মিষ্টি কুমড়ার ২০ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে আপনি নিশ্চয়ই আজকে আমাদের ওয়েবসাইটে এসেছেন। মিষ্টি কুমড়া খেলে কি ওজন বাড়ে? জানতে চান। তাহলে বলবো আর্টিকেলটি পড়ে নিন। কারণ, আজকে আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু হলো মিষ্টি কুমড়ার নানান উপকারী,অপকারি দিক
এবং মিষ্টি কুমড়া খেলে ওজন বাড়বে কিনা। তাছাড়া মিষ্টি কুমড়ায় এলার্জি আছে কিনা, এর পুষ্টিগুণ এবং মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা এর সব কিছুই জানতে পারবেন আজকের এই আর্টিকেল থেকে। তো চলুন মূল আলোচনায় ফিরে আসা যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মিষ্টি কুমড়ার ২০ উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানুন
- মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা
- মিষ্টি কুমড়ার ক্ষতিকর দিক
- মিষ্টি কুমড়া খেলে কি ওজন বাড়ে
- মিষ্টি কুমড়া খেলে কি এলার্জি হয়
- মিষ্টি কুমড়া খেলে কি গ্যাস হয়
- মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম
- মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে কি হয়
- মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা
- মিষ্টি কুমড়া খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে
- মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টিগুণ
- মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
মিষ্টি কুমড়া আমাদের দেশে সকলের কাছেই অতি পরিচিত একটি সবজি। তাছাড়া পুষ্টিগুণে ভরপুর রঙিন যে সকল শাক সবজি রয়েছে তার মধ্যে মিষ্টি কুমড়া অন্যতম। বিভিন্ন শাকসবজির সাথে, ভাজা ভাজি, ভর্তা করে, চিংড়ি মাছের সাথে কিংবা ঝোল করেও খাওয়া যায় এই মিষ্টি কুমড়া। প্রচুর পুষ্টিগুণে ঠাসা মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে ভিটামিন এ,ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, ভিটামিন ই, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, ফসফরাস, কপার, ক্যারোটিনয়েড এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমূহ। মিষ্টি কুমড়ার এই উপাদান গুলো আমাদের চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
শুধু তাই নয়, মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে বিটা ক্যারোটিন নামক উপাদান। যা মানবদেহে প্রাণঘাতী ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধক কোষ গঠন করতেও সক্ষম। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া খেয়ে আবার হতে পারে বিপত্তি। কারণ এটাই থাকা শর্করা আপনার রক্তের গ্লুকোজ তার বাড়িয়ে দিতে পারে। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
কিন্তু পরিমিত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ এবং উপকারী। সম্মানিত পাঠক, আজকে আমরা আমাদের আর্টিকেল জুড়েই আলোচনা করব মিষ্টি কুমড়ার নানাবিধ উপকারিতা ও গুটিকতক অপকারিতা সম্পর্কে। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে আজকের মত আলোচনা শুরু করি।
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা কমবেশি সকলেই জানেন। অতি সাধারণ এই সবজিটি আমাদের দেহে নানাভাবে পুষ্টিr যোগান দিয়ে থাকে। তাছাড়া এর স্বাদের কারণেও বেশিরভাগ মানুষ মিষ্টি কুমড়া খেতে পছন্দ করেন। সম্মানিত পাঠক, আজকে আলোচনার শুরুতেই চলুন জেনে আসি উপকারী এই সবজিটির কিছু গুণের কথা--- পুষ্টির দুর্দান্ত উৎসঃ মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং ফাইবার। এই প্রত্যেকটি উপাদান আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে থাকে।
- মিষ্টি কুমড়া চোখ ভালো রাখেঃ মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে বিটা ক্যারোটিন যা আপনার চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। আপনার চোখের দৃষ্টি শক্তি বাড়াতে এবং চোখের যে কোন সমস্যায় আজ থেকেই মিষ্টি কুমড়া খাওয়া শুরু করুন।
- অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি গুণঃ মিষ্টি কুমড়াতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান আপনার শরীরের যেকোনো ধরনের প্রদাহ কমাতে কাজ করে এবং একই সাথে প্রদাহ জনিত রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।
