কালোজিরা তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা বিস্তারিত জেনে নিন
কালোজিরা তেলের উপকারিতা আমরা কম বেশি সকলেই জানি। কিন্তু কালোজিরার তেল ও মধু খাওয়ার উপকারিতা আমাদের অনেকেরই অজানা। কালোজিরা তেল এবং মধু এই দুটি উপাদানই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
আজকে
আমাদের এই আর্টিকেল থেকে আপনি জানতে পারবেন কালোজিরা তেলের নানান স্বাস্থ্য উপকারিতা এবং কালোজিরা তেল, মধু একসাথে খাওয়ার উপকারিতা। সাথে আরো জানবেন এই তেলের ব্যবহার বিধি সম্পর্কে। সুতরাং পুরো
বিষয়টি জানতে হলে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ কালোজিরা তেলের ১০ উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
- কালোজিরা তেলের উপকারিতা
- কালোজিরা তেলের অপকারিতা
- কালোজিরা তেলের ব্যবহার বিধি
- কালোজিরার তেল ও মধু খাওয়ার উপকারিতা
- কালোজিরার তেল মুখে দিলে কি হয়
- কালোজিরা তেল মালিশ
- পুরুষাঙ্গে কালোজিরার তেল ব্যবহারের উপকারিতা
- কালোজিরা তেল কোথায় পাওয়া যায়
- চুলে কালোজিরা তেলের উপকারিতা
- কালোজিরা তেলের দাম ২০২৪
- কালোজিরা তেলের উপকারিতা সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
কালোজিরা তেলের উপকারিতা
কালোজিরা তেলের স্বাস্থ্য উপকারিতা অনেক। সেই প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই তেল। আলোচনার শুরুতেই চলুন জেনে নেওয়া যাক এর বেশ কিছু উপকারিতা সম্পর্কে--- ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করেঃ কালোজিরার তেলে থাকা থাইমোকুইনন নামক উপাদান আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে তোলে। এতে করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং আমাদের শরীর বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ থেকে রক্ষা পায়।
- হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতেঃ আপনার শরীরে হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে এই কালোজিরার তেল। তাছাড়া একটি মহিলাদের পিএমএস অর্থাৎ পিরিয়ড জনিত সমস্যা দূর করতে কাজ করে।
- ক্যান্সার প্রতিরোধীঃ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কালোজিরার তেল সেবনেে এটি আমাদের শরীরে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে। ফলে এই তেল আপনাকে প্রাণঘাতী ক্যান্সারের হাত থেকেও রক্ষা করতে পারে।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করেঃ কালোজিরার তেল আপনার রক্তে গ্লুকোজের স্তর নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এটি ইনসুলিন সংবিধানশীলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে এবং ডায়াবেটিসের লক্ষণ কমাতে ভালো কাজ করে।
- শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা দূর করেঃ আপনার ঠান্ডা লাগা, সর্দি, কাশি এবং শ্বাসযন্ত্রের যে কোন প্রদাহ দূর করতে বেশ সহায়ক ভূমিকা রাখে কালোজিরার তেল। শুধু তাই নয়, এটি ব্রংকাইটিসহ শ্বাসতন্ত্রের অন্যান্য সমস্যা কমাতেও সাহায্য করে।
- মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করেঃ কালোজিরা তেল মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতেও বিশেষভাবে সাহায্য করে। বিশেষ করে এই তেল সেবনে মানসিক চাপ এবং বিষন্নতা লক্ষণ অনেকটাই কমতে থাকে। ফলে মস্তিষ্ক ফ্রেশ থাকে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
- হার্টের সুস্থতায় কালোজিরার তেলঃ কালোজিরার তেল সেবন করে আপনি হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে রেহাই পেতে পারেন। কেননা এই তেল কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে এবং রক্তচাপ কমাতে বেশ কার্যকরী। এছাড়া এই তেলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার হৃদযন্ত্রের জন্যও অত্যন্ত উপকারী।
- ওজন কমাতে কাজ করেঃ আপনি বাড়তি ওজন ঝরিয়ে ফেলতে চাইলে কালোজিরার তেল সেবন করুন। কারণ, কালোজিরার তেল মেটাবলিজম বাড়াতে সহায়ক যা ওজন কমাতে কাজ করে। এছাড়াও এই তেল অ্যাপেটাইট নিয়ন্ত্রণে কাজ করে এবং শরীরের চর্বি কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
- ত্বকের যত্নে কালোজিরার তেলঃ কালোজিরার তেল আপনার ত্বকের যেকোনো ধরনের প্রদাহ যেমন ধরুন- ব্রণ, ব্রণের কালো দাগ, একজিমা, সোরিয়াসিস ইত্যাদি কমাতে সাহায্য করে এবং সেই সাথে ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে।
- চুলের জন্য উপকারীঃ আপনার চুলের গুণমান উন্নত করতে কালোজিরা তেল অত্যন্ত কার্যকর একটি উপাদান। চুলে নিয়মিত কালোজিরা তেল ব্যবহারে এটি আপনার চুলকে মসৃণ ও ঝলমলে করে তোলে। তাছাড়া এটি চুলের গোড়ায় পুষ্টি সরবরাহ করে। যার ফলে অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ হয়।
- পিঠের ব্যথা দূর করেঃ কালোজিরা থেকে যে তেল বের হয় সেটি আমাদের দেহে দীর্ঘমেয়াদী রিউমেটিক এবং পিঠের অসহ্য ব্যথা হ্রাস করে।
- শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধিতেঃ একটি শিশুর পরিপূর্ণ দৈহিক মানসিক বৃদ্ধির জন্য কালোজিরার তেল খুবই উপকারী। কেননা এই তেল শিশুর স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে কাজ করে। আপনার শিশুর বয়স যদি দুই বছর কিংবা ততদিন হয় তাহলে নিশ্চিন্তে আপনার শিশুকে কালো জিরার তেল খাওয়াতে পারেন।
