আলুর ২০ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু আলু খেলে কি মোটা হয়? এটি আমাদের অনেকেরই অজানা। আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেল আলোচনা করব আলুর বহুমুখী উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
সাথে আরো আলোচনা করব রূপচর্চায় আলুর রসের ফেসপ্যাক সম্পর্কে। আর আলু সম্পর্কিত এই সকল বিষয় জানতে হলে পুরো আর্টিকেলটি আপনি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ে নিন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ আলুর ২০টি উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
- আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- আলুর উপকারিতা
- আলুর অপকারিতা
- আলু খেলে কি মোটা হয়
- প্রতিদিন আলু খেলে কি হয়
- সিদ্ধ আলু খেলে কি মোটা হওয়া যায়
- আলুর রস দিয়ে রূপচর্চা
- আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
- আলুর রসের ফেসপ্যাক
- আলুর রস মুখে মাখলে কি হয়
- আলুতে কি ভিটামিন আছে
- আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমার মন্তব্য
আলু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক। আপনি কি কখনো চিন্তা করেছেন ভাত রুটির পরে আমরা সবচেয়ে কোন খাবার বেশি খাই? হ্যাঁ সম্মানিত পাঠক, ভাত রুটির পরে আমরা যে খাবারটি বেশি খাই সেটি হল আলু। তাছাড়া এই সবজিটি অতি সহজলভ্য এবং বিভিন্ন ধরনের রান্নার সাথে খুব সহজেই মিশে যায়।শুধুমাত্র স্বাদ নয় বরং সহজলভ্য এই সবজিটি প্রচুর পুষ্টিগুণেও ভরপুর। আলুতে রয়েছে ফাইবার, আয়রন, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন সি এবং ক্যালসিয়াম সহ আরো নানান পুষ্টি উপাদান। আবার যাদের ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য আলু খুব একটা উপকারী নাও হতে পারে।
আবার অনেকেই মুটিয়ে যাওয়ার ভয়ে আলু খেতে চান না। কিন্তু পরিমিত পরিমানে আলু খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। সুতরাং আলুর উপকারি দিক এবং অপকারী দিক দুটোই রয়েছে। সম্মানিত পাঠক, আজকে আমাদের আর্টিকেলের আলোচনার বিষয়বস্তু হলো এই আলু। তাহলে চলুন এবার এই সবজির খুঁটিনাটি সকল তথ্য আজকের এই আর্টিকেল পড়ে জেনে নিন।
আলুর উপকারিতা
আলুর নানাবিধ উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। আজকে আলোচনার শুরুতে আপনাকে জানিয়ে দেবো সহজলভ্য এই সবজিটির নানান উপকারিতা সম্পর্কে-- শক্তির আঁধারঃ আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট যা আমাদের শরীরে অতিরিক্ত শক্তি সরবরাহ করে থাকে। তাছাড়া এটি আমাদের দৈনন্দিন কাজে কর্মে শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে।
- হৃদপিন্ডের সুস্থতায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আলুঃ আলু পটাশিয়ামের একটি দুর্দান্ত উৎস। আর এই পটাশিয়াম আমাদের হৃদপিন্ডের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। শুধু হৃদপিণ্ড নয় রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং পেশির কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতেও আলুর ভূমিকা অনন্য।
- ভিটামিন সি এর উৎসঃ আপনি আপনার শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে চাইলে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার পাতে আলু খান। কারণ, আলোতে রয়েছে ভিটামিন সি যা আপনার ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। শুধু তাই নয়, নিয়মিত আলু খাওয়ার ফলে এটি আপনার শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবেও কাজ করে।
