ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির উপায় জানতে বিস্তারিত পড়ুন

ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে চান? ফ্যাটি লিভার দূর করার ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে আপনি কি অবগত আছেন? যদি না থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে নিন।

ফ্যাটি-লিভার-থেকে-মুক্তির-উপায়-জানতে-বিস্তারিত-পড়ুন

কারণ, আজকে আমরা আলোচনা করবো ফ্যাটি লিভার থেকে আপনি কিভাবে মুক্তি পেতে পারেন এবং ফ্যাটি লিভার  দূর করার বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। সাথে আরো আলোচনা করবো ফ্যাটি লিভার হলে আপনার কি কি খাবার খাওয়া উচিত। তো চলুন আলোচনা শুরু করা যাক।

পোস্ট সূচিপত্রঃ ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির  উপায়

নীরব ঘাতক ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির উপায়

মানবদেহের একটি শক্তিশালী অঙ্গ হল লিভার। লিভারে সাধারণত চর্বি জমলে তাকে ফ্যাটি লিভার বা হেপাটিক স্টেটোসিস বলে। বর্তমান বিশ্বে এই ফ্যাটি লিভার অতিমারি আকার ধারণ করেছে। তাছাড়া আমাদের দেশেও প্রতি চারজনে একজন ব্যক্তি এই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত। সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসকেই ফ্যাটি লিভারের কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়।
 
এখন প্রশ্ন হল অতিমারি এই ফ্যাটি লিভার থেকে কি আদৌ মুক্তি পাওয়া সম্ভব? এর উত্তর হল অবশ্যই সম্ভব। যারা ফ্যাটি লিভার নিয়ে অতি চিন্তিত তারা তাদের জীবন যাপন এবং খাদ্যাভাসের কিছু পরিবর্তন করলেই এই ফ্যাটি লিভার থেকে খুব সহজেই মুক্তি পেতে পারেন। তো চলুন যেসব পরিবর্তন ফ্যাটি লিভার থেকে আপনাকে মুক্তি দিতে পারে সে উপায় গুলো জেনে নিন--
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণঃ আপনার কি ডায়াবেটিস রয়েছে? যদি থাকে তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডায়াবেটিস নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখুন। কারণ, অধিকাংশ ডায়াবেটিসের রোগী ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। সুতরাং ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে চাইলে আপনাকে প্রতিনিয়ত রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
  • সুষম খাদ্যাভ্যাসঃ ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির আরেকটি উপায় হলো আপনার অনিয়ন্ত্রিত অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস পরিবর্তন করতে হবে। অর্থাৎ আপনার খাদ্য তালিকায় ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার রাখতে হবে যেগুলো খেলে আপনার পেট অনেকক্ষণ পর্যন্ত ভরা থাকবে এবং ক্ষুধার প্রবণতাও কম থাকবে।
  • এক্ষেত্রে আপনি বিভিন্ন কাঁচা, টাটকা সতেজ এবং রঙিন শাকসবজি ইত্যাদি খেতে পারেন এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আশ রয়েছে। শাকসবজির পাশাপাশি বিভিন্ন মৌসুমী ফলমূল, দুগ্ধ জাতীয় খাবারের মধ্যে টক দই রাখতে পারেন। টক দই এটি প্রবায়োটিক হিসেবে কাজ করে এবং আপনার হজমের সাহায্য করবে। সর্বোপরি শর্করা এবং চিনি যুক্ত খাবার পরিত্যাগ করে চলবেন।
  • অ্যারোবিক ব্যায়ামঃ খাদ্যাভাস পরিবর্তনের পাশাপাশি আপনি প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট সময় হাতে রাখুন অ্যারোবিক ব্যায়ামের জন্য। অ্যারোবিক ব্যায়াম আপনার মেটাবলিজম বাড়িয়ে চর্বি ঝরাতে সাহায্য করে। ফলে লিভার কে সুস্থ রাখতে এই ব্যায়াম অত্যন্ত জরুরী। আবার আপনি প্রতিদিন হাঁটাহাঁটি, সাঁতার বা সাইক্লিং করেও লিভারের চর্বি ঝরাতে পারেন। সুতরাং প্রতিদিন ব্যায়াম করার একটি রুটিন তৈরি করুন এবং সেই অনুযায়ী আপনি আগাতে থাকুন।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাঃ যাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে নেই, অর্থাৎ অতিরিক্ত ওজন তাদের ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। সুতরাং এই রোগ থেকে বাঁচার অন্যতম উপায় হলো ওজন কমিয়ে আনা। এর জন্য আপনাকে খুব বেশি ওজন কমাতে হবে তাও নয় বরং শরীরের মোট ওজনের প্রায় ১০% কমিয়ে আনলেই হবে। তাই প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করে আপনি আপনার ওজন কমিয়ে আনুন।
ফ্যাটি-লিভার-থেকে-মুক্তির-উপায়-জানতে-বিস্তারিত-পড়ুন
  • রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণঃ অনেক সময় রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে আপনি ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হতে পারেন। আর তাই তিনি যুক্ত খাবার পরিহার করে আপনি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বেছে নিন। এতে করে আপনার জন্য ফ্যাটি লিভার থেকে রক্ষা পাওয়া কিছুটা সহজ হবে।
  • অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুনঃ আপনার অ্যালকোহল সেবনের অভ্যাস থাকলে তা আজ থেকেই পরিত্যাগ করুন। কারণ, অ্যালকোহল সেবনে এটি আপনার লিভারের ওপর প্রভাব ফেলে এবং ফ্যাটি লিভার রোগকে লিভার ক্যান্সারের দিকে ধাবিত করে। সুতরাং অ্যালকোহল সেবনের মতো এই বদ অভ্যাস আপনাকে অবশ্যই বাদ দিতে হবে।
  • ধূমপান পরিহার করুনঃ আপনার ধূমপানের অভ্যাস থাকলে যত দ্রুত সম্ভব সেটি ত্যাগ করুন। কারণ ধূমপান আপনার ফ্যাটি লিভারের কারণ হতে পারে এবং লিভারের সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে। ইনসুলিন সেনসিটাইজার ইনসুলিন সেনসিটাইজার কিছু ঔষধ রয়েছে যেগুলো চিকিৎসায় সাধারণত ব্যবহৃত হয়। এই ইনসুলিন সেন্সিটাইজার ইনসুলিনের প্রতি শরীরের সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে তোলে যা আপনার ডায়াবেটিসকে উন্নত করতেও সাহায্য করে।
  • কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণঃ ফ্যাটি লিভারের আরেকটি অন্যতম কারণ হলো রক্তের অত্যাধিক মাত্রায় কোলেস্টেরল থাকা। বিভিন্ন ধরনের জাঙ্ক ফুড, অস্বাস্থ্যকর খাবার, তৈলাক্ত ভাজাপোড়া খাবার খাওয়ার ফলে তা লিভারে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে লিভার সিরোসিস এর মত রোগ সৃষ্টি করে। আর তাই সুষম খাদ্যাভাস এবং প্রতিদিন ব্যায়াম করে শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আপনি ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
সম্মানিত পাঠক, ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে আপনি উপরিউক্ত নিয়ম গুলো মেনে চলার অভ্যাস করুন।  কেননা ফ্যাটি লিভারের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা এখনো পর্যন্ত নেই। কেবলমাত্র সুস্থ জীবন যাপন এবং নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাসের মাধ্যমেই আপনি ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

