সজনে পাতার অবাক করা ২০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা

সজনে পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি কি অবগত আছেন? সাজনা পাতা খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনি জানতে চান? তাহলে ধৈর্য সহকারে আজকের আর্টিকেলটি পড়ে নিন। কারণ, আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি জানতে পারবেন সজিনা পাতার উপকারিতা এবং খাওয়ার নিয়ম।

সজনে-পাতার-অবাক-করা-২০-টি-স্বাস্থ্য-উপকারিতা
সাথে আরো জানতে পারবেন ডায়াবেটিস রোগীর সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম এবং গর্ভাবস্থায় সজনে পাতার উপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে চলুন সজনে পাতা সম্পর্কিত আজকের আলোচনা শুরু করা যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ সজনে পাতার উপকারিতা

সজনে পাতার কিছু স্বাস্থ্যগত উপকারিতা

সজনে পাতার উপকারিতা সম্পর্কে খুব কম মানুষই হয়তো অবগত আছেন। সজনে ডাটা আপনারা নিশ্চয়ই অনেকেই খেয়েছেন, কিন্তু সজনে পাতা ফেলনা হিসেবে ব্যবহার করেন। অথচ এই ফেলনা সজনে পাতাই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং আন্টি ইনফ্লেমেটরি সহ হাজারো পুষ্টিগুণে ভরপুর। জেনে নিন সজনে পাতা খাওয়ার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে- 

আরো পড়ুনঃ  থানকুনি পাতার ২০টি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য উপকারিতা ও অপকারিতা

ডায়াবেটিসের চিকিৎসাঃ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য শরীরে পাতার নির্যাস হতে পারে একটি আদর্শ খাদ্য উপাদান। কারন, সজনে পাতা খেলে এটি আপনার রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিন এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ আপনার কি উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে? যদি থেকে থাকে তাহলে আজ থেকেই আপনি সজনে পাতা খাওয়া শুরু করুন। কারণ, গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ১২০ গ্রাম করে কোন ব্যক্তি যদি রান্না করা সজনে পাতা খান তাহলে সেই ব্যক্তির রক্তচাপ অন্যদের তুলনায় কম থাকে।
ফ্যাটি লিভার দূর করেঃ নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ থেকে আপনাকে রক্ষা করতে পারে কেবলমাত্র সজনে পাতা। সুতরাং, ফ্যাটি লিভার দূর করতে আপনি নিয়ম করে প্রতিদিন পাতা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ সজনে পাতা সজনে পাতায় রয়েছে নিয়াজিমাইসিন নামক উপাদান যা আপনার শরীরে ক্যান্সার সেল তৈরিতে বাধা দেয়। এভাবে সজনে পাতা আপনাকে ক্যান্সার এর হাত থেকেও রক্ষা করতে পারে।
পাকস্থলী সুস্থ রাখতে সজনে পাতাঃ আপনার পাকস্থলী সুস্থ রাখতে এবং পাকস্থলীর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতেও সুজনে পাতা বেশ কার্যকরী। গবেষণায় দেখা গেছে, সজনে পাতা পাকস্থলী এসিডিটির মাত্রা ৮৫% পর্যন্ত কমে দিতে পারে। ফলে সজনে পাতা পেপটিক আলসার প্রতিরোধেও বেশ কার্যকর।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেঃ সজনে পাতায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার বা আস যা আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। আপনি যদি কষ্ট কার্টুনের মত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে আজ থেকেই সজনে পাতা খাওয়া শুরু করে দিন।
ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ রোধেঃ সজনে পাতায় এমন সব উপাদান রয়েছে যা খাদ্য বাহিত জীবনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বিশেষভাবে সক্ষম।
শরীরের প্রদাহ দূর করতেঃ সজনে পাতায় রয়েছে ফাইটো নিউট্রিয়েন্টস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল যৌগ উপাদান যা কিনা আপনার শরীরের সকল প্রদাহ রোধ করতে পারে।
চোখ ভালো রাখেঃ যারা অল্প বয়সে চোখে ঠিকমতো দেখতে পান না ঝাপসা দেখেন, চোখ জ্বালাপোড়া করে তারা আজ থেকেই নিয়ম করে খান। কারণ, এই সজনে পাতায় রয়েছে বিটা ক্যারোটিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং চোখের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে।
অ্যালঝেইমার প্রতিরোধেঃ স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারে এমন সব রোগ যেমন- অ্যালঝাইমার, নিউরোপ্যাথিক এবং মানসিক বিষন্নতার লক্ষণ কমাতে পারে সজনে পাতা।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়ঃ সজনে পাতায় রয়েছে কোয়ারসেটিনের মত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান যা আপনার কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্য ভালো রাখে। নিয়মিত নিয়ম করে সজনে পাতা খেলে এটি আপনাকে হৃদরোগের ঝুঁকি থেকেও বাঁচাতে পারে।
শ্বাসনালীর প্রদাহ রোধেঃ সজনে পাতায় এমন সব যৌগ উপাদান রয়েছে যা আপনার শ্বাস নারীর সংকোচন হাঁপানি এবং বিভিন্ন প্রদাহ প্রতিরোধ করতে পারে।
কিডনি সুস্থ রাখেঃ নিয়মিত সজনে পাতা খেলে কি আপনা কিডনির সকল সমস্যা দূর করে। শুধু তাই নয়, সজনে পাতা আপনার কিডনিতে খনিজ উপাদান তৈরি করে এবং পাথর সৃষ্টিতে বাধা প্রদান করে।
রক্তশূন্যতা দূর করতে সজনে পাতায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। নিয়মিত সজনে পাতা খেলে এটি আপনার শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে এবং রক্তাল্পতাও দূর করে।
স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেঃ সজনে পাতার নির্যাস আপনার স্মৃতিশক্তি বর্ধক রূপে কাজ করে কারণ সজনে পাতায় রয়েছে আমিও এসিড যা কিনা আপনার স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।
শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতেঃ আপনি কি আপনার শরীরের শক্তি বৃদ্ধির জন্য ক্যাফিন মুক্ত খাদ্য উপাদান খুঁজছেন? তাহলে বলব সজনে পাতা খান। কারণ সজনে পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ উপাদান বিশেষ করে আইরন, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন বি এবং শক্তি উৎপাদনকারী পুষ্টি উপাদান যা আপনার শরীরের দীর্ঘমেয়াদি শক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে।
অকাল বার্ধক্য রোধেঃ অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধে আপনি সজনে পাতার খেতেই পারেন। নিয়মিত নিয়ম মেনে সজনে পাতা খেলে সহজেই অকাল বার্ধক্য আপনাকে আঁকড়ে ধরতে পারবে না।
ত্বকের যত্নেঃ সজনে পাতায় ভিটামিন সি থাকার কারণে এটি আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করে। সতেজমন্ত্র নামে একটি ন্যাচারাল প্যাক রয়েছে যার প্রধান উপাদান হলো সজনে পাতার গুড়ো।এই প্যাকটি ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের কালো ছোপ দাগ, ব্রনের কালো দাগ ইত্যাদি খুব সহজে দূর হয়।
ওজন কমাতেঃ যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে খুবই চিন্তিত তারা আজ থেকেই সজনে পাতা খাদ্য তালিকায় যোগ করুন। নিয়মিত সজনি পাতা বা সজনে পাতার ফেলে এটি আপনার ওজন কমাতে বেশ সহায়ক হবে। 