- কোষ্ঠকাঠিন্যের মহৌষধঃ আলুর খোসা ও ভিতরের অংশে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং পেকটিন। যা আপনার হজম ক্রিয়াকে সহজ করে এবং খুব সহজেই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পারে। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যকে বিদায় জানাতে হলে আপনি আজ থেকেই আলু খাওয়া শুরু করুন।
- মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতেঃ একটু বয়স হলে আমরা অনেক কথা স্মরনে রাখতে পারি না। আবার অতীতের কোন কথা খুব সহজে মনে করতেও পারিনা। এই সমস্যা দূর করতে আপনি আলু আজ থেকে খাওয়া শুরু করুন। কারণ, আলুতে থাকা ভিটামিন বি৬ যা আপনার মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধির সাথে সাথে স্নায়ুতন্ত্রকেও শক্তিশালী করে তোলে।
- রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণেঃ নিয়মিত আলু খেলে এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকায় এটি আপনার শরীরে ধীরে ধীরে শর্করা মুক্তি করতে থাকে। যার ফলে আপনার রক্তে শর্করার স্তর আপনা আপনি নিয়ন্ত্রিত হয়।
- শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেঃ আলুর কুলিং এফেক্ট আপনার শরীরের তাপমাত্রা কমাতেও কাজ করে। বিশেষ করে খুব গরম আবহাওয়ায় আপনি যদি আলু খান সেক্ষেত্রে আপনার শরীর অনেকটাই ঠান্ডা থাকবে।
- চুল ও ত্বকের পরিচর্যায় আলুঃ আলুতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার ত্বক এবং চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। নিয়মিত আলুর রস ব্যবহারে আপনার ত্বক যেমন হারানো উজ্জ্বলতা ফিরে পায় তেমনি চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
- হাড় মজবুত করেঃ আলুতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে আয়রন ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এবং জিংক। আর এই প্রত্যেকটি উপাদান আপনার হাড় মজবুত ও শক্তিশালী করতে কাজ করে। সুতরাং শরীরের জয়েন্টের ব্যথা হাড়ের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে আজ থেকে পরিমিত পরিমাণে আলু খাওয়া শুরু করুন।
- পেটের সমস্যায় উপকারীঃ আপনার পেটের যেকোন সমস্যা যেমন ধরুন ডায়রিয়া, আমাশয় বা বদহজম ইত্যাদিতে আলু সেদ্ধ করে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।
- অনিদ্র দূর করেঃ আলু আপনার শরীরে সঠিক পরিমাণে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম উপাদান গুলো পেতে পারেন একমাত্র আলো খাওয়ার মাধ্যমে। আর এই উপাদান গুলি শরীরের সঠিক মাত্রায় থাকলে তবেই আপনার শরীর শান্ত থাকে এবং ঘুমও ভালো হয়।
- পিরিয়ডের সমস্যা দূর করেঃ মা বোনদের পিরিয়ড হওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তে মিষ্টি খাওয়ার উপর প্রবণতা অনেকটা বেড়ে যায়। আর এই আলুতে রয়েছে প্রাকৃতিক মিষ্টি পদার্থ। হলে আলু খেলে পিরিয়ড এর সময় আপনার মেজাজ খিটখিটে হওয়া থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে।
- শরীর ফোলা রোধ করেঃ আলুতে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা আপনার শরীরের ইলেকট্রোলাইসিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এর ফলে আপনার শরীর ফুলে যাওয়া বা শরীরের যে কোন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ফুলে যাওয়ার সমস্যা দূর হয়।
- ওজন কমায়ঃ আলু যদিও অতিরিক্ত আলু খেলে এটি ওজন বাড়ার কারণ হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে নিয়ম মেনে আলো খান সেক্ষেত্রে আপনার ওজন বাড়ার পরিবর্তে কমতে থাকবে। কারণ আলুতে সবচেয়ে কম ফ্যাট থাকে এবং ফাইবার বেশি থাকে। দীর্ঘক্ষণ আপনার পেট ভরিয়ে রাখে।
- কিডনি পাথরের ঝুঁকি কমেঃ আলু খেলে আপনি কিডনি পাথর থেকেও রেহাই খেতে পারেন। কারণ, আলু খেলে হজম ক্ষমতা এবং পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা ঠিক থাকে। আর এই দুটি ঠিক থাকলে কিডনিতে পাথর হওয়ার ঝুঁকিও একেবারেই থাকে না।
