এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে বিস্তারিত পড়ুন
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান? এন্টাসিড ট্যাবলেট কখন খেতে হয় জানেন কি? হয়তোবা জানেন না। তাহলে বলব এক্ষুনি আজকের আর্টিকেলটি একবার পড়ে নিন।
কারণ, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে এন্টাসিড খাওয়ার নিয়ম এবং এই ট্যাবলেটটি আপনি ঠিক কখন খাবেন সেটি জানাও ভীষণ জরুরী। যা আজকে আমরা আমাদের পুরো আর্টিকেল জুড়ে বিস্তারিত আলোচনা করব। তো চলুন মূল আলোচনায় ফিরে যাওয়া যাক।
পোস্ট সূচিপত্রঃ এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম
- এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম
- এন্টাসিড ট্যাবলেট কখন খেতে হয়
- এন্টাসিড ট্যাবলেট কি চুষে খেতে হয়
- এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এর কাজ কি
- এন্টাসিড ট্যাবলেট এর উপকারিতা
- এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
- গর্ভাবস্থায় এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
- এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এর দাম
- এন্টাসিড প্লাস সিরাপ দাম
- এন্টাসিড প্লাস সিরাপ এর কাজ কি
- এন্টাসিড এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
- এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এবং সিরাপ উভয়ই পেটের এসিডিটি এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা কমাতে বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে। আজকে আলোচনার শুরুতেই চলুন জেনে নেই এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এবং সিরাপ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে-
আরো পড়ুনঃ maxpro 20 কিসের ঔষধ বিস্তারিত জেনে নিন
প্রাপ্তবয়স্কদের খাওয়ার নিয়ম
- একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন ১-২ টি অ্যান্টাসিড ট্যাবলেট খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে অথবা ৩০ মিনিট পূর্বে খেতে পারেন।
- আপনার এসিডিটির সমস্যা বেশি হলে প্রথমবার এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট খাওয়ার পরে সর্বাধিক ৪-৬ ঘণ্টার মধ্যে এই ট্যাবলেট আরো একবার সেবন করতে পারবেন। তবে দিনে ৬টি ট্যাবলেটের বেশি অবশ্যই সেবন করবেন না।
- পেটে গ্যাসের অস্বস্তি দ্রুত কমাতে আপনি ট্যাবলেটটি পানি দিয়ে গিলে খান। এতে করে ট্যাবলেটটি খুব সহজেই আপনার শরীরে শোষিত হবে এবং গ্যাসের সমস্যা দূর হবে।
- আপনি চাইলে এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এর পরিবর্তে এন্টাসিড প্লাস সিরাপও খেতে পারেন। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে আপনি দিনে ২-৩ বার ১০-২০ মিলিলিটার করে এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খেতে পারেন।
শিশুদের জন্য খাওয়ার নিয়ম
এন্টাসিড প্লাস সিরাপ বা ট্যাবলেট যাই খান না কেন খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে। যেমন ধরুন-
- আপনার শিশুর বয়স যদি ২-১২ বছরের মধ্যে হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিন একটি এন্টাসিড ট্যাবলেট খাওয়াতে পারেন।
- শিশুদের ক্ষেত্রে সাধারণত এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট খাওয়ার পরে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
- আপনার শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি সহকারে এন্টাসিড ট্যাবলেট খেতে দিন। তাতে ট্যাবলেটটি খুব সহজেই আপনার শিশুর শরীরে শোষিত হয়ে যাবে।
- আর যদি আপনার শিশুকে এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়াতে চান, সেক্ষেত্রে প্রতিদিন ২ বার ৫-১০ মিলি সিরাপ খাওয়াতে পারেন। তবে আপনার শিশুর বয়স ও ওজন অনুযায়ী এই ডোজ পরিবর্তিত হতে পারে।
এন্টাসিড প্লাস সিরাপ বা ট্যাবলেট যাই খান না কেন খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে। যেমন ধরুন-
- আপনি যদি অন্যান্য ঔষধ সেবন করতে থাকেন তাহলে একই সাথে এন্টাসিড প্লাস না খাওয়াটাই ভালো। কারণ, এন্টাসিড প্লাস অন্যান্য ঔষধের কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে।