সজনে-পাতার-অবাক-করা-২০-টি-স্বাস্থ্য-উপকারিতা
হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায়ঃ আপনার হার ও দাঁত কে সুরক্ষা দিতে দারুণ কাজ করে এই সজনে পাতা।কারণ, সজনে পাতায় রয়েছে ফসফরাস এবং ক্যালসিয়াম যা দাঁত ও হাড় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।তাছাড়া একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে প্রতিদিন ১৬ শতাংশ ফসফরাস এবং 19 শতাংশ ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন পড়ে যা আপনি এই সজনে পাতা থেকে খুব সহজেই পেতে পারেন।
প্রোটিনের ঘাটতি পূরণেঃ সজনে পাতা আপনি আপনার শরীরের প্রোটিনের ঘাটতি পূরণে সজনে পাতা খেতেই পারেন। কেননা সজনে পাতায় রয়েছে ১৮ রকমের অ্যামিনো এসিড,যা আপনার প্রোটিন পূরণের মূল উপাদান হতে পারে। তাই শুধু মাছ মাংস দুধ ডিম নয় বরং আপনার আশপাশে সজনে পাতার মতো আরও সহজলভ্য অনেক খাদ্য উপাদান রয়েছে যেগুলি আপনার প্রোটিন পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
রাতকানা প্রতিরোধ করেঃ আমরা সকলেই জানি ভিটামিন এর অভাবে রাতকানা রোগ হয়। আর সজনে পাতা ভিটামিন "এ" তে ভরপুর। তাই নিয়মিত সজনে পাতা খেলে এটি আপনার রাতকানা রোগ প্রতিরোধে পাশাপাশি কিডনি ফুসফুস এবং হার্ট সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে।
চুলের যত্নে সজনে পাতাঃ শুধুমাত্র খাবার হিসেবে নয় চুলের যত্নেও সজনে পাতার ভূমিকা অনবদ্য।আপনি চুলের খুশকি দূর করতে এবং চুল পড়া কমাতে ব্যবহার করতে পারেন সুজনে পাতার হেয়ার প্যাক। এর জন্য সজনে পাতা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে চুলের গোড়ায় লাগান এবং ৩০-১ ঘন্টা পর্যন্ত রেখে ভালো করে শ্যাম্পু বাদ দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে আপনার চুলের এবং মাথার ত্বকের সকল সমস্যা দূর হবে না।

সজনে পাতার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা

সজনে পাতার অনেক উপকারিতা থাকলেও, অনেক সময় অতিরিক্ত পরিমাণে সজনে পাতা গ্রহণের ফলে আপনার শরীরে বিভিন্ন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এবারে চলুন সজনে পাতার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো কি কি হতে পারে তা জেনে নিন-

আরো পড়ুনঃ  তেলাকুচা পাতার ১০টি কার্যকরী উপকারিতা

  • মাত্রাতিরিক্ত সজনে পাতা খাওয়ার ফলে আপনার বমি বমি ভাব সৃষ্টি হতে পারে।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে সজনে পাতা খেলে আপনার পেটের সমস্যা কিংবা ক্ষুধামন্দা দেখা দিতে পারে।
  • সজনে পাতা সংলগ্ন যে ছোট ডাল টুকু থাকে সেই ডালে অত্যন্ত ক্ষতিকর উপাদান থাকে, যেগুলো আমাদের দেহের ইমিউনিটি সিস্টেমের ক্ষতি সাধন করে।
  • গর্ভবতী নারীদের জন্য সজনে পাতা যেমন প্রতিদিনের আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস হতে পারে, কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে এই সজনে পাতা প্রজননরোধিও হতে পারে।
  • যারা থাইরয়েডে আক্রান্ত রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে সজনে পাতা বেশ সহায়ক ভূমিকা পালন করলেও, থাইরয়েড চিকিৎসার সময় অন্য কোন ঔষধের সাথে সজনে পাতা খেতে থাকলে আপনার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • যাদের নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে,তারা সজনে পাতা খাওয়ার ফলে তাদের রক্তচাপ আরো কমে যেতে পারে।
  • যারা ডায়াবেটিস আক্রান্ত রয়েছেন তারা সজিনা পাতা খেলে, কিছু ক্ষেত্রে রক্তের শর্করের পরিমাণ একেবারেই কমিয়ে দিতে পারে।
  • সজনে পাতা খাওয়ার ফলে আপনার অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে

সাজনা পাতা খাওয়ার নিয়ম

সাজনা পাতার উপকারিতা পেতে আপনি বিভিন্ন নিয়মে সজনে পাতা খেতে পারেন। সাজনা পাতা খাওয়ারও বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। এবার চলুন আপনি কি সজনে পাতা কি নিয়মে কোন উপায় খাবেন সে সম্পর্কে আপনাকে জানিয়ে দিই -