- হজমে সাহায্য করেঃ কালোজিরার তেল আপনার অন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ যেমন- পেট ফাঁপা, গ্যাস, পেটে ব্যথা ইত্যাদি খুব সহজে দূর করতে পারে। তাছাড়া এর অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য হজমের কার্যকারিতা কয়েক গুন পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়।
- স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করেঃ কালোজিরার তেলের সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে খেলে আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি পাবে। শুধু তাই নয়, এই তেল ব্যবহারে শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর হয়।
- মাথা ব্যথা দূর করেঃ বর্তমানে খুব সাধারণ একটি সমস্যা হল মাথা ব্যথা। অনেকে আছেন যারা মাথা ব্যাথার কারণে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের ঔষধ সেবন করে থাকেন। এই ঔষধ না খেয়ে আপনি মাথা ব্যথা সারাতে আপনার কপালে খানিকটা কালোজিরার তেল ঘষে নিন। দেখবেন কিছুক্ষণের মধ্যে মাথা ব্যথায় গায়েব হয়ে গেছে। মাথা ব্যথা দূর করতে প্রাকৃতিক এই পদ্ধতিটি সব থেকে বেশি কার্যকরী।
- রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করেঃ আপনাদের যাদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তারে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আধা চা চামচ কালোজিরা তেল গরম পানিতে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে আপনার রক্তচাপ স্বাভাবিকভাবেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- কিডনির সুরক্ষায় কালোজিরা তেল বর্তমান সময়ে কিডনি পাথর একটি বহুল পরিচিত সমস্যা। এর জন্য আপনি আধা চা চামচ কালোজিরা তেলের সাথে ২ চামচ মধু এবং গরম পানি পান করলে আপনার কিডনি ব্যথা পাথর এবং অন্যান্য সংক্রমণ থেকেও মুক্তি পেতে পারেন।
- হাঁপানি দূর করেঃ কালোজিরা তেলের সাথে সামান্য মধু মিশিয়ে খেলে আপনার হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর হবে। শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের জন্যই এটি বেশ উপকারী। টানা ৪৫ দিন এভাবেই সেবন করুন এবং এই সময় ঠান্ডা জাতীয় খাবার বা পানীয় পরিহার করে চলুন।
- যৌন শক্তি বৃদ্ধি করেঃ যৌন অক্ষমতা দূর করতে বা যৌন শক্তি বাড়াতে আপনি নিয়মিত কালোজিরার তেল সেবন করুন। এটি নারী এবং পুরুষ উভয়ের যৌন ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। তাছাড়া কালোজিরা তেল সে বনে পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় সেইসাথে শুক্রাণুর গতিশীলতাও বেড়ে যায়।
- বুকের দুধ বৃদ্ধি করেঃ যেসব মা বোনদের বুকে পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ নেই, কিংবা শিশু বুকের দুধ পাচ্ছে না তাদের জন্য কালোজিরা কিংবা কালোজিরার তেল হতে পারে একটি মহৌষধ। কারণ, নিয়মিত কালোজিরার তেল সেবনে বুকের দুধের প্রবাহ বেড়ে যায়।
- নিদ্রাহীনতা দূর করেঃ আপনারা যারা নিদ্রাহীনতায় ভুগছেন বা রাতে ঘুম হয় না তারা কালোজিরার তেল সেবন করে দেখতে পারেন। কারণ, কালোজিরা তেল মস্তিষ্ক শান্ত রাখে। ফলে ঘুম ভালো হয়।
- নতুন চুল গজায়ঃ কালোজিরা তেল চুলে ব্যবহার করলে এতে থাকা প্রোটিন এবং ফ্যাটি এসিড স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বাড়িয়ে দেয়। ফলে নতুন চুল গজাতে শুরু করে।
- দাঁত মজবুত করতেঃ আপনার দাঁত এবং দাঁতের মাড়ির বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন দাঁতে ব্যথা, মাড়ি থেকে রক্ত পড়া, মাড়ি ফুলে যাওয়া ইত্যাদি দূর করতে নিয়মিত কালোজিরার তেল দিয়ে দিনে ২ বার দাঁত মেসেজ করতে পারেন। এতে করে আপনার দাঁত ও মাড়ির সকল সমস্যা দূর হবে।
কালোজিরা তেলের অপকারিতা
কালোজিরা তেলের শুধু উপকারিতায় নয়, কিছু অপকারিতাও রয়েছে। তবে উপকারিতার তুলনায় এই অপকারিতা গুলো একেবারেই নগণ্য। উপকারিতার পাশাপাশি আপনার এই তেলের অপকারিতা সম্পর্কেও জেনে রাখা দরকার। যেমন--- যাদের নিম্ন রক্তচাপে সমস্যা রয়েছে রক্তচাপ কমাতে ঔষধ সেবন করছেন তাদের কালোজিরার তেল অতিরিক্ত পরিমাণে ব্যবহার না করাটাই ভালো। কারণ, এটি আপনার রক্তচাপকে আরো কমিয়ে দিতে পারে। এতে আপনার শারীরিক দুর্বলতা বেড়ে যেতে পারে।
- কালোজিরা তেলের অতিরিক্ত ব্যবহার আপনার যকৃতের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে যাদের যকৃতের সমস্যা রয়েছে তাদের এই তেল ব্যবহারে সতর্ক হওয়া উচিত।
- অতিরিক্ত পরিমাণে কালোজিরা তেল সেবনে আপনার শরীরের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- পেটে ব্যথা, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠকাঠিন্ ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।
- প্রেগনেন্সি কালিন সময়ে কালোজিরা তেল ব্যবহারে আপনার সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কেননা অতিরিক্ত কালোজিরা তেল ব্যবহারে আপনার গর্ভপাত কিংবা গর্ভকালীন সমস্যার ঝুঁকি আরো বেড়ে যেতে পারে। তাই বলবো গর্ভাবস্থায় এই তেল ব্যবহার না করাটাই ভালো।
