তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন
তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি জানতে চান? তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম কি আপনার জানা আছে? যদি না জানা থাকে তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন।
কারন, আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেল আলোচনা করব তুলসী পাতার নানাবিধ উপকারিতা এবং খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে চলুন আজকের মত আলোচনা শুরু করা যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ তুলসী পাতার ২০টি কার্যকরী স্বাস্থ্য উপকারিতা
- তুলসী পাতার উপকারি দিক
- তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক
- খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা
- তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
- তুলসী পাতার রস সারাবে যেসব রোগ
- তুলসী পাতার চা এর উপকারিতা
- তুলসী পাতার নানাবিধ ব্যবহার
- মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা
- রাম তুলসী পাতার উপকারিতা
- তুলসী পাতার বৈশিষ্ট্য
- তুলসী পাতার বিজ্ঞানসম্মত নাম
- তুলসী পাতার রস খাওয়ার নিয়ম
- শিশুদের উপকারী তুলসী খাওয়ানোর নিয়ম
- তুলসী পাতা চিবিয়ে না খাওয়ার কারণ কি
- তুলসী পাতার পুষ্টিমান
- লেখকের মন্তব্য
তুলসী পাতার উপকারি দিক
তুলসী পাতার উপকারিতা আমাদের কম বেশি প্রায় সকলেরই জানা। কিন্তু এই পাতা খেলে কি কি উপকার পাওয়া যায় এটি আমাদের অনেকেরই অজানা।এই পাতায় রয়েছে নানাবিধ গুণাবলী যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।সম্মানিত পাঠক,আলোচনার শুরুতেই চলুন জেনে নিন তুলসী পাতা খেলে আপনি কি কি উপকারিতা পাবেন --- ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালীকরণঃ তুলসী পাতা বিভিন্ন পুষ্টিগণে পরিপূর্ণ। বিশেষ করে এর ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। নিয়মিত তুলসী পাতার ব্যবহারে এটি আপনার শরীরকে বিভিন্ন সংক্রমণ এবং রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।যার ফলে সর্দি কাশি এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
- এন্টিবায়োটিক বৈশিষ্ট্যঃ তুলসী পাতা আপনার শরীরে প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটি হিসেবে কাজ করে।কারণ,এতে রয়েছে ইউজেনল ও সাপোনিন নামক উপাদান যা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসকে মোকাবেলা করতে সক্ষম।
- অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি প্রভাবঃ তুলসী পাতা এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদারক আমাদের সাহায্য করে। বিশেষ করে এটি আপনার গেটে ব্যথা, মাংসপেশির ব্যথা ও অন্যান্য শারীরিক ব্যথার উপশম করে।
- মানসিক চাপ কমায়ঃ আপনি কি প্রচন্ড রকমের মানসিক অস্থিরতায় ভুগছেন! কোনভাবে মানসিক স্ট্রেস কমাতে পারছেন না। তাহলে, আজ থেকে তুলসী পাতা খাওয়া শুরু করুন।কারণ, তুলসী পাতায় রয়েছে এডাপটোজেনিক প্রভাব যা আপনার মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে কাজ করে। এটি আপনার শরীরের স্ট্রেস রেসপন্স সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং মনকে শান্ত ও স্থিতিশীল রাখে।
- হজমে সাহায্য করেঃ আপনার যদি বাধ্য হবিনের সমস্যা থাকে তাহলে এই বদহজং থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে একমাত্র তুলসী পাতা। এটি আপনার পেটের গ্যাস,অম্লপিত, পেট ফুলে যাওয়া ইত্যাদি দূর করে। তাছাড়া খাবার হজম করতে তুলসী পাতার সহায়ক এনজাইম উৎপন্ন করতে পারে।
- এসিডিটি দূর করেঃ আপনি কি দীর্ঘদিন যাবত এসিডিটির সমস্যায় ভুগছেন? কোনভাবেই এসিডিটি থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। তাহলে এখন থেকেই শুরু করুন তুলসী পাতার ব্যবহার। কেননা তুলসী পাতা পেটের অম্লতা বা অ্যাসিডিটির সমস্যায় বেশ কার্যকরী।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ তুলসী পাতা আপনার উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা থেকে থাকলে নিশ্চিন্তে তুলসী পাতা সেবন করতে থাকুন। কারণ তুলসী পাতা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। এতে উপস্থিত পটাশিয়াম আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকিও অনেকটাই কমে যায়।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেঃ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তুলসী পাতা একটি উপাদেয় ঔষধ হিসেবে কাজ করে। কারণ, তুলসী পাতা আপনার রক্তের শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণ করে।এটি আপনার শরীরে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং ডায়াবেটিসের লক্ষণ হ্রাস করতে সাহায্য করে।
- ফুসফুস ভালো রাখেঃ ফুসফুস ভালো রাখতে তুলসী পাতার ভূমিকা অনবদ্য। এটি সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং অন্যান্য ফুসফুসের ইনফেকশন কমাতে বিশেষভাবে কাজ করে।