  • প্রথমেই বলি, সজনে পাতা খাওয়ার সঠিক নিয়ম হলো আপনার ওজন কত সে অনুযায়ী খেতে হবে অর্থাৎ প্রতি এক কেজি ওজনে ১ গ্রাম করে। শুনে নিশ্চয়ই অবাক হয়েছেন! হ্যাঁ এটাই সত্যি।মনে করুন, আপনার ওজন ৬০ কেজি সেক্ষেত্রে আপনাকে সজনে পাতা খেতে হবে ৬০ গ্রাম।
  •  আপনার শরীরের ওজন অনুযায়ী প্রতি কেজিতে ১ গ্রামের বেশি সজনে পাতা সজনে পাতার গুড়ো খাওয়া একদমই উচিত হবে না। সজনে পাতা খাওয়ার সময় এই বিষয়টি কিন্তু মাথায় রাখবেন।
  • আপনি সজনে পাতার শাকের মতো ভেজে খেতে পারেন, আবার শাকের মতো ভর্তা করেও খেতে পারেন। তবে একটি কথা মনে রাখবেন, রান্না করলে কিন্তু সজনে পাতার ভিটামিন সি অনেকটাই কমে যায়।
  • আপনি চাইলে সজনে পাতা রোদে শুকিয়ে গুড়ো করে পাউডার হিসেবেও খেতে পারেন।
  • আপনি আপনার রোজকার বিকেলের নাস্তার সজনে পাতার চা তৈরি করে খেতে পারেন। নিয়মিত সজনে পাতার চা পান করলে আপনার শরীরে দুর্বলতা ক্লান্তি আসবে না কখনোই এতোটুকু নিশ্চিত থাকুন আপনার শরীরে এনার্জি যোগাতে চা ই যথেষ্ট।
  • আবার অনেকেই আছেন,যারা সুজনে পাতা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে জুস হিসেবে খেতে পছন্দ করেন। সুতরাং,জুস হিসেবেও আপনি সজনে পাতা খেতেই পারেন।
  • আবার আপনি বিভিন্ন মাছের তরকারির সাথে বা শাকসবজির সাথে সজনে পাতা মিশিয়েও রান্না করে খেতে পারেন।
  • এই পদ্ধতি গুলো মেনে আপনি সজনে পাতা খেতে পারেন। তবে একটি কথা মনে রাখবেন, অতিরিক্ত কোন কিছুই আমাদের শরীরের জন্য ভালো নয়। আর তাই আপনি সজনে পাতার গুড়ো বা রস একটানা দীর্ঘদিন না খেয়ে একটু বিরতি দিয়ে খাবেন। এই ধরুন ১০-১৫ দিন খাওয়ার পর আপনি এক সপ্তাহ বিরতিতে আবারও খাওয়া শুরু করলেন। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।

ডায়াবেটিস রোগীর কাঁচা সজনে পাতার উপকারিতা

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য কাঁচা সজনে পাতা খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এই সজনে পাতা রোগীদের জন্য বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস আক্রান্ত তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান। এবার চলুন ডায়াবেটিসে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা কাঁচা সজনে পাতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন--

  • সজনে পাতায় উপস্থিত বিশেষ কিছু উপাদান যা আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, সজনে পাতা রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সহায়ক হতে পারে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
  • সজনে পাতার উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি আপনার পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে এবং শরীরের সুগার শোষণ কমায়।
  • সজনে পাতায় বিভিন্ন ধরনের এন্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন থাকে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলি আপনার ইনসুলিন সংবেদনশীলতাকে উন্নত করতে পারে এবং ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতেও বেশ সহায়ক হতে পারে।
  • সজনে পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন।আর এই প্রোটিন আপনার শরীরের রক্তশূন্যতা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে।
  • সজনে পাতা ভিটামিন এ সি ই ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রনসমৃদ্ধ। এসব ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ আপনার শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং সেইসাথে ডায়াবেটিসের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • সজনে পাতার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অন্যান্য উপাদান গুলি আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এই হৃদরোগ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা তাই হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
  • সজনে পাতা ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি আপনার হজম ক্রিয়াকে উন্নত করে। শুধু তাই নয়, এটি আপনার অন্ত্রের কার্যক্রম উন্নত করে এবং কনস্টিপেশন কমাতে সাহায্য করে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুব সাধারণ একটি সমস্যা।
  • কম ক্যালোরি এবং উচ্চ পুষ্টি উপাদান নিয়ে গঠিত। এটি খাদ্যের প্রতি আপনার প্রবণতা কমাতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে যা ডাইবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
  • সজনে পাতা উচ্চ পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি আপনার মানসিক চাপ এবং ক্লান্তি কমাতে সহায়ক হতে পারে। আর এই স্ট্রেস কমানোর মাধ্যমে এটি রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।

সুতরাং, বুঝতেই পারছেন ডাইবেটিস রোগীদের জন্য কাঁচা সব জেনে পাতা খাওয়ার উপকারিতা অনেক। সজনে পাতা একটি পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবার যা বিভিন্নভাবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ও সুস্থতা বজায় রাখতে আপনাকে বিশেষভাবে সাহায্য করতে পারে।

ডায়াবেটিস রোগীর সজনে পাতার গুড়া খাওয়ার নিয়ম

সজনে পাতার নানাবিধ  উপকারিতা পেতে ডায়াবেটিস এর রোগীরা সজনে পাতার গুড়োও খেতে পারেন। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সজনে পাতার গুঁড়ো একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য উপাদান হতে পারে, তবে সঠিক পরিমাণে এবং নিয়মিতভাবে ব্যবহারের দিকে নজর দেওয়াটাও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এবার জেনে নিন ডায়াবেটিস রোগীদের সজনে পাতার গুড়ো খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে--
পরিমাণ

  • একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য প্রতিদিন ১-২ চামচ (প্রায় ৫-১০ গ্রাম) সজনে পাতার গুড়ো সাধারণত নিরাপদ এবং কার্যকর পরিমাপ হিসেবে ধরা হয়।
  • তবে আপনি যদি সজনে পাতার গুড়ো প্রথম বারের মত খেয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে বলবো আপনি কম পরিমাণে গুড়ো খাওয়া শুরু করুন এবং আপনার শরীরের অবস্থা অনুযায়ী পরবর্তীতে ধীরে ধীরে এর পরিমাণ আপনি বাড়াতে পারেন।