ফ্যাটি লিভার আসলে কি?

ফ্যাটি লিভার আসলে কি? আমরা অনেকেই জানি আবার আমরা অনেকেই জানিনা। কিন্তু ফ্যাটি লিভারের মতো এই নীরব ঘাতক থেকে মুক্তি পেতে হলে আপনাকে প্রথমেই জানতে হবে ফ্যাটি লিভার কি এবং এই রোগ কেন হয়। তবেই আপনি এই রোগ প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। খুব সহজ কথায় বলতে গেলে, ফ্যাটি লিভার মানে হল লিভারে বা যকৃতে চর্বি জমা।
আমরা সারাদিনে যে খাবার খাই বিশেষ করে কার্বোহাইড্রেট বা ফ্যাট জাতীয় খাবার যা আমাদের শরীরে দরকার হয়, তার অতিরিক্ত টুকু লিভার চর্বি বানিয়ে নিজের কাছে গচ্ছিত রাখে তার ভবিষ্যতের প্রয়োজনে। ভবিষ্যতে যখন আমাদের শরীরে ফ্যাটের দরকার পড়ে অর্থাৎ আমরা যখন রোজা রাখি বা হার্ড ডায়েট প্ল্যান মেইনটেইন করি ঠিক তখন লিভার ওই ফ্যাট ভেঙ্গে এনার্জি বানিয়ে আমাদের শরীরে সরবরাহ করে। 
 
কিন্তু আমরা যদি ওই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার বা ফ্যাট জাতীয় খাবার প্রয়োজন এর থেকে বেশি খাই তখন আমাদের শরীর যতটুকু ক্যালরি বার্ন করতে পারে তার থেকে বেশি ক্যালরি আমাদের আমাদের শরীরে জমা হয়ে যায়। ফলে শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাথে সাথে আমাদের লিভারেও চর্বি জমতে শুরু করে। যা পরবর্তীতে ফ্যাটি লিভারের রূপ ধারণ করে।
 
সাধারণত আমাদের লিভারে ৩-৪ পাউন্ড চর্বি থাকে এবং লিভার সেলের চারপাশেও কিছুটা চর্বি থাকে। এই চর্বির পরিমাণ কোনভাবে ১০ শতাংশের বেশি হলেই তা ফ্যাটি লিভার হিসেবে ধরা হয়। ফ্যাটি লিভার সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। এর একটি হল এলকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ এবং অপরটি নন এ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। এবার আসুন এই দুই ধরনের ফ্যাটি লিভার সম্পর্কে আপনাকে কিছুটা ধারণা দিই-
  • এলকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (Alcoholic Fatty Liver Disease): অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ সাধারণত অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে হয়ে থাকে। মদ এমনিতেই আমাদের শরীরের ক্ষতি করে। তাছাড়া লিভারে ফ্যাট জমার অন্যতম কারণ হতে পারে মদ্যপান। শুধু মদ নয় , এমনকি বিয়ার থেকেও আপনার লিভারে ফ্যাট জমতে পারে।
  • নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ(Non Alcoholic Fatty Liver Disease): সাধারণত মদ্যপান অথবা বিশেষ কিছু ঔষধ সেবনের ফলে লিভারে ফ্যাটের সঞ্চয় হয়। কিন্তু এই দুই কারণ ছাড়াও যখন এই রোগ দেখা দেয় তখন সেটিকে বলা হয় নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। এই নন-অ্যালকোহলি ফ্যাটি লিভার ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো ডায়াবেটিস, 
  • উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত চিনি ও কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়া, বেশি তৈলাক্ত এবং মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস, অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন, ওবেসিটি এবং অস্বাভাবিক কোলেস্টেরল।

ফ্যাটি লিভারের কারণ

ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির উপায় আমরা ইতিমধ্যেই আজকের আলোচনায় জেনেছি। বর্তমানে সভ্যতার অগ্রগতির সাথে সাথে নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। আর ফ্যাটি লিভার এর মধ্যে অন্যতম একটি। ফ্যাটি লিভার হওয়ার প্রধান কারণ হলো মেটাবলিক সিনড্রোম যা প্রধান কয়েকটি রোগের সমষ্টি। আসুন এবার জেনে নিই ফ্যাটি লিভার কেন হয় বা এর কারণ গুলো কি কি--

