সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি বিস্তারিত জেনে নিন

সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি জানতে চান? সিনামিন কোন রোগের ঔষধ হিসেবে সবচেয়ে বেশি বাবহারিত হয় জানেন কি? হয়তো জানেন না। তাহলে বলবো আর দেরি না করে আর্টিকেলটি এক্ষুনি একবার পড়ে নিন। 

সিনামিন-সিরাপ-এর-কাজ-কি-বিস্তারিত-জেনে-নিন
কারণ, আজকের এই আর্টিকেল থেকেই আপনি জেনে যাবেন সিনামিন সিরাপের কাজ এবং এটি কোন কোন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাথে আরও জানতে পারবেন সিনামিন সিরাপ আপনি কোন নিয়মে খাবেন সে নিয়ম সম্পর্কে।

পোস্ট সূচিপত্রঃ সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি

সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি

সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি তা আমরা অনেকেই জানিনা। সিনামিন সিরাপ সাধারণত ঠান্ডা কাশির উপসর্গ উপশমে ব্যবহৃত হয়। আলোচনার শুরুতেই চলুন জেনে নেই সিনামিন সিরাপের প্রধান কাজ গুলো কি কি সে সম্পর্কে-
  • কাশির উপশমেঃ সিনামিন সিরাপ সিনামিন সিরাপ কাশির জন্য এন্টিটুসিভ হিসেবে কাজ করে। কাশি হলে আপনি অন্য ঔষধ সেবন না করে সিনামিন সিরাপ খান। এটি আপনার শ্বাসনালীর জ্বালাপোড়া রোধ করবে এবং সেই সাথে কাশির রিফ্লেক্সকে নিয়ন্ত্রণ করবে। ফলে কাশি কম হবে।
  • শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখেঃ আপনি জেনে অবাক হবেন যে, এই সিনামিন সিরাপ শ্বাসনালীতে জমে থাকা শ্লেষ্মা বা সর্দি-নিষ্কাসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর ফলে শ্বাস নেওয়া সহজ হয় এবং শ্বাসকষ্টের প্রবণতা অনেকটাই কমে যায়।
  • অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্যঃ সিনামিন সিরাপে বিশেষ কিছু এন্টিসেপটিক উপাদান রয়েছে যা আমাদের শ্বাসনালীর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস জনিত সংক্রমণ কমাতে খুব ভালো কাজ করে।
  • প্রাকৃতিক উপাদানঃ বেশিরভাগ সিনামিন সিরাপ বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদান যেমন ধরুন- মধু, আদা, তুলসী ইত্যাদি সহযোগে প্রস্তুত করা হয়। এই উপাদানগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণই উপকারী।
  • প্রদাহ কমাতেঃ সিনামিন সিরাপে থাকা এন্টি ইনফ্লামেটরি গুণ আমাদের শরীরের প্রদাহ কমাতে বিশেষভাবে উপকারী।
  • কফ নিয়ন্ত্রণ করতেঃ সিনামিন সিরাপ খাওয়ার ফলে এটি দীর্ঘদিনের খুশখুসে শুকনো কাশি দূর করে এবং সেই সাথে সঠিক পরিমাণে কফ উৎপন্ন করতেও সাহায্য করে।
সিনামিন-সিরাপ-এর-কাজ-কি-বিস্তারিত-জেনে-নিন
  • মাইক্রোবায়াল সংক্রমণ প্রতিরোধেঃ সিনামিন সিরাপের মাইক্রোবায়াল বৈশিষ্ট্য আমাদের শরীরের ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের বৃদ্ধি রোধ করে। এতে করে সংক্রমণের ঝুঁকি কমে।
  • পেশির প্রদাহ কমাতেঃ সর্দি-কাশি কিংবা জ্বর হলে অনেক সময় আমাদের শরীরে ব্যথা হয়, পেশীতে ব্যথা হয়। পেশির এই ব্যথা কমাতে এবং ইনফ্লামেশন হ্রাস করতে দারুন কাজ করে সিনামিন সিরাপ।
  • মাথা ব্যথা কমায়ঃ সিনামিন সিরাপ মাথা ব্যথার উপশমে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
  • শক্তি বৃদ্ধি করেঃ সিনামিন সিরাপ শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে। ফলে রোগের সময় সিনামিন সিরাপ খেলে এটি শরীরকে আরো শক্তিশালী করে তোলে।
  • ডিহাইড্রেশন প্রতিরোধেঃ সিনামিন সিরাপ শরীরের পানি শূন্যতা দূর করে। যা অসুস্থতার সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • ঘুম ভালো হয়ঃ খুসখুস কাশি হলে অনেক সময় আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। সিনামিন সিরাপ খাবার ফলে কাশি দূর হয় এবং ঘুম ভালো হয়।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতেঃ সিনামিন সিরাপ শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে, বিশেষ করে সংক্রামক রোগের সময়।