- ত্বক ভালো রাখেঃ নিয়মিত তুলসী পাতা ব্যবহারে এটি আপনার ত্বকের প্রদাহ এবং সংক্রমণ কমাতে সাহায্য করে। কারণ, তুলসী পাতার অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল গুনাগুন আপনার ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণ করে এবং ব্রণ সহ ত্বকের অন্যান্য সমস্যা দূর করে।
- চুলের যত্নে তুলসী পাতাঃ শুধু ত্বক নয় চুলের যত্নেও তুলসী পাতা খুবই উপকারী। নিয়মিত তুলসী পাতা ব্যবহারে এটি আপনার চুল পড়া কমায়, চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং চুলকে গোড়া থেকে করে তোলে মজবুত ও শক্তিশালী।
- এলার্জি দূর করেঃ যাদের শরীর অতিরিক্ত এলার্জী প্রবণ তারা নিয়মিত তুলসী পাতা ব্যবহার করুন। কারণ তুলসী পাতা ব্যবহারে এটি আপনার শরীরের এলার্জির লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে এবং সেই সাথে আপনার শরীরের এলার্জি প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
- মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধিঃ আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্রম উন্নত করতে সাহায্য করে এই তুলসী। শুধু তাই নয়, নিয়মিত তুলসী পাতা ব্যবহারের এটি আপনার স্মৃতিশক্তিও বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে।
- কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করেঃ তুলসী পাতা আপনার শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। এতে করে আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কম থাকে।
- যৌন শক্তি বৃদ্ধি করেঃ প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর এই তুলসী পাতা আপনার যৌন ক্ষমতা বাড়াতেও সক্ষম। নিয়মিত তুলসীর ব্যবহারে এটি আপনার প্রজনন ক্ষমতার উন্নতি ঘটায় এবং যৌন স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।
- মাইগ্রেন এর সমস্যা উপশমেঃ আপনি কি মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগছেন! তাহলে বলব তুলসী পাতা সেবন করুন। কারণ, তুলসী পাতা মাইগ্রেনের উপসর্গ কমাতে সহায়ক।
- বিষাক্ত পদার্থ অপসারণঃ নিয়মিত তুলসী পাতা সেবনে এটি আপনার শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করে এবং আপনার শরীরের রক্ত পরিষ্কার করে।
- প্রাকৃতিক ইনফ্লুয়েঞ্জা প্রতিরোধেঃ তুলসী পাতা যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক ইনফ্লুয়েঞ্জা যেমন- জ্বর, সর্দি-কাশি ইত্যাদির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এটি শীতকালে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে খুব ভালো কাজ করে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধ করেঃ ক্যান্সার থেকে আপনাকে দূরে রাখতে সাহায্য করে এই তুলসী পাতা।কারণ, তুলসী পাতায় রয়েছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান যা টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলে। এতে আরও রয়েছে, ফাইটোকেমিক্যাল যেমন- রোসমারিনিক এসিড, মাইরেটিনাল, লিউটিউলিন এবং এপিজেনিন। এই সকল উপাদান ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করতে বেশ কার্যকরী।
- ওজন কমাতেঃ তুলসী পাতা নিয়মিত তুলসী পাতার সেবনে এটি আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা এবং কোলেস্টেরল দুটোই নিয়ন্ত্রণে রাখে।ফলে খুব সহজেই আপনার ওজনও কমতে থাকে।
- গলা ব্যথা দূর করেঃ আপনার কি মাঝেমধ্যেই গলা ব্যথা করে। তাহলে আস্থা রাখুন তুলসী পাতায়। কারণ গলা ব্যথা দূর করতে তুলসী পাতা ভীষণই কার্যকর।
তুলসী পাতার ক্ষতিকর দিক
তুলসী পাতা যেমন উপকারী তেমনি এর কিছু অপকারিতা রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তুলসী পাতা না খাওয়াটাই উত্তম। আবার অতিরিক্ত তুলসী পাতা খাওয়ার ফলেও আপনার নানা রকম শারীরিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন-- গর্ভাবস্থা বা স্তন্যপান করানোর সময়ঃ গর্ভকালীন সময়ে বা স্তন্যপান করানোর সময় আপনার তুলসী পাতা সেবন সীমিত রাখা উচিত। কারণ, অতিরিক্ত তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে এটি আপনার বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে।
- রক্তপাতের সমস্যাঃ অতিরিক্ত পরিমাণে তুলসী পাতা খেলে এটি আপনার শরীরে রক্ত প্রবাহ বাড়িয়ে দিতে পারে। ফলে আপনার শরীরের স্বাভাবিক রক্ত জমাট হওয়ার প্রবণতা নষ্ট হয়ে যায় এবং এতে করে দেখা দিতে পারে অতিরিক্ত রক্তপাতের সমস্যা।
- সার্জারির ক্ষেত্রেঃ সতর্কতা আপনার আগত দিনে সার্জারি হবে বা যেকোনো সার্জারি অন্তত দুই সপ্তাহ আগে তুলসী পাতা খাওয়া বন্ধ করুন।
- নিম্ন রক্তচাপেঃ তুলসী পাতায় থাকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পটাশিয়াম যার ফলে এটি রক্তচাপ কমাতে পারে। সুতরাং যাদের নিম্ন রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারা তুলসী পাতা খেলে রক্তচাপ আরও কমে যেতে পারে। তাই নিম্ন রক্তচাপের রোগীদের তুলসী পাতা না খাওয়াই ভালো।