- রক্তস্বল্পতা দূর করেঃ আপনি যদি রক্তশূন্যতায় ভুগে থাকেন তাহলে প্রতিদিন মিষ্টি কুমড়া খান। কেননা মিষ্টি কুমড়াতে থাকা আয়রন আপনার শরীরের রক্তস্বল্পতা দূর করতে পারে। শুধু তাই নয় এটি আপনার শরীরের রক্তে প্রয়োজনীয় উপাদানও সরবরাহ করে।
- মানসিক স্ট্রেস কমায়ঃ মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম। আর এই দুটি উপাদান আপনার মানসিক উঠবে চাপ কমাতে খুব ভালো কাজ করে।
- শরীরের ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করেঃ নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার ফলে মিষ্টি কুমড়ার ভিটামিন সি আপনার শরীরের এমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে তোলে। হলে বিভিন্ন ধরনের রোগ সংক্রমণ থেকে আপনার শরীর রক্ষা পায়।
- স্মৃতিশক্তি বাড়াতেঃ মিষ্টি কুমড়া মস্তিষ্কের কার্যকারিতাও বৃদ্ধি করে। মিষ্টি কুমড়াতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা যেমন বাড়ায়, তেমনি স্মৃতিশক্তি বর্ধক রূপেও কাজ করে।
- হাড় মজবুত করেঃ বর্তমান সময়ে তাই কম বেশি সকলে হাড়ের সমস্যা, হাড়ের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা ইত্যাদিতে ভুগছেন। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ আপনাকে দিতে পারে একমাত্র মিষ্টি কুমড়া। কারণ এতে রয়েছে ভিটামিন কে এবং ম্যাগনেসিয়াম যা আপনার হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায় এবং হাড় মজবুত করে।
- ডাইবেটিস নিয়ন্ত্রণে মিষ্টি কুমড়াঃ যদিও ডায়াবেটিস রোগীদের মিষ্টি কুমড়া কম খাওয়াই উচিত। তবুও মিষ্টি কুমড়ার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম থাকায় এটি আপনার রক্তে গ্লুকোজের স্তর নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
- হৃদপিন্ড ভালো রাখেঃ হৃদপিন্ডের যেকোনো সমস্যায় আপনি খেতে পারেন মিষ্টি কুমড়া। কারন, মিষ্টি কুমড়ায় থাকা পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম আপনার হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। শুধু তাই নয়, পটাশিয়াম আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে এবং ম্যাগনেসিয়াম হার্টের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
- রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়ঃ মিষ্টি কুমড়াতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ বালাই থেকে খুব সহজেই সুরক্ষা দিতে পারে।
- ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেঃ নিয়মিত বৃষ্টি কুমড়া খেলে এর ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার ত্বক ভালো রাখে। এটি ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে এবং সেই সাথে তার থেকে বয়সের দাগ কমায়।
- ক্যান্সার রোধেঃ মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটা কেন টিন যে আপনার শরীরে ক্যান্সার রোধী কোষ গঠন করে। ফলে মিষ্টি কুমড়া খেলে আপনি খুব সহজে ক্যান্সার থেকেও রেহাই পাবেন।
- হজম শক্তি বাড়াতেঃ আপনারা যারা পেটে হজমের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য মিষ্টি কুমড়া হতে পারে একটি উপাদেয় সবজি। কারণ মিষ্টি কুমড়ায় থাকা ফাইবার বা খাদ্য আঁশ আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং সেই সাথে কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যাও দূর করে।
- কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করেঃ মিষ্টি কুমড়ার বিটা ক্যাডেট এর উপাদান আপনার রক্তে কোলেস্টেরল এক মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাছাড়া এর আলফা ক্যারোটিন উপাদান আপনার দেহে যে কোনো ধরনের টিউমার হওয়া থেকে রক্ষা করে।
- গর্ভাবস্থায় উপকারীঃ গর্ভাবস্থায় প্রতিটি মা বোনেরই মিষ্টি কুমড়া খাওয়া উচিত। কারণ, গর্ভকালীন সময়ে এটি আপনার দেহে অতিরিক্ত শক্তির যোগান দিয়ে থাকে। তাছাড়াও গর্ভকালীন কোষ্ঠকাঠিন্য, রক্তস্বল্পতা দূর করতে এবং আপনার গর্ভে থাকা শিশুকে অক্সিজেন সরবরাহ করতেও ভালো কাজ করে মিষ্টি কুমড়া।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে মিষ্টি কুমড়া খুব ভালো কাজ করে কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা আপনার উচ্চ রক্তচাপ খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