সিনামিন কোন রোগের ঔষধ

সিনামিন সিরাপ কোন রোগের চিকিৎসায় ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয় তা অনেকেই জানতে চান। সিরামিন সিরাপ মূলত ঠান্ডা লাগা, সর্দি-কাশি এবং শ্বাসনালীর সংক্রমণের লক্ষণ কমাতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি এক ধরনের কফ সিরাপ। যা আমাদের শ্বাসকালিতে সর্দি কাশি হওয়ার কারণে শ্বাসনালীর জ্বালাপোড়া, খুশখুসে কাশি, অস্বস্তি ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে। 
শুধু তাই নয়, সিনামিন সিরাপ এলার্জি জনিত যেকোনো যেমন- ত্বকের চুলকানি, ফুসকুড়ি, চোখ চুলকানো ইত্যাদি প্রতিরোধেও খুব ভালো কাজ করে। তাছাড়া এই সিরাপে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান এবং অ্যান্টিসেপটিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শ্বাসনালীর প্রদাহ কমাতে বিশেষভাবে কার্যকরী। শুধু কি তাই!
 
আম বাতের মত রোগ প্রতিরোধেও সিনামিন সিরাপ দারুন কাজ করে। এছাড়াও ভ্রমণ জনিত কারণে বমি বমি ভাব, সাধারণ ঠান্ডা লাগা, মাইগ্রেনের সমস্যা, জ্বর জ্বর ভাব, ছুলি ইত্যাদি রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় সিনামিন সিরাপ। আবার শারীরিক অসুস্থতার সময় ঘুম কম হলে আপনি সিনামিন সিরাপ খেতে পারেন। তাতে ঘুম ভালো হবে।

সিনামিন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম

সিনামিন সিরাপের প্রধান কাজ গুলো কি কি তা ইতিমধ্যেই আমরা আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি। এবার আমরা জানবো সিনামিন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। ছোটদের এবং বড়দের ক্ষেত্রে অর্থাৎ বয়স ভেদে সিনামিন সিরাপ খাবার নিয়ম কিছুটা ভিন্ন। তো চলুন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন-
বড়দের ক্ষেত্রে সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
  • সাধারণত বড়দের জন্য সিনামিন সিরাপ প্রতিদিন ৪-৬ ঘন্টা পর পর ১০-২০ মিলি অর্থাৎ ২-৪ চা চামচ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
  • সিরামিন সিরাপ সাধারণত খাওয়ার পর খাওয়া উত্তম। কারণ, এতে সিরাপটি ভালোভাবে শরীরে শোষিত হয় এবং শ্বাসনালী কে সুরক্ষা প্রদান করে।
  • সিনামিন সিরাপ গ্রহণের সময় আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত, বিশেষ করে কাশির সময়।
ছোটদের ক্ষেত্রে সিনামিন সিরাপ খাওয়ার নিয়ম
  • শিশুদের জন্য সিনামিন সিরাপের ডোজ সাধারণত বয়স এবং ওজন অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
  • সে হিসেবে আপনার শিশুর বয়স যদি ৬ থেকে ১২ বছর হয় তাহলে প্রতিদিন ৪-৬ ঘন্টা অন্তর অন্তর ২ মিগ্রা করে খাওয়ানো উচিত।
  • আবার আপনার শিশুর বয়স ২ থেকে ৫ বছর হলে প্রতিদিন ৪-৬ ঘন্টা অন্তর ১ মিগ্রা করে সর্বোচ্চ ১২ মিগ্রা খাওয়ানো উচিত।
  • আর আপনার শিশু যদি ১ থেকে ২ বছর বয়সের হয় সেক্ষেত্রে রোজ ২ বার করে ১ মিগ্রা করে খাওয়ানো উচিত।
  • আপনার শিশু সিনামিন সিরাপ খাওয়ার পর পর্যাপ্ত পরিমাণ জল পান করতে উৎসাহিত করুন। যাতে করে সিরাপটি আপনার শিশুর শরীরে খুব ভালোভাবে শোষিত হয় এবং দ্রুত কাজ করে।
সিনামিন সিরাপ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা
সিনামিন সিরাপ খাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার নিম্নলিখিত কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত-
  • সিনামিন সিরাপের ডোজ সঠিকভাবে মেনে চলুন। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বা কম খাওয়া আপনার জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।
  • গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মা-বোনদের জন্য সিনামিন সিরাপ ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। অন্যথায় এটি আপনার শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
  • আপনার যদি ডায়াবেটিসের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই সিনামিন সিরাপ গ্রহণের পূর্বে চিকিৎসকের শরণাপন্ন  হওয়া উচিত।