- রক্তের শর্করের পরিমাণ কমিয়ে দেয়ঃ তুলসী পাতার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহ কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে এটি আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে।
- এলার্জির সমস্যাঃ তুলসী পাতা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে প্রাকৃতিকভাবে সক্রিয় করে, কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহারে এটি আপনার ত্বকে এলার্জির সৃষ্টি করতে পারে।
- ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়াঃ তুলসী পাতা কিছু কিছু ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়া করতে পারি বিশেষ করে রক্ত পাতলা করার ঔষধ এবং ইনসুলিন এর কার্যকারিতা কে প্রভাবিত করতে পারে। তাই আপনি যদি কোন ঔষধ সেবনের মধ্যে থাকেন সেক্ষেত্রে তুলসী পাতা না খাওয়াটাই ভালো।
তুলসী পাতা খাওয়ার নিয়ম
তুলসী পাতার উপকারিতা পেতে আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে তুলসী পাতা খেতে হবে। কারণ, নিয়ম মেনে সঠিক উপায়ে না খেলে আপনি এর থেকে উপকারিতা নাও পেতে পারেন।আর তাই তুলসী পাতার খাওয়ারও কিছু নিয়ম রয়েছে। এবার চলুন খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনাকে জানিয়ে দেই-- সকালে খালি পেটে তুলসী পাতা চিবানোঃ প্রতিদিন সকালে আপনি খালি পেটে 5-10 টি তুলসী পাতা চিবিয়ে খান। এটি আপনার শরীরের এডিফিকেশন প্রক্রিয়া উন্নত করবে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
- তুলসী চা হিসেবেঃ তুলসী পাতা দিয়ে আপনি চা তৈরি করেও খেতে পারেন। এর জন্য একটা পানিতে ৪-৫টি তুলসী পাতা বা তুলসী পাতার গুঁড়ো দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন।ফুটিয়ে উঠলে চা ছেঁকে নিন এবং গরম গরম পান করুন।
- স্যুপের সাথে তুলসী পাতাঃ আপনি স্যুপের সাথে তুলসী পাতা যোগ করেও খেতে পারেন। এর জন্য আপনি স্যুপ রান্নার শেষ পর্যায় ৪-৫ টি তুলসী পাতা কুচি কুচি করে স্যুপে মিশিয়ে নিন এবং এভাবে প্রতিদিন খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
- সালাদের সাথে তুলসী পাতাঃ আপনার পছন্দের সালাদের সাথে তুলসী পাতা কুচি কুচি করে মিশিয়ে খেতে পারেন। এক্ষেত্রে সালাদ তৈরি করা শেষে তুলসী পাতা যোগ করবেন।
- স্মুদি বা জুসের সাথে তুলসী পাতাঃ তুলসী পাতা দিয়ে আপনি মুদি বা জুস তৈরি করেও খেতে পারেন। এর জন্য কিছু তুলসী পাতা,একটি কলা এবং আপনার পছন্দমত অন্যান্য ফল মিশিয়ে নিয়ে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে জুস তৈরি করে ফেলুন এবং এবং পান করুন।
- তুলসী জলঃ শুধু পানির সাথে তুলসী গুলো মিশে আপনি খেতে পারেন। এর জন্য আপনি হালকা কুসুম গরম পানির সাথে তুলসীপুরে মিশিয়ে নিন এবার এই তুলসী জল থেকে নিয়ে খেয়ে ফেলুন।
- তুলসী পাতা খাওয়ার সবথেকে উপযুক্ত সময় হলো সকালবেলা।এটি আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কারণ, সকালে তুলসী পাতা খেলে এটি আপনার ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াকে উন্নত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
- আবার সকালে না খেলে আপনি প্রতিবেলা খাবারের পরেও তুলসী পাতা খেতে পারেন।এতে করে এটি আপনার হজমের সহায়ক হবে এবং পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে।
খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার উপকারিতা
তুলসী পাতার সর্বাধিক উপকারিতা পেতে আপনি নিয়মিত খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস করুন। কারণ খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এবার চলুন খালি পেটে তুলসী পাতা খেলে আপনি কি কি উপকার পাবেন সে সম্পর্কে জেনে নিন--- খালি পেটে তুলসী পাতা খেলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস, অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি এবং এন্টিভাইরাস উপাদান সমূহ আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে তোলে। এর ফলস্বরপ, আপনার শরীর বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই এর সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে পারে।
- খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার মাধ্যমে আপনার শরীরের অভ্যন্তরীণ টক্সিন গুলি খুব সহজেই অপসারিত হতে পারে, যা কিনা আপনার শরীরকে ভেতর থেকে পরিষ্কার ও সতেজ রাখে।
- আপনি যদি নিয়মিত খালি পেটে তুলসী পাতা খান তাহলে এটি আপনার পাঁচন তন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করবে এবং হজম ক্রিয়াও ত্বরান্বিত করবে।
- নিয়মিত খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে এটি আপনার মানসিক চাপ কমাতে পারে।
- আপনার শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তুলতে আজ থেকে খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়া শুরু করুন। কারণ, খালি পেটে তুলসী পাতা খেলে এটি শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে দ্বিগুণ পরিমাণ শক্তিশালী করে তোলে।