মিষ্টি কুমড়ার ক্ষতিকর দিক
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতার পাশাপাশি সামান্য কিছু অপকারিতাও রয়েছে।যদিও মিষ্টি কুমড়া পুষ্টিগুণে ভরপুর কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে আপনার শরীরে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন ধরুন-- মিষ্টি কুমড়ায় স্বাভাবিকের তুলনায় শর্করার পরিমাণ খানিকটা বেশি থাকে। ফলে অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া খেলে এটি আপনার রক্তে গ্লুকোজের স্তর বাড়িয়ে দিতে পারে। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।
- মিষ্টি কুমড়ায় যে ক্যালোরি থাকে তা অন্যান্য সবজির তুলনায় তুলনামূলকভাবে কিছুটা বেশি। অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া খেলে আপনার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালরি জমা হতে পারে। এতে করে আপনার ওজনও বেড়ে যেতে পারে।
- মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে বৃষ্টি কুমড়া খেলে আপনার শরীরে এলার্জির প্রতিক্রিয়া হিসেবে পেটের সমস্যা, চর্মরোগ, ফুসকুড়ি, চুলকানি, ত্বকে লালচে ভাব ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
- মিষ্টি কুমড়ায় অতিরিক্ত পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম শক্তির জন্য উপকারী। কিন্তু অতিরিক্ত ফাইবার হওয়ার ফলে আপনার পেটে গ্যাস, ব্যথা কিংবা পেটে অস্বস্তি হতে পারে।
- আপনাদের যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে তাদের অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া না খাওয়াটাই ভালো। কেননা মিষ্টি কুমড়ায় পটাশিয়ামের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে। যা আপনার কিডনির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
- অত্যধিক পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া খেলে মিষ্টি কুমড়া থাকা অক্সালেট আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের শোষণে বাধা দিতে পারে। ফলে এটি আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব সৃষ্টি করতে পারে।
- মিষ্টি কুমড়া অতিরিক্ত পরিমাণে মশলা দিয়ে রান্না করে খেলে এটি আপনার উচ্চ রক্তচাপের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই সবসময় চেষ্টা করুন কম মশলায় মিষ্টি কুমড়া রান্না করে খেতে।
মিষ্টি কুমড়া খেলে কি ওজন বাড়ে
মিষ্টি কুমড়া খেলে ওজন বাড়ে এই প্রশ্ন অনেকেরই। আবার অনেকেই আছেন যারা ওজন বেড়ে যাওয়ার ভয়ে মিষ্টি কুমড়া খাওয়া এড়িয়ে চলেন। দেখুন মিষ্টি কুমড়া খেলে সাধারণভাবে আপনার ওজন বাড়ার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ, এটি একটি কম ক্যালরি এবং উচ্চ ফাইবার যুক্ত সবজি। তাছাড়া প্রতি 100 গ্রাম মিষ্টি কুমড়াতে ৪৫-৫০ ক্যালোরি থাকে যাঅন্যান্য উচ্চ ক্যালোরি সম্পূর্ণ খাবারের তুলনায় অনেক কম। যার ফলে মিষ্টি কুমড়া খেলে এটি দীর্ঘক্ষণ আপনার পেট ভরা রাখে। এতে করে অন্যান্য খাবারের প্রতি আপনার চাহিদা কমে এবং ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকে। কিন্তু আপনি যদি মিষ্টি কুমড়া অতিরিক্ত তেল, মসলা, কিংবা উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত কোন উপাদান যোগ করে রান্না করে খান সেক্ষেত্রে এতে ক্যালোরির পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে পারে।
ফলে আপনার ওজনও বেড়ে যেতে পারে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন স্বাস্থ্যকর উপায়ে কম তেল মসলায় মিষ্টি কুমড়া রান্না করে খেলে তাতে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা একেবারেই থাকে না। সম্মানিত পাঠক, মিষ্টি কুমড়া খেলে আপনার ওজন বাড়বে নাকি কমবে আশা করছি এর উত্তর আপনি পেয়ে গেছেন।
মিষ্টি কুমড়া খেলে কি এলার্জি হয়