সিনামিন খেলে কি ঘুম হয়

সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি তা ইতিমধ্যেই আজকের আলোচনায় জেনেছেন। আবার আপনারা অনেকেই জানতে চান সিনামিন সিরাপ খেলে কি ঘুম হয়? তাহলে জেনে রাখুন, সিনামিন সিরাপ খেলে আপনার ঘুম কিছুটা হতে পারে। কারণ, সিনামিন সিরাপ এর প্রধান উপাদান হলো সিনামালডিহাইড। যা কিনা দারুচিনি থেকে নিষ্কাশিত হয়। এই উপাদানটি আমাদের শরীরের স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে
 
এবং মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখে। শুধু তাই নয়, যখন আমরা সিনামিন সিরাপ সেবন করি ঠিক তখন এটি আমাদের শরীরের কিছু হরমোনের কার্যকলাপকে প্রভাবিত করে বিশেষ করে মেলাটোনিন। আর এই মেলাটোনিন সাধারণত ঘুম নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এছাড়াও সিনামিন সিরাপে থাকা অন্যান্য উপাদান যেমন- ভিটামিন ও মিনারেলস শরীরকে আরাম দেয় এবং মানসিক উদ্বেগ কমাতে কাজ করে।
 
শুধু তাই নয়, সিনামিন সিরাপে রয়েছে এন্টিহিস্টামিন যা এলার্জির প্রতিক্রিয়া কমাতে কাজ করে। কিন্তু এন্টিহিস্টামিন এর প্রধান পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হলো নিদ্রা অনুভূতি সৃষ্টি করা তা কি জানেন? হয়তোবা জানেন না। ঠিক এ কারণেই সিনামিন সিরাপ খেলে স্বাভাবিকভাবেই এটি খানিকটা ঘুমের উদ্রেক করে। তবে সবার ক্ষেত্রে একরকম নয়। কিছু কিছু মানুষের জন্য এটি ঘুমের পরিমাণ বাড়াতে পারে আবার নাও বাড়াতে পারে।