- অন্যান্য ঔষধ সেবন করলে অন্তত ১-২ ঘন্টার ব্যবধান রেখে তবেই এন্টাসিড প্লাস সেবন করবেন।
- গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মা বোনদের এন্টাসিড প্লাস সেবন করার পূর্বে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
- এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার পর অন্তত ৩০ মিনিট অন্য কোন খাবার খাবেন না। কারণ, এটি আপনার পেটের এসিড কমানোর পাশাপাশি হজম প্রক্রিয়াকেও ত্বরান্বিত করতে পারে।
- এন্টাসিড প্লাস গ্রহণের সময় আপনি অ্যালকোহল বা ক্যাফেইন যুক্ত পানীয় পান করা থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। কারণ এইগুলি আপনার পেটের সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে।
- প্রয়োজনীয় ডোজের চেয়ে অতিরিক্ত এন্টাসিড প্লাসের ডোজ গ্রহন করা এড়িয়ে চলুন।
এন্টাসিড ট্যাবলেট কখন খেতে হয়
এন্টাসিড ট্যাবলেট ঠিক কোন সময় কখন খেতে হয় তা অনেকেই জানতে চান। কারণ পেটে এসিডিটির সমস্যা দূর করতে সঠিক সময়ে এন্টাসিড ট্যাবলেট খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এই এন্টাসিড ট্যাবলেট মূলত পেটের অম্লতা কমাতে কাজ করে। এন্টাসিড ট্যাবলেট সাধারণত খাওয়ার ৩০ মিনিট পূর্বে খাওয়া উচিত।
তবে খাওয়ার আগে এন্টাসিড ট্যাবলেট খেতে যদি ভুলে যান সে ক্ষেত্রে খাওয়ার ঠিক ৩০ মিনিট পরে ট্যাবলেটটি পানি দিয়ে খেয়ে ফেলুন। আবার আপনি চাইলে রাতে ঘুমানোর আগেও এন্টাসিড ট্যাবলেট খেতে পারেন। এই নিয়মে এন্টাসিড ট্যাবলেট খেলে এটি পাকস্থলীর অ্যাসিড খুব সহজেই দূর করতে পারে। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
এন্টাসিড ট্যাবলেট কি চুষে খেতে হয়
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম আমরা ইতিমধ্যেই আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি। এন্টাসিড ট্যাবলেট কি শুধু চুষেই খেতে হয় এই প্রশ্ন আমাদের অনেকের মনেই। দেখুন আপনি এন্টাসিড ট্যাবলেট চুষে খেতে পারেন আবার পানি দিয়ে গিলেও খেতে পারেন। এন্টাসিড ট্যাবলেট মুখে রেখে ধীরে ধীরে চুষে খেলে এর উপাদানগুলো দ্রুত কাজ শুরু করে এবং পেটের অম্লতার উপশম ঘটাতে পারে।
শুধু তাই নয়, চুষে খাওয়ার ফলে এটি আপনার মুখের লালার সাথে মিশে অতি দ্রুত দ্রবীভূত হয় এবং দ্রুত কাজ শুরু করে। অন্যদিকে আপনি যদি এন্টাসিড ট্যাবলেট পানি দিয়ে খেতে চান সে ক্ষেত্রে পুরোপুরি পানি দিয়ে গিলে খেতে হবে। সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। যাতে করে এটি আপনার পেটের মধ্যে পৌঁছে অতি দ্রুত অম্লতা কমানোর কার্যকারিতা শুরু করতে পারে।
এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এর কাজ কি
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার বেশ কিছু নিয়ম আপনি ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছেন। এবার আমরা জানবো এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এর কাজ সম্পর্কে। আমরা কমবেশি সকলেই জানি এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট মূলত পেটের এসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করতে কাজ করে। এন্টাসিড প্লাস দুটি প্রধান উপাদান নিয়ে গঠিত এর একটি হল এন্টাসিড।
যা পেটের এসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং অন্যটি হলো ফোমিং এজেন্ট বা আলজিনেট। যা আমাদের পেটের উপরে একটি সুরক্ষা স্তর তৈরি করে। ফলে যখন অ্যান্টাস্টিড ট্যাবলেট খাওয়া হয় ঠিক তখন এটি পেটে দ্রবীভূত হয়ে দ্রুত এসিড নিউট্রালাইজ করে। এতে করে পেটের অস্বস্তি এবং জ্বালাপোড়া ভাব অনেকটাই কমে যায়।
আবার এন্টাসিড ট্যাবলেট থাকা আলজিনেট উপাদানটি পানির সাথে মিশে আমাদের খাদ্যনালীতে সৃষ্ট এসিড রোধ করে। ফলে এটি গ্যাস্ট্রো এসোফেগাল রিফ্লেক্স ডিজিজ এবং এসিড সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা দূর করে। সম্মানিত পাঠক, এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট আমাদের শরীরে কিভাবে কাজ করে আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
এন্টাসিড ট্যাবলেট এর উপকারিতা