খাওয়ার সময়

  • আপনি সকালে নাস্তার সাথে সজনে পাতার গুড়ো যোগ করতে পারেন। এতে করে পুরো দিনের জন্য আপনার শরীরে শক্তির সঞ্চার হবে।
  • আপনি খাবারের সাথে বা খাবার খাওয়ার পরে সজনে পাতার গুঁড়ো খেতে পারেন। এতে আপনার পাচনতন্ত্রে সহজে মিশে যাবে এবং শরীরের জন্য উপকারী হবে।

যেভাবে খাবেন সজনে পাতার গুড়ো

  • আপনি এক চামচ সজিনা পাতার গুঁড়ো স্মোদি বা ফলের জুসের সাথে মিশিয়ে পান করতে পারেন। এটি আপনার শরীরে যথেষ্ট পরিমাণ পুষ্টি বৃদ্ধি করবে।
  • আপনি ইচ্ছে করলে ১ চামচ সজনে পাতার গুঁড়ো দই অথবা ইউগার্টে মিশিয়ে খেতে পারেন।
  • রান্নার সময় আপনি সজনে পাতার গুড়ো স্যুপ বা তরকারিতে যোগ করেও খেতে পারেন। তাছাড়া রান্নার সময় সজনে পাতার গুড়ো ব্যবহার করলে এটি খাবারের স্বাদ এবং পুষ্টি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • আপনি ১ চামচ সজনে পাতার গুঁড়ো এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন। তবে এর স্বাদ কিছুটা তিক্ত হতে পারে।

সর্বোপরি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সজনে পাতার গুঁড়ো একটি স্বাস্থ্যকর সংযোজন হতে পারে,তবে এটি সঠিক পরিমাণে এবং নিয়মিতভাবে গ্রহণ করা উচিত।

গর্ভাবস্থায় সজনে পাতার স্বাস্থ্য উপকারিতা

গর্ভাবস্থায় সজনে পাতার বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে এবং এই পাতা একজন গর্ভবতী নারীর স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক হতে পারে। এবার চলুন গর্ভাবস্থায় সজনে পাতা খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি কি হতে পারে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন--

  • প্রয়োজনীয় ভিটামিনের উৎসঃ সজনে পাতায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি। ভিটামিন এ একজন গর্ভবতী নারী এবং তার গর্ভস্থ শিশুর চোখের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অপরদিকে ভিটামিন সি গর্ভবতী মায়ের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং সেই সাথে ত্বক ও কোষের স্বাস্থ্য উন্নতিতেও ভূমিকা রাখে।
  • প্রোটিনের উৎসঃ  সজনে পাতা প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উৎস। একজন গর্ভবতী নারীর শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় বেশি ও টিস্যু গঠনে সহায়ক এটি শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্যও বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
  • ফলিক এসিডের ভালো উৎসঃ সজনে পাতায় রয়েছে প্রয়োজনে পরিমাণ ফলিক অ্যাসিড যা গর্ভাবস্থায় শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ এবং একজন গর্ভবতী মায়ের রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা রাখে। গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা খুব সাধারণ একটি সমস্যা হতেই পারে। এই আয়রনের ঘাটতি পূরণে আপনি খেতে পারেন সজনে পাতা। কারণ, সজনে পাতা আয়রন সমৃদ্ধ হওয়ায় এটিআপনার রক্তের লোহিত কণিকার পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে এবং রক্তাল্পতাও দূর করতে পারে।
  • ক্যালসিয়ামঃ সজনে পাতায় রয়েছে উচ্চমাত্রার ক্যালসিয়াম যা একজন গর্ভবতী মায়ের হাড়ের স্বাস্থ্য এবং শিশুর হাড় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
  • ম্যাগনেসিয়ামঃ ম্যাগনেসিয়াম গর্ভাবস্থায় পেশী ও স্নায়ু সিস্টেমের কার্যক্রম কে উন্নত করে। তাছাড়া এটি গর্ভাবস্থায় নারীর ক্লান্তি এবং অস্বস্তি কমাতেও বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে।
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যঃ সজনে পাতায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা ফ্রি রেডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে একজন গর্ভবতী মায়ের কোষকে রক্ষা করতে পারে।
  • হজমে সাহায্য করেঃ গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে আপনি খেতে পারেন সজনে পাতা। কারণ, সজনে পাতাই রয়েছে উচ্চমাত্রার ফাইবার বা আস যা একজন গর্ভবতী মায়ের হজম ক্রিয়া উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ও দূর করে।
  • মর্নিং সিকনেস কমাতেঃ গর্ভকালীন সময়ে সাধারণত সকালবেলা শরীরে অনেক ক্লান্তি ভাগ অনুভূত হয়। এই ক্লান্তি ভাব দূর করতে আপনি খেতে পারেন সজনে পাতার। নিয়মিত নিয়ম করে সজনে পাতা খেলে এটি আপনার সকালের ক্লান্তি যেমন দূর করে তেমনি আপনার মানসিক শান্তি বজায় রক্ত সাহায্য করে

সজনে পাতার গর্ভাবস্থায় একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য উপাদান হলেও অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা থেকে আপনার বিরত থাকা উচিত এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে তবেই ব্যবহার করা উচিত

সজনে পাতার রসের উপকারিতা

সজনে পাতার রসে বা জুসের উপকারিতাও কম নয়। সজনে পাতার রস এটি স্বাস্থ্যকর পুষ্টির একটি উৎকৃষ্ট উৎস যা কিনা আপনাকে বিভিন্ন স্বাস্থ্যগত উপকারিতা প্রদান করতে পারে। এবারে চলুন সজনে পাতার রসের উপকারিতা সম্পর্কে জানবেন-