- দাঁত ও মাড়ির সমস্যা দূর করেঃ আলুতে রয়েছে ভিটামিন সি। ফলে এক টুকরো আলু দিয়ে আপনি যদি রোজ নিয়ম করে দাঁত পরিষ্কার করেন তাহলে দাঁত ও মাড়ির প্রদাহ থেকে খুব সহজেই মুক্তি পাবেন।
- কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করেঃ আলুতে থাকা ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও ভিটামিন বি৬ যা আপনার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। আর কোলেস্টেরল ঠিক থাকলে আপনার হার্টও সুস্থ থাকবে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধেঃ আলু আপনি কি জানেন আলু খাওয়ার ফলে ক্যান্সার নামক মরণব্যাধি থেকেও আপনি রক্ষা পেতে পারেন। কারণ আলুতে থাকা ফলেট যা ডিএনএ তৈরি ও মেরামত করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। এর ফলে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ আপনার শরীরে ধ্বংস হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, আলুতে থাকা ফাইবার আপনাকে কোলন ক্যান্সার থেকেও মুক্তি দিতে পারে।
আলুর অপকারিতা
আলুর উপকারিতার পাশাপাশি এর আবার কিছু অপকারিতাও রয়েছে। শুধু আলু নয় প্রত্যেকটি খাদ্য উপাদানের ই উপকারিতা অপকারিতা দুটোই থাকে। সে হিসেবে আলুর অপকারিতা গুলো কি কি হতে পারে আসুন তা জেনে নিই --- যারা ওজন কমাতে চান তাদের অতিরিক্ত আলু খাওয়া মোটেও উচিত নয়। কারণ, আলুতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালরি থাকার কারণে অধিক পরিমাণে আলু খেলে এটি আপনার ওজনকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
- আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স উচ্চমাত্রায় থাকার কারণে আপনার রক্তে দ্রুত শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। শুধু তাই নয়, দীর্ঘমেয়াদে এটি টাইপ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
- অত্যধিক আলু খাওয়ার ফলে আপনার বদহজমের সমস্যা পেট ফাঁপা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। যদিও আলুতে ফাইবার রয়েছে কিন্তু অতিরিক্ত খেলে আপনার হজমের সমস্যা হতেই পারে।
- আলু বিশেষ করে যখন অতিরিক্ত তেল মশলাতে রান্না করা হয় তখন এতে ফ্যাটের পরিমাণ আরো বেড়ে যায়। এতে করে আপনার রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে আলু খেলে এটি আপনার রক্তে শর্করা এবং ইনসুলিন উভয়ের মাত্রায় বাড়িয়ে দিতে পারে। ফোনে ডায়াবেটিস রোগীদের আলু কম করে খাওয়া উচিত।
- দীর্ঘদিন আলু ঘরে সংরক্ষণের ফলে আলুর গা অনেক সময় কুঁচকে যায়। আর এই কুচকে যাওয়া আলুর মধ্যে থাকে সোলানিন নামক একটি বিষাক্ত যৌগ। যা আপনার রক্ত সঞ্চালন, শ্বাসকষ্টের সমস্যা, মাথা ব্যথা এমনকি ডায়রিয়ার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
আলু খেলে কি মোটা হয়
আপনারা অনেকেই জানতে চান আলু খেলে মোটা হয় কিনা। তাহলে জেনে রাখুন, আলু খেলে আপনার ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। এই ওজন বৃদ্ধি তখনই পাবে যখন আপনি প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পরিমাণে আলু খাবেন। স্বাভাবিকভাবেই ওজন বৃদ্ধি পেলে আপনার মোটা হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।কারন, আলুতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট ও ক্যালোরি থাকে। যা অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে আপনার শরীরেও অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ হবে। আর যখন এই অতিরিক্ত ক্যালরি অতিরিক্ত চর্বি হিসেবে আপনার শরীরে জমা হবে, ঠিক তখনই আপনার ওজনও বেড়ে যাবে। আবার অনেকেই আছেন যারা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা অন্যান্য অতিরিক্ত মসলা যোগ করে আলু খেতে পছন্দ করেন।