- আপনি কি রক্তচাপে সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে খালি পেটে তুলসী পাতা খান। কারণ, খালি পেটে তুলসী পাতা খেলে এটি আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সাহায্য করে ফলে আপনার রুদ্রকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
- খালি পেটে তুলসী পাতা খেলে এটি আপনার প্রাকৃতিক বিভিন্ন ইনফ্লুয়েঞ্জা যেমন জ্বর, সর্দি,কাশি ইত্যাদি কমাতে ভূমিকা পালন করে এবং দ্রুত আরোগ্য প্রদান করে।
- নিয়মিত খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়ার ফলে আপনার ত্বক ভালো থাকে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বকে সহজে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে না।
- আপনি আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়াতে চাইলে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে চাইলে খালি পেটে নিয়ম করে তুলসী পাতা খান।
- আপনি কি আপনার বাড়তি ওজনের দুশ্চিন্তায় আছেন? তাহলে এখন থেকে খালি পেটে তুলসী পাতা খাওয়া শুরু করুন। কারণ, খালি পেটে তুলসী পাতা খেলে এটি আপনার শরীরে মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে প্রাকৃতিকভাবে আপনার ওজন কমতে থাকে।
- সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে তুলসী পাতা খেলে এটি সারা দিনের জন্য আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করতে থাকে।
- আপনি প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ৫-১০টি তুলসীর পাতা পরিষ্কার করে ধুয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলুন।
তুলসী পাতার রস সারাবে যেসব রোগ
তুলসী পাতার উপকারিতা এতটাই যে তুলসী গাছের পাতা, বীজ ,বাকল ও শিকড় কোন কিছুই ফেলনা নয়। ঔষধি গুনসম্পন্ন এই তুলসী আপনার বিভিন্ন রোগ সারাতে ও কার্যকর ভূমিকা রাখে। এবার চলুন তুলসী পাতার রস খেলে এটি কি কি রোগ সারাতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নিন-- জ্বর,সর্দি,কাশি সারাতেঃ আপনি কি দীর্ঘস্থায়ী সর্দি, ঠান্ডা, কাশিতে জর্জরিত? এই সকল সমস্যা থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে তুলসী পাতা। সর্দি, ঠান্ড, কাশি থেকে রক্ষা পেতে আপনি তুলসী পাতা ও আদার রসের সাথে একটু মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে আপনার জ্বর, সর্দি, ঠান্ডা, কাশি ইত্যাদি দূর হবে।
- মুখের রুচি বৃদ্ধি করেঃ আপনি কি খাবারের প্রতি রুচি পান না? বা অরুচির সমস্যায় ভুগছেন। তাহলে প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে খান। এতে আপনার মুখে রুচি ফিরে আসবে।
- নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করতেঃ অনেকের নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ দূর হতেই চায় না। ফলে অনেক সময় আপনাকে নানান বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। নিঃশ্বাসে এই দুর্গন্ধ দূর করতে আপনি গরম পানিতে তুলসী পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গড়গড়া করুন। এতে করে আপনার মুখ ও গলার রোগ জীবাণু মারা যায় এবং মুখের দুর্গন্ধও দূর হয়।
- মাইগ্রেন এর সমস্যা দূর করেঃ পনি কি জানেন মাথাব্যথা ও শরীর ব্যথা কমাতে তুলসী পাতা খুবই উপকারী। আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা এবং শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টের ব্যথা দূর করতে নিয়মিত তুলসী পাতা খান।
- চোখের সমস্যা দূর করেঃ তুলসী পাতার চোখের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে। আপনি কি চোখে সব সময় ঝাপসা দেখেন? তাহলে কয়েকটি তুলসী পাতা আপনি রাতে পানিতে ভিজিয়ে রাখুন এবং এই পানি দিয়ে সকাল বেলা চোখ ধুয়ে ফেলুন।এতে আপনার চোখের চুলকানি, অঞ্জনি বিভিন্ন সমস্যা দূর হবে।
- কিডনি ও পাকস্থলীর সুরক্ষায়ঃ কিডনি এবং পাকস্থলীর সকল সমস্যার দূর করে এই তুলসী পাতা। প্রতিদিন এক গ্লাস করে তুলসী পাতার রস আপনি যদি খেতে পারেন তাহলে আপনার কিডনিতে কখনোই পাথর জন্মাবে না।
- পেটের সমস্যা দূর করেঃ আপনার পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন বদহজম পেটের অম্বল গ্যাস কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি দূর করতে তুলসীর পাতা দারুন কার্যকরী। আপনার পেটে ব্যথা হলে ২০।মিলি. পানিতে তুলসী পাতা ভালো করে ফুটিয়ে এটি ১০ মিলিতে নিয়ে আসুন এবং এই পানি পান করুন। আপনার পেটের ব্যথা এবং এসিডিটি দূর হবে।
- কিডনির পাথর অপসারণঃ আপনার কিডনিতে যদি পাথর থেকেও থাকে তাহলে আপনি টানা ৬ মাস তুলসী পাতা রস খান। এতে করে কিডনির পাথর আপনার মুত্রের সঙ্গে বেরিয়ে যাবে।
- ত্বকের ব্রণঃ আপনার ত্বকের ব্রণ এবং ব্রণের কালো দাঁত দূর করার একটি সহজলভ্য উপাদান হল তুলসীপাতা। তুলসী পাতার পেস্ট ত্বকে ব্যবহার করলে আপনার ত্বকের যাবতীয় দাগ দূর হবে এবং ত্বকের হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে আসবে।
- ডায়াবেটিসেঃ তুলসী পাতার গুনাগুন আপনার রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
- ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ ক্যান্সার প্রতিরোধে তুলসী পাতা বেশ উপকারী। আপনার অগ্নাশযয়ে যে টিউমার কোষ দেখা যায় তা দূর করতেও সাহায্য করে তুলসী পাতা।তাছাড়া ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে তুলসীর ভূমিকা অনবদ্য।
তুলসী পাতার চা এর উপকারিতা
আপনি কি জানেন তুলসী গাছের পাতার চা আপনাকে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে রক্ষা করতে পারে? জানতে চান সেই সমস্যা গুলো কি কি? চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক-- শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা দূর করেঃ সর্দি-কাশি এবং সাইনোসাইটিসের সমস্যার যারা রয়েছেন তারা নিয়মিত তুলসী চা পান করুন। কারণ, তুলসী পাতা শাসনালী পরিষ্কার করে এবং ঠান্ডা,কাশি উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে।
- মানসিক চাপ দূর করেঃ তুলসী পাতার চায়ের মত অ্যারোমেটিক বেফারেজ যা আপনার মানসিক চাপ দূর করতে বিশেষভাবে সহায়ক। তাই আপনি যদি মানসিক চাপের মধ্যে দিয়ে যান তাহলে তুলসি চা খাওয়ার অভ্যাস করুন।
- জ্বর কমায়ঃ জ্বরের ঔষধ হিসেবে আপনি যদি তুলসীতা ব্যবহার করেন তাহলে অনেক বেশি ভালো ফল পাবেন। বিশেষ করে এই চায়ে যদি দারুচিনি যোগ করা হয় তাহলে অতি দ্রুত ফল পাওয়া যায়।
- পেটের গন্ডগোল দূর করেঃ হজমের সমস্যার কারণে অনেকের পেটেই বদহজম দেখা দেয়। এই সমস্যা দূর করতে আপনি নিয়মিত তুলসীপাতার চা পান করুন। এতে আপনার পেটে সকল সমস্যার সমাধান হবে।
- খারাপ কোলেস্টেরল কমায়ঃ প্রতিদিন একটা তুলসী পাতার চা পান করায় এটি আপনার দেহের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়। তাছাড়া তুলসীর ফাইটোকেমিক্যাল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অর্গানিক কম্পাউন্ড আপনার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সক্ষম।
- দৃষ্টিশক্তি সমস্যা দূর করেঃ তুলসী চায়ের ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন আপনার চোখের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি রাগ কেন সহ চোখের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে পারে।
- অল্প বয়সে বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করেঃ নিয়মিত তুলসী পাতার চা সেবনে এর আন্টি অক্সিডেন্ট ও ফাইটো কেমিক্যাল আপনার ত্বকের বয়সের ছাপ পড়তে বাধা প্রদান করে।
- বিষাক্ত পদার্থ অপসারণঃ তুলসী পাতার চা আপনার শরীর থেকে নানা ধরনের বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয়। হলে আপনার শরীর ভেতর থেকে সঠিক এবং চাঙ্গা হয়ে ওঠে।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
- পানি- ২ কাপ
- তুলসী পাতা- তাজা পাতা ৫-৬ টি(যদি শুকনো পাতা ব্যবহার করেন তবে ১-২ চা চামচ)
- মধু বা চিনি- স্বাদমতো
- আদা- ১ টুকরো
- লেবু- ১ টুকরো
একটি পরিষ্কার পাত্রে ২ কাপ পানি নিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন।এবার ফুটে ওঠা পানিতে তাজা ৫-৬ টি তুলসী পাতা ছেচে যোগ করুন। আপনি চাইলে তাজা তুলসী পাতার পরিবর্তে শুকনো তুলসী পাতাও ব্যবহার করতে পারেন। তুলসী চা এর স্বাদ বাড়ানোর জন্য আপনি এর সাথে এক টুকরো আদাও যোগ করে নিতে পারেন।
এবার পানি, তুলসী পাতা এবং আদা ৫-৭ মিনিট ভালো করে ফুটিয়ে জ্বাল করে ২ কাপ পানিকে ১ কাপ করে ফেলুন। সবশেষে এতে পরিমাণমতো চিনি এবং লেবুর রস যোগ করুন। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল তুলসীপাতার চা। এবার গরম গরম পান করুন।
তুলসী পাতার নানাবিধ ব্যবহার
তুলসী পাতা যা প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা এবং দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। শুধুমাত্র স্বাস্থ্য নয় বরং দৈনন্দিন জীবনে এর আরো কিছু ব্যবহার রয়েছে। যেমন-- মশা প্রতিরোধেঃ তুলসী পাতা প্রাকৃতিক মশারি হিসেবে কাজ করে তুলসী পাতা। কারণ, এটি খুব সহজেই মশা দূর করতে পারে। আপনি আপনার বাড়ির ভেতরে তুলসী পাতা ছড়িয়ে দিন। এতে আপনার বাড়ির মশা দূর হবে এবং অন্যান্য পদবির উপস্থিতিও কমবে।
- প্রাকৃতিক পরিছন্নতাঃ আপনি তুলসী পাতার জল দিয়ে ঘর বা বাড়ির বিভিন্ন জায়গা পরিষ্কার করতে পারেন। এতে এই এন্টিব্যাকটিক্যাল বৈশিষ্ট্য আপনার বাড়ি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
- প্রাকৃতিক সুগন্ধিঃ তুলসী পাতা শুকিয়ে আপনি আপনার ঘরের যে কোনো জায়গায় রেখে দিন। এটি আপনার ঘরের পরিবেশে প্রাকৃতিক সুগন্ধি হিসেবে কাজ করবে।
- চিনির পরিবর্তে তুলসী পাতাঃ কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিনির পরিবর্তে তুলসী পাতা ব্যবহার করা হয়।কারণ তুলসী পাতার মধ্যে প্রাকৃতিক মিষ্টতা রয়েছে। বিশেষত যাদের চিনি খাওয়া বারণ তারা চিনির পরিবর্তে তুলসী পাতা ব্যবহার করতে পারেন।
- ছারপোকা দূর করতেঃ অনেক সময় আমাদের বাড়ির আনাচে-কানাচে কিংবা আসবাবপত্রের কোণে বা আলমারিতে ছারপোকার উপদ্রব দেখা দেয়। এ ছারপোকা দূর করতে আপনি আপনার আলমারিতে কিছু শুকনো তুলসী পাতা বা তুলসী পাতার পাউডার রাখতে পারেন। এতে খুব সহজে ছারপোকা দূর হবে।
মধু ও তুলসী পাতার উপকারিতা