  • ভিটামিন এবং মিনারেলসঃ সজনে পাতার রসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই,ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস। এইসব পুষ্টি উপাদান আপনার শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি অন্যান্য খাবারের তুলনায় খুব দ্রুত শোষিত হতে পারে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিঃ সজনে পাতার রসে উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।তাছাড়া এটি জ্বর, সর্দি-কাশি এবং অন্যান্য সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধেও লড়াইয়ে সহায়ক।
  • রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণেঃ সজনে পাতার রস আপনার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হতে পারে। যা একজন ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অত্যন্ত উপকারী।
  • ডিটক্সিফিকেশনঃ নিয়মিত নিয়ম করে সজনে পাতার রস খেলে এটি আপনার শরীর থেকে টক্সিন অপসারণ সাহায্য করে। যার ফলে আপনার লিভার, কিডনি সুস্থ থাকে এবং শরীরের নিষ্কাশন প্রক্রিয়া আরো কার্যকর হয়।
  • এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্যঃ সজনে পাতার রসে রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য যা আপনার শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ কমাতে বিশেষ করে বাত এবং অন্যান্য প্রদাহজনিত রোগের উপশমে সহায়ক হতে পারে।
  • হজম ক্ষমতা উন্নত করতেঃ আপনার যদি বদ হজমের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনি খেতে পারেন সজনে পাতার রস। কারণ, সজনে পাতার রস হজম ক্রিয়াকে উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

সজনে পাতার রস আপনার শরীরের বিভিন্ন উপকারে আসতে পারে এটি ঠিক। কিন্তু একটি কথা মনে রাখবেন, এটি কখনো আপনার স্বাস্থ্য সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান হতে পারে না।
সতর্কতা

  • আপনার যদি বিশেষ কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে বা ঔষধ গ্রহণ করছেন অথবা চিকিৎসার মধ্যে আছেন সেক্ষেত্রে সজনে পাতার রস গ্রহণের আগে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম

সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম আমরা অনেকেই জানিনা। মরিঙ্গা পাউডার সাধারণত একটি স্বাস্থ্যকর সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আপনি যদি সঠিকভাবে এবং সঠিক নিয়মে সজনে পাতার পাউডার খেতে পারেন তবে এটি থেকে আপনি নানা ধরনের উপকারিতা পাবেন। এবার চলুন, সজনে পাতার পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেবেন
পাউডার খাওয়ার নিয়ম

  • আপনি এক গ্লাস গরম বা ঠান্ডা পানির সাথে এক চা চামচ সজনে পাতার পাউডার মিশিয়ে পান করে ফেলুন।
  • আপনি দই বা দুধের সাথে মিশিয়ে সজনে পাতার পাউডার খেতে পারেন। এটি বিশেষ করে শরীরের সাথে খুব সহজেই মিশে যায়।
  • আপনি চাইলে সালাদের সাথে মিশিয়েও সজনে পাতার পাউডার খেতে পারেন। এতে আপনার খাবারের স্বাদ আরো বেড়ে যাবে।
  • আপনি ইচ্ছে করলে বিভিন্ন ফলের শেক বা স্মুদির সাথে মিশিয়েও সহজে তাদের গুরু খেতেই পারেন।

পরিমাণ ও ডোজ

  • প্রথম সপ্তাহ শুরুতে আপনি ১/২ চা চামচ সজনে পাতার পাউডার দিয়ে শুরু করুন। এতে আপনার শরীরে কি প্রতিক্রিয়া হয় সেটি পর্যবেক্ষণ করুন।
  • দ্বিতীয় সপ্তাহ যদি আপনার শরীরে কোন সমস্যা না হয় সে ক্ষেত্রে আপনি প্রতিদিন আরো অতিরিক্ত ১ চা চামচ বাড়িয়ে সজনে পাতার গুঁড়ো খেতে পারেন।

পাউডার গ্রহণের সময়

  • আপনি প্রতিদিন সকাল বেলা খালি পেটে পানির সাথে গ্রহণ করলে সবচেয়ে বেশি ভালো হয়। এটা আপনার পুষ্টি শোষণকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।
  • সকালবেলা এই পাউডার খেতে যদি অস্বস্তি বোধ করেন সে ক্ষেত্রে আপনি আপনি দুপুরে খাবারের আগে বা খাবারের পরেও সজনে পাতার গুড়ো খেতে পারেন।
  • পাউডার সংরক্ষণ
  • সজনে পাতার পাউডার আপনি অবশ্যই আপনার ঘরে একটি ঠান্ডা এবং শুষ্ক স্থানে রাখুন যাতে এটি দীর্ঘস্থায়ীভাবে ভালো থাকে।

এই নির্দেশনা গুলো অনুসরণ করে সজনে পাতার পাউডার খেলে,আপনি সজনে পাতার পাউডারের স্বাস্থ্য উপকারিতা উপভোগ করতে পারবেন।

সজনে পাতার ঔষধি গুণ

সজনে পাতার ঔষধি গুণও কম না। শুধুমাত্র সজনে পাতা নয় বরং সজনে গাছের ছাল, আঠা এবং এর শিকড়েরও রয়েছে ঔষধি গুনাগুন। সম্মানিত পাঠক, এবারের সজনে পাতার ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নিন-