সিনামিন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম

সিনামিন সিরাপের কার্যকারিতা কি কি হতে পারে তা খানিক আগেই আপনি জানতে পেরেছেন। এবার চলুন সিনামিন ট্যাবলেট খাওয়ার কিছু নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিই -
  • যারা প্রাপ্তবয়স্ক রয়েছেন তারা দিনে দুইবার সিনামিন ট্যাবলেট খেতে পারবেন। তবে ডোজ অবশ্যই আপনাকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নির্ধারণ করতে হবে। কেননা আপনার শরীর স্বাস্থ্য অনুযায়ী দিনে কতটি ডোজ দেওয়া উচিত তা কেবল একজন চিকিৎসকই ভালো বুঝতে পারবে।
  • শিশুদের জন্য সাধারণত সিনামিন ট্যাবলেট এর ডোজ কম হয়। তবে ছয় বছরের উপরের বয়সের শিশুরা ডাক্তারি পরামর্শ অনুযায়ী সিনামিন ট্যাবলেট গ্রহণ করতে পারবে।
  • আপনি সিনামিন ট্যাবলেট খাওয়ার আগে কিংবা পরে খেতে পারেন। তাতে কোন অসুবিধা নেই। তবে খাওয়ার পরে খাওয়াটাই শরীরের জন্য বেশি ভালো।
  • আপনি চেষ্টা করবেন প্রতিদিন একই সময়ে সিনামিন ট্যাবলেটটি গ্রহণ করতে। যাতে করে আপনার শরীরে এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
  • ট্যাবলেটটি আপনি এক গ্লাস পানি দিয়ে গিলে খান এবং খাওয়ার পরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি গ্রহণ করুন। যাতে করে ট্যাবলেটটি খুব সহজেই হজম হয়ে যায় এবং অস্বস্তি এড়ায়।

সিনামিন ট্যাবলেট এর কার্যকারিতা

সিনামিন সিরাপ এর প্রধান প্রধান কাজ গুলি আমরা ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি। কিন্তু আপনি কি জানেন, সিনামিন সিরাপ এর মত সিনামিন ট্যাবলেট খাওয়ারও বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। সম্মানিত পাঠক, এবার চলুন জেনে নিই সিনামিন ট্যাবলেট এর বেশ কিছু কার্যকারিতা সম্পর্কে-
  • সিনামিন ট্যাবলেটে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যালসের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে।
  • আপনি কি জানেন সিনামিন ট্যাবলেট ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে কাজ করে। যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী।
  • সিনামিন ট্যাবলেট সেবনে একটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
  • এই ট্যাবলেটের অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন ধরনের সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সক্ষম। অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাস জনিত সংক্রমণ রোধে কাজ করে সিনামিন ট্যাবলেট।
  • সিরামিন ট্যাবলেট এ থাকা এন্টিহিস্টামিন যা এলার্জিজনিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন- শ্বাসকষ্ট, চুলকানি, ফুসকুড়ি, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, হাঁচি, কাশি ইত্যাদি কমাতে কাজ করে।
  • সিনামিন ট্যাবলেট খেলে এটি শ্বাসনালী প্রশস্থ করে। ফলে শ্বাস নিতে সুবিধা হয় এবং শ্বাসকষ্ট অনেকটাই কমে যায়।
  • শুধু তাই নয়, ট্যাবলেট শরীর থেকে মিউকাস বা শ্লেষ্মা নিষ্কাশন করতে সাহায্য করে। ফলে শ্বাস তন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
  • শরীরের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহ বিশেষ করে মাথাব্যথা, পেশি ব্যথা এবং শারীরিক অন্যান্য অস্বস্তি কমাতে কাজ করে সিনামিন ট্যাবলেট।
  • ট্যাবলেট নিয়ম করে খেলে এটি শ্বাসনালীর বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন- সাইনোসাইটিস এবং ব্রঙ্কাইটিস এর মত রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।
  • জ্বর কমাতে এবং জ্বরের সাথে শারীরিক অস্বস্তি ও যন্ত্রণা কমাতে দারুন কাজ করে সিনামিন ট্যাবলেট।
  • সাধারণত জ্বর কিংবা শ্বাস কষ্টের সমস্যা হলে আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে আপনি সিনামিন ট্যাবলেট খেতে পারেন। কারণ সিরামিন ট্যাবলেট ঘুম বাড়াতে কাজ করে।
  • সিনামিন ট্যাবলেটে থাকা কিছু উপাদান রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যকারিতা আরো বেড়ে যায়।
সম্মানিত পাঠক, জানিয়ে দিলাম সিনামিন ট্যাবলেট এর কার্যকারিতা সম্পর্কে। ফলে যার হাঁচি-কাশি সর্দি এবং এলার্জি জনিত যেকোনো সমস্যাই আপনি সিরামিন ট্যাবলেট খেতেই পারেন। তবে আপনি যদি বিশেষ কোনো চিকিৎসার মধ্যে থাকেন সেক্ষেত্রে সিনেমিন ট্যাবলেট সেবনের পূর্বে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে তবেই সেবন করবেন।