- কালোজিরার তেল ব্যবহারে অনেকের আবার এলার্জির সমস্যা দেখা দেয়। এর জন্য ভালো হবে আপনি যদি প্রথম ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে প্যাঁচ টেস্ট করে নিতে পারেন। তবে স্বল্প মেয়াদে কালোজিরার তেল ব্যবহার করলে তাতে তেমন কোন অসুবিধা বা শারীরিক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয় না।
- অনেক সময় কালোজিরা তেল ঔষধের সাথে বিক্রিয়া করে মিথস্ক্রিয়া তৈরি করে বিশেষ করে বিটা ব্লকার্স। তাই আপনি যদি ঔষধ সেবনের মধ্যে থাকেন তেল ব্যবহারের সচেতন হওয়া উচিত।
- স্তন্যদানকারী মা-বোনদের জন্য কালোজিরার তেল অতিরিক্ত ব্যবহার করা উচিত নয়। তাতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে।
- গর্ভাবস্থায় এবং ২ বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের কালোজিরার তেল না খাওয়ানোই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। তবে বাহ্যিকভাবে এই তেল ব্যবহার করা যাবে।
কালোজিরা তেলের ব্যবহার বিধি
কালোজিরা তেলের উপকারিতা আমরা ইতিমধ্যেই আলোচনা করেছি। নানাবিধ ক্ষেত্রে কালোজিরা তেল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এবার চলুন কালোজিরা তেলের কিছু ব্যবহার সম্পর্কে জেনে নিন--- আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করবার জন্য আপনি প্রতিদিন ১ চামচ কালোজিরা তেল ও ১ চা চামচ মধুসহ খেতে পারেন। এতে আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
- যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ অনিদ্রা রোগে ভুগছেন তারা রাতে ঘুমের আগে ঠিক ১ চা চামচ কালোজিরা তেল নিয়মিত খান। এতে ভালো ঘুম হবে।
- উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনি গরম পানির সাথে হাফ চা চামচ কালোজিরার তেল মিশিয়ে পান করুন। এতে উচ্চ রক্তচাপের প্রবণতা কমবে।
- আপনার দাঁত শিরশির করলে বা দাঁতের মাড়িতে ব্যথা হলে প্রতিদিন কালোজিরা তেল দিয়ে দিনে ২ বার দাঁত এবং মাড়ি ম্যাসাজ করুন। এতে করে আপনার দাঁত ও মাড়ির সকল প্রদাহ দূর হবে।
- চুল পড়া বন্ধ করতে আপনি আপনার চুলের গোড়ায় নিয়মিত কালোজিরা তেল মালিশ করতে পারেন। চুল পড়া বন্ধে কালোজিরা তেল ভীষণই কার্যকরী।
- অল্প বয়সে চুল পাকা রোধ করতে আপনি কালোজিরার তেল ক্যাস্টর অয়েল এবং নারিকেল তেল এই তিন ধরনের তেল একসাথে মিশিয়ে আপনার মাথার ত্বকে এবং চুলে খুব ভালো করে ম্যাসাজ করুন। এভাবে প্রতি সপ্তাহে ২ বার করে টানা ৩ মাস ব্যবহার করতে থাকুন। দেখবেন চুলের অকালপক্কতা দূর হবে।
- লিভারের সুরক্ষায় কালোজিরা তেল অত্যন্ত উপকারী। মূলত আফলা টক্সিন লিভার ক্যান্সারের জন্য দায়ী। লিভার ক্যান্সার থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে আপনি এক গ্লাস ত্রিফলার শরবতের সাথে ১ চা চামচ কালোজিরার তেল দিনে ৩ বার পান করুন। এভাবে ৪-৫ সপ্তাহ একটানে খেতে পারলে খুব ভালো ফল পাবেন।
- শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা অনেকটাই বেড়ে যায়। এই সময় ত্বকের আদ্রতা ফিরিয়ে আনতে আপনি আপনার ত্বকে কালোজিরার তেল মালিশ করতে পারেন। বিশেষ করে শিশুদের ত্বকের জন্য এই তেল অত্যন্ত উপকারী।
- আপনি কি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন? তাহলে আজ থেকেই ১ চা চামচ কালোজিরা তেল সমপরিমাণ মধু সহ একসাথে মিশিয়ে দিনে ৩ বার খান। এভাবে আপনি টানা ২-৩ সপ্তাহ ধরে খেতে থাকুন। এতে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর হবে।
- যেসব মায়েদের বুকে পর্যাপ্ত দুধ নেই তাদের জন্য এই কালোজিরা তেল একটি মহা ঔষধ। বুকের দুধ বাড়াতে আপনি প্রতিদিন ১ চা চামচ কালোজিরা তেল সমপরিমাণ মধুসহ মিশিয়ে দিনে ৩ বার খান। এতে দেখবেন মাত্র ১০ দিনে আপনার বুকে দুধের প্রবাহ বেড়ে যাবে।
- অনিয়মিত মাসিক সারাতে আপনি কাঁচা হলুদের রসের সাথে ১ চা চামচ কালোজিরা তেল মিশিয়ে প্রতিদিন ৩ বেলা খেতে থাকুন। এতে ভালো ফল পাবেন।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপনি ১ চা চামচ কালো জিরার তেল গরম ভাতের সাথে অথবা লাল চায়ের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন ২ বার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে আপনার ডায়াবেটিস শতভাগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- শুধু তাই নয়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আপনি রোজ সকালবেলা ১ কাপ ব্লাক টি এর সাথে হাফ চা চামচ কালোজিরা তেল মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাতেও ডায়াবেটিস কন্ট্রোলে থাকবে।
- হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে যারা ভুগছেন তাদের জন্য কালোজিরার তেল অনেক বেশি উপকারী একটি তেল। শ্বাসকষ্ট দূর করতে আপনি ১ চা চামচ কালো জিরার তেল প্রতিদিন লাল চায়ের সাথে অথবা এক কাপ দুধের সাথে দিনে ৩ বার করে খান। কিছুদিন এক টানা খেতে থাকলে আপনার শ্বাসকষ্টের সমস্যা দূর হবে।
- অর্শ রোগ নিরাময়ে ১ চা চামচ মাখন ও এক চা চামচ কালোজিরার তেল সহ প্রতিদিন খালি পেটে ৩-৪ সপ্তাহ খেতে থাকুন।
- আপনার ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১ চা চামচ কালো জিরার তেল সমপরিমাণ মধুসহ সপ্তাহে ২-৩ দিন খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে আপনার ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