  • আমাদের যখন ওজন বাড়তে থাকে তখন কিন্তু আমাদের মাংসপেশি বা হাড়ের ভলিউম বাড়ে না। যা বাড়ে তা হল চর্বি এবং এই অতিরিক্ত চর্বিটি লিভারের মধ্যে জমা হয়। ফলে ফ্যাটি লিভারের অন্যতম একটি কারণ হতে পারে এই ওবেসিটি।
  • উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে ফ্যাটি লিভার হতে পারে। কারণ উচ্চ রক্তচাপ লিভারের যেমন ক্ষতি করে তেমনি লিভারে চর্বি জমতেও সাহায্য।
  • দ্রুত ওজন হ্রাসের ফলে লিভারের চর্বি জমতে পারে।
  • বিপাকীয় সিনড্রোম হল একাধিক ঝুঁকির কারনের সমন্বয় যা আপনার লিভারের ঝুঁকিকে অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়।
  • অনেকেই আছেন যারা অনিদ্রায় ভোগেন। এই নিদ্রাহীনতা লিভারের বিপাকে প্রভাবিত করে এবং লিভারের চর্বি জমতে সাহায্য করে।
  • কিছু ঔষধের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার যেমন- স্টেরয়েড আপনার লিভারে চর্বি জমাতে থাকে। পরবর্তীতে ফ্যাটি লিভারে রূপ নেয়। তাছাড়া টিবির ঔষধ,হরমোন ঔষধ এবং ব্যথার ঔষধ সহ আরো কয়েকটি অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের ফলে আপনার লিভারের কর্মক্ষমতা কমে যেতে থাকে।
  • রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি এবং ট্রাইগ্লিসারাইড এর ফলে লিভারে চর্বি জমতে পারে।
  • তাছাড়া কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, হেপাটাইটিস সি, উইলসন ডিজিজ এবং অতিরিক্ত মদ্যপান ইত্যাদির কারণেও ফ্যাটি লিভার হতে পারে।

ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ

ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ বোঝা বেশ কষ্টসাধ্য।  কারন, ফ্যাটি লিভার আক্রান্ত হলে আমাদের শরীরে এর  সরাসরি কোন উপসর্গ পরিলক্ষিত হয় না বললেই চলে। তবে পেটের আল্ট্রাসাউন্ড অথবা কিছু নির্দিষ্ট রক্ত পরীক্ষা করলে ফ্যাটি লিভার সনাক্ত করা সম্ভব। এবার চলুন ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হলে কি কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে আপনার শরীরে সেগুলো জেনে নিন-

  • ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হলে পেটে ব্যথা হতে পারে। বিশেষ করে পেটের উপরের ডান দিকে ব্যথা অনুভূত হয়।
  • ফ্যাটি লিভারের সবচেয়ে বড় লক্ষণ হলো কোমরের মাপ অর্থাৎ ভুঁড়ি অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়া।
  • ফ্যাটি লিভারের কারণে অনেক সময় বমি বমি ভাব দেখা দেয়।
  • অল্পতেই আপনার শরীরে ক্লান্তি ভাব চল আসবে এবং শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে।
  • ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার আরেকটি লক্ষণ হলো আপনার ক্ষুধা হঠাৎ করে কমে যেতে পারে এবং ওজন হ্রাস পেতে পারে।
  • আপনার ত্বক এবং চোখের সাদা অংশে হালকা হলুদ আপ বর্ণের আভা দেখা দিতে পারে।
  • অনেক সময় আপনার পেট ফুলে যেতে পারে।
  • পেট ফুলে যাওয়ার সঙ্গে পা এমনকি শরীরের অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও ফুলে যেতে পারে।
  • ফ্যাটি লিভার হলে শরীর থেকে টক্সিন বের হতে পারে না। যার ফলস্বরূপ আপনার প্রস্রাব হবে হলুদ এবং দুর্গন্ধযুক্ত হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খাওয়ার পরেও যদি আপনার প্রস্রাবের রং গন্ধ পরিবর্তন না হয় সেক্ষেত্রে ফ্যাটি লিভার পরীক্ষা করে না উচিত। কারণ, এটিও ফ্যাটি লিভারের একটি লক্ষণ।
  • ওজন বাড়ার সাথে সাথে অনেকের ক্ষুধার মাত্রা বেড়ে যায়। এমন সময় মিষ্টি বা চিনি জাতীয় খাবারের প্রতি আসক্তি বাড়লে সেটি ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ হতে পারে।
  • অনিয়ন্ত্রিত বা অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের ফলে আপনার লিভারে চাপ পড়ে ফলে হজম নি সমস্যা হয় এতে করে অনেক সময় বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এটিও ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম একটি লক্ষণ।
  • ফ্যাটি লিভার হলে মাথা ব্যথা, মন খারাপ, অবসাদ ডিপ্রেশন এগুলোও দেখা দিতে পারে।