  • আপনার শরীরের কোন স্থানে ব্যথা হলে বা ভুলে গেলে সজনে গাছের শিকড়ের প্রলেপ দিলে ব্যথা এবং খোলা উভয়ই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সেরে যাবে।
  • আপনি কি মাথা ব্যথা সমস্যায় ভুগছেন? অনেকেই আছেন যারা মাথা ব্যথার কারণে রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না ফলে নিদ্রাহীনতায় ভুগতে থাকেন। মাথা ব্যথার এই সমস্যা দূর করতে আপনি সজনে গাছের আঠা দুধের সাথে খেলে এবং কপালে মালিশ করলে মাথা ব্যাথার উপশম হয়।
  • আপনি জেনে অবাক হবেন যে,সজনে গাছের ফুল চোখের দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সক্ষম।
  • সজনে ফুলের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খেলে এতে আপনার মূত্রপাথরি দূর হবে। শুধু মূত্র পাথরীই নয় বরং হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রেও এই সজনে ফুলের রস বেশ কার্যকর।
  • অনেক সময় ছোট বাচ্চাদের পেটে গ্যাস জমা হয়। এক্ষেত্রে আপনি সজনে পাতার রসের সাথে লবণ মিশিয়ে আপনার বাচ্চাকে খেতে দিন এতে করে পেটের গ্যাস দূর হবে এবং হজম শক্তিও বৃদ্ধি পাবে।
  • হৃদরোগের চিকিৎসা এবং রক্তের প্রবাহ বৃদ্ধিতে সজনে পাতার রস বহুল ব্যবহৃত হয়।
  • নিয়মিত সজনে পাতার স্বাদ খেলে জ্বর,সর্দি,ফ্লু এবং ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগ দূর হয়।
  • আপনার শরীরের যে কোন ক্ষতস্থান সারাতে সজনে পাতার পেস্ট বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
  • আপনি কি গেটে বাতের সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে নিয়মিত সজিনার ফল রান্না করে খান। সৌদি না ফল রান্না করে খেলে গেটে বাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • সজিনা বীজের তেল মালিশের ফলে আপনার বাট,বেদনা বোধহীনতা এবং চর্মরোগ খুব সহজেই দূর হয়।
  • অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত পোকামাকড় কামড়ালে তাদের প্রচন্ড জ্বালাপোড়ার সৃষ্টি হয়। এই প্রকার কামড়ে আপনি অ্যান্টি সেফটিক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন সজিনার রস। এতে আপনার জ্বালাপোড়া অতি দ্রুত লাঘব হবে।
  • এছাড়াও আপনার শ্বাসকষ্ট, মাইগ্রেন আর্থাইটিস এবং চুল পড়া রোগের চিকিৎসাতেও সজিনা এবং সজিনা পাতা কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

দাগহীন ত্বক ও লম্বা চুল পেতে সজনে পাতার ব্যবহার

শুধুমাত্র খাদ্য হিসেবে শরীরের জন্যই উপকারী নয় বরং ত্বক এবং আপনার চুলের যত্নেও সজনে পাতার উপকারিতা অনেক। নিয়মিত সজনে পাতা ব্যবহারে এটি যেমন আপনার ত্বকের দাগ চোখ দূর করবে তেমনি আপনার রুক্ষ চলেও ফিরে আনবে ঝলমলে ভাব এবং উজ্জ্বলতা। আর তাই ত্বক ও চুলের যত্ন আপনি সহজে পাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে জেনে নিন--
ফেসপ্যাক হিসেবে আপনি যেভাবে ব্যবহার করবেন সজনে পাতার গুঁড়ো
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ

  • সজনে পাতার গুঁড়ো- ১ টেবিল চামচ
  • লেবুর রস- ১/২ চা চামচ
  • মধু- ১ টেবিল চামচ এবং
  • গোলাপজল- পরিমাণ মতো।

প্রস্তুত প্রণালী
এই ফেসপ্যাকটি তৈরীর ক্ষেত্রে,আপনি ১ টেবিল চামচ সজনে পাতার গুড়োর সাথে ১ টেবিল চামচ মধু , পরিমাণ মতো গোলাপজল এবং আধা টেবিল চামচ লেবুর রস একসাথে ভালো করে মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এবার এই পেজ আপনার মুখে লাগিয়ে 10 মিনিটের মতো রেখে দেন। 

প্রায় মিনিট দশের পর হালকা কুসুম গরম পানিতে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন এরপর মুখে যথারীতি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। নিয়মিত ফেসপ্যাকটি ব্যবহারে আপনার ত্বকের গ্লো ফিরে আসবে এবং ত্বকের কালো ছোপ দাগ দূর হবে।
চুলের যত্নে আপনি যেভাবে ব্যবহার করবেন সজনেপাতা
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ

  • মরিঙ্গা সজনে পাতার গুঁড়ো- ২ টেবিল চামচ
  • টক দই- পরিমাণমতো এবং
  • মেহেদির গুঁড়ো- ১ টেবিল চামচ।

প্রস্তুত প্রণালী ও ব্যবহারঃ আপনি দুই টেবিল চামচ সজনে পাতার গুড়োর সাথে এক টেবিল চামচ মেহেদির গুড়ো এবং পরিমাণ মতো টক দই ভালো করে মিশিয়ে নিন। আপনি চাইলে এর সাথে কয়েক ফোটা ড্রপ ক্যাস্টর অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। এবার সবগুলো উপাদান একসাথে ভালো করে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। এই পেস্ট এবার আপনার চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত ভালো করে লাগিয়ে ৪০-৪৫ মিনিট রেখে দিন।

৪৫ মিনিট পর শ্যাম্পু করে আপনার চুল ধুয়ে ফেলুন। ভালো ফলাফলের জন্য সজনে পাতার এই প্যাকটি আপনি সপ্তাহে দুই তিনবার ব্যবহার করতে পারেন।চুলের যত্নে নিয়মিত সজনে পাতা ব্যবহার করলে এটি আপনার স্ক্যাল্পের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে সেই সাথে চুলের রুক্ষতা এবং আগা ফাটা সমস্যাও দূর করে।

এছাড়াও অনেকের ঠোঁট কালচে হয়ে যায় বিভিন্ন কারনে। ঠোঁটের এই কালচেভাব দূর করতে আপনি মোরিংগা অয়েল এবং মরিঙ্গা পাউডার ব্যবহার করতে,পারেন যা আপনার ঠোঁটকে আদ্র রাখার পাশাপাশি ঠোঁটের কালচে ভাব দূর করবে এবং ঠোঁটের কোমলতাও ফিরিয়ে আনবে।

সজনে পাতার স্বাস্থ্যকর কিছু রেসিপি

সাজনা পাতা খাওয়ার অনেকগুলো নিয়ম রয়েছে যা আপনি উপরের আলোচনা থেকে জানতে পেরেছেন। আবার সজনে পাতা আপনি বিভিন্ন উপায়ে রান্না করে খেতে পারেন। এবার চলুন, সজনে পাতা আপনি রান্না করে কিভাবে খাবেন তার জনপ্রিয় কিছু রেসিপি আপনার জন্য নিচে তুলে ধরা হলো-
সজনে পাতার ভর্তা