- হার্টের রোগীদের জন্য কালোজিরার তেল অত্যন্ত উপকারী। আপনার হার্টের সমস্যা থাকলে আপনি ১ চা চামচ কালোজিরা তেল, ১ কাপ দুধের সাথে মিশিয়ে প্রতিদিন ২ বার করে খান। তাতে হার্ট সুস্থ থাকবে।
- আপনার চর্ম রোগের সমস্যা থাকলে আপনার ত্বকে আপনি কালোজিরার তেল মালিশ করতে পারেন। তাছাড়া চর্মরোগ চিরতরে সারাতে আপনি ১ চা চামচ কাঁচা হলুদের রসের সাথে সমপরিমাণ কালোজিরা তেল এবং সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে দৈনিক ৩ বার খান। এটি আপনি টানা ২-৩ সপ্তাহ খেতে থাকুন। আপনার চর্ম রোগ সেরে যাবে।
- আপনার ত্বকের পুরনো দাগ, ব্রনের দাগ, কালো দাগছোপ রোদে ট্যান পড়া ইত্যাদি সারাতে সমপরিমাণে কালোজিরার তেল এবং কাঠ বাদামের তেল নিন। এই দুটি তেল একসাথে মিশিয়ে একটি ক্রিম তৈরি করে তিন বেলা আপনার ত্বকে ব্যবহার করুন। আপনি চাইলে এই ক্রিমটি একবার তৈরি করে রেফ্রিজারেটরে রেখে সারা বছর ধরেও সংরক্ষণ করতে পারেন। তবে ত্বকের দাগ দূর হলে এই ক্রিম ব্যবহারের আর প্রয়োজন নেই।
- আপনার ত্বক যদি অতিরিক্ত তেলতেলে বা তৈলাক্ত হয় সেক্ষেত্রে যে পরিমাণ কাঠ বাদাম তেল নেবেন তার দ্বিগুণ পরিমাণ কালোজিরা তেল নিয়ে একটি ক্রিম তৈরি করে ফেলুন। নিয়মিত এই ক্রিম ব্যবহার করুন। কিছুদিন পরে দেখবেন আপনার ত্বকের তেলটে ভাব অনেকটাই কমে গেছে।
- ত্বকের ব্রণ সারাতেও ব্যবহার করতে পারেন কালোজিরার তেল। ব্রনের সমস্যা দূর করতে আপনি সমপরিমাণ মধু এবং কালোজিরার তেল নিন। এবারে এটি আপনার ত্বকের ব্রণের স্থানে লাগিয়ে ২০ মিনিটের মত রেখে দিন। মিনিট বিশেক পর ত্বক ধুয়ে ফেলুন। যতদিন না ত্বকের ব্রণ দূর হচ্ছে ঠিক ততদিন এভাবে ব্যবহার করতে থাকুন।
- শুধু তাই নয়, ত্বকের ময়শ্চারাইজার এর জন্য আপনি কালোজিরার তেল এবং গ্লিসারিন ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য সমপরিমাণ কালোজিরা তেল এবং গ্লিসারিন একসাথে মিশিয়ে বিট করে একটি ক্রিম তৈরি করে ফেলুন এবং ত্বকে নিয়মিত ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে বলে রাখি, আপনার ত্বক যদি অতিরিক্ত তৈলাক্ত হয় সেক্ষেত্রে কালোজিরা তেলের সাথে দ্বিগুণ পরিমাণ গ্লিসারিন ব্যবহার করতে হবে।
- ত্বকের বলিরেখা দূর করতে আপনি কালোজিরা তেলের সাথে সমপরিমাণ গ্লিসারিন এবং এলোভেরা জেল মিশিয়ে ক্রিম তৈরি করে সেটি ব্যবহার করতে পারেন। দিন কিংবা রাত যেকোনো সময় এই ক্রিম আপনি আপনার ত্বকে ব্যবহার করতে পারবেন।
- জ্বর, সর্দি, কাশি, ঠান্ডা লাগা ইত্যাদি দ্রুত সারাতে আপনি কালোজিরা তেলের সাথে তুলসী পাতার রস এবং মধু মিশিয়ে খেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি এক চা চামচ কালোজিরা তেলের ৪ চা চামচ তুলসী পাতার নির্যাস ব্যবহার করবেন।
- শুধু তুলসী পাতা নয় বরং পুদিনা পাতার রস এবং কমলার রসও কালোজিরা তেলের সাথে ব্যবহার করে খেতে পারেন। একইভাবে ১ চা চামচ কালোজিরা তেলের সাথে আপনি ৩ চা চামচ কমলার রস বা পুদিনা পাতার রস ব্যবহার করবেন।
- যেকোনো খাবার রান্নার সময় তাতে ফোড়ন দেওয়ার পরিবর্তে রান্নাটি চুলা থেকে নামে তাতে কালো জিরার তেল যোগ করতে পারেন।
- অনেকে আছেন যারা সেদ্ধ খাবার খেতে পছন্দ করেন। আপনি চাইলে এই সেদ্ধ খাবারের সাথে কালোজিরার তেল মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে খাবারের স্বাদ আরো কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।
- বিভিন্ন ধরনের ভর্তা, সালাদ, ভাজাপোড়া, মুড়ি মাখানো ইত্যাদি তৈরিতে সরষে তেলের পরিবর্তে বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন কালোজিরার তেল।
- শরীরে বাতের ব্যথা দূর করতে আপনি ১ চা চামচ কালোজিরা তেলের সাথে সমপরিমাণ কাঁচা হলুদের রস মিশিয়ে কিংবা লাল চায়ের সাথে খাওয়ার অভ্যাস করুন। প্রতিদিন ৩ বার করে টানা ২-৩ সপ্তাহ খেতে থাকুন। এর ফলাফল আপনি নিজেই টের পাবেন।
- চর্মরোগ সারাতে ১ চা চামচ কালোজিরা তেল সাথে সমপরিমাণ কাঁচা হলুদের রস এবং মধু মিশিয়ে খান। এটি আপনি লাল চায়ের সাথেও মিশিয়ে খেতে পারেন। একটানা ৩ সপ্তাহ খেয়ে দেখুন। চর্ম রোগ অনেকটাই সেরে যাবে।
- যৌন শক্তি বাড়াতে ১ চা চামচ মাখন ও জয়তুনের তেলের সাথে সমপরিমাণ কালোজিরার তেল এবং মধু মিশিয়ে প্রতিদিন ৩ বার করে খান। এভাবে টানা ৪-৫ সপ্তাহ খেতে থাকুন। তাতে যৌন অক্ষমতা দূর হবে।
- বুকের দুধ বাড়াতে কালোজিরা খাওয়ার পাশাপাশি আপনি ১ চা চামচ মধুর সাথে সমপরিমাণ কালোজিরার তেল মিশিয়ে প্রতিদিন ৩ বার করে খান। বুকের দুধ বাড়ানোর জন্য এটি একটি শতভাগ কার্যকর পদ্ধতি।
- হাম বা পক্স প্রতিরোধে ১ চা চামচ কালোজিরা তেলের সাথে সম পরিমাণ করলার রস এবং ১০ ফোঁটা মধু মিশিয়ে দিনে ২ বার সেবন করুন।
- ওজন কমাতে চাইলে আপনি প্রতিদিন সকালবেলা খালি পেটে ১ চা চামচ কালোজিরার তেল খান। এতে আপনার মেটাবলিজম বৃদ্ধি পাবে এবং ওজন কমতে থাকবে।
কালোজিরার তেল ও মধু খাওয়ার উপকারিতা