ফ্যাটি লিভার হলে কি খাওয়া উচিত

ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে আপনাকে প্রথমেই গড়ে তুলতে হবে নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন এবং রুচিসম্মত খাদ্যাভ্যাস। ফ্যাটি লিভারের কার্যত তেমন কোন চিকিৎসা নেই বললেই চলে। কেবলমাত্র খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, ওজন কমানো এবং শারীরিক পরিশ্রমই পারে এই রোগ থেকে আপনাকে পরিত্রান দিতে। এবার তাহলে জেনে নিন ফ্যাটি লিভার হলে আপনার খাদ্যাভাস কেমন হওয়া উচিত বা কি কি খাবেন--
  • কাঁচা হলুদ এবং কাঁচা রসুনঃ কাঁচা হলুদের কারকিউমিন এবং কাঁচা রসুন আপনার লিভার বা যকৃতের প্রদাহ কমাতে বেশ কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। ফলে আপনি প্রতিদিন নিয়ম করে কয়েক কোয়া কাঁচা রসুন চিবিয়ে এবং তরকারির সাথে মসলা হিসেবে কাঁচা হলুদ খেতে পারেন।
  • সবুজ/ রঙিন শাকসবজিঃ সাধারণত সবুজ পাতাযুক্ত শাক সবজির মধ্যে যে নাইট্রেট ও পলিফেনল পাওয়া যায় তা আপনার যকৃতের চর্বি কমাতে সক্ষম। তবে রান্না করে ফেললে এই পলিফেননের মাত্রা অনেকটাই কমে যায়। তাই আপনি চেষ্টা করবেন রান্না না করে যতটা সম্ভব সালাদের সাথে বিভিন্ন পাতাযুক্ত কাঁচা সবজি যেমন- সিম, সিমের বিচি, বরবটি, ব্রকলি, মিষ্টি কুমড়া, গাজর বিটরুট এবং লেটুস পাতা সহ অন্যান্য সবজি খেতে চেষ্টা করবেন।
  • অন্যান্য সবজিঃ যেকোনো ধরনের শাক, কলার মোচা, ঢেঁড়স, কচুর লতি, শিম, শালগম, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি, পটল, কচু, বেগুন, মিষ্টি আলু, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা ইত্যাদি খেতে পারেন যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
  • সামুদ্রিক মাছঃ বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ যেমন টুনা, রূপচাঁদা, ইলিশ, সার্ডিন ইত্যাদি অমেগা৩ তেল যুক্ত সামুদ্রিক মাছ খেলে এটি আপনার এইচডিএল(HDL) কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় এবং ট্রাইগ্লিসারাইড কমিয়ে লিভারে চর্বি কমাতে সাহায্য করে। তাছাড়া বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তদের সপ্তাহে অন্তত তিন দিন সামুদ্রিক মাছ খাওয়া উচিত।
  • বাদামঃ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হলে আপনি বিভিন্ন ধরনের বাদাম জাতীয় খাবার যেমন কাঠবাদাম, চিনাবাদাম, আখরোট, কাজুবাদাম ইত্যাদি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কারণ, বাদাম ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমায় এবং সেই সাথে লিভারের প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতেও সাহায্য করে। ওটস এবং জটিল শর্করা ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে আপনাকে জটিল শর্করা যেমন যবের রুটি, লাল আটার রুটি,  ওটস ইত্যাদি খেতে হবে।
  • ডাল এবং বীজ জাতীয় খাবারঃ সাধারণত যেসব খাবারে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে সেগুলো ট্রাই গ্লিসারাইড কমাতে সাহায্য করে এবং আপনার পরিপাক তন্ত্রের জন্যও স্বাস্থ্যকর। সে হিসেবে আপনি আশ জাতীয় বিভিন্ন খাবার যেমন- ডাল, ছোলা, মটরশুটি, সয়াপ্রোটিন, সূর্যমুখীর বীজ ইত্যাদি খেতে পারেন। বিশেষ করে সূর্যমুখীর বীজ ফ্যাটি লিভারের জন্য খুবই উপকারী কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই রয়েছে।
  • গরুর মাংসঃ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হলে আপনি মাঝেমধ্যে গরুর মাংস খেতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে বলে রাখি, চর্বির অংশটুকু বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সলিড ১-২ টুকরো মাংস একবেলা খাবেন।
  • মুরগির মাংসঃ অনেকেই মুরগির চামড়াসহ মাংস খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু ফ্যাটি লিভার হলে আপনাকে অবশ্যই মুরগির চামড়া ছাড়িয়ে খেতে হবে।
  • সেদ্ধ ডিমঃ অনেকেই মনে করেন ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হলে প্রোটিন গ্রহণ করা যাবে না। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ভুল, বরং আপনার খাদ্য তালিকায় অবশ্যই উন্নতমানের প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখতে হবে। সে হিসেবে আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় একটি সেদ্ধ ডিম রাখতেই পারেন।
  • ডেইরি প্রোডাক্টঃ ডেইরি প্রোডাক্ট এর মধ্যে আপনি টক দই, নন ফ্যাট মিল্ক ইত্যাদি খেতে পারেন।
  • মৌসুমী ফলঃ বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফল যেমন- আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম্বুরা, জামরুল ইত্যাদি আপনার খাদ্য তালিকায় যোগ করতে হবে।
  • লেবু পানিঃ বর্তমানে যারা একটু স্বাস্থ্য সচেতন তারা কমবেশি সকলেই লেবু পানি পানের সাথে অভ্যস্ত। আর এই লেবু পানি আপনার লিভারের চর্বি ঝরাতে খুবই কার্যকরী। ফ্যাটি লিভার কমাতে এক গ্লাস পানিতে অর্ধেক পরিমাণ লেবু চিপে নিয়ে দিনে ২-৩ বার এই লেবু পানি পান করুন।
  • সয়াবিনঃ আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ইঁদুরের উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছেন, সয়াবিন থেকে তৈরি টফু লিভারের চর্বি কমাতে সহায়ক। এই টফু একটি লো ফ্যাট এবং হাই প্রোটিন জাতীয় খাবার। ফ্যাটি লিভার থেকে রেহাই পেতে আপনি এই খাবারটি গ্রহণ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • গ্রিন টিঃ ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হলে আপনি বৈকালিক নাস্তার সাথে অথবা সকালে ঘুম থেকে উঠে গ্রিন টি খান। কারণ, এই উপকারি গ্রিন টি আপনার লিভারের ফ্যাট জমতে বাধা প্রদান করে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
  • অ্যাভোকাডোঃ এভোকাডোতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে কেমিক্যাল এবং ফাইবার, যা আপনার লিভার ড্যামেজ প্রতিরোধ করে এবং সেই সাথে আপনার ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
একটি কথা মনে রাখবেন, ফ্যাটি লিভার থেকে রক্ষা পেতে শুধু মাত্র খাদ্যাভাস পরিবর্তন করলেই চলবে না বরং খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের সাথে সাথে আপনাকে নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম এবং শরীর চর্চাও করতে হবে। যাতে করে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।

