার অনুভূতি তৈরি করে।সামাজিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য বেশ কিছু কার্যকরী উপায় রয়েছে যা একজন ব্যক্তি এবং সম্প্রদায়ের জন্য মঙ্গল কর হতে পারে। এবার চলুন সামাজিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার কার্যকরী উপায় গুলো কি কি হতে পারে সে সম্পর্কে জানুন--
আরো পড়ুনঃ লেবু দিয়ে ওজন কমানোর কার্যকরী ৭টি উপায়
- প্রথমতঃ সামাজিক স্বাস্থ্য সঠিকভাবে বজায় রাখার প্রথম শর্ত হলো সুস্পষ্ট ও খোলামেলা যোগাযোগ। কারন আন্তরিকভাবে এবং সঠিকভাবে ভাবনা ও অনুভূতি ব্যক্ত করার মাধ্যমে যেকোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি এড়ানো সম্ভব।এছাড়াও সমাজের আরেকজনের কথা শুনে তার মতামত এবং অনুভূতিকে সম্মান জানানো আপনার সামাজিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
- দ্বিতীয়তঃ সামাজিক স্বাস্থ্য ধরে রাখার দ্বিতীয় শর্ত হলো পরিবার বন্ধু বান্ধব এবং সহকর্মীদের সাথে নিয়মিত সময় কাটানো এবং তাদের সুখ-দুঃখে নিজেকে সঁপে দেওয়া। যাতে করে একজন আরেকজনের সুখ-দুঃখ মনের কথা খুব সহজে একে অপরের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এতে করে আপনার সাথে সম্পর্কের গভীরতা বাড়াবে।আর মানসম্পন্ন সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য সময় ও মনোযোগ দুটোই আপনার দেওয়া উচিত।যেমন ধরুন- যেকোনো পারিবারিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলেন কিংবা বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলেন।
- তৃতীয়তঃ আপনার সামাজিক জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা উচিত।কারণ,একটি সম্পর্কের মধ্যে সহানুভূতি ও সমর্থন প্রদানের মাধ্যমেই কিন্তু মানুষের প্রতি যত্নশীলতা প্রকাশ পায়। তাছাড়া একজনের সুখে দুখে পাশে থাকা,তার সাথে সহানুভূতির সাথে কথা বলা এবং সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া এই বিষয়গুলো আপনার সাথে তার সম্পর্ক মজবুত করবে এবং আপনার সামাজিক স্বাস্থ্য রক্ষা করবে।
- চতুর্থতঃ আপনি আপনার নিজের এবং অন্যদের আবেগ বুঝতে শিখুন এবং সেগুলি সাথে দক্ষ ভাবে আচরণ করতে শিখুন। কারণ,নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখায এবং অন্যদের আবেগের প্রতি সহানুভূতি দেখানো সামাজিক স্বাস্থ্য সম্পর্কের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে। এতে করে সামাজিক সংযোগ আরো শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
- পঞ্চমতঃ বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় কমিউনিটি বা সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে এটি সমাজের সাথে আপনার সংযোগ বাড়ায় এবং সামাজিক স্বাস্থ্য উন্নত করে। আর তাই স্থানীয় বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করা,স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে যুক্ত হওয়া অথবা সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য কাজ করা সামাজিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- ষষ্ঠতঃ জীবনে চলার পথে প্রতিদিন আপনার নানান ধরনের মানুষের সাথে পরিচয় হয় এবং সম্পর্ক গড়ে উঠতেই পারে। আর তাই নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হওয়া এবং সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করা এটি সামাজিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন সামাজিক ইভেন্ট সেমিনার বা কর্মশালায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে আপনি নতুন বন্ধু সার্কেল বা পরিচিতি তৈরি করতে পারেন।যা আপনার সামাজিক স্বাস্থ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শরীর স্বাস্থ্য ভালো করার উপায়
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে জানার পর আপনাকে প্রথমেই নজর দিতে হবে আপনার শরীর ও স্বাস্থ্যের উপর। কারণ শরীর স্বাস্থ্য ভালো থাকলে স্বাভাবিকভাবেই আপনার মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে। তাই চলুন মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আপনি আপনার শরীর স্বাস্থ্য কিভাবে ভালো করবেন সে উপায় গুলো জেনে নিন--