  • রেসিপি সজনে পাতার ভর্তা রেসিপি এতটাই সহজ আপনি যেকোনো সময় জলদি বানিয়ে খেতে পারেন।
  • এর জন্য প্রথমেই আপনি সজনে গাছ থেকে সজনে পাতা সংগ্রহ করে টা ভালো করে পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিন।
  • এবার চুলার আঁচে একটি প্যান বসিয়ে তাতে অল্প পরিমাণে পানি দিয়ে সজনে পাতা সিদ্ধ হতে দিন।
  • সজনে পাতার সিদ্ধ হয়ে এলে তাতে কেটে রাখা কুচি কুচি করে কাটা পেঁয়াজ মরিচ এবং সামান্য তেল নুন মিশিয়ে হাত দিয়ে চটকে ভর্তা করে ফেলুন। ব্যাস, তৈরি হয়ে গেল আপনার সজনে পাতার ভর্তা রেসিপি। গরম ভাতের সাথে এই ভর্তা পরিবেশন করতে পারেন।

সজনে পাতার ভাজি রেসিপি

  • ভর্তা ছাড়াও সজনে পাতা আপনি শুধু ভাজি করে ভেজেও খেতে পারেন। এর জন্য প্রথমে আপনি গাছ থেকে টাটকা সতেজ সজনে পাতা সংগ্রহ করুন।
  • এবার সজনে পাতাগুলো ভালো করে পরিষ্কার জলে ধুয়ে নিয়ে একটি প্যানে অল্প জলে সিদ্ধ করতে দিন।
  • পাতা সিদ্ধ হয়ে এলে সেটির নামিয়ে রেখে এবার আরেকটি প্যানে সরষে তেল দিয়ে গরম করে নিন। এবার এই সরষে তেলের মধ্যে ফোড়ন হিসেবে একে একে পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, কালোজিরে, শুকনো লঙ্কা দিন এবং ভাজতে থাকুন যতক্ষণ না পর্যন্ত এটি বাদামী বর্ণ ধারণ না করে।
  • বাদামি বর্ণের হয়ে এলে এবার এতে সেদ্ধ করে রাখা সজনে পাতা দিয়ে দিন এবং ভাজতে থাকুন।
  • একটি কথা মনে রাখবেন সজনে পাতার এই ভাজির ক্ষেত্রে আপনি খুব বেশি পরিমাণে তেল ব্যবহার করবেন না বরং পরিমিত পরিমাণে তেল এবং নুন ব্যবহার করবেন। তাতে সজনে পাতার স্বাদ অক্ষুন্ন থাকবে।

সজনে পাতার বড়া রেসিপি

  • সজনে পাতা দিয়ে আপনি বড়া বানিয়েও খেতে পারেন। সজনে পাতার এ বড়া অনেকের কাছেই ভীষণ প্রিয়।
  • সজনে পাতার বড়া তৈরীর ক্ষেত্রে,আপনি প্রথমে সজনে পাতা পাটায় বেটে অথবা ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। বড়া তৈরির জন্য সহযোগী উপাদান হিসেবে আপনার প্রয়োজন হবে মসুর বা খেসারির ডাল, যা পিষে আপনি সজনে পাতার সাথে ভাল করে মিশিয়ে নিন।
  • এবার এতে নুন, মরিচ, পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি, সামান্য কালো জিরে সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ যোগ করে বড়ার মত সেপ দিয়ে গরম তেলে মচমচে করে ভেজে নিন। ব্যাস, হয়ে গেল আপনার সজনে পাতার বড়া।

সজনে পাতার রান্না রেসিপি

  • সজনে পাতা রান্না করার ক্ষেত্রে আপনি যেকোনো মাছের তরকারির সাথে অথবা শুধু সবজি রান্না করার সময় শাক হিসেবে সজনে পাতা ব্যবহার করতে পারেন।
  • এর জন্য আপনি আলাদা পাত্রে সজনে পাতা অল্প পানিতে নিষিদ্ধ করে নিয়ে, তা অন্যান্য সবজির সাথে মিশে রান্না করতে পারেন।
  • সজনে পাতার উপরিউক্ত রেসিপিগুলোর মধ্যে আপনি আপনার সুবিধা মত যেকোনো রেসিপি তৈরি করে খেতে পারেন। তবে একটি কথা মনে রাখবেন, সজনে পাতা রান্না করার সময় অতিরিক্ত পরিমাণ তেল মশলা ব্যবহার করবেন না এবং অধিক আঁচে রান্না করবেন না। কারন, অধিক তাপে সজনে পাতার স্বাস্থ্য গুণাগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

সজনে ডাটা নাকি পাতা কোনটি বেশি পুষ্টিকর

সজনে পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি ইতিমধ্যেই অবগত হয়েছেন। আপনারা অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন,সজনে ডাটা বেশি পুষ্টিকর নাকি সজনে পাতা বেশি পুষ্টিকর। তাহলে জেনে রাখুন, সজনে পাতা এবং সজনে ডাটা দুটোই প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর। কারণ সজনে পাতা ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম প্রোটিন এবং ফাইবারের এক বিশাল উৎস। তাছাড়া এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং বৈশিষ্ট্য রয়েছে।

অপরদিকে সজনে ডাটা প্রোটিনের একটি ভালো উৎস। প্রোটিন ছাড়াও সজনে ডাটা আমাদের শরীরে অমেগা৩, অমেগা ৬ ফ্যাটি এসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ছাড়াও প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড প্রদান করে। আর সজনে পাতা সজনে ডাটাতে এতসব পুষ্টিগুণ আছে বলেই

এই দুইয়ের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান দুটোই একসাথে পাওয়া সম্ভব। সজনে পাতাকে নিউট্রিশন সুপারফুট এবং সজনে গাছকে মিরাক্কেল ট্রি বলে থাকেন। সজনে ডাটা নাকি, সজনে পাতা কোনটি বেশি পুষ্টিকর আশা করছি এর উত্তর আপনি পেয়ে গেছেন।

সজনে পাতা পরিচিতি

শজনে গাছ সাধারণত ১০-১৫ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত বাড়তে পারে তবে কিছু কাজ ৩০ ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। এটি একটি দ্রুত বর্ধনশীল গাছ যা প্রায় ৮-১২ মাসেই ফলন দিতে শুরু করে। সজনে পাতার রং উজ্জ্বল সবুজ এবং পাতার আকার ছোট। পাতাগুলো সাধারণত জোড়ায় জোড়ায় সজ্জিত থাকে। সজনে পাতার বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমন- মুরিঙ্গা, ড্রামস্টিক, মরিঙ্গা এবং মোরিঙ্গা।