ফ্যাটি লিভারে যেসব খাবার এড়িয়ে চলা উচিত

ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে আপনাকে বেশ কিছু খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। অর্থাৎ এমন কিছু খাবার আছে যেগুলি এড়িয়ে চললে আপনি খুব সহজেই ফ্যাটি লিভারের মত নীরব ঘাতক ব্যাধি থেকে নিজেকে খুব সহজেই রক্ষা করতে পারেন। এমন খাবার কি কি রয়েছে চলুন তা জেনে নিই-
  • প্রথমেই বলি, যারা অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত আছেন তাদের অবশ্যই এলকোহল সেবন বন্ধ করতে হবে।
  • আপনার যদি ঘনঘন দুধ চা বা কফি খাওয়ার অভ্যাস থেকে থাকে তাহলে সেই অভ্যাস পরিহার করুন। কারণ, ফ্যাটি লিভার দূর করতে ঘন দুধের তৈরি যে কোন খাবার, চা কিংবা ফুলক্রিম মিল্ক আপনার খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। তবে লো ফ্যাট দুধ আপনি খেতে পারবেন। তবে আপনি দিনে ২-৩ কাপ চিনি ছাড়া ব্ল্যাক কফি পান করতে পারবেন।
  • আপনার দৈনন্দিন খাবার তৈরিতে তেলের ব্যবহার কমাতে হবে এবং অতিরিক্ত তৈলাক্ত ও মসলাযুক্ত খাবার গ্রহণ থেকে নিজেকে বিরক্ত রাখতে হবে।
  • বিভিন্ন চিনি জাতীয় খাবার বা অতিরিক্ত মিষ্টি দিয়ে বানানো বিস্কিট, চকলেট জুস এ সমস্ত খাবার আপনি পরিহার করে চলবেন। কারণ, এগুলো লিভারে ফ্যাট জমাতে সাহায্য করে।
  • বিভিন্ন ধরনের ভাজাপোড়া খাবার, অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার এগুলোতে হাই ক্যালরি থাকে এবং এতে হাইফ্যাট থাকে। অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
  • ফ্যাটি লিভারের আরেকটি অন্যতম কারণ হলো অতিরিক্ত পরিমাণে লবণ খাওয়া। সেটি হোক ভাতের সাথে কাঁচা লবণ খাওয়া বা রান্নার সাথে অতিরিক্ত পরিমাণে লবণ খাওয়া। তাই আপনি যদি ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে আজ থেকেই অতিরিক্ত লবণ খাওয়া বন্ধ করুন।
  • গরু বা খাসির লাল মাংস এবং চর্বি কখনোই খাবেন না। কারণ, এগুলো লিভারে ফ্যাট জমায় এবং কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে।
  • পোলাও, তৈলাক্ত বিরিয়ানি, ঘি জাতীয় খাবার, জাঙ্ক ফুড, ফাস্টফুড, সয়াসস খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
  • বিভিন্ন ধরনের সফট ড্রিঙ্কস, গ্লুকোজ, কৃত্রিম জুস, রসে ডোবানো মিষ্টি, জ্যাম-জেলি ইত্যাদি খাবার পরিহার করুন।

ফ্যাটি লিভার দূর করার ঘরোয়া উপায়

ফ্যাটি লিভার দূর বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে। সঠিক সময়ে ফ্যাটি লিভারকে বাগে আনতে না পারলে এটি ধীরে ধীরে লিভার সিরোসিস এর মত অসুখের দিকেও ধাবিত হতে পারে। তাছাড়া লিভার এমন একটি অঙ্গ যা আমাদের শরীরে হজমের সাহায্যকারী উৎসেচক তৈরি করা থেকে শুরু করে শরীরের টক্সিন বের করে দেয়া সহ একাধিক কাজ করে থাকে। তাই ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে রাখা ভীষণ জরুরি। এবার চলুন ফ্যাটি লিভার দূর করতে ঘরোয়া টোটকা গুলো সম্পর্কে জেনে নিন-
  • চিনি যুক্ত খাবার পরিহার করুনঃ অত্যধিক মাত্রায় চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে আপনার লিভারে ফ্যাট জমতে পারে। আর তাই আপনার শরীর এবং লিভার কে সুস্থ সবল রাখতে চাইলে কোল্ডড্রিংস চকলেট মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিহার করুন। এই নিয়মটি মেনে চললে আপনার লিভার থাকবে পুরোপুরি সুস্থ।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ লিভারকে সুস্থ রাখতে চাইলে এবং এই অঙ্গের উপর থেকে মেয়েদের প্রলেপ অপসারণ করতে চাইলে আপনি প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। সম্ভব হলে দিনে মাত্র ৩০ মিনিট সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো বা হাঁটার মতো ব্যায়াম করতে পারলে আপনার ফ্যাটি লিভার অনায়াসেই হারিয়ে যাবে
  • কফি পান করতে ভুলবেন নাঃ কফি পান করলে ফ্যাটি লিভারের প্রকোপ কমতে পারে, ২০১৬ সালের একটি গবেষণা থেকে এমনটাই জানা যায়। তবে এক্ষেত্রে মিল্ক কফি খেলে একদম চলবে না বরং আপনি ব্ল্যাক কফি খাবেন।
  • ডায়েটের দিকে নজর দিনঃ ফ্যাটি লিভারের ফাঁদ থেকে আপনি নিজেকে বের করতে চাইলে আপনার খাদ্য তালিকার ডায়েটের দিকে বিশেষভাবে নজর দিন। কারণ, ফ্যাটি লিভার রোগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ডায়েট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ঠিক এই কারণেই আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় প্রচুর পরিমাণে ফলমূল, শাকসবজি, চর্বি বিহীন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যোগ করুন যা আপনার লিভার থেকে ফ্যাট খুব সহজেই অপসারণ করতে পারবে।
  • পুদিনা পানীয়ঃ ফ্যাটি লিভারের আরেকটি ঘরোয়া প্রতিকার হল পুদিনা, লেমন গ্রাস এবং আদা থেকে তৈরি সংমিশ্রণ। এই উপাদানগুলি আমাদের শরীরে যেমন হজমে সাহায্য করে তেমনি ফ্যাটি লিভার রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