আপনি কি জানেন তুলসী পাতা এবং মধু একসাথেও খাওয়া যায়? তুলসী ও মধুর রয়েছে বহুবিধ গুনাগুন। অনেকেই আছেন যারা শারীরিক সুস্থতার জন্য নিয়মিত মধু ও তুলসী পাতা খেয়ে থাকেন। এবার চলুন মধু ও তুলসী পাতার মিশ্রণ একসাথে খেলে আপনি কি কি পাবেন তা জেনে রাখুন-- তুলসী মধুর পুষ্টিগুনঃ তুলসী মধুতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান ও ভিটামিন,যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। তাছাড়া, সর্ব রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কয়েক হাজার বছর ধরে স্বীকৃত এই তুলসী মধুর মিশ্রণ।
- প্রাকৃতিক ইনফ্লুয়েঞ্জা দূর করতেঃ তুলসী মধু আপনাকে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক ইনফ্লুয়েঞ্জা, ঠান্ডা, কাশি ইত্যাদি থেকে মুক্তি দিতে পারে এবং আপনার শরীরকে সুরক্ষিত রাখে।
- কাশি দূর করেঃ আপনি কি দীর্ঘদিনের খুসখুসে কাশিতে ভুগছেন? তাহলে আজ থেকে তুলসী মধু খাওয়া শুরু করুন। কারণ, কাশি কমাতে তুলসী মধুর মিশ্রণ দারুন কাজ করে এবং সেই সাথে এটি আপনার শ্বাসতন্ত্রের সমস্যাও দূর হবে।
- এলার্জি প্রতিরোধেঃ তুলসী মধুর মিশ্রণে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক উপাদান যা আপনার ত্বককে প্রশমিত করে এবং এলার্জি রোধ করে।
- কিডনির পাথর অপসারণঃ নিয়মিত তুলসী মধুর মিশ্রণ খাওয়ার ফলে এটি আপনার কিডনির পাথর দূর করতে পারে। শুধু তাই নয়, আপনার কিডনি থেকে সমস্ত বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিয়ে কিডনিকে সুরক্ষিত রাখে।
- হৃদপিণ্ড ভালো রাখেঃ হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত পান করুন তুলসী মধুর মিশ্রণ। কারণ তুলসী মধু আপনার শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। ফলে,হৃদপিণ্ড ভালো থাকে।
- আপনি একমুঠো তাজা তুলসী পাতা পাটায় বেটে নিন অথবা ব্লেন্ডারের ব্লেন্ড করে একটি পেস্ট তৈরি করে ফেলুন। এবার এই পেস্টটিতে ১ চা চামচ পরিমাণ মধু মিশিয়ে নিন। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল তুলসী মধুর মিশ্রণ। এবার এটি আপনি খেতে পারেন। আবার, তুলসী পাতার চায়ের সাথে মধু মিশিয়েও খেতে পারেন।
রাম তুলসী পাতার উপকারিতা
রাম তুলসী সাধারণ তুলসী পাতা থেকে অনেকটা বড় আকারের গাছ এবং এর পাতার সাইজও বেশ বড়। এই ইরান তুলসী পাতারও বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। যেমন-- রাম তুলসী পাতার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য যা আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
- রাম তুলসী পাতা মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে বিশেষভাবে কার্যকরী। কারণ এটি স্ট্রেস হরমোন নিয়ন্ত্রণের সহায়ক।
- খুসখুসে কাশি,ঠান্ডা লাগা,গলা ব্যথা এবং ব্রঙ্কাইটিস এর মত উপসর্গ কমাতে কাজ করে রাম তুলসী পাতা। তাছাড়া এর অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য শ্বাসনালী পরিষ্কার করে এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
- রাম তুলসী পাতা হজমে সহায়ক বিশেষ করে পেটের গ্যাস, বদহজম,এসিডিটি ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে।
- রাম তুলসী পাতা আপনার শরীরে প্রাকৃতিক ডিটক্সিফায়ার হিসেবে কাজ করে যে আপনার শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ অপসারণ করে।
- ত্বকের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ যেমন- ব্রণ, ব্রণের দাগ, ত্বকের কালো ছোপ দাগ ইত্যাদি দূর করতে রাম তুলসী পাতা বেশ কার্যকরী।
- নিয়মিত রাম তুলসী পাতার ব্যবহারে এটি আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহায়ক হতে পারে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
- রাম তুলসী পাতায় উপস্থিত এন্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য,আপনার শরীরকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে।
রাম তুলসী পাতা খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যেমন ধরুন,
- আপনি পরিমিত পরিমাণে রাম তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস অভ্যাস করুন। অতিরিক্ত পরিমাণে রাম তুলসী পাতা ব্যবহারের ফলে আপনার হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- গর্ভকালীন সময়ে রাম তুলসী পাতা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত।
তুলসী পাতার বৈশিষ্ট্য
তুলসী পাতা বিশেষ করে রাম তুলসী ও শ্রী তুলসী একটি বহুবিধ ঔষধি গুন সম্পূর্ণ উদ্ভিদ। তুলসী পাতার বিশেষ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট,অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি, এন্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিভাইরাল এর প্রভাব। তাছাড়া, তুলসী পাতায় উপস্থিত অন্যান্য উপাদান আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, স্ট্রেস ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে।শুধু তাই নয়, আপনার শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা, শ্বাসযন্ত্রকে সুরক্ষিত রাখা, ঠান্ডা কাশির উপসর্গ হ্রাস করা ইত্যাদিতে তুলসী পাতের ভূমিকা অনবদ্য। এর ডিটোক্সিফিকেশন বৈশিষ্ট্য আপনার শরীরের বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশনে কাজ করে এবং শরীরকে ভেতর থেকে চাঙ্গা করে তোলে। তুলসী পাতার গুনাগুন এতটাই যে একে ভেষজ রানি নামেও আখ্যায়িত করা হয়। তাই নিজেকে সুস্থ, সুন্দর রাখতে আপনি আজ থেকে তুলসী পাতার ব্যবহার শুরু করুন।