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আমরা ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছি। আপনারা অনেকেই জানতে চান মিষ্টি কুমড়া খেলে এলার্জি হয় কিনা। তাহলে জেনে রাখুন, মিষ্টি কুমড়ার মধ্যে এমন কিছু প্রোটিন রয়েছে যা কিছু সংখ্যক মানুষের শরীরে এলার্জির প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে যারা অতিরিক্ত এলার্জি প্রবণ তাদের এই সমস্যা বেশি হয়।এই এলার্জির তখনই দেখা দেবে যখন আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া খাবেন। আর এলার্জির প্রতিক্রিয়া হিসেবে আপনার শরীরে চুলকানি, গলা ব্যথা, গলার স্বর পরিবর্তন, ত্বকে চাকা চাকা লাল দাগ ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তাছাড়া মিষ্টি কুমড়ার কিছু উপাদান যেমন ধরুন- বিটা ক্যারোটিন এটিও আপনার শরীরে শারীরিক অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
তবে স্বাভাবিকভাবেই মিষ্টি কুমড়া সবজি হিসেবে প্রত্যেকটি মানুষের জন্য নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যসম্মত। আর মিষ্টি কুমড়া খেয়ে যদি অতিরিক্ত এলার্জির সমস্যা দেখা দেয় সেক্ষেত্রে আপনার মিষ্টি কুমড়া খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত এবং চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
মিষ্টি কুমড়া খেলে কি গ্যাস হয়
মিষ্টি কুমড়া খেলে কি গ্যাস হয়? অনেকেই আবার জানতে চান। দেখুন আপনি যদি পরিমাণ বুঝে স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে মিষ্টি কুমড়া রান্না করে খান সেক্ষেত্রে পেটে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। তবে প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া খেলে আপনার গ্যাসের সমস্যা কিছুটা হলেও হতে পারে। কারণ, মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্য আশ বা ফাইবার।এই ফাইবার প্রাকৃতিকভাবে আপনার হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। কিন্তু অত্যধিক পরিমাণে মিষ্টি কুমড়া খেলে আপনার ফাইবার গ্রহণের পরিমাণ বেড়ে যায়। এতে করে অতিরিক্ত ফাইবার আপনার পেটে বদ হজম, গ্যাস এবং পেট ফাঁপা সহ পেটের নানা ধরনের অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। তাই বলবো পেটের অস্বস্তি এড়াতে আপনি সীমিত পরিমাণে কম তেল, মশলা দিয়ে রান্না করে মিষ্টি কুমড়া খান। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা জানার পর এবার আপনি নিশ্চয়ই মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান। মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ারও কিছু নিয়ম রয়েছে। এবার চলুন মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার কিছু নিয়ম জেনে নিন--- প্রথমেই বলি, মিষ্টি কুমড়ার বীজ খাওয়ার আগে পানিতে খুব ভালোভাবে ধুয়ে নেবেন। যাতে করে বীজের উপরে কোন রকম ময়লা বা আবরণ না থাকে। এরপর বীজগুলিকে রোদে শুকিয়ে নেবেন।
- আপনি মিষ্টি কুমড়ার বিচি সামান্য তেলে ভেজে খেতে পারেন। এতে আপনার হজম ক্ষমতা বাড়বে। এই ভীতি ভাজার জন্য আপনি একটি তাওয়া বা অভেন ব্যবহার করতে পারেন।
- আপনি চাইলে মিষ্টি কুমড়ার বিচি সেদ্ধ করেও খেতে পারেন। যদি সেদ্ধ করে খান সেক্ষেত্রে সামান্য লবণ দিয়ে সেদ্ধ করবেন। এতে মিষ্টি কুমড়ার বিচির স্বাদ আরো বেড়ে যাবে।
- আপনি মিষ্টি কুমড়ার বিচি গুঁড়ো করে বিভিন্ন সালাদের সাথে মিশিয়েও খেতে পারেন।
- অনেকে আছেন যারা বিভিন্ন সবজির সাথে মিষ্টি কুমড়ার বিচি রান্না করে খেতে পছন্দ করেন। এতে করে আপনার রান্নার খাবারের বৈচিত্রতা আসে।
- এছাড়াও সকাল বিকাল নাস্তার সাথে এই বিচি আপনি ড্রাই ফুড হিসেবে হালকা তেলে ভেজে খেতে পারেন। আবার শুকনো ভেজেও খেতে পারেন।
- মিষ্টি কুমড়ার বিচি রোদে শুকিয়ে ভালোভাবে সংরক্ষণ করুন। যাতে করে এর পুষ্টিগুণ বজায় থাকে। আপনি একটি বায়ু নিরোধোক পাত্রে শুকনো এবং ঠান্ডায় এই বিচি সংরক্ষণ করুন।
- মিষ্টি কুমড়ার বিচি যদিও পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত তবুও খাওয়ার আগে কিছু সতর্কতা মেনে খাওয়া উচিত। যেমন ধরুন-
- আপনার যদি বিশেষ কোনো শারীরিক সমস্যা থাকে বিশেষ করে হজমের সমস্যা বা এলার্জি সমস্যা সেক্ষেত্রে মিষ্টি কুমড়ার বীজ না খাওয়াই ভালো।
- যাদের হাইপোথাইরয়েডিজমের সমস্যা রয়েছে তারা অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়ার বিচি খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করুন।