ফ্যাটি লিভার কি ভাল হয়

বর্তমান সময়ে কোন কারণে পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম করার পর যে সমস্যাটি ধরা পড়ে সেটি হল ফ্যাটি লিভার এবং এই ফ্যাটি লিভার লিখা দেখেই অনেকে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েন। যদিও ফ্যাটি লিভারের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই তবুও বলবো ফ্যাটি লিভার থেকেও পরিত্রাণ পাওয়া যায়। সুস্থ স্বাভাবিক নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রম আপনাকে ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি দিতে পারে।

ফ্যাটি লিভারের গ্রেড ১, গ্রেড ২ ও গ্রেড ৩ কি?

ফ্যাটি লিভারের বিভিন্ন ধরনের ধাপ রয়েছে। এই ধাপগুলো গ্রেড ১, গ্রেড ২ এবং গ্রেড ৩ নামে পরিচিত। সাধারণত আল্ট্রাসোনোর মাধ্যমে গ্রেড ১, গ্রেড ২ এবং গ্রেড ৩ নির্ণয় করা হয়। লিভারের সেলগুলো বা ইকোটেক্সচার আল্ট্রাসনোতে দেখতে যখন একটু সাদা হয়, তখন এটি কে গ্রেড ১ বলা হয়। গ্রেড ১ এর থেকে আরেকটু সাদা হলে সেটি গ্রেড ২ নামে অভিহিত করা হয়। সবশেষে কিডনির সাথে তুলনা করলে যখন দেখা যায় এটি কিডনির তুলনায় অনেক বেশি সাদা তখন এটিকে গ্রেড ৩ ধরা হয়।

ফ্যাটি লিভার গ্রেড ১ থেকে মুক্তির উপায়

 ফ্যাটি লিভার গ্রেড ১ থেকে মক্তির উপায় কি? জানতে চান! ফ্যাটি লিভার রোগের ক্ষেত্রে সব থেকে বড় সমস্যা হল এর তেমন কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না। আর আমাদের বাঙ্গালীদের একটা স্বভাবগত অভ্যাস বলতে পারেন যতক্ষণ পর্যন্ত আমরা শারীরিকভাবে অসুস্থতা বোধ না করি ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা কোন চিকিৎসকের কাছে যেতে চাই না।
 
এজন্য অনেক সময় দেখা যায় যাদের ফ্যাটি লিভার গ্রেড ১ এ রয়েছে তারা কিন্তু একটা লম্বা সময় গ্রেড ১ নিয়ে বসে থাকেন। এটি সবথেকে বড় ভুল। তাই বলব যাদের ফ্যাটি লিভার গ্রেড ১ এ রয়েছে তাদের আপ্রাণ চেষ্টা করা উচিত এই গ্রেড ১ থেকে আগের অবস্থায় কিভাবে ফিরে যাওয়া যায়। ফ্যাটি লিভার গ্রেড ১ থেকে মুক্তির জন্য আপনি দুটি পন্থা অবলম্বন করতে পারেন। যেমন-
  • প্রথমতঃ আপনার যে ওজন রয়েছে তার থেকে ১০% ওজন কমিয়ে ফেলতে হবে। মনে করুন, আপনার বয়স এবং উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন থাকতে হবে ৭০ কেজি। তাহলে সেক্ষেত্রে আপনাকে ৭০  থেকে ৫,৬ কেজি ওজন কমাতে হবে। এই কাজটি করতে পারলে আপনার লিভার ঠিক আগের অবস্থায় ফিরে যাবে এবং লিভার থাকবে সুস্থ।
  • দ্বিতীয়তঃ আমরা অনেকেই মনে করি লিভারে চর্বি জমা হয়েছে এবং এই সমস্যাটি বিভিন্ন চর্বি জাতীয় খাবার থেকে অর্থাৎ তেলেভাজা খাবার, অতিরিক্ত তেল , মগজ , গরুর মাংস, খাসির মাংস , চিংড়ি মাছ এ ধরনের কোলেস্টেরল যুক্ত খাবার থেকে যেহেতু সমস্যাটির সৃষ্টি হয়েছে তাই চর্বি জাতীয় খাবার আমাকে বাদ দিতে হবে। শুধু চর্বি জাতীয় খাবার বাদ দিলেই হবে না বরং কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কেউ প্রাধান্য দিতে হবে। 
  • কারণ, আমরা যখন প্রয়োজনের তুলনায় বেশি কার্বোহাইড্রেট গ্রহন করি তখন সেটি গ্লাইকোজেন হিসেবে লিভারে সঞ্চিত হয়। এজন্য এখানে ফ্যাটের পাশাপাশি কার্বোহাইড্রেট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অর্থাৎ একজন ডায়াবেটিস রোগীকে যে ধরনের নিয়ম-কানুন গুলো মেনে চলতে হয় একজন ফ্যাটি লিভার ক্ষেত্রেও সেই নিয়ম গুলি মেনে চলতে হয়।
সুতরাং যাদের ফ্যাটি লিভার গ্রেড ১ এ রয়েছে তারা উপরোক্ত দুটি নিয়ম কিছুদিন মেনে চললেই গ্রেড এক দূর করা সম্ভব।