- সুষম খাদ্য গ্রহণঃ আপনার শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার প্রথম ও প্রধান শর্ত হল পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করা। আর সুষম খাদ্যাভ্যাস হিসেবে আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে তাজা ফলমূল,প্রোটিন জাতীয় খাদ্য,শাকসবজি স্বাস্থ্যকর চর্বি জাতীয় খাদ্য যেমন- এভোকাডো,বাদাম ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। তবে বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাবার অতিরিক্ত চিনি এবং অতিরিক্ত লবণ খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
- নিয়মিত শরীর চর্চা করুনঃ আপনার শরীর স্বাস্থ্য ভালো করতে নিয়মিত শরীরচর্চা বা শারীরিক পরিশ্রম অত্যন্ত জরুরি। এর জন্য প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করা আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী।নিয়মিত শরীর চর্চার ফলে এটি আপনার হার্টের স্বাস্থ্য উন্নত করবে,শরীরের মেদ ঝরাবে এবং শরীরের শক্তি বাড়াবে।
- পর্যাপ্ত ঘুমঃ শরীর স্বাস্থ্য ভালো করার আরেকটি প্রধান অন্তরায় হলো পর্যাপ্ত ঘুম। ঘুমের অভাবে আপনার মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের যথেষ্ট অবনতি হতে পারে। তাই শরীর স্বাস্থ্য ভালো করতে আপনি প্রতিদিন ঘুমের রুটিন মেনে ৭-৮ ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমানোর চেষ্টা করুন। এতে আপনার শরীর মন উভয় ভালো থাকবে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানঃ সারাদিনের কর্মব্যস্ততার ফলে অনেক সময় আমাদের শরীর যে পরিমাণ পানি চায় তা পান করা সম্ভব হয় না। কিন্তু শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে প্রতিদিন কমপক্ষে আপনার ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। আর পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করলে আপনার শরীরের বিষাক্ত টক্সিন পদার্থ বের হয়ে যাবে সেই সাথে আপনার ত্বক ক উজ্জ্বল হবে এবং পাচনতন্ত্রও ঠিক থাকবে।
- মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিনঃ শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে মানসিক চাপ কমানোর বিভিন্ন কৌশল যেমন ধ্যান যোগব্যায়াম করা ইত্যাদি আপনি ভালো করে রপ্ত করতে শিখুন।যেকোনো ধরনের চাপ ও উঠবে আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে তাই মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- স্বাস্থ্যকর অভ্যাস বজায় রাখুনঃ আপনি যতটা পারবেন ধূমপান অতিরিক্ত মদ্যপান এবং মাদকদ্রব্য সেবন থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। কারণ এই সমস্ত বদ অভ্যাস আপনার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি করতে পারে এবং নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানঃ আমরা সাধারণত একটি সমস্যা যতক্ষণ না পর্যন্ত গুরুতর পর্যায়ে না পৌঁছায় ঠিক ততক্ষণ পর্যন্ত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে চাই না।এই চিন্তা ভাবনা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা উচিত। আর তাই আপনার নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ ও স্পিনিং পরীক্ষা করা উচিত। এর ফলে আপনার সম্ভাব্য স্বাস্থ্য সমস্যা চিহ্নিত হবে এবং আপনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবেন।
- সুস্থ জীবন যাপনের অভ্যাসঃ দৈনন্দিন জীবনযাপনে সুস্থ স্বাভাবিক অভ্যাস গড়ে তোলাটা অত্যন্ত জরুরী।যেমন ধরুন- নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা,পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা,পরিষ্কার জুতা পরিধান করা,খাবার আগে পরিষ্কার করে হাত ধোয়া ইত্যাদি।
আজীবন সুস্থ থাকার উপায়