তুলসী পাতার বিজ্ঞানসম্মত নাম
তুলসী পাতা যার ইংরেজি নাম Holy Basil এবং বৈজ্ঞানিক নাম Ocimum sanctum বা Ocimum tenuiflorum. সম্পন্ন উদ্ভিদ যা মূলত ভারতীয় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। হিন্দু ধর্মে এটি একটি পবিত্র উদ্ভিদ হিসেবে পতিত হয় এবং বিভিন্ন ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হয়। একটি তুলসী গাছ সাধারণত 30-60 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হয়।এর পাতাগুলি সাধারণত ছোট, হৃদপিণ্ড আকৃতির এবং সোনালী বা সবুজ বর্ণের সুগন্ধিযুক্ত। এর ফুলগুলো অপেক্ষাকৃত ছোট এবং বেগুনি বা সাদা বর্ণের হয়। তুলসী গাছ সাধারণত গ্রীষ্মমন্ডলীয় এবং উপগ্রীষ্মমন্ডল অঞ্চলে ভালো জন্মে।তাছাড়া এই গাছ ভারত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং অন্যান্য উষ্ণ অঞ্চলেও প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়।
তুলসী পাতার রস খাওয়ার নিয়ম
তুলসী পাতার রস শুধু খেলেই হল না! তুলসী পাতার রস খাওয়ার জন্য কিছু নিয়ম রয়েছে। যে নিয়মগুলো মেনে আপনি তুলসী পাতার রস খেলে এর থেকে সর্বাধিক উপকারিতা পেতে পারেন। সম্মানিত পাঠক এবার চলুন আপনাকে জানিয়ে দিব আপনি কোন উপায়ে তুলসী পাতার রস খাবেন--- তাজা তুলসির রস হিসেবেঃ আপনি টাটকা সতেজ তুলসী পাতা রস হিসেবে খেতে পারেন। এর জন্য আপনি একমুঠো তাজা তুলসী পাতা নিন এবং ভালো করে ধুয়ে নিন। এবারে এই পাতাগুলো ব্লেন্ডারে পেস্ট করে নিন এবং একটি ছাকনি বা একটি পরিষ্কার কাপড়ের মাধ্যমে এর থেকে ছেঁকে রস বের করে নিন। এই রস আপনি সকালে খালি পেটে ১-২ চা চামচ পরিমাণ পান করুন।
- গরম পানির সাথেঃ আপনি চাইলে গরম পানির সাথেও এই রস খেতে পারেন। এর জন্য এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম পানিতে ১-২ চা চামচ তুলসী পাতার রস ভালো করে মিশিয়ে নিন এবং পান করুন। আপনি দিনে এক থেকে দুই বার এই রস পান করার চেষ্টা করুন।
- মধুর সাথে তুলসীর রসঃ তুলসী পাতার রস প্রস্তুত করে, ১ চা চামচ তুলসির রসের সাথে আপনি ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। তুলসীর রসের সাথে মধু যোগ করলে এটি খেতে আরও সুস্বাদু হয়।প্রতিদিন সকাল অথবা সন্ধ্যায় তুলসী মধুর এই মিশ্রণটি খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে ভালো ফল পাবেন।
- লেবুর রসের সাথেঃ আপনি চাইলে লেবুর রসের সাথেও তুলসী পাতার রস খেতে পারেন। এর জন্য এক গ্লাস পানিতে ১-২ চা চামচ তুলসী পাতার রস এবং ১ চা চামচ লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই রস আপনি সারাদিনে একবার খেতে পারেন। এটি আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড রাখবে এবং পরিপাকতন্ত্রকেও সুস্থ রাখবে।
- চায়ের সাথে তুলসী রসঃ অনেকে আছেন যারা চায়ের সাথে তুলসী পাতার রস খেতে পছন্দ করেন। এর জন্য আপনি এক কাপ চা এ ১ চা চামচ পরিমাণ তুলসী পাতার রস মিশিয়ে নিন এবং পান করুন। আপনি প্রতিদিন আপনার বিকেলের নাস্তার সাথে এই মিশ্রণটি পান করতে পারেন।
- প্রতিদিন ১০-১৫ টি পাতার তুলসী রস আপনার শরীরের জন্য যথেষ্ট।
- অতিরিক্ত পরিমাণে তুলসী পাতার রস খাওয়া একেবারেই এড়িয়ে চলুন। কারণ অতিরিক্ত পরিমাণে তুলসী পাতার রস খেলে আপনার কিছু শারীরিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।
শিশুদের উপকারী তুলসী খাওয়ানোর নিয়ম
সাধারণত ঋতু পরিবর্তনের সময় শিশুদের জ্বর, সর্দি, কাশি লেগেই থাকে। ঠিক এই সময় আপনি বাড়তি সতর্কতা হিসেবে আপনার শিশুকে নিয়মিত খাওয়াতে পারেন তুলসী পাতা। কার্যকারিতা বাড়াতে আপনি বেশ কয়েকটি নিয়মে আপনার শিশুকে তুলসী পাতা খাওয়াতে পারেন।যেমন-- তুলসী পাতার সাথে এক টুকরো আদা নিয়ে আপনি পাটায় বেটে পেস্ট তৈরি করে ফেলুন এবং এই পেস্ট দিনে দুবার আপনার শিশুকে খাওয়ান।
- তুলসী পাতার এই পেস্টটির সাথে আপনি সামান্য মধু মিশিয়েও আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারেন।
- একটি পাত্রে আপনি পানি গরম করে তাতে আদা কুচি দারুচিনি বুড়া এবং তুলসী পাতা ফেলে দিন। এই বিশেষ পানীয়টি আপনার শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
- আবার আপনি তুলসী পাতার সাথে গুড় মিশিয়ে সরাসরি শিশুকে তুলসী পাতা চিবিয়েও খাওয়াতে পারেন।
- আপনার শিশুকে তুলসী পাতার রস দেওয়ার সময় অবশ্যই শিশুর বয়সের দিকে খেয়াল রাখবেন।
- সাধারণত ১ বছরের কম বয়সী শিশুদের তুলসী পাতা রস খাওয়ানো উচিত নয়। ১ বছরের পর অল্প পরিমাণে খাওয়াতে পারেন।