এন্টাসিড ট্যাবলেট এর উপকারিতা অনেক। বিশেষ করে পেটের অম্লতা কমাতে এবং এসিডিটির সমস্যা দূর করতে দারুন কাজ করে এন্টাসিড ট্যাবলেট। এবার চলুন জেনে নিই এন্টাসিড ট্যাবলেট খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে-
- এন্টাসিড ট্যাবলেটে থাকার বিভিন্ন ধরনের উপাদান যেমন- অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি পেটের অম্লতা কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
- অনেকের খাবার খাওয়ার পর পেটে অম্বলের সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে খাওয়ার পর পরই আপনি একটি এন্টাসিড ট্যাবলেট খেয়ে নিতে পারেন। তাতে আপনার পেটের অস্বস্তি দূর হবে।
- অতিরিক্ত গ্যাসের কারণে অনেক সময় পেটে ব্যথা হয়। এই ব্যথা কমাতেও বেশ কার্যকর এন্টাসিড ট্যাবলেট।
- আপনার কি পেট ফাঁপার সমস্যা রয়েছে? তাহলে বলব আজ থেকেই আপনি নিয়ম মেনে এন্টাসিড ট্যাবলেট খাওয়া শুরু করুন। কারণ পেট ফাপা প্রতিরোধে এন্টাসিড ট্যাবলেট বিশেষভাবে উপকারী।
- হজমের সমস্যা দূর করতেও এন্টাসিড ট্যাবলেট দারুন কাজ করে। নিয়মিত নিয়ম মেনে এন্টাসিড ট্যাবলেট খেলে এটি আপনার পেটের অম্লতা কমিয়ে হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। ফলে হজমের সমস্যা দূর হয়।
- অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার পর পেটের অম্লতা বেড়ে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে এন্টাসিড ট্যাবলেট আপনার পেটের অস্বস্তি কমাতে পারে।
- মানসিক দুশ্চিন্তা উদ্বেগের কারণে যদি আপনার পেটে সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে অ্যান্টাসি ট্যাবলেট খেলে অনেকটাই আরাম পাওয়া যায়।
- ফ্যান্টাস্টিক ট্যাবলেট শরীরের অম্ল আলকেলিন স্তর নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। যা আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
- শীতকালে সাধারণত পেটের অম্লতা বৃদ্ধি পায় ।এই সময় এন্টাসিড ট্যাবলেট সেবন আপনার জন্য উপকারী হতে পারে।
- এসিডিটির কারণে যদি আপনার বমির উদ্রেগ হয় সেক্ষেত্রে আপনার বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে এন্টাসিড ট্যাবলেট।
এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
এন্টাসিড প্লাস আপনি কিভাবে কোন নিয়মে খাবেন তা ইতিমধ্যেই আজকের আলোচনায় জেনেছেন। কিন্তু আপনি কি জানেন এসিডিটি কমাতে এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এবং এন্টাসিড প্লাস সিরাপ উভয়ই দারুন কার্যকরী। তাহলে চলুন এবার এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন-
- প্রথমেই বলি, এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়ার পূর্বে আপনি বোতলটি খুব ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিন।
- প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এন্টাসিড সিরাপ খাওয়ার ঠিক ৩০ মিনিট পূর্বে অথবা খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে ১-২ চামচ বা ১৫-৩০ মিলি লিটার পরিমাণে খাওয়া উচিত।
- শিশুদের জন্য এন্টাসিড সিরাপের ডোজ সাধারণত তাদের বয়স এবং ওজন অনুযায়ী নির্ধারিত হয়ে থাকে। তবে ২-১০ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে অবশ্যই খাওয়ার পরে ৫-১০ মিলি লিটার এন্টাসিড সিরাপ দেওয়া যেতে পারে।
- এন্টাসিড সিরাপ সঠিক পরিমাণে খাওয়ার জন্য আপনি অবশ্যই মেজারিং চামচ ব্যবহার করবেন।
- আপনি যদি অন্য কোন ঔষধ সেবন করেন সেক্ষেত্রে অন্যান্য ঔষধ এবং এন্টাসিড প্লাস সিরাপ এর মধ্যে কমপক্ষে দুই ঘন্টা ব্যবধান রেখে তবেই খাবেন। তা না হলে এটি আপনার অন্যান্য ঔষধের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
- এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়ার পরে আপনি খানিকটা পানি পান করতে পারেন। এটি সিরাপকে আরো ভালোভাবে হজমে সাহায্য করবে।
গর্ভাবস্থায় এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
গর্ভাবস্থায় এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়ার নিয়ম আমরা অনেকেই জানিনা। কিন্তু গর্ভকালীন সময়ে এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার বেশ কিছু নিয়ম রয়েছে। যে নিয়ম মেনে অ্যান্টাসি।ড প্লাস খেলে এটি আপনার এবং আপনার গর্ভস্থ শিশুর উভয়ের জন্যই উপকারী হবে। তো চলুন গর্ভাবস্থায় এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন-