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে আপনাকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছি। আজীবন সুস্থ থাকতে কে চায় না বলুন তো? কিন্তু আজীবন সুস্থ থাকতে চাইলে আপনাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার কিছু মৌলিক স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অনুসরণ করে চলতে হবে। এবার চলুন আজীবন সুস্থ থাকার জন্য কিছু উপায় আপনাকে জানিয়ে দেই--
- আপনি যদি আজীবন সুস্থ থাকতে চান তাহলে বিভিন্ন ধরনের প্রক্রিয়াজাতকৃত খাবার,ফাস্টফুড,অতিরিক্ত চিনি এবং লবণ খাওয়া পরিহার করে সুষম খাদ্যাভাস গ্রহণ করুন। আর সুষম খাদ্যাভাস হিসেবে আপনি প্রোটিন,শর্করা,ফ্যাট,ভিটামিন এবং মিনারেলস এর সুষম মিশ্রণ গ্রহণ করতে পারেন।
- আজীবন সুস্থ থাকার আরেকটি শর্ত হলো শরীরের আলসেমি ভাব দূর করা।আপনি নিয়মিত শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করুন যার মাধ্যমে আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ থাকবে,মানসিক চাপ কমবে এবং আপনার ওজনও নিয়ন্ত্রিত হবে। আর এর জন্য প্রত্যেক সপ্তাহে আপনার অন্তত ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করা জরুরি।
- আপনি যদি আজীবন সুস্থ থাকতে চান তাহলে বলবো দিনে প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানে এটি আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখবে, শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করবে।যা আপনার আজীবন সুস্থতার জন্য সহায়ক হবে।
- আপনি প্রতিদিন ৭ থেকে ৮ ঘন্টায় ঘুমের পরিবেশ নিশ্চিত করুন কারণ ভালো ঘুম হলে এটি আপনার শরীর পুনরুদ্ধার এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
- দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে আপনি যোগ ব্যায়াম,ধ্যান, নীরবতায় কিছুক্ষণ সময় কাটানো ইত্যাদি উপায় বেছে নিতে পারেন। যদি সম্ভব হয় আপনার মনের অনুভূতিগুলো আরেকজনের সাথে শেয়ার করুন এবং চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- আপনি আপনার আত্মীয়-স্বজন নিকট আত্মীয় বন্ধু-বান্ধব পরিবার পরিজনের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখুন এবং বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করুন। এতে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে এবং এতে করে আপনার আজীবন সুস্থ থাকার অনেকটাই সহজ হতে পারে।
- আপনি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা গ্রহণ করুন।
- শরীর স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতে নিয়মিত হাইজিনের কোন বিকল্প নেই।অর্থাৎ নিয়মিত গোসল করা,দাঁত ব্রাশ করা,পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা,নিজে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকা ইত্যাদি আপনার সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- সবশেষে বলবো আপনি আপনার নিজের জীবনের ওপর একটি পজিটিভ মনোভাব রাখুন।সুখী থাকুন,আপনার লক্ষ্যে মনোনিবেশ করুন এবং কঠিন পরিস্থিতিতে ধৈর্য ধারণ করুন।
মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার খাবার
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে জানার পর আপনি এবার নিশ্চয়ই মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার খাবার সম্পর্কে জানতে চান। আর এর জন্য আপনার খাদ্যাভাসেও কিছুটা পরিবর্তন আনা জরুরী।বিশেষ করে মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চাইলে আপনার বিশেষ ধরনের কিছু খাবার সহায়ক হতে পারে। এবার চলুন মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আপনি কি কি খাবেন এবং কেন খাবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন-
- অমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডঃ হোমিওপ্যাথিন ফ্যাটি অ্যাসিডযুক্ত খাবার আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা উন্নত করে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড হিসেবে আপনি বিভিন্ন ধরনের মাছ, চীয়া সিড, ওয়ালনাট ইত্যাদি খেতে পারেন।