- মিষ্টি কুমড়ার বেঁচে যতই পুষ্টি কোন সম্পন্ন হোক না কেন এটি বেশি পরিমাণে খাওয়া একেবারেই উচিত নয়। সাধারণত সারাদিনে আপনার জন্য ১-২ মুঠো মিষ্টি কুমড়ার বিচি খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত হবে।
- আরেকটি কথা দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষণ করে রাখা মিষ্টি কুমড়া ভীতি না খাওয়াই আপনার জন্য ভালো। কেননা দীর্ঘ সময় সংরক্ষণ করে রাখে মিষ্টি কুমড়া ভীতি পুষ্টিগুণ অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়।
মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে কি হয়
মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার পর এর বিচিগুলো সাধারণত আমরা ফেলনা হিসেবে ফেলে দেই। কিন্তু আপনি কি জানেন, মিষ্টি কুমড়ার মত মিষ্টি কুমড়ার বিচিও প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক এবং ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এই এন্টিঅক্সিডেন্ট আপনার শরীরকে বিভিন্ন ধরনেরক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যাল থেকে রক্ষা করতে পারে এবং সেই সাথে ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে তোলে। অপরদিকে ম্যাগনেসিয়াম আপনার হৃদরোগের ঝুকি কমাতে এবং হাড়ের ঘনত্ব বাড়াতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, মিষ্টি কুমড়ার বীজে থাকা জিংক আপনার ত্বক ও চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এছাড়াও মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার
যা আপনার হজম ক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যাও দূর করতে পারে। এবার আপনি বলুন মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার পর এর বীজ ফেলে দেবেন নাকি খাবার জন্য সংরক্ষণ করে রাখবেন। নিশ্চয়ই আজ থেকে আপনি মিষ্টি কুমড়ার বিচি ফেলনা উচ্ছিষ্ট ভেবে ফেলে দেবেন না। তাছাড়া মিষ্টি কুমড়া খেলে আপনার ওজন বাড়বে নাকি কমবে তা আজকের আলোচনার জেনেছেন।
মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আমরা আপনাকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছি।এবার আপনাকে জানাবো মিষ্টি কুমড়ার বিচির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।তো চলুন প্রথমেই মিষ্টি কুমড়া বীজের উপকারিতা গুলো জেনে নিন --মিষ্টি কুমড়া বিচির উপকারিতা
অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়োর বিচি খেলে আপনার শরীরে এর আবার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন-
- মিষ্টি কুমড়ার বিচি পুষ্টির একটি দুর্দান্ত উৎস। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেলস, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ম্যাগনেসিয়াম, জিংক এবং সেলেনিয়াম। যা আপনার শরীরের বিভিন্ন ধরনের মৌলিক কার্যক্রমে সহায়তা করে।
- মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড যা আপনার হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এবং সেই সাথে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও ভালো কাজ করে।
- মিষ্টি কুমড়ার বিজ ফাইবারে ভরপুর। যা আপনার হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে পারে এবং পেটের সকল সমস্যা দূর করতে পারে।
- মিষ্টি কুমড়ার বীজ নিয়মিত খেলে এতে থাকা ভিটামিন সি এবং জিঙ্ক আপনার শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে আরো শক্তিশালী করে তোলে।
- নিয়মিত নিয়ম মেনে মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে পেটে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। শুধু ত্বকই নয় এর ফ্যাটি এসিড আপনার চুলের জন্য উপকারী।
- যাদের অনিদ্রা রোগের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য মিষ্টি কুমড়ার বিচি অত্যন্ত উপকারী। কারণ, বিচিতে থাকা ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো এসিড আপনার শরীরে সেরোটোনিন উৎপাদনে সাহায্য করে। এতে করে আপনার ঘুম ভালো হয়।
অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়োর বিচি খেলে আপনার শরীরে এর আবার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। যেমন-