- প্রথমেই বলব, গর্ভাবস্থায় এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার জন্য আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারিত ডোজ অনুসরণ করুন।
- খাবার খাওয়ার পর ১-২ এন্টাসিড প্লাস সেবন করতে পারেন।
- সাধারণত খাবার খাওয়ার ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘন্টার মধ্যে আপনি সিরাপ খেতে পারেন। এতে আপনার পাচনতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে।
- এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়ার পর আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। যেন সিরাপটি খুব সহজেই আপনার শরীরে শোষিত হতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় এসিডিটির সমস্যা দূর করতে শুধুমাত্র এন্টাসিড প্লাস এর উপর নির্ভরশীল না হয়ে আপনি স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার অভ্যাস করুন।
এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এর দাম
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার সঠিক নিয়ম আপনি খানিক আগেই আজকের আলোচনার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। এবার আপনি নিশ্চয়ই এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এর দাম সম্পর্কে জানতে চান। সম্মানিত পাঠক, তাহলে জেনে রাখুন এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট সাধারণত একটি প্যাকেজে ১০টি করে থাকে।
এর প্রতি পাতা এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট এর দাম পড়ে ৪০-৫০ টাকার মধ্যে। সে হিসেবে প্রতি পিস ট্যাবলেটের দাম পড়বে পাঁচ টাকা করে। তবে এই দাম ট্যাবলেটের বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং স্থান অনুসারে কিছুটা কম বেশি হতে পারে।
এন্টাসিড প্লাস সিরাপ দাম
এন্টাসিড প্লাস সিরাপ দাম কত জানেন কি? অনেকেই আছেন যারা এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেটের থেকে এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খেতে বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। এই এন্টাসিড প্লাস সিরাপ এর দাম বিভিন্ন ফার্মেসিতে বিভিন্ন রকম হতে পারে। অর্থাৎ দামের কিছুটা তারতম থাকতে পারে। সাধারণত এন্টাসিড প্লাস সিরাপ এর দাম ২০০-৩০০ টাকার মধ্যেই হয়ে থাকে। এন্টাসিড সিরাপে থাকা বিভিন্ন উপাদান পেটের এসিডিটি কমাতে খুব দ্রুত কাজ করে।
এন্টাসিড প্লাস সিরাপ এর কাজ কি
এন্টাসিড প্লাস সিরাপ এর কাজ কি তা হয়তো আমাদের অনেকেরই অজানা। কারণ, আমরা কমবেশি সকলেই এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেট খেতেই বেশি অভ্যস্ত। সম্মানিত পাঠক, এবার চলুন এন্টাসিড প্লাস সিরাপ এর কাজ সম্পর্কে জেনে নিই -
- এসিডিটির সমস্যা দূর করতে এন্টাসিড প্লাস ট্যাবলেটের থেকে এন্টাসিড প্লাস সিরাপ অতি দ্রুত কাজ করে। ফলে আপনি তাৎক্ষণিকভাবে এসিডিটির সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে চাইলে খেতে পারেন।
- এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়ার ফলে এটি আপনার পেটে গ্যাসের উৎপাদন কমাতে সাহায্য করে। ফলে আপনি পেট ফোলা এবং অস্বস্তি থেকে খুব সহজেই মুক্তি পেতে পারেন।
- অনেকেই গ্যাসের কারণে পেটের ব্যথায় ভুগতে থাকেন। এন্টাসিড প্লাস সিরাপ পেট ব্যাথা নিরসনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। ফলে পেটের ব্যথা দূর করতে আপনি এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খেতেই পারেন।
- আপনার যদি হজমের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে নিয়ম করে এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খান। কারণ, এটি হজমে সাহায্য করে এবং হজম প্রক্রিয়া অতি দ্রুত ত্বরান্বিত করে।
- এন্টাসিড প্লাস সিরাপ খাওয়ার ফলে এটি অন্ত্রের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে মলত্যাগ সহজ হয়।
- এন্টাসিড প্লাস সিরাপে থাকা কিছু উপাদান ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন প্রতিরোধে খুব ভালো কাজ করে।