- ভিটামিন বি১২ এবং ফলেটঃ ভিটামিন বি ১২ এবং ফলেট রয়েছে এমন খাদ্য আপনার স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।সে হিসেবে আপনি মাংস,দুধ,ডিম আপনার পছন্দসই যেকোনো ধরনের শাকসবজি। এগুলি আপনার মস্তিষ্কের কাজ ও স্নায়ু সিস্টেমের সঠিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
- অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসঃ এন্টিঅক্সিডেন্ট আপনার মস্তিষ্ককে অক্সিডেটিভ থেকে রক্ষা করতে পারে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে পারে।এরই অংশ হিসেবে আপনি বেরি,স্ট্রবেরি ব্লুবেরি,কমলা,কাঁঠাল,বিভিন্ন ধরনের গাঢ় সবুজ শাক,টমেটো ইত্যাদি আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।
- ম্যাগনেসিয়াম এর উৎসঃ ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে এমন খাবার খেলে এটি আপনার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে এবং মানসিক শান্তি বজায় রাখতে কাজ করবে। আপনি বিভিন্ন ধরনের শস্যজাতীয় খাদ্য,বাদাম,সাবুদানা,শাকসবজি, সয়াবিন ইত্যাদি থেকে ম্যাগনেসিয়াম পর্যাপ্ত পরিমাণে পাবেন।
- ভিটামিন ডি জাতীয় খাবারঃ ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার যেমন চর্বিযুক্ত মাছ,ডিমের কুসুম,দুধ ইত্যাদি গ্রহণের ফলে এগুলি আপনার মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং মনোরোগের ঝুঁকি কমাতে কাজ করবে।
- প্রোবায়োটিকসঃ প্রোবায়োটিকস হিসেবে আপনি দই,কিসমিস মিশো,ক্যাফির ইত্যাদি খেতে পারেন কারণ প্রোবায়োটিকস আপনার মাইক্রোবায়ন কে সুস্থ রাখে যা মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
- ক্যাফিন গ্রহণঃ সীমিত পরিমানে ক্যাফিন অর্থাৎ চা কফি ইত্যাদি গ্রহণ করলে এটি আপনার মস্তিষ্কের কার্যকারী বাড়াতে পারে এবং কাজের প্রতি মনোযোগ বৃদ্ধি করতে পারে।তবে অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাফিন গ্রহণ আপনার মানসিক উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দিতে পারে তাই আপনি পরিমিত পরিমাণে ক্যাফিন পান করুন।
- পুষ্টিকর শর্করা জাতীয় খাদ্যঃ পুষ্টিকর শর্করা জাতীয় খাদ্য খেলে এটি আপনার শরীরে ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করবে এবং রক্তের শর্করা স্তর স্থিতিশীল রাখতে কাজ করবে।যার ফলে আপনার মানসিক স্বাস্থ্য বলুন আর মেজাজ বলুন সেটিও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূলঃ ভিটামিন সি মানসিক এবং শারীরিক উভয় স্বাস্থ্যের জন্যই ভীষণ জরুরী এটি আর নতুন করে অপেক্ষা রাখে না।ভিটামিন সি জাতীয় ফলমূল যেমন লেবু,কমলা,স্ট্রবেরি,কাঁচামরিচ,ব্রুকলি ইত্যাদ নিয়মিত খেলে এগুলো আপনার মানসিক চাপ কমায় এবং মস্তিষ্কের সুস্থতা বজায় রাখে।
সুস্থ থাকার জন্য করণীয়
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে আপনি ইতিমধ্যেই জেনে গেছেন। সুস্থ থাকার জন্য আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক বিবেচনা করা উচিত।যা আপনার শরীর এবং মনের সামগ্রিক সুস্থতা নিশ্চিত করবে। যেমন ধরুন
ওজন কমানো
নিজেকে সুস্থ সবল রাখতেআপনি যদি সুস্থ থাকতে তাহলে শরীরের ঠিকঠাক ওজন ধরে রাখতে হবে। মনে করুন আপনার উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওদের অনেক বেশি সে ক্ষেত্রে সুস্বাস্থ্যের জন্য হলেও আপনার ওজন কমাতেই হবে। আর ওজন কমার সাথে সাথে আপনার উচ্চ রক্তচাপ টাইপের ইত্যাদি রোগের ঝুঁকিও কমতে শুরু করবে।এর জন্য আপনি নিয়মিত স্বার্থপর খাবার খান এবং ব্যায়াম এর অভ্যাস করুন।
স্বাস্থ্যকর পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার
সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের কোন বিকল্প নেই। আর এই স্বাস্থ্যকর খাবারের সাথে মূলত দুইটি বিষয়ে জড়িয়ে রয়েছে।একটি হল আপনি কি ধরনের খাবার খাচ্ছেন এবং দ্বিতীয়টি হল কিভাবে খাচ্ছেন। স্বাস্থ্যকর খাবার বলতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের তাজা শাকসবজি ফলমূল, ক্যালোরি ও চর্বি কম থাকে, এবং প্রোটিন রয়েছে এমন খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। এবার বলি আপনি কিভাবে খাবেন।
ওজন কমানো
নিজেকে সুস্থ সবল রাখতেআপনি যদি সুস্থ থাকতে তাহলে শরীরের ঠিকঠাক ওজন ধরে রাখতে হবে। মনে করুন আপনার উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওদের অনেক বেশি সে ক্ষেত্রে সুস্বাস্থ্যের জন্য হলেও আপনার ওজন কমাতেই হবে। আর ওজন কমার সাথে সাথে আপনার উচ্চ রক্তচাপ টাইপের ইত্যাদি রোগের ঝুঁকিও কমতে শুরু করবে।এর জন্য আপনি নিয়মিত স্বার্থপর খাবার খান এবং ব্যায়াম এর অভ্যাস করুন।
স্বাস্থ্যকর পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার
সুস্থ থাকার জন্য স্বাস্থ্যকর পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের কোন বিকল্প নেই। আর এই স্বাস্থ্যকর খাবারের সাথে মূলত দুইটি বিষয়ে জড়িয়ে রয়েছে।একটি হল আপনি কি ধরনের খাবার খাচ্ছেন এবং দ্বিতীয়টি হল কিভাবে খাচ্ছেন। স্বাস্থ্যকর খাবার বলতে সাধারণত বিভিন্ন ধরনের তাজা শাকসবজি ফলমূল, ক্যালোরি ও চর্বি কম থাকে, এবং প্রোটিন রয়েছে এমন খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত। এবার বলি আপনি কিভাবে খাবেন।
খুব দ্রুত একসাথে বেশি পরিমাণে খাওয়ার ফলে আপনার ওজন বেড়ে যেতে পারে। আর ঠিক সে কারণে আপনাকে ধীরে ধীরে ভালোভাবে খাবার চিবিয়ে খেতে হবে। প্রয়োজনে আপনি একটি খাবার তিনবার খাবেন কিন্তু একসাথে অতিরিক্ত খাবার খাবেন না।মনে রাখবেন,খাবার খাওয়ার পর পেট ভরে গেলে সেই বার্তা আপনার মস্তিষ্কে পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় 20 মিনিট। তাই পেট ভরে গেছে বোঝার সাথে সাথে আপনি খাওয়া বন্ধ করে দিন।
শরীরের আলসেমি ভাব কমিয়ে আনুন
নিজেকে সুস্থ সবল রাখতে আপনি আপনার বিভিন্ন ধরনের আলসেমি অভ্যাসগুলো ত্যাগ করুন। এর জন্য আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন এবং সেই সাথে অলস ভাবে শুয়ে বসে থেকে সময় কাটানোর অভ্যাস ত্যাগ করুন। শরীরের আলসেমি দূর করতে আপনি আপনার দৈনন্দিন কাজে ছোট ছোট কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে তা আনতে পারেন।
শরীরের আলসেমি ভাব কমিয়ে আনুন
নিজেকে সুস্থ সবল রাখতে আপনি আপনার বিভিন্ন ধরনের আলসেমি অভ্যাসগুলো ত্যাগ করুন। এর জন্য আপনি নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন এবং সেই সাথে অলস ভাবে শুয়ে বসে থেকে সময় কাটানোর অভ্যাস ত্যাগ করুন। শরীরের আলসেমি দূর করতে আপনি আপনার দৈনন্দিন কাজে ছোট ছোট কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে তা আনতে পারেন।
যেমন ধরুন- আপনি গাড়ি নিয়ে দোকানে গেলেন, এখন গাড়িটি একেবারে দোকানের সামনে না রেখে একটু দূরে পার্কিং করে রাখুন, আপনি গাড়ি ব্যবহার না করে যদি পারেন হেঁটে দোকানে যাওয়ার চেষ্টা করুন, লিফট এর পরিবর্তে আপনি সিঁড়ি ব্যবহার করুন,এমনকি টেলিভিশন দেখার সময়ও আপনি বসে না থেকে কিছু সহজ এক্সারসাইজ করুন। মনে রাখবেন আপনি যত বেশি সময় আপনার শরীরকে সবচেয়ে রাখবেন আপনার শরীর ততটাই ভালো এবং সুস্থ থাকবে।
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমিয়ে ফেলুন
দৈনন্দিন জীবনের কাজে কর্মে আমাদের নানান রকম চিন্তা চে তনা মানসিক স্ট্রেস লেগেই থাকে। এতসব মানসিক চিন্তার মধ্যে নিজেকে সঁপে না দিয়ে বরং আপনি এই সমস্যাগুলো সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। আর যদি অতিরিক্ত পরিমাণে মানসিক চাপ অনুভব করেন তাহলে বলবো আপনি শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন,
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমিয়ে ফেলুন