এতেও আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে অতিরিক্ত আলু না খেয়ে আপনি যদি পরিমিত পরিমাণে নিয়মিত খান সেক্ষেত্রে ওজন বাড়ার খুব একটা সম্ভাবনা নেই বলে চলে। তাই বাড়তি ওজন না চাইলে আপনি প্রতিদিন সুষম পরিমাণে আলু খাওয়ার অভ্যাস করুন। আলু খাওয়ার ফলে মোটা হয় কিনা আশা করছি এর উত্তর আপনি পেয়ে গেছেন।
প্রতিদিন আলু খেলে কি হয়
আলু খেলে কি মোটা হয় এর উত্তর আপনি ইতিমধ্যেই জেনে গেছেন। কিন্তু প্রতিদিন আলু খেলে কি হয় জানেন কি? আপনি জেনে অবাক হবেন যে, প্রতিদিন আলু খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে বেশ কিছু প্রভাব পড়তে পারে। আমরা সকলেই জানি আলু কার্বোহাইড্রেট এর একটি প্রধান উৎস এবং আলু আমাদের শরীরে অতিরিক্ত শক্তির যোগান দিয়ে থাকে।তাছাড়া আলুতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি ভিটামিন বি ৬ এবং পটাশিয়াম থাকে যা আমাদের নানা রকম শারীরিক কার্যকলাপে বিভিন্নভাবে সহায়তা করে থাকে। কিন্তু আপনি যদি প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণে আলু খান সেক্ষেত্রে এটি আপনার ওজন বাড়াতে পারে। কারন, আলুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি ও স্টার্চ।
আবার অত্যধিক পরিমাণে আলু খাওয়ার ফলে এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর কারনে আপনার রক্তের শর্করার স্তর দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। যা কিনা দীর্ঘমেয়াদে আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। তাই বলবো সুষম খাদ্যের অংশ হিসেবে আলু খাওয়া অবশ্যই ভালো কিন্তু অতিরিক্ত খাওয়া একেবারে স্বাস্থ্যসম্মত নয়। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
সিদ্ধ আলু খেলে কি মোটা হওয়া যায়?
আলু খেলে কি মোটা হয় এর উত্তর আপনাকে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছি। এবার আপনাকে জানাবো সেদ্ধ আলু খেলে মোটা হয় কিনা। দেখুন সিদ্ধ আলু খেয়ে মোটা হওয়া সম্ভব কিনা তা সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করবে আপনার খাদ্যাভাসের উপর। সাধারণত সিদ্ধ আলুতে তুলনামূলকভাবে কম তেল ও ফ্যাট থাকে।তবে আলুতে অতিরিক্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট এবং ক্যালরি থাকে যা অতিরিক্ত খেলে আপনার শরীরেও অতিরিক্ত ক্যালরি যোগ হবে। যা আপনার ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আবার সেদ্ধ আলুর সাথে আপনি যদি প্রচুর পরিমাণে তেল মশলা বা মাখন সহযোগী খান সে ক্ষেত্রেও আপনার শরীরে
অতিরিক্ত ক্যালরি এবং ফ্যাট যোগ হয়ে আপনার ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। আর ওজন বৃদ্ধি পেলে মোটা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। সুতরাং ওজন কমাতে চাইলে এবং মোটা হতে না চাইলে আপনি কম মসলা যোগে সেদ্ধ আলু খাওয়ার অভ্যাস করুন। আলু খেলে মোটা হয় কি হয় না আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
আলুর রস দিয়ে রূপচর্চা
আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা আপনাকে আমরা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছি। আলুর উপকারিতা শুধু স্বাস্থ্যগত নয়, বরং রূপচর্চাতেও আলুর ব্যবহার সেই প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে। বিশেষ করে আলুর রস আপনার ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। আপনার ত্বকে ব্রনের দাগ, ট্যান পড়া, চোখের নিচের কালো দাগ ইত্যাদি দূর করতে পারে এই আলু। এবারে চলুন জেনে আসি রূপচর্চায় আলু আপনি কিভাবে ব্যবহার করবেন--- ডার্ক সার্কেল দূর করতেঃ আপনি আপনার চোখের নিচের কালো দাগ দূর করতে চাইলে আলু ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি আলুর দুটো স্লাইস অথবা আলু গ্রেড করেও অ্যালোভেরার সাথে মিশিয়ে চোখের নিচে ব্যবহার করতে পারেন। বেশ কিছুদিন একটি ব্যবহার করলে আপনার চোখের নিচে চালি অচিরেই দূর হবে।