- এন্টাসিড প্লাস সিরাপ বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ। ফলে এটি শরীরের জন্য সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ এবং এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও কম।
- এন্টাসিড প্লাস সিরাপ পেটের লাইনিংকে সুরক্ষিত রাখে। ফলে দীর্ঘমেয়াদী এসিডিটির ফলে ক্ষতির বিরুদ্ধে এটি খুব সহজেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে।
এন্টাসিড এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
এন্টাসিডের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আমরা অনেকেই অবগত নই। যদিও এন্টাসিড এসিডিটির সমস্যা দূর করতে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে এন্টাসিড খাওয়ার ফলে আপনার শরীরে এর বেশ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও দেখা দিতে পারে। তো চলুন এন্টাসিডের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো কি কি হতে পারে সে সম্পর্কে জেনে নিন-
- নিয়মিত অতিরিক্ত পরিমাণে এন্টাসিড গ্রহণে আপনার পাকস্থলীর এসিড বৃদ্ধি পেতে পারে। যা কিনা আপনার দীর্ঘ মেয়াদে এসিড রিফ্ল্যাক্সের কারণ হতে পারে।
- মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে এন্টাসিড খাওয়ার ফলে এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং অ্যালুমিনিয়াম আপনার পাকস্থলীতে অস্বস্তি বা ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে।
- যেহেতু এন্টাসিডে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে ফলে এর অতিরিক্ত ব্যবহারে আপনার ডায়রিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- দীর্ঘদিন ধরে এন্টাসিড সেবন করলে এটি আপনার ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য বিঘ্নিত করতে পারে। যা আপনার স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
- কিছু কিছু এন্টাসিড রয়েছে যেগুলি অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য পরিবর্তিত হয়। বিশেষ করে থাইরয়েডের রোগীদের সীমিত পরিমাণে এন্টাসিড সেবন করা উচিত।
- অতিরিক্ত এন্টাসিড সেবনে এটি আপনার পাকস্থলীর স্বাভাবিক পিএইচ এর স্তর পরিবর্তন করে ফেলতে পারে। এতে করে আপনার হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- কিছু এন্টাসিড পরিমাণে খেলে এটি স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। এর ফলে আপনার মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
- এন্টাসিড অ্যালুমিনিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত। ফলে এর অতিরিক্ত ব্যবহার আপনার মাথাব্যথা মাইগ্রেনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- শুধু তাই নয়, মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে এন্টাসিড দীর্ঘদিন খেতে থাকলে এটি আপনার দাঁত ক্ষয়ের কারণ হতে পারে।
- এছাড়াও শিশুদের এন্টাসিড অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়ালে এজমার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়।
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
এন্টাসিড প্লাস খাওয়ার নিয়ম আমরা বিস্তারিত ভাবে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করেছি। যা পড়ে আপনি নিশ্চয়ই উপকৃত হয়েছেন। এন্টাসিড প্লাস মূলত গ্যাস্ট্রাইটিসের সমস্যায় বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। গ্যাস ছাড়াও পেটের যে কোনো ধরনের সমস্যা যেমন ধরুন- কোষ্ঠকাঠিন্য, খাবার হজম না হওয়া, পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যা প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এন্টাসিড প্লাস।
তবে নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত পরিমাণে এন্টাসিড খাওয়ার ফলে আবার এর শারীরিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা বুঝে পরিমিত পরিমাণে এন্টাসিড গ্রহণ করুন। যা আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী হবে। আর দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহারের জন্য অবশ্যই আপনি একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে তবেই এটি সেবন করবেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url