- অতিরিক্ত পরিমাণে মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কারণ, এই বিচিতে রয়েছে উচ্চমাত্রার ক্যালোরি এবং ফ্যাট। ফলে অতিরিক্ত বিচি খেলে আপনার শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট ক্যালোরি জমতে থাকে এবং ওজনও বাড়তে থাকে।
- অত্যধিক পরিমাণে মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে অনেক সময় এই বিচির ফাইবার আপনার পেটে হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ফলে আপনার পেট ফাঁপা কিংবা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- যাদের ত্বক অতি সংবেদনশীল বা এলার্জি প্রবণ তারা মাত্রাতিরিক্ত মিষ্টি কুমড়ার বিচি খেলে শরীরে এলার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- ডায়াবেটিস রোগী যারা আছেন তারা মিষ্টি কুমড়ার বিচি অতিরিক্ত খেলে রক্তে শর্করার স্তর বেড়ে যেতে পারে। সুতরাং অতিরিক্ত না খেয়ে আপনি অল্প পরিমাণে খান।
মিষ্টি কুমড়া খেলে কি ডায়াবেটিস বাড়ে
মিষ্টি কুমড়ার বিচি সাধারণভাবে আপনার ডাইবেটিস নিয়ন্ত্রণে কাজ করে থাকে। কারণ, এতে উচ্চ ফাইবার এবং কম লাইসেন্স ইনডেক্স রয়েছে যা আপনার রক্তে শর্করা স্তর স্থিতিশীল রাখতে পারে। এছাড়া ফাইবার আপনার রক্তে শর্করা শোষণের গতি কমিয়ে দেয়। ফলে রক্তে শর্করের স্তর অতি দ্রুত বাড়তে পারে না। তবে আপনি যদি অত্যধিক পরিমাণে দীর্ঘদিন ধরে মিষ্টি খেতেই থাকেন,সেক্ষেত্রে মিষ্টি কুমড়ার বিচির উচ্চ ক্যালোরি আপনার রক্তে শর্করের স্তর বাড়িয়ে দিতে পারে। যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। তাই বলবো আপনার যদি ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে মিষ্টি কুমড়ার বিচি পরিমাণ মতো নিয়ম মেনে খান। এতে তেমন একটা অসুবিধা হবে না। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
প্রতি ১০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে নিম্নলিখিত উপাদানঃ
মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টিগুণ
মিষ্টি কুমড়ার এতসব উপকারিতা ও অপকারিতা জানার পর এবার নিশ্চয় এর পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানতে চান। সম্মানিত পাঠক, এবার আপনাকে জানাবো গুণে ভরা মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে। তাহলে চলুন নিচে একটি ছকের মাধ্যমে মিষ্টি কুমড়ার পুষ্টি উপাদান দেখে নিন-প্রতি ১০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়াতে রয়েছে নিম্নলিখিত উপাদানঃ
পুষ্টি উপাদান | পরিমাণ |
---|---|
খাদ্য শক্তি | ২৬ কিলো ক্যালরি |
ম্যাগনেসিয়াম | ১২ মিলিগ্রাম |
পটাসিয়াম | ৩০০ মিলিগ্রাম |
আয়রন | ০.৯ মিলিগ্রাম |
ক্যালসিয়াম | ৩০ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন সি | ৯.০ মিলিগ্রাম |
ভিটামিন এ | ৯৪৭১ IU |
সুগার | ২.৭ গ্রাম |
ফাইবার | ১.৫ গ্রাম |
কার্বোহাইড্রেট | ৬৭ গ্রাম |
ফ্যাট | ০.১ গ্রাম |
প্রোটিন | ০.৬ গ্রাম |
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
মিষ্টি কুমড়ার উপকারিতা ও অপকারিতা আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়েছে। আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার নিকট বোধগম্য হয়েছে। মিষ্টি কুমড়া অতি পরিচিত সহজলভ্য একটি সবজি। তাছাড়া পুষ্টিগুণে ভরপুর সবজি গুলোর মধ্যে মিষ্টি কুমড়া একটি। নিয়মিত মিষ্টি কুমড়া খাওয়ার ফলে এটি আপনার শরীরকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে।আবার মিষ্টি কুমড়া সবজি হিসেবে খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় ছোট থেকে বড় সকলেই এটি খেতে পছন্দ করেন। শুধু মিষ্টি কুমড়াই নয় বরং এর বিজো প্রচুর পুষ্টিগুণে ভরপুর। ফলে মিষ্টি কুমড়ার বীজও ফেলনা নয়। সম্মানিত পাঠক, মিষ্টি কুমড়া এবং এর বীজের উপকারিতা পেতে আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আজ থেকেই মিষ্টি কুমড়া অন্তর্ভুক্ত করে ফেলুন।ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং পরবর্তী আর্টিকেল পেতে আমাদের পিন পয়েন্ট
ম্যাক্স ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url