কালোজিরার তেল ও মধু খাওয়ার উপকারিতা আমরা কমবেশি সকলেই জানি। কালোজিরার তেল এবং মধু এই দুটি উপাদানই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। কালোজিরার তেল ও মধু খাওয়ার বেশকিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। যেমন--- কালোজিরার তেল ও মধু খেলে এটি আমাদের আমাদের ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। এর জন্য আপনি প্রতিদিন সকালে ১ চা চামচ কালোজিরা তেল এবং মধু একসাথে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- আপনি ১ চা চামচ কালোজিরা তেল এবং ১ চা চামচ মধু কুসুম গরম পানিতে মিশিয়ে খান। এতে আপনার পেটের সকল প্রদাহ যেমন- হজমের সমস্যা, পেট ফাঁপা, বদহজম ইত্যাদি দূর হবে।
- ওজন কমাতেও কালোজিরার তেল ও মধু বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। ওজন কমানোর জন্য আপনি ১ চা চামচ কালোজিরা তেল এবং ১ চা চামচ মধু গরম পানিতে মিশিয়ে ঠিক খাওয়ার আগে পান করুন।
- কালোজিরার তেল ও মধু খেলে আপনার ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন সমস্যা সর্দি লাগা, জ্বর, কাশি ইত্যাদির উপশম হবে।
- কালোজিরার তেল ও মধু একত্রে খাওয়ার ফলে আপনার মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে। কারণ, কালোজিরা তেল মানসিক চাপ কমাতে এবং মধু মনকে শান্ত রাখতে কাজ করে। মানসিক চাপ কমাতে আপনি প্রতিদিন রাতে ১ চা চামচ কালোজিরা তেল ও ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও কালোজিরার তেল ও মধু অত্যন্ত কার্যকরী। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে রাখতে আপনি ১ চা চামচ কালোজিরার তেল ও ১ চা চামচ মধু গরম পানিতে মিশিয়ে পান করুন।
- কালোজিরা তেল ও মধু একসাথে খাওয়ার ফলে এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি উপাদান আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং অন্যান্য রোগ জীবাণুর সংক্রমণ থেকে খুব সহজেই সুরক্ষা দিতে পারে।
- কালোজিরার তেল হজমের সহায়ক এবং মধু পেটের এসিডিটি নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে একসাথে খেলে পরিপাকতন্ত্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
- হার্ট সুস্থ রাখতে আপনি নিয়মিত কালোজিরা তেল ও মধু একসাথে খাওয়ার অভ্যাস করুন। কারণ, কালোজিরা তেল রক্তে ভালো কোলেস্টেরনের মাত্রা বাড়ায় এবং খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ঠিক একইভাবে মধুও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ফলে এ দুটি উপাদান একসাথে খাওয়া হার্টের জন্য ভীষণ উপকারী।
- উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় কালোজিরার তেল এবং মধু একসাথে খেলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। কারণ, কালোজিরার তেল রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এবং মধুও প্রাকৃতিকভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- শ্বাসনালীর ইনফেকশন কমাতে মধু এবং কালোজিরার তেল ম্যাজিকের মত কাজ করে। ফলে শ্বাসনালীর প্রদাহ হোক মতে আপনি কালোজিরার তেল এবং মধু একসাথে খেতেই পারেন।
- কালোজিরার তেল এবং মধু উভয়ই ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। কারণ, কালোজিরা তেলে থাকা থাইমোকুইনন উপাদানটি ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে এবং মধুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। সুতরাং ক্যান্সার থেকে বাঁচতে আপনি কালোজিরার তেল ও মধু একসাথে খাওয়ার অভ্যাস করুন।
- গেটে বাত, আর্থাইটিস ইত্যাদিতে কালোজিরার তেল ও মধুর মিশ্রণ দারুন কাজ করে।
- অনিদ্রা দূর করতেও কালোজিরার তেল ও মধুর উপকারিতা অনেক। কালোজিরার তেল এবং মধু একসাথে মিশিয়ে খেলে এটি মস্তিষ্ক শান্ত রাখে। সাথে ঘুমও ভালো হয়।
- এলার্জি প্রতিরোধেও দারুন কাজ করে কালোজিরার তেল ও মধু। আপনার শরীরের এলার্জিক প্রতিক্রিয়া কমাতে আজ থেকেই কালোজিরার তেল ও মধুর খাওয়া শুরু করুন।
- কালোজিরার তেল এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং মধু আপনার ত্বক থেকে বয়সের ছাপ দূর করে। এই দুটি উপাদানই আপনার শরীরে অ্যান্টি উপকারিতা সরবরাহ করতে থাকে।
- যারা একেবারে নতুন ব্যবহার করবেন তারা ব্যবহারের আগে প্যাঁচ টেস্ট করে নিন।
- গর্ভাবস্থায় কালোজিরার তেল ও মধু সেবনের পূর্বে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া উচিত।
- অনেক দিনের পুরনো কালোজিরার তেল কখনোই সেবন করবেন না। কারণ, কালোজিরা তেল পুরনো হয়ে গেলে তেলের গুনাগুন অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। এতে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়তে পারে।
- আপনি অতিরিক্ত কালোজিরার তেল ও মধু ব্যবহার থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। নিয়ম মেনে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ ব্যবহারের চেষ্টা করুন।
কালোজিরার তেল মুখে দিলে কি হয়
কালোজিরা তেলের উপকারিতা আপনি ইতিমধ্যেই জেনেছেন। আপনারা অনেকেই জানতে চান কালোজিরা তেল মুখে দিলে কি হয়? আসলে কালোজিরার তেল একটি প্রাকৃতিক এন্টিব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিফাঙ্গাল উপাদান হিসেবে আমাদেের ত্বকে কাজ করে। যা ব্যবহারে ত্বক পরিষ্কার থাকে ভেতর থেকে।তাছাড়া মুখে কালোজিরার তেল ব্যবহার
করলে এটি আপনার ত্বকের ব্রণ, ব্রনের কালো দাগ, একজিমা ত্বকের লালচে দাগ, ফুসকুড়ি ইত্যাদি কমাতে খুব ভালো কাজ করে। কারণ, এটি ত্বকের প্রদাহ ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