সিনামিন ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

সিনামিন ট্যাবলেট এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আমাদের জেনে রাখা উচিত। সিনামিন ট্যাবলেট যদিও স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী তবুও এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। যেমন ধরুন-
  • অতিরিক্ত মাত্রায় দীর্ঘদিন ধরে সিনামিন ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে আপনার অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া বেড়ে যেতে পারে।
  • সিনামিন গ্রহণের পর আপনার পেটে অস্বস্তি গ্যাস কিংবা ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে, যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে সিনামিন ট্যাবলেট খেয়ে ফেলেন।
  • সিরামিন ট্যাবলেট কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্তচাপ বাড়াতে বা কমাতে পারে যা হৃদরোগের রোগীদের জন্য বিপদজনক হতে পারে।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে সিনামিন ট্যাবলেট খেলে এতে থাকা কারকিউমিনের উপস্থিতি আপনার লিভারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। বিশেষ করে যারা লিভারের সমস্যায় ভুগছেন তাদের সিনামিন ট্যাবলেট খাওয়ার পূর্বে সতর্ক থাকা উচিত।
  • গর্ভবতী মা-বোনদের জন্যও সিনামিন ট্যাবলেট গ্রহণের পূর্বে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ এটি গর্ভপাত এবং গর্ভকালীন সময়ের অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
  • আপনি যদি চিকিৎসার মধ্যে থাকেন কিংবা ডায়াবেটিসের জন্য নিয়মিত ঔষধ সেবন করে থাকেন সেক্ষেত্রে সিনামিন ট্যাবলেট আপনার ঔষধের সাথে প্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারে।
  • অতিরিক্ত পরিমাণে সিনামিন ট্যাবলেট খেলে এটি আপনার অতিরিক্ত ঘুমের কারণ হতে পারে।
সম্মানিত পাঠক, সিনামিন ট্যাবলেটের এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো সম্পর্কে আমাদের সকলেরই সচেতন থাকা জরুরী। মনে রাখবেন, এই ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে যদি আপনার শরীরে কোন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তবে অবশ্যই আপনার একজন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

সিনামিন ৪ মিগ্রা এর কাজ কি

সিনামিন ৪ মিগ্রা এর কাজ কি তা অনেকেই জানতে চান। সিনামিন ৪ মিগ্রা মূলত এন্টিহিস্টামিন হিসেবে কাজ করে। এর প্রধান কাজ হল এলার্জি জনিত বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ কমানো। এর মাধ্যমে শরীরের অ্যান্টিহিস্টামিন রিসেপ্টর ব্লক করে এবং সেই সাথে এলার্জির কারণে সৃষ্ট চুলকানি, হাঁচি, কাশি, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা সমাধানে অতি দ্রুত কাজ করে। এছাড়াও এটি শ্বাসনালীও প্রশস্ত করে। 

ফলে শ্বাসকষ্ট দূর হয়। আবার কিছু ক্ষেত্রে সিনামিন ৪ মিগ্রা মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের সমস্যা দূর করতেও খুব ভালো কাজ করে। শুধু তাই নয়, ভালো ঘুমের জন্যও আপনি সিনামিন ৪ মিগ্রা সেবন করতে পারেন। কারণ এটি ভালো ঘুমের জন্যও সহায়ক হিসেবে কাজ করে। সবশেষে বলবো সিনামিন আমাদের শরীরের মধ্যে অতিরিক্ত তরল পদার্থ নিষ্কাশনে কাজ করে। যা স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণই উপকারী।