এই সজনে গাছের মূলত দুটি অংশে বেশি ব্যবহৃত হয় একটি সজনে ফল এবং অন্যটি পাতা। এই সজনে গাছের বিভিন্ন প্রকারভেদ রয়েছে তবে Moringa Oleifera সবচেয়ে বেশি পরিচিত। সজনে পাতা শ্বাসযুক্ত এবং এবং এই সজনে পাতার গুঁড়ো ব্যাপক জনপ্রিয়।

সজনে পাতার পুষ্টিগুণ

এবার সজনে পাতায় কি কি পুষ্টি উপাদান কতটা পরিমাণে রয়েছে সে সম্পর্কে জেনে নিন-

পুষ্টি উপাদান পরিমাণ
ক্যালসিয়াম ২৪ মিলিগ্রাম
আয়রন ০.২ মিলিগ্রাম
জিংক ০.১৬ মিলিগ্রাম
ভিটামিন এ ২৬ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি১ ০.০৪ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি২ ০.০৪ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ৬৯.৯ মিলিগ্রাম
ক্যালরি ৪৩ কিলো ক্যালরি
জলীয় অংশ ৮৫.২ গ্রাম
আমিষ ২.৯ গ্রাম
ফ্যাট ০.২ গ্রাম
শর্করা ৫.১ গ্রাম
ফাইবার ৪.৮ গ্রা

মরিঙ্গা পাউডার এর দাম কত ২০২৪

আপনারা অনেকেই মরিঙ্গা পাউডারের দাম সম্পর্কে জানতে চান। অনেকেই আছেন যারা মরিঙ্গা পাউডারের দাম জানেন না বিধায় কিনতেও পারেন না। আজকে আপনাকে জানিয়ে দিব মরিঙ্গা পাউডারের দাম সম্পর্কে। তার আগে বলে নিই আপনি মরিঙ্গা পাউডার কোথায় পাবেন? আপনি বিভিন্ন গ্রোসারী স্টোরস, ফার্মেসি এবং স্থানীয় বাজারে খুব সহজেই এই মরিঙ্গা পাউডার পেয়ে যাবেন।

সজনে-পাতার-অবাক-করা-২০-টি-স্বাস্থ্য-উপকারিতা
আবার বর্তমান সময়ে বিভিন্ন অনলাইন প্লাটফর্ম, ফেসবুক পেজ এবং স্বাস্থ্য পুষ্টির জন্য নিবেদিত বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকেও আপনি মরিঙ্গা পাউডার ক্রয় করতে পারেন। বাজারে প্রতি 100 গ্রাম প্যাকেজের মরিঙ্গা পাউডার আপনি পাবেন ৫০০-১২০০ টাকা মধ্যে। তবে ব্রান্ড, প্রকারভেদ এবং প্যাকেজিং অনুসারে মরিঙ্গা পাউডারের দামের কিছুটা তারতম্য হতে পারে। তাই সর্বশেষ দাম জানার জন্য আপনি নির্ভরযোগ্য কোন দোকান বা অনলাইন শপে যাচাই করতে পারেন।

কারা সজনে পাতা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করবেন

যারা ব্লাড প্রেসারের জন্য নিয়মিত ওষুধ খান তাদের জন্য সজনে পাতা না খাওয়াটাই ভালো। কারণ, ব্লাড প্রেসারের ঔষধ খাওয়ার পাশাপাশি সজনে পাতা খেলে আপনার ব্লাড প্রেসার আরো কমে যেতে পারে।

  • গর্ভাবস্থায় একজন গর্ভবতী মায়ের সজনে পাতা খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা উচিত। কারণ, সজনে পাতা সংলগ্ন যে ডাল থাকে, সেই ডালের বিষাক্ত উপাদান আপনার শরীরে প্রবেশ করে আপনার গর্ভস্থ ভ্রূণের ক্ষতি সাধন করতে পারে।
  • ডায়াবেটিস রোগীদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন হয়তো রক্তের সুগার ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এই ধারণা একেবারে ভুল। কারণ, একজন ডায়াবেটিস রোগী যদি ঔষধ খাওয়ার পাশাপাশি সজনে পাতার জুস বা গুড়ো খেতে থাকেন, সেক্ষেত্রে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে এটি সহায়ক হবে।
  • শিশুদের ক্ষেত্রে সজনে পাতা না খাওয়াটাই ভালো।কারণ সজনে পাতায় বেশ কিছু প্লান্ট কেমিক্যাল এর উপস্থিতি রয়েছে যা শিশুর জন্য উপকারী নাও হতে পারে।
  • যাদের কিডনিজনিত কোন সমস্যা রয়েছে তারা সজনে পাতা এড়িয়ে চলবেন। তা না হলে আপনার কিডনি জনিত সমস্যা আরো জটিল থেকে জটিলতার হয়ে উঠতে পারে। কারণ, কিডনি রোগীদের সাধারণত অতিরিক্ত পরিমাণে পটাশিয়াম, ফসফরাস এবং প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া রেস্ট্রিকটেড করা হয়।

লেখকের মন্তব্য

সজনে পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন আজকের এই আর্টিকেল থেকে। বৈশ্বিকভাবে সজিনা পাতা সুপার ফুড হিসেবে পরিচিত। আবার গবেষকরা সজনে পাতাকে নিউট্রিশন সুপার ফুডও বলে থাকে। শুধু তাই নয়, ভারতীয় আয়ুর্বেদিক শাস্ত্র মতে, সজিনা গাছ প্রায় 300 রকমের রোগ থেকে আপনাকে রক্ষা করতে পারে 

এবং আধুনিক বিজ্ঞানও এই ধারণাকে পূর্ণরূপে সমর্থন করে। তাই আপনি যদি সার্বিকভাবে সুস্থ থাকতে চান তাহলে আজ থেকে আপনার খাদ্য তালিকায় যোগ করে নিন এই সজনে পাতা এবং সজনে পাতার গুড়ো বা মরিঙ্গা পাউডার। ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন। আর্টিকেলটি এতখন পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url