- প্রথমবারের মতো শিশুকে তুলসী পাতার রস খাওয়ালে পর্যবেক্ষণ করুন তাতে আপনার শিশু শরীরে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে কিনা। তেমন হলে তুলসী রস খাওয়ানো বন্ধ করে দিন।
তুলসী পাতা চিবিয়ে না খাওয়ার কারণ কি
অনেকেই মনে করেন তুলসী পাতা চিবিয়ে খেতে হয় না। এর কারণ জানেন কি? তুলসী পাতা চিবিয়ে না খাওয়ার ক্ষেত্রে মূলত এর পেছনে ধর্মীয় কারণ রয়েছে। কারণ, হিন্দু ধর্মে তুলসী পাতাকে অত্যন্ত পবিত্র বলে মনে করা হয়। তুলসী পাতা ছাড়া কোন পুজো তো সম্পন্ন হয়ই না এবং লক্ষীর অপর নামও তুলসী। ঠিক এ কারণেই হিন্দু ধর্মে তুলসী পাতা চিবিয়ে খেতে বারণ করা হয়। ঠিক এ কারনে এই পাতার সব সময় গিলে খাবার পরামর্শ দেওয়া হয়।তবে এই নিয়ে অনেক মতপার্থক্য রয়েছে। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, তুলসী পাতা চিবিয়ে না খাওয়া পুরোটাই ধর্মীয় নাকি এর পিছনে বৈজ্ঞানিক কোনো কারণ রয়েছে? হ্যাঁ সম্মানিত পাঠক, তুলসী পাতা ক্ষেত্রে এর পেছনে বৈজ্ঞানিক যুক্তি রয়েছে। কারণ পুষ্টিবিদদের মতে, তুলসী পাতাই প্রচুর পরিমাণে পারদ এবং আয়রন থেকে। যার ফলে এই পাতা চিবোলে এর থেকে যে মিনারেল নির্গত হয় তা আপনার দাঁতের ক্ষতি করতে পারে এবং দাঁতে দাগ ছোপ ফেলতে পারে।
এছাড়া, তুলসী পাতা কিছুটা অ্যাসিডিক হওয়ার কারণে আপনার দাঁতের এনামেল নষ্ট হতে পারে এবং দাঁতে ব্যথা হতে পারে। এছাড়াও, তুলসী পাতাতে কিছু পরিমাণ আর্সেনিক রয়েছে যার ফলে আপনার দাঁত খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ঠিক এই সমস্ত কারণেই,বিশেষজ্ঞরা তুলসির পাতা চিবিয়ে না খাওয়ার পরামর্শ দেন। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
তুলসী পাতার এই পুষ্টির পরিমাণ বিভিন্ন উৎস ও শর্তের উপর নির্ভর করে অনেক সময় পরিবর্তিত হতে পারে। এছাড়াও তুলসী পাতার পুষ্টি উপাদানের সাথে এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আন্টি ইনফ্লামেটরি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত উপকারিতা রয়েছে।
তুলসী পাতার পুষ্টিমান
তুলসী পাতা অত্যন্ত পুষ্টিগুনে ভরপুর একটি পাতা যাতে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ উপাদান এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। এবার চলুন প্রতি ১০০ গ্রাম তুলসী পাতায় কি পরিমাণ কষ্ট উপাদান রয়েছে তা জেনে নিন--পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ |
---|---|
শক্তি | ২৩ ক্যালরি |
প্রোটিন | ৩.১৫ গ্রাম |
ফ্যাট | ০.৮১ গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ২.৭৫ গ্রাম |
ফাইবার | ১.৬ গ্রাম |
ভিটামিন এ | ৬৭৭ IU |
ভিটামিন সি | ১৮.৯ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন কে | ২.৩ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি১ | ০.০৬ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি২ | ০.০৪ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি৩ | ০.৬৯ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি৫ | ০.৩৩ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি৬ | ০.২৯ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি৯ | ১.৪ মিলিগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ২৮০ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ৩.৮ মিলিগ্রাম |
ম্যাগনেসিয়াম | ৩৭ মিলিগ্রাম |
ফসফরাস | ৫৩ মিলিগ্রাম |
পটাশিয়াম | ২৭০ মিলিগ্রাম |
সোডিয়াম | ২ মিলিগ্রাম |
জিংক | ০.৩৫ মিলিগ্রাম |
তুলসী পাতার এই পুষ্টির পরিমাণ বিভিন্ন উৎস ও শর্তের উপর নির্ভর করে অনেক সময় পরিবর্তিত হতে পারে। এছাড়াও তুলসী পাতার পুষ্টি উপাদানের সাথে এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আন্টি ইনফ্লামেটরি এবং অন্যান্য স্বাস্থ্যগত উপকারিতা রয়েছে।
লেখকের মন্তব্য
তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আপনি নিশ্চয়ই এতক্ষণে বিস্তারিতভাবে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জানতে পেরেছেন। তুলসী পাতার এই গুনাগুন হয়তো বলে শেষ করা যাবে না। তাছাড়া সেই প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদিক, ইউনানী প্রভৃতি চিকিৎসায় তুলসী পাতা বহুল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। আর ঔষধ হিসেবে তুলসী পাতার ব্যবহার বেশ পুরনো। তুলসী পাতার এন্টি ইনফ্লামেটরি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান মারাত্মক সব রোগ যেমন- ডায়াবেটিস, হৃদরোগ,ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার ইত্যাদির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।বিভিন্ন গুনে অনন্য বলেই যুগ যুগ ধরে প্রাচীনকাল থেকে তুলসীর ব্যবহার হয়ে আসছে। আপনার দৈনন্দিন জীবনে তুলসী পাতার ব্যবহার এখনো না করে থাকলে আজ থেকে শুরু করুন তুলসীর ব্যবহার এবং নিজেকে রাখুন সুস্থ, সুরক্ষিত। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং পরবর্তী আর্টিকেল পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে। ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url