দমনে খুব ভালো কাজ করে। নিয়মিত কালোজিরা তেল ত্বকে ব্যবহার করলে এতে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ত্বকে রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া গুলোকে ধ্বংস করে।
সেই সাথে ত্বকের ময়লা ও তেলটে ভাব দূর করে ত্বক মসৃণ ও
উজ্জ্বল করে তোলে। শুধু তাই নয় নিয়ম করে নিয়মিত ত্বকে কালোজিরার তেল ব্যবহার করলে ত্বকের গভীরে এন্টিঅক্সিডেন্ট এর মাত্রা বাড়তে শুরু করে। এতে করে ত্বকের ভেতরে থাকা টক্সিক উপাদানগুলি ধ্বংস হয়। সাথে ত্বকের বলিরেখাও ধীরে ধীরে বিলীন হতে থাকে।
তবে আপনি যদি একেবারেই প্রথম কালোজিরা তেল ব্যবহার করছেন এমনটা
হয় সে ক্ষেত্রে বলবো ব্যবহারের আগে আপনি প্যাঁচ টেস্ট করে নিন। আবার
অতিরিক্ত কালোজিরা তেল ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বক অতি শুষ্ক চিটচিটে হতে
পারে। তাই বলবো অতিরিক্ত ব্যবহার না করে আপনি পরিমাণ মেনে আপনার ত্বকে
কালোজিরার তেল ব্যবহার করুন। এতে ভালো উপকার পাবেন।
কালোজিরা তেল মালিশ
কালোজিরা তেলের উপকারিতা জানার পর আপনি এবার নিশ্চয়ই কালোজিরা তেল মালিশ সম্পর্কে জানতে চান। কালোজিরার তেল মেসেজ করারও অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তা কি জানেন? তো চলুন কালোজিরা তেল মালিক সম্পর্কে জেনে নিন- আপনার শরীরের যেকোন স্থানে ব্যথা, মাংসপেশির ব্যথা কিংবা জয়েন্টের ব্যথা কমাতে ওই ব্যথিত স্থানে সরাসরি কালোজিরার তেল মেসেজ করুন এবং কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। দেখবেন কিছুক্ষণের মধ্যেই ব্যথা অনেকটাই কমে গেছে।
- নিয়মিত কালোজিরার তেল মালিশ করলে এটি আপনার রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ সঠিকভাবে হয়। এর জন্য আপনি হালকা ভাবে আপনার মাংসপেশি বা স্ক্যাল্পে কালোজিরার তেল ম্যাসাজ করুন। এতে করে আপনার রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া আরো উদ্দীপিত হবে।
- চুলে কালোজিরার তেল মালিশ করলে এটি আপনার চুল পড়া রোধ করে, চুলের আগা ফাটা দূর করে, চুলের স্ক্যাল্পে পুষ্টি পৌঁছায় এবং চুলের গোড়া মজবুত ও শক্তিশালী করে তোলে। এর জন্য আপনি কালোজিরা তেল আপনার মাথার স্ক্যাল্পে ভালো করে মেসেজ করুন এবং ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু বের হয়ে ফেলুন।
- আপনার ত্বকের যেকোনো ধরনের প্রদাহ দূর করতে আপনি কালোজিরার তেল মালিশ করতে পারেন। বিশেষ করে ত্বকের ব্রণ, ব্রণের দাগ, রোদে ট্যান পড়া ইত্যাদি দূর করতে মুখের ত্বকে কালোজিরা তেল মালিশ করুন। এর জন্য আপনি আপনার মুখ ও শরীরের ত্বকে কালোজিরার তেল লাগিয়ে ত্বকে তেল শোষণ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- নিয়মিত কালোজিরা তেলের মালিশ আপনার মানসিক চাপ কমাতেও ভালো কাজ করে এবং সেই সাথে আপনার শরীরের স্নায়ু ব্যবস্থাকে শিখন করতে সাহায্য করে।
- আপনার শিশুর বয়স যদি দুই বছরের কম হয় সে ক্ষেত্রে কালোজিরার তেল না খাইয়ে শরীরের বাহ্যিক অংশে মালিশ করতে পারেন।
- শীতকালে ত্বকের আদ্রতা ঠিক রাখতে এবং শুষ্কতা দূর করতে বডি লোশনের পরিবর্তে ত্বকে মালিশ করতে পারেন কালোজিরার তেল। যেহেতু কালোজিরার তেল অম্লীয় প্রকৃতির ঠিক সে কারণে আপনি সরাসরি কালোজিরার তেল ত্বকে ব্যবহার না করে কালোজিরা তেলের সাথে অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে পারেন।
- হার্টের সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং হার্ট সুস্থ রাখতে প্রতিদিন বুকে কালোজিরার তেল মালিশ করুন।
- চর্ম রোগের সমস্যায় আক্রান্ত স্থান পরিষ্কার করে ধুয়ে সেখানে কালোজিরা তেল মালিশ করতে পারেন।
- আর্থাইটিস বা বাতের ব্যাথার জন্য ব্যথার স্থানে খুব ভালো করে কালোজিরার তেল ম্যাসাজ করুন। এতে বাত ব্যথার উপশম ঘটবে।
- বুকে জমাটব্যথা কফ দূর করতে এবং সর্দি কাশি অতি দ্রুত সারাতে প্রতিদিন বুকে পিঠে কালোজিরার তেল মালিশ করলে আরাম পাবেন।
- কপালের উভয় চিবুকে এবং কানের চারপাশে কালোজিরার তেল ব্যবহার করলে মাথা ব্যথা দূর হয়।
- কানের ব্যথা কিংবা কানের যে কোন সমস্যা দূর করতে কানেও আপনি কালোজিরার তেল ব্যবহার করতে পারেন।
- হজমের সমস্যা দূর করতে আপনি আপনার পেটে কালো জিরার তেল নিয়মিত মালিশ করুন। এতে আপনার পেটের হজম ও গ্যাসের সমস্যা দূর হবে।
পুরুষাঙ্গে কালোজিরার তেল ব্যবহারের উপকারিতা
কালোজিরা তেলের আরো বহুবিধ উপকারিতা রয়েছে। আপনি কি জানেন পুরুষাঙ্গেও কালোজিরা তেল ব্যবহার করে এর থেকে বেশ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা পেতে পারেন। এবার চলুন জেনে আসি পুরুষাঙ্গে কালোজিরার তেল ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে-- প্রথমেই বলি কালোজিরা তেলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি বৈশিষ্ট্য যা আপনার যৌন স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। পুরুষাঙ্গে এই তেল ব্যবহারে এটি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধির মাধ্যমে আপনার যৌন কার্যক্ষমতা কে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
- কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, কালোজিরার তেল নিয়মিত ব্যবহার করলে এটি পুরুষের সেক্সুয়াল ইরেকটাইল ডিসফাংশন কমাতে সাহায্য করে।