- ব্রণ ও ব্রনের দাগ সারাতেঃ ব্রনের সমস্যা আমাদের ত্বকে কমবেশি সকলেরই রয়েছে। এই ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করতেও আলু দারুণ কাজ করে। এর জন্য আপনি ১ চা চামচ আলুর রস, ১ চা চামচ টমেটোর রস এবং হাফ চা চামচ মধু এই তিনটি উপাদান একত্রে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
- এবার মিশ্রণটি আপনার ত্বকে লাগিয়ে প্রায় ২০ মিনিট পর ত্বক ধুয়ে ফেলুন। একটি ব্যবহারে আপনার টক হয়ে উঠবে সাথে সুন্দর এবং ত্বক থেকে ব্রণ ও ব্রণের দাগও ধীরে ধীরে দূর হবে। এই মিশ্রণটি আপনি চাইলে তৈরি করে কিছুদিনের জন্য ফ্রিজেও সংরক্ষণ করতে পারেন।
- ফেস মাস্ক হিসেবেঃ আপনি আলু ফেস মাস্ক হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে আপনার ত্বকের বার্ধক্য জনিত ছাপ দূর করতে আলু ভীষণ উপকারী। এর জন্য আপনি ১ চা চামচ আলুর রসের সাথে ১ চা চামচ বেসন এবং ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে আপনার ত্বকে ব্যবহার করুন। মিনিট ২০ এরপর ঠান্ডা পানিতে আপনার ত্বক ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই ফেস মাস্ক ব্যবহারে আপনার ত্বকের বার্ধক্য জনিত ছাপ দূর হবে।
আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা অনেক তা তো আগেই বলেছি। এবার আপনাদের জানাবো আলু যে ফর্সা হওয়ার একটি কার্যকরী ফেসপ্যাক সম্পর্কে। এই ফেসপ্যাক তৈরি করতে আপনার যা যা লাগবে-- একটি আলু
- একটি ডিম
- ফেসিয়াল টিস্যু
- দুটো ছোট আকারের বাটি
- ব্লেন্ডার মেশিন
- ছাঁকনি এবং
- আলু কাটার জন্য ছুরি।
- আলু দিয়ে ফর্সা হওয়ার ফেসপ্যাক তৈরিতে আপনি প্রথমে একটি আলু কে এর খোসা ছাড়িয়ে টুকরো করে কেটে নিন।
- এবার আলুর টুকরো গুলোকে ব্লেন্ডার মেশিনের সাহায্যে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ড শেষে আলুর পেস্ট ছাকনিতে ভালোভাবে থেকে এর থেকে রস বের করে নিন।
- এবার আলুর রস গুলোকে একটি ছোট পাত্রে বা বাটিতে ১৫ মিনিটের জন্য স্থির অবস্থায় রেখে দিন। মনে রাখবেন, এই সময় আলুর রস নাড়াচাড়া করা যাবে না।
- আরেকটি পাত্রে আপনি একটি ডিম ভেঙ্গে ডিম থেকে শুধুমাত্র ডিমের সাদা অংশটুকু বের করে নিন।
- প্রায় 15-20 মিনিট হয়ে এলে এবার আলুর রসের পাত্রে খেয়াল করুন পাত্রের নিচে সাদা বর্ণের কিছু জমেছে কিনা। জমলে ওপর থেকে আলুর রস টুকু ফেলে দিন এবং নিজের সাদা অংশটুকু সংরক্ষণ করুন।
- এইবারে আলু সাদা অংশ এবং ডিমের সাদা অংশ একসাথে খুব ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে ফেলুন। মিশ্রণটি তৈরি হয়ে গেলে আপনার ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে নিন।
- মিশ্রণটি তোকে লাগানোর পর ফ্রি সেল টিস্যুর সাহায্যে আপনার পুরো মুখ ভালোমতো লেপ্টে ঢেকে দিন।
- এর কিছুক্ষণ পর আপনার ফেসিয়াল টিস্যু টি ভিজে গেলে আপনি আপনার ত্বক থেকে উঠিয়ে ফেলুন। ফেসিয়াল টিস্যু উঠানোর পর দেখবেন আপনার ত্বক আগের থেকে অনেকটাই সতেজ এবং উজ্জ্বল হয়ে গেছে।
- এবারে আপনার মুখ সাধারণ তাপমাত্রায় ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
আলুর রসের ফেসপ্যাক
আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা জানার পর আপনি এবার নিশ্চয়ই আলোর রসের আরও কিছু ফেসপ্যাক সম্পর্কে জানতে চান। সম্মানিত পাঠক, আপনারদের সুবিধার্থে আলোর রসের আরও কয়েকটি সহজ ফেসপ্যাক জানিয়ে দিচ্ছি--- আলু- ১টি