দৈনন্দিন জীবনের কাজে কর্মে আমাদের নানান রকম চিন্তা চে তনা মানসিক স্ট্রেস লেগেই থাকে। এতসব মানসিক চিন্তার মধ্যে নিজেকে সঁপে না দিয়ে বরং আপনি এই সমস্যাগুলো সমাধান খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। আর যদি অতিরিক্ত পরিমাণে মানসিক চাপ অনুভব করেন তাহলে বলবো আপনি শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন,
কিছুক্ষণ হাঁটতে পারেন, অথবা গান শুনতে পারেন। এতে আপনার মানসিক চাপে উদ্বেগ অনেকটাই কমবে। মানসিক চাপ কমানোর দায়িত্ব আপনার নিজেকে নিতে হবে কেননা দীর্ঘস্থায়ী মানুষের চাপ আপনার স্বাস্থ্যের সুস্থতার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম দিন
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হলে এটি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মানসিক সুস্থতা এমনিতে বাড়িয়ে দিবে। এর জন্য আপনি অহেতুক টেলিভিশন দেখে মোবাইল দেখে রাতে ঘুমের সময় পার করে দেবেন। বরং আপনি টেলিভিশন মোবাইল দেখার সময় কমিয়ে আনুন এবং ঘুমের জন্য একটু ভালো পরিবেশ তৈরি করুন। আর আপনার যদি অনিদ্রার সমস্যা থেকে থাকে তাহলে বলব আপনার একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
ধূমপান মাদকদ্রব্য পরিহার করুন
সুস্থ থাকতে চাইলে আপনি আজ থেকেই এলকোহল সেবন, ধূমপান করা ইত্যাদি পরিত্যাগ করুন। এছাড়াও জর্দা সহ বিভিন্ন তামাক খাওয়া আপনার মুখের ক্যান্সার সহ আরো বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। কাজেই আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে আজ এখন থেকে এই পথ অভ্যাসগুলো এড়িয়ে চলুন।
বিভিন্ন সংকল্প বাস্তবায়ন
সুস্থ থাকার জন্য আপনি যে ধরনের সংকল্প গ্রহণ করবেন সেগুলি বছর জুড়ে বাস্তবায়ন করা অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ে। তাই আপনি চেষ্টা করবেন আপনার জীবনযাত্রার সাথে মানানসই সংকল্প নির্ধারণ করে তা নিয়মিত মেনে চলতে। এক্ষেত্রে একটি কথা বলে রাখি,সংকল্পের বিষয়ে কিন্তু আপনার একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম দিন
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হলে এটি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং মানসিক সুস্থতা এমনিতে বাড়িয়ে দিবে। এর জন্য আপনি অহেতুক টেলিভিশন দেখে মোবাইল দেখে রাতে ঘুমের সময় পার করে দেবেন। বরং আপনি টেলিভিশন মোবাইল দেখার সময় কমিয়ে আনুন এবং ঘুমের জন্য একটু ভালো পরিবেশ তৈরি করুন। আর আপনার যদি অনিদ্রার সমস্যা থেকে থাকে তাহলে বলব আপনার একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
ধূমপান মাদকদ্রব্য পরিহার করুন
সুস্থ থাকতে চাইলে আপনি আজ থেকেই এলকোহল সেবন, ধূমপান করা ইত্যাদি পরিত্যাগ করুন। এছাড়াও জর্দা সহ বিভিন্ন তামাক খাওয়া আপনার মুখের ক্যান্সার সহ আরো বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। কাজেই আপনি যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে আজ এখন থেকে এই পথ অভ্যাসগুলো এড়িয়ে চলুন।
বিভিন্ন সংকল্প বাস্তবায়ন
সুস্থ থাকার জন্য আপনি যে ধরনের সংকল্প গ্রহণ করবেন সেগুলি বছর জুড়ে বাস্তবায়ন করা অনেকটাই কঠিন হয়ে পড়ে। তাই আপনি চেষ্টা করবেন আপনার জীবনযাত্রার সাথে মানানসই সংকল্প নির্ধারণ করে তা নিয়মিত মেনে চলতে। এক্ষেত্রে একটি কথা বলে রাখি,সংকল্পের বিষয়ে কিন্তু আপনার একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকতে হবে।
যেমন ধরুন- আপনি ওজন কমাতে চাচ্ছেন এটা না ভেবে আপনি ঠিক কতটা ওজন কমাবেন এবং কত দিনের মধ্যে কমাবেন সেটি নির্ধারণ করুন। আপনি ব্যায়াম করতে চাচ্ছেন এটি না ভেবে আপনি প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।আর লক্ষ নির্ধারণে অবশ্যই আপনাকে বাস্তববাদী হতে হবে।
প্রথমদিকে প্রত্যেকটি কাজ আপনি ধীরে ধীরে করার চেষ্টা করুন।কারণ প্রাথমিক অবস্থায় যেকোনো অভ্যাস শুরু করতে চাইলে সেটা অনেক সময় কিছুটা চাপের হয়ে পড়ে। মনে করুন আপনার লক্ষ্য শুধুমাত্র পুষ্টি সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া। তাই বলে আপনি একেবারে এক দিনেই আপনার পছন্দের সব খাবার খাওয়া ছেড়ে দেবেন না বরং তা ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে চেষ্টা করুন। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