- কালোজিরা তেলে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য আপনার পুরুষাঙ্গে চর্ম রোগের সংক্রমণ কমাতে কাজ করে।
- নিয়মিত পুরুষাঙ্গে কালোজিরা তেল ব্যবহার করলে এটি পুরুষাঙ্গের পেশী শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে।
- কালোজিরা তেলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং হাইড্রেটিং বৈশিষ্ট্য আপনার পুরুষাঙ্গের স্কিন নরম ও আদ্র রাখতে সাহায্য করে। এই তেল ব্যবহারে পুরুষাঙ্গের শুষ্কতা ও চুলকানির সমস্যা কমাতে উপকারী হতে পারে।
- পুরুষাঙ্গে যেকোনো ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন প্রতিরোধেও কার্যকার ভূমিকা রাখে কালোজিরার তেল।
- নিয়মিত পুরুষাঙ্গে কালোজিরা তেল ব্যবহার করলে এটি পুরুষাঙ্গে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে ফলে। ফলে যৌন ক্ষমতা বাড়ে।
- কালোজিরা তেল পুরুষাঙ্গে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে ফলে পুরুষাঙ্গের আকার সাময়িকভাবে বৃদ্ধি পায়। কিন্তু পুরুষাঙ্গের আকার বৃদ্ধির জন্য এটি স্থায়ী কোন সমাধান নয়।
- কালোজিরা তেলে এন্টি ইনফ্লামেটরি গুণ থাকার কারণে এটি পুরুষাঙ্গে ব্যথা ও অস্বস্তি কমাতেও সাহায্য করে। বিশেষ করে পুরুষাঙ্গের ভেতরে বা বাইরে কোন স্থানে ফুলে গেলে বা ব্যথা হলে এই তেল ব্যথা দমনে দারুন কাজ করে।
- আপনি জেনে অবাক হবেন যে, নিয়ম মেনে কালোজিরা তেল পুরুষাঙ্গে ব্যবহার করলে পুরুষের হরমোনাল ভারসাম্য ঠিকঠাক থাকে। বিশেষ করে এটি পুরুষের টেস্টোস্টেরন উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
- অকাল বীর্যপাতের সমস্যা মেকাবেলা করতে দারুন কার্যকর একটি উপাদান হলো কালোজিরার তেল। এই তেল পুরুষাঙ্গে মাখলে অকাল বীর্যপাত দূর হয় এবং পুরুষাঙ্গের দৃঢ়তা বৃদ্ধি পায়।
- পুরুষাঙ্গে নিয়মিত কালোজিরার তেল ব্যবহার করলে এটি পুরুষাঙ্গের ত্বক নানান ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
- একজন পুরুষের শরীরে অতিরিক্ত অ্যাস্ট্রোজেনের সমস্যা হলে সেটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে কেবলমাত্র কালোজিরা তেল।
- কালোজিরার তেল ব্যবহারে পুরুষাঙ্গের ভেতর কিংবা বাইরে ফোলা ভাব কিংবা ব্যথার অস্বস্তি থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
- নিয়মিত নিয়ম মেনে পুরুষাঙ্গে কালোজিরার তেল ব্যবহার করলে এটি একজন পুরুষের শরীরে হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখে। বিশেষ করে টেস্টোস্টেরন এবং অন্যান্য যৌন হরমোনের উৎপাদন গুলোকে প্রভাবিত করে। যা যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
- কালোজিরার তেল ব্যবহারে এটি আপনার মস্তিষ্কে ডোপামিন এবং সেরোটোনিনের লেভেল বাড়িয়ে দিয়ে মানসিক চাপ অনেকটাই কমিয়ে দেয়। ফলে যৌন শক্তি ও যৌন ইচ্ছা বৃদ্ধি পায়। শুধু তাই নয়, এটি যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে মানসিক চাপ হ্রাস করতেও ভালো কাজ করে।
কালোজিরা তেল কোথায় পাওয়া যায়
কালোজিরা তেলের এতসব উপকারিতা তো জানলেন। কিন্তু এই তেল আপনি কোথায় পাবেন তা কি জানেন? এবার আপনাকে জানাবো আপনি কালিজিরার তেল কোথায় থেকে সংগ্রহ করতে পারেন। কালোজিরার তেল ব্যবহার করার ইচ্ছা থাকলেও অনেকেই জানেন না এই তেল কোথায় পাওয়া যায়।তাহলে জেনে রাখুন, আপনি কালোজিরার তেল যে কোন হারবাল
স্টোর, ঔষধের দোকান, হোমিও ঔষধের দোকান, উন্নত মানের মুদি ও মসলার দোকানে, বিশেষ কিছু পুরানো আচারীর দোকানে, শুধুমাত্র ভেষজ পণ্য বিক্রি করা হয় এমন দোকান, আয়ুর্বেদিক সপ, বড় বড় সুপার মার্কেটগুলো, কিছু বড় ফার্মেসি এবং
এক্সক্লুসিভ
অর্গানিক স্টোর থেকে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের কালোজিরা তেল পেতে পারেন। আবার বর্তমান ডিজিটাল সময়ে আপনি অনলাইন
বিভিন্ন প্লাটফর্ম যেমন- amazon, flipkart, bikroy.com, দারাজ, ফেসবুক পেইজ এবং অন্যান্য ই-কমার্স
সাইট থেকেও সংগ্রহ করতে পারেন। আবার আপনার নিকটস্থ যে কোন হোমিও ডাক্তারের নিকট থেকেও কালোজিরা তেল সংগ্রহ করতে পারেন।
অনেক সময় বিভিন্ন মসজিদের সামনে বা রাস্তার ধারেও কালোজিরার তেল
বিক্রি করতে দেখা যায়। কিন্তু এই তেলের গুনগত মান নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই
যায়। তাই বলবো কালোজিরার তেল কিনতে হলে আপনি যত্রতত্র স্থান থেকে না কিনে ভালো জায়গা থেকে
মানসম্মত মানের তেল থেকে কিনুন। আশা করছি বুঝতে পেরেছেন।
চুলে কালোজিরা তেলের উপকারিতা
কালোজিরা তেল ও মধু খাওয়ার উপকারিতা আপনাকে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছি। এবার জানাবো চুলের যত্নে কালোজিরা তেল ব্যবহারের উপকারিতা সম্পর্কে। চুলে নিয়মিত কালোজিরার তেল ব্যবহার করলে আপনি যে যে উপকারিতা গুলো পেতে পারেন সেগুলো হল-- চুলের বৃদ্ধিতেঃ কালোজিরা তেলে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন আপনার চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে। সেই সাথে এটি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে যা কিনা চুলের বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।