সিনামিন সিরাপ দাম কত ২০২৪

সিনামিন সিরাপ দাম কত জানেন কি? সিরাপ এর দাম মূলত নির্ভর করে এর ব্র্যান্ডিং এবং প্যাকেজিং এর ওপর। সাধারণভাবে ১০০ মিলিলিটার সিনমিন সিরাপ আপনি পেয়ে যাবেন ১৫০-২৫০ টাকার মধ্যে। আবার অন্যদিকে ২৫০ মিলিলিটার সিনামিন সিরাপ আপনি পাবেন ৩৫০-৪৫০ টাকার মধ্যে। তবে স্থানভেদে এবং ফার্মেসি ভেদে এই দাম কিছুটা কম বেশি হতে পারে।
সিনামিন-সিরাপ-এর-কাজ-কি-বিস্তারিত-জেনে-নিন

সিনামিন ট্যাবলেট দাম কত ২০২৪

সিনামিন ট্যাবলেট দাম সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। সিনামিন ট্যাবলেটের একটি পাতায় সাধারণত ১০ টি করে ট্যাবলেট থাকে। আবার এর দামও সিনামিন সিরাপ এর থেকে তুলনামূলক ভাবে অনেকটাই কম। সিনামিন ট্যাবলেট উৎপাদন করে থাকে সিনা ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেড। প্রতি পিস ৪ মিগ্রা সিনামিন ট্যাবলেট এর দাম পড়ে বর্তমানে ০.৩ টাকা। সে হিসেবে এক প্যাকেজ সিনামিন ট্যাবলেটের দাম পড়বে ১৫০ টাকা।

সিনামিন সিরাপ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া

সিনামিন সিরাপের কার্যকারিতা যেমন রয়েছে তেমনি এর কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে। আর এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো তখনই দেখা দিবে যখন আপনি নিয়ম না মেনে দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত পরিমাণে সেবন করবেন। এবার চলুন সিনামিন সিরাপ অতিরিক্ত খাওয়ার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে রাখুন-
  • প্রথমেই বলি, অতিরিক্ত পরিমাণে সিনামিন সিরাপ খাওয়ার ফলে আপনার মাথা ঘোরা, শরীর ঝিমঝিম করা বা শারীরিক দুর্বলতার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে সিনামিন সিরাপ খেলে আপনার মূত্রের প্রবাহে পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। আবার মুত্রের রং পরিবর্তন হতে পারে। তবে এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।
  • অনেক সময় অতিরিক্ত পরিমাণে সিনামিন সিরাপ খেলে পেটের ব্যথা হতে পারে এবং পেটের অস্বস্তি বেড়ে যেতে পারে।
  • অত্যধিক পরিমাণে সিনামিন সিরাপ দীর্ঘদিন যাবত খেতে থাকলে আপনার মুখের শুষ্কতা বেড়ে যেতে পারে।
  • সিনামিন সিরাপের কিছু উপাদান পেটে গ্যাস সৃষ্টি করতে পারে। যার ফলে বমির উদ্রেগ হতে পারে।
  • সিনামিন সিরাপ খেলে ঘুম হয় এ কথা ঠিক, কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে নিদ্রাহীনতা দেখা দেয়।
সম্মানিত পাঠক, সিনামিন সিরাপের উপরিউক্ত পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো এড়াতে আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে না খেয়ে বরং নিয়ম মেনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমিত মাত্রায় সিনামিন সিরাপ খাওয়ার অভ্যাস করুন। তাতে ভালো ফল পাবেন।

সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি এ সম্পর্কে লেখকের মন্তব্য

সিনামিন সিরাপ এর কাজ কি আশা করছি আজকের পোস্টটি পড়ে আপনি বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন। সম্মানিত পাঠক, সিনামিন সিরাপ প্রধানত ঠান্ডা, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট জনত রোগেই বেশি ব্যবহৃত হয়। এই সিরাপটি অন্যান্য সিরাপের থেকে তুলনামূলকভাবে দ্রুত কাজ করে এবং এর তেমন কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে।
 
আবার শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের জন্যই সিনেমিন সিরাপ বিশেষভাবে কার্যকরী। তবে দীর্ঘমেয়াদি সেবনের পূর্বে এবং গুরুতর উপসর্গের ক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে সিনামিন সিরাপ সেবন করা উচিত। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আর পরবর্তী আর্টিকেল পেতে আমাদের পিন পয়েন্ট ম্যাক্স ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url