সম্মানিত পাঠক, একটি কথা মনে রাখবেন একেবারে শুরু থেকেই নতুন অভ্যাস তৈরীর ক্ষেত্রে নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা আপনার সফলতার মূল অন্তরায় হতে পারে।
সম্মানিত পাঠক, একটি কথা মনে রাখবেন একেবারে শুরু থেকেই নতুন অভ্যাস তৈরীর ক্ষেত্রে নিখুঁত হওয়ার চেষ্টা আপনার সফলতার মূল অন্তরায় হতে পারে।
শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায়
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে আমাদের প্রত্যেকেরই জেনে রাখা উচিত। শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় মানে এই নয় যে আপনাকে কেবলমাত্র একটি পেশীবহুল শরীর তৈরি করতে হবে। বরং এর অর্থ হল নিজে রোগমুক্ত থাকা, সতেজ সবল থাকা এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখা।শুধু তাই নয়, এই শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও আপনার কিছু মৌলিক নিয়ম অনুসরণ করাও একান্ত প্রয়োজন।
যেমন শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে আপনার সুষম খাদ্যাভাস গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সেই সাথে আপনার খাদ্য তালিকায় প্রোটিন ভিটামিন,খনিজ ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।আপনাকে প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট শারীরিক কার্যকলাপ অর্থাৎ শরীর চর্চা করতে হবে।এই শরীরচর্চার অংশ হিসেবে আপনি জিম করতে পারেন,
নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করতে পারেন,সাঁতার কাটতে পারেন,সাইকেলিং করতে পারেন। নিয়মিত শরীর চর্চা এবং সাদ্দাম হোসেন পাশাপাশি আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমও নিশ্চিত করতে হবে। কারণ,পর্যাপ্ত ঘুম আপনার শারীরিক সুস্থতার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। শুধু তাই নয়,আপনাকে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ
পানি পান করতে হবে যাতে করে আপনার শরীর হাইড্রেটেড থাকে।এছাড়াও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা,সঠিক স্বাস্থ্যের পরিচর্যা যেমন- সময়মতো টিকা নেওয়া,চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা ইত্যাদি শারীরিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখার জন্য অত্যন্ত দরকারি। আশা করছি শারীরিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার উপায় সম্পর্কে আপনি অবগত হয়েছেন।
লেখকের মন্তব্য
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার উপায় সম্পর্কে আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি নিশ্চয়ই একটি পূর্ণাঙ্গ ধারণা পেয়েছেন। সুস্থ থাকতে কে না চায় বলুন তো! কিন্তু অনেক সময় আমরা শরীরের অসুখে নানান ভাবে উদ্বিগ্ন হলেও মনের অসুখের পাত্তাই দিতে চাইনা। ফলে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপ নিয়ে দিন কাটাতে যেয়ে অনেকে আবার মানসিকভাবে বিকারগ্রস্থ,নেশাগ্রস্থ বা আত্মহনকারীর মতো পথ বেছে নাই। যা মোটেও কাম্য নয়।আর তাই নিজেকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ থাকার দায়িত্ব কিন্তু আপনাকেই নিতে হবে। কারণ,আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন ঠিকঠাক মতো চালিয়ে নিতে শারীরিকভাবে সুস্থ থাকার পাশাপাশি মানসিকভাবে সুস্থ থাকাটাও ভীষণ জরুরী। সুতরাং, শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে উপরিউক্ত নিয়মগুলো যথাযথভাবে মেনে চলার চেষ্টা করুন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং পরবর্তী আর্টিকেল পেতে চোখ রাখুন আমাদের পিন পয়েন্ট মাক্স ওয়েবসাইটে। ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url