- চুলের শুষ্কতা দূর করেঃ আপনার চুলের শুষ্কতা ও খসখসে ভাব দূর করতে কালোজিরা তেল ব্যবহার করতে পারেন। কারন এইটেইনের হাইড্রেটিং বৈশিষ্ট্য আপনার চুলের শুষ্ক ও খসখসে ভাব দূর করে নরম ও মসৃণ করে তোলে। শুধু তাই নয় এটি আপনার চুলের আদ্রতাও ফিরিয়ে আনে।
- চুলের ড্যানড্রাফ কমাতেঃ আপনার চুলে খুশকির প্রকোপ কমাতে আজ থেকেই কালোজিরা তেল ব্যবহারের অভ্যাস করুন। কারণ, এই তেলে থাকা এন্টিফাঙ্গাল ও এন্টি ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য স্ক্যাল্পের শুষ্কতা কমিয়ে মাথার ত্বকের ফাঙ্গাল ইনফেকশন প্রতিরোধ করে। যা খুব সহজেই খুশকি দূর করতে পারে।
- মাথার ত্বকের প্রদাহ কমাতেঃ নিয়মিত কালোজিরার তেল ব্যবহারে এটি আপনার মাথার ত্বকের নানান প্রদাহ কমাতে কাজ করে এবং চুলের ত্বক পরিষ্কার রাখে।
- চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতেঃ কালোজিরা তেল ব্যবহারের ফলে আপনার চুলের উজ্জ্বলতা প্রাকৃতিকভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে। কারণ, এই তেলে থাকা ফ্যাটি এসিড এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান চুলকে গভীর থেকে ময়শ্চারাইজ করে। ফলে চুল উজ্জ্বল ও মসৃণ হয়ে ওঠে।
- নতুন চুল গজায়ঃ কালোজিরা তেলে থাইমোকুইনোন নামক এক বিশেষ ধরনের উপাদান রয়েছে। ফলে নিয়মিত কালোজিরা তেল ব্যবহারে চুলের ফলিকল গুলি যেমন সক্রিয় হয়ে ওঠে তেমনি মাথায় নতুন করে চুল গজাতে শুরু করে।
- চুলের আগা ফাটা রোধ করেঃ চুলের আগা ফাটা সমস্যা আমাদের কমবেশি সকলেরই রয়েছে। চুলের আগা-ফাটা দূর করতে কালোজিরা তেল অত্যন্ত কার্যকরী প্রাকৃতিক একটি উপাদান। শুধু তাই নয় এটি চুনের আগা ফাটা রোধ করার পাশাপাশি চুলের স্থিতিস্থাপকতাও বাড়িয়ে দেয়।
- চুলের অকালপক্কতা দূর করেঃ কখনো কখনো চুলের মেলানিন উৎপাদন কমে গেলে চুলে হঠাৎ করেই পাক ধরতে শুরু করে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনি ব্যবহার করতে পারেন কালোজিরার তেল। কারণ, কালোজিরার তেলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলে মেলানিন উৎপাদনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। সাথে চুলের অকালপক্বতাও দূর হয়।
- চুলের গোড়া শক্ত করেঃ কালোজিরা তেলে রয়েছে ভিটামিন ই। তাছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ই এ দুটি উপাদান চুলের গোড়ায় প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে চুলের গোড়া মজবুত ও শক্তিশালী করে তোলে।
- চুলের রং ঠিক রাখেঃ কালোজিরা তেল চুলের প্রাকৃতিক কালো রং ধরে রাখতে সক্ষম।
- মাথার ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণ করেঃ নিয়মিত কালোজিরা তেল মাথায় ব্যবহার করলে এটি চুলের স্ক্যাল্পে অতিরিক্ত তেল উৎপাদন কমাতে সাহায্য করে। ফলে চুলের আদ্র ও ভারী ভাব দূর হয়।
- চুলের স্নিগ্ধতাঃ কালোজিরা তেলের ব্যবহারে আপনার চুলের সৌন্দর্য ও স্নিগ্ধতা আরো বেড়ে যায়। নিয়মিত কালোজিরার তেল সেবনে আপনার চুল হয়ে ওঠে ঝলমলে, উজ্জ্বল এবং কোমল।
কালোজিরা তেলের দাম ২০২৪
কালোজিরার তেল ও মধু খাওয়ার উপকারিতা পেতে আপনাকে প্রথমেই খাঁটি কালোজিরার তেল সংগ্রহ করতে হবে। কালোজিরার তেল আপনি কোথায় পাবেন তা ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছেন। এবার আপনাকে জানাবো কালোজিরা তেলের দাম সম্পর্কে। অনেকেই আছেন যারা কালোজিরা তেলের দাম সম্পর্কে ধারণা না থাকার কারণে কিনতে পারেন না। আশা করবো আজকের পর থেকে আপনার কালোজিরা তেল কিনতে আর অসুবিধা হবে না।সম্মানিত
পাঠক, আপনি যদি অল্প পরিমাণে কালোজিরা তেল কিনতে চান তাহলে ১০০ গ্রাম
কালোজিরার তেল পেয়ে যাবেন ৫০-৬০ টাকায়। আবার ৫০০ গ্রাম কালোজিরার তেল
পেয়ে যাবেন ৮০-১০০ টাকার মধ্যে। সে হিসেবে আপনি ১ কেজি কালোজিরার তেল
৩৭০-৫০০ টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন। অতীতে কালোজিরা তেলের দাম খুব একটা বেশি
ছিল না।
কিন্তু
বর্তমানে সময়ের সাথে সাথে কালোজিরা তেলের চাহিদা বাড়ায় এর দামও খানিকটা
বেড়েছে। আরেকটি কথা, বিভিন্ন ধরনের অনলাইন রেটেইলার, হারবাল স্টোর এ এই
তেলের দামের কিছুটা তারতম্য থাকতে পারে। তাই বলব কালোজিরা তেল কেনার পূর্বে
এর দাম যাচাই-বাছাই করে তবেই কিনবেন। এতে করে আপনার ঠকার সম্ভাবনা থাকবে
না।
কালোজিরা তেলের উপকারিতা সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য
কালোজিরার তেল ও মধু খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আপনারা আজকের আর্টিকেল থেকে বিস্তারিত ভাবে জানতে পেরেছেন। যে কোন খাবারের সুগন্ধ এবং স্বাদ বাড়াতে সচারচর কালোজিরা ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কালোজিরার পাশাপাশি এর তেলও বিশেষভাবে উপকারী। যা ইতিমধ্যেই আজকের আলোচনা থেকে আপনি অবগত হয়েছেন।আয়ুর্বেদিক
এবং কবিরাজি চিকিৎসাতেও কালোজিরা এবং কালোজিরা তেলের ব্যবহার যুগ যুগ ধরে
চলে আসছে। তাই বলব নিজে সুস্থ থাকতে এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সুস্থ
রাখতে আজ থেকেই আপনি কালোজিরার তেল সেবন শুরু করুন। ভালো থাকুন, সুস্থ
থাকুন এবং পরবর্তী আর্টিকেল পেতে আমাদের পিন পয়েন্ট ম্যাক্স ওয়েবসাইটের
সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।
পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url