- লেবুর রস- ১/২ চা চামচ
আলু ও লেবুর রসের ফেসপ্যাক তৈরি করতে প্রথমেই একটি আলু গ্রেড করে নিন। এবার ব্রেড করার আলুর সাথে লেবুর রস খুব ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবারে এই মিশ্রণটি আপনার মুখের ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ২০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানিতে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন।
আলু, মুলতানি মাটি ও গোলাপজলের ফেসপ্যাক
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
এই ফেসপ্যাকটি তৈরি আপনি প্রথমেই এক টেবিল চামচ গ্রেটেড করা আলুর সাথে গোলাপজল এবং মুলতানি মাটি ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে ফেলুন। এবার এই মিশ্রণটি আপনার গলা ও মুখের ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। প্রায় ২০ মিনিট পর মুখ ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। আপনাদের যাদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত তাদের জন্য এই ফেসপ্যাক্ট অত্যন্ত কার্যকরী একটি ফেসপ্যাক।
আলু, কাঁচা দুধ ও মধুর ফেসপ্যাক
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
এই ফেসপ্যাক টি যাদের শুষ্ক ত্বক তাদের জন্য ভীষণ কার্যকরী একটি ফেসপ্যাক। আগের মত ঠিক একই ভাবে গ্রেড করা আলু, কাঁচা দুধ এবং মধু একসাথে ভালো করে মিশিয়ে আপনার ত্বকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। প্রায় ১৫ মিনিট ত্বক শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই ফেসপ্যাক টি ব্যবহারে আপনার ত্বকের শুষ্কতা দূর হবে এবং আদ্র ভাব ফিরে আসবে।
আলু, মুলতানি মাটি ও গোলাপজলের ফেসপ্যাক
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- গ্রেটেড করা আলু- ১ টেবিল চামচ
- মুলতানি মাটি- ১ চা চামচ এবং
- গোলাপজল- ১ চা চামচ।
এই ফেসপ্যাকটি তৈরি আপনি প্রথমেই এক টেবিল চামচ গ্রেটেড করা আলুর সাথে গোলাপজল এবং মুলতানি মাটি ভালো করে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে ফেলুন। এবার এই মিশ্রণটি আপনার গলা ও মুখের ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। প্রায় ২০ মিনিট পর মুখ ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। আপনাদের যাদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত তাদের জন্য এই ফেসপ্যাক্ট অত্যন্ত কার্যকরী একটি ফেসপ্যাক।
আলু, কাঁচা দুধ ও মধুর ফেসপ্যাক
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ
- গ্রেড করা আলু- ১ টি
- কাঁচা দুধ- ১ চা চামচ এবং
- মধু- ১/২ চা চামচ।
এই ফেসপ্যাক টি যাদের শুষ্ক ত্বক তাদের জন্য ভীষণ কার্যকরী একটি ফেসপ্যাক। আগের মত ঠিক একই ভাবে গ্রেড করা আলু, কাঁচা দুধ এবং মধু একসাথে ভালো করে মিশিয়ে আপনার ত্বকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। প্রায় ১৫ মিনিট ত্বক শুকিয়ে এলে ধুয়ে ফেলুন। নিয়মিত এই ফেসপ্যাক টি ব্যবহারে আপনার ত্বকের শুষ্কতা দূর হবে এবং আদ্র ভাব ফিরে আসবে।
সম্মানিত পাঠক, এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন আলুর শুধু স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও অপকারিতাই নয় বরং রূপচর্চা তেও আলুর বহুল ব্যবহার রয়েছে।এই ফেসপ্যাক গুলোর মধ্যে আপনার সুবিধা মত যেকোনো একটি নিয়ম করে সপ্তাহে দুই তিন দিন ব্যবহারের চেষ্টা করবেন। এতে করে ভালো ফল পাবেন।
আলুর রস মুখে মাখলে কি হয়
রূপচর্চাতেও আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা কম নয় তা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন এতক্ষণে। আপনারা অনেকেই জানতে চান আলুর রস মুখে মাখলে কি হয়। বলে রাখি, আলুর রস মুখে আপনার ত্বকের অনেক উপকার হতে পারে। বিশেষ করে আলুতে থাকা ভিটামিন সি, পটাশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার ত্বককে উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।তাছাড়া আলুর রস নিয়মিত মুখে ব্যবহার করলে এটি আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ করে তৈলাক্ত ভাব দূর করে। শুধু তাই নয়, এই আলুর রস ব্যবহারে এটি আপনার ত্বকে ব্রণ, ব্রনের দাগ, ত্বকের কালো দাগ, চোখের নিচে কালি ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে। আবার যাদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক তারা আলুর রস ব্যবহার করলে ত্বক প্রাকৃতিকভাবে হাইড্রেটেড থাকে।
এখানেই শেষ নয়, এই আলুর রস আপনার ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর আলট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকেও রক্ষা করতে পারে। তবে একটি কথা, ভালো ফল পেতে আপনি আলুর রসের সাথে আরও অন্যান্য উপাদান যোগ করে ফেসপ্যাক তৈরি করেও ব্যবহার করতে পারেন। যা আমরা ইতিমধ্যে আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি। আলুর এতসব স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও অপকারিতা
জানিয়ে দিলাম আলোর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। আলুর এতসব স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও অপকারিতা হয়তো অনেকেই জানতেন না। আজ জানার পর আপনি নিশ্চয়ই আজ থেকেই সহজলভ্য এই সবজিটি খাওয়ার ব্যাপারে অতি সচেষ্ট হবেন।
আলুতে কি ভিটামিন আছে
আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা জানানোর পর এবার আপনাদের জানাবো জানাবো কি কি ভিটামিন রয়েছে। আলুর পুষ্টিগুণ জানলে আপনি নিজেও চমকে যাবেন। তো চলুন প্রতি 100 গ্রাম আলুতে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে তা নিচে একটি ছকের মাধ্যমে দেখে নিন--পুষ্টি উপাদান | পরিমান |
---|---|
পটাসিয়াম | ৪৫৩ মিলিগ্রাম |
ফোলেট | ৯৯ মাইক্রোগ্রাম |
মাঙ্গানিজ | ০.১৫ মিলিগ্রাম |
ক্যালরি | ৭৭ কিলোক্যালরি |
কার্বোহাইড্রেট | ১৭.৫ গ্রাম |
প্রোটিন | ২.০ গ্রাম |
ফাইবার | ২.৫ গ্রাম |
ফ্যাট | ০.১ গ্রাম |
ভিটামিন সি | ২০ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন বি৬ | ০.৩৩ মিলিগ্রাম |
জানিয়ে দিলাম আলোর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। আলুর এতসব স্বাস্থ্যগত উপকারিতা ও অপকারিতা হয়তো অনেকেই জানতেন না। আজ জানার পর আপনি নিশ্চয়ই আজ থেকেই সহজলভ্য এই সবজিটি খাওয়ার ব্যাপারে অতি সচেষ্ট হবেন।
আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমার মন্তব্য
আলুর উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আপনারা নিশ্চয়ই এতক্ষণে বিস্তারিতভাবে আজকের এই আর্টিকেল থেকে জানতে পেরেছেন আশা রাখছি। আলু এমনই একটি সর্বজনীন সবজি যা প্রায় সব ধরনের রান্নায় বহুল ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া শুধু স্বাদই নয় বরং প্রচুর পুষ্টিগুনেও ভরপুর এই আলু। বাঙালি হিসেবে ভাত রুটির পর যে খাবারটি আমাদের কাছে সবথেকে বেশি পরিচিত তা হল আলু। তাছাড়া ছোট থেকে বড় যে কোন বয়সের মানুষ এই আলু খেতে বেশ স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন।বিশেষজ্ঞদের মতে আলু আমাদের শরীরের অনেক সমস্যা দূর করতে কাজ করে। সুতরাং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চাইলে আপনি নিয়মিত খাবার পাতে এই সবজিটি খান। ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং পরবর্তী আর্টিকেল পেতে চোখ রাখুন আমাদের পিন পয়েন্ট ম্যাক্স ওয়েবসাইটে। আর্টিকেলটা এতক্ষন পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url