ফ্যাটি লিভারের ব্যায়াম

ফ্যাটি লিভারের ব্যায়াম সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য আমাদের জীবনযাত্রায়, খাদ্যাভাসে যেমন পরিবর্তন আনতে হবে। ঠিক তেমনি কিছু ঘরোয়া ব্যায়ামও আপনাকে এই ফ্যাটি লিভার থেকে রক্ষা করতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নিই ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দূর করার জন্য ঘরোয়া কিছু ব্যায়াম সম্পর্কে--
ফ্যাটি-লিভার-থেকে-মুক্তির-উপায়-জানতে-বিস্তারিত-পড়ুন
  • প্রতিদিন হাঁটার অভ্যাস করুনঃ প্রথমেই বলি, আপনি প্রতিদিন সকালে রুটিন করে ১ ঘন্টা হাঁটাহাঁটি করুন। এটি আপনার শরীরকে যেমন চাঙ্গা রাখবে ঠিক তেমনি ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দূর করতেও সাহায্য করবে। তাছাড়া নিয়মিত সকালে নিয়ম করে হাঁটার ফলে এতে আপনার শরীর যেমন ভালো থাকবে, তেমনি ফ্যাটি লিভারও দ্রুত সারবে। আপনার যদি হাঁটার অভ্যাস না থেকে থাকে তবে আপনি আজ থেকেই নিয়ম করে সকালে হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
  • ব্যায়াম করুনঃ  ফ্যাটি লিভার  দূর করতে আপনি প্রতিদিন সকালে ১৫-২০ মিনিট ব্যায়াম করুন। কারণ,  ফ্যাটি লিভার রোধে প্রতিদিন ব্যায়াম করাটা অত্যন্ত জরুরী। নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে লিভারের সমস্যা অনেকটাই আপনার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে এবং ফ্যাটি লিভারও সেরে যাবে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই।
  • আদা, লেমন গ্রাস এবং পুদিনার পানীয়ঃ ফ্যাটি লিভারের ঘরোয়া প্রতিকার হিসেবে আপনি আদা,পুদিনা এবং লেমন গ্রাসের তৈরি পানীয় গ্রহণ করতে পারেন। কি বিশ্বাস হচ্ছে না তো! তাহলে আপনি আজ থেকেই নিয়ম করে টানা কয়েকদিন আদা, পুদিনা এবং লেমন গ্রাসের এই পানীয় পান করুন এবং ফলাফল নিজেই দেখুন। কারণ, এই পানীয়টিতে রয়েছে লিভার প্রতিরক্ষামূলক বৈশিষ্ট্য। যেগুলি আপনার হজমে বিশেষভাবে সাহায্য করবে এবং ফ্যাটি লিভার রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বেশ কার্যকর ভুমিকা রাখে।
  • চিনি যুক্ত খাবার পরিহারঃ যেহেতু ফ্যাটি লিভারের অর্থই হলো লিভারের ফ্যাট জমতে থাকা, তাই চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবারগুলি আপনি একেবারেই এড়িয়ে চলুন। শুধু চিনি যুক্ত খাবার না বরং কোন মিষ্টি জাতীয় খাবারও আপনি খাবেন না।
  • ভাজাপোড়া খাওয়া পরিহার করুনঃ ফ্যাটি লিভার রোগ সারাতে আপনি তেলে ভাজা মুখরোচক বিভিন্ন খাবার যেমন- পেঁয়াজু,সিঙ্গারা, ডিমের চপ,আলুর চপ, ডাল পুরী এই জাতীয় বিভিন্ন ভাজাভুজি খাবার গ্রহণ থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। কারণ, এই সমস্ত ভাজাপোড়া খাবার আপনার লিভারে ফ্যাট জমতে সাহায্য করে এবং এতে করে আপনার লিভারের অবস্থা আরো শোচনীয় হবে।
সম্মানিত পাঠক, ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে চাইলে উপরিউক্ত নিয়মগুলোর পাশাপাশি আপনারা যারা অ্যালকোহল সেবনে অভ্যস্ত তারা অতি দ্রুত এই অ্যালকোহল সেবন চিরতরের জন্য বন্ধ করুন।

ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তদের ডায়েট চার্ট

ফ্যাটি লিভার রুখতে আপনাকে প্রথমেই আপনার খাদ্যাভাসের দিকে নজর দিতে হবে। আর তার জন্য প্রয়োজন নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি চিনিমুক্ত ও চর্বি মুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা এবং সেই সাথে স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখা। তাছাড়া ফ্যাটি লিভার রোধে আপনার তিন বেলা আহারের একটি নির্দিষ্ট ডায়েট চার্ট প্রয়োজন। এবার চলুন ফ্যাটি লিভারের সমস্যা দূর করতে আপনি কোন ধরনের ডায়েট চার্ট মেনে চলবেন তা জেনে নিন--
  • সকালের খাবারঃ সকাল বেলার নাস্তায় আপনি একবাটি সবজির সাথে দুইটি রুটি রাখবেন। খেয়াল রাখবেন, সবজিতে আলুর পরিমাণ যেন কম থাকে এবং রুটি লাল আটার হলে সবথেকে বেশি ভালো হয়। সবজি এবং রুটির পাশাপাশি আপনি একটি সেদ্ধ ডিমও যোগ করতে পারেন, তবে ডিমটি অবশ্যই কুসুম ছাড়া খাবেন।
  • সকাল ১১ টার সময়ঃ সকালে নাস্তার পর দুপুরের খাবারের আগে ঠিক সকাল ১১-১১:৩০ এই সময়ের মধ্যে আপনি একটি আপেল এবং একটি মাল্টা খেতে পারেন।
  • দুপুরবেলার খাবারঃ আমরা বাঙালি হিসেবে আর যাই হোক না কেন, দুপুরের লাঞ্চে পেট পুরে ভাত খেতে বেশ পটু। কিন্তু আপনি যদি ফ্যাটি লিভার দূর করতে চান তাহলে আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাত নিয়ম মেনে খেতে হবে। আর সে হিসেবে ফ্যাটি লিভার রোধে আপনি দুপুরের লাঞ্চে ১ কাপ ভাতের সাথে ১ কাপ ডাল,
  •  ১ কাপ মিক্স শাকসবজি, মুরগির মাংস খেতে চাইলে ঝোল ছাড়া স্রেফ দুই টুকরো মাংস এবং মাছ খেতে চাইলে মাঝারি মাপের এক টুকরো মাছ খাবেন। তাছাড়া, মুখরোচক হিসেবে খাবারের সাথে আপনি সালাদও যোগ করতে পারেন। এটি আপনার স্বাস্থ্য এবং লিভারের জন্য বেশ উপকারী হবে।
  • রাতের খাবারঃ ফ্যাটি লিভার দূর করতে রাতের খাবার হতে হবে অতি সাধারণ। সে হিসেবে আপনি রাতের খাবারে ওটস খেতে পারেন। আপনি চাইলে ওটস এর সাথে মাছ বা মাংসের টুকরোও খেতে পারেন।
  • রাতে ঘুমানোর আগেঃ আপনি রাতের খাবার শেষ করে যখন ঘুমাতে যাবেন, ঠিক ঘুমাতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে লো ফ্যাট দুধ বা টক দই খাবেন। এতে আপনার লিভার সুস্থ থাকবে। ব্যাস, সকাল থেকে শুরু করে রাতে ঘুমানো অব্দি আপনার সারাদিনের ডায়েট চার্ট সম্পন্ন হলো।
সম্মানিত পাঠক, ফ্যাটি লিভার রোধে সারাদিনের ডায়েট চার্ট আপনি নিশ্চয়ই জেনে নিয়েছেন। উপরোক্ত এই পদ্ধতি গুলো অনুসরন করলে আপনি অচিরেই নীরব ঘাতক ফ্যাটি লিভার থেকে আপনি মুক্তি পাবেন। এ কথা হলফ করে বলতে পারি।

ফ্যাটি লিভার হলে ডিম খাওয়া যাবে কি?

ফ্যাটি লিভার হলে ডিম খাওয়া যাবে কি? অনেকেই বিশ্বাস করেন ডিম খেলে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি হয়তো বেড়ে যাবে। কথাটা কি আদৌ সত্য? মোটেও না, কারণ ডিম কে সবথেকে পুষ্টিকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা হয় যা আপনার শরীরের সুস্থতা বাড়াতে এবং ওজন কমাতেও সাহায্য করে। তাছাড়া ডিম একটি কোলিন সমৃদ্ধ পুষ্টি উপাদান যা  আমাদের লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
 
শুধু তাই নয়, এই কোলিন লিভার কোষে চর্বি জমা হতেও বাধা প্রদান করে। তাছাড়া ডিমে আরও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যেমন- প্রোটিন, সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি ১২ এবং ফোলেট রয়েছে যা আপনার লিভারের জন্য উপকারী। এই প্রোটিন আপনার লিভারকে মেরামত করে এবং লিভারের কোষ গুলো পুনরুত্থান করতে সহায়তা করে, 
 
সেলিনিয়াম আপনার লিভারকে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস থেকে রক্ষা করতে পারে, ভিটামিন বি১২ আপনার লিভারের ডিটক্সিফিকেশন প্রক্রিয়াকে সমর্থন করতে পারে এবং ফোলেট আপনার হোমো সিস্টাইনের মাত্রা হ্রাস করতে পারে। যা কিনা লিভার রোগের সাথেই যুক্ত। সম্মানিত পাঠক, আপনার নিশ্চয়ই এবার বোধগম্য হয়েছে যে, ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে ডিম মোটেও ক্ষতিকর নয়।
 
এখন আপনার মনে নিশ্চয়ই ঘুরপাক খাচ্ছে ফ্যাটি লিভার হলে দিনে কয়টি ডিম খাওয়া উচিত? কি তাইতো! শুনুন ফ্যাটি লিভার হলে আপনি দিনে কয়টি ডিম খেতে পারবেন এর নির্দিষ্ট কোন উত্তর নেই। কারণ, এটি আপনার স্বাস্থ্যের অবস্থা এবং আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকার ধরণের উপর নির্ভর করবে। তবুও বলে রাখি
  • আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা যদি স্বাভাবিক থাকে এবং হৃদরোগের সমস্যা না থাকে সে ক্ষেত্রে আপনি প্রতিদিন একটি ডিম খেতেই পারেন।
  • আপনার কোলেস্টেরল যদি উচ্চমাত্রার হয় এবং হৃদরোগ থেকে থাকে সেক্ষেত্রে আপনি প্রতিদিন ডিম না খেয়ে প্রতি সপ্তাহে ৩-৪ টি ডিম খেতে পারেন।
  • আপনি ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হলে আপনাকে অবশ্যই একটি সুষম খাদ্যের ডায়েট চার্ট অনুসরণ করতে হবে যা ইতিমধ্যেই আমরা আপনাকে জানিয়ে দিয়েছি।
  • ফ্যাটি লিভারের ক্ষেত্রে আপনি আপনার ডায়েটে একটি করে ডিম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন, যতক্ষণ না আপনার কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য প্রস্তাবিত পরিমাণ অতিক্রম না করেন।
  • সুতরাং বুঝতেই পারছেন নিয়ম মেনে পরিমিত পরিমাণে ডিম খাওয়া এটি ফ্যাটি লিভারের জন্য খারাপ নয় বরং ডিমের প্রোটিন কলিন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান যা আপনার লিভারের কার্যকারিতাকে আরও দ্বিগুণ পরিমাণে বাড়িয়ে দেয় এবং লিভারের চর্বি জমতে বাধা প্রদান করে।
  • তবে ডিম খাওয়ার ফলে কিছু কিছু মানুষের আবার কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হৃদরোগের ঝুঁকিও বেড়ে যেতে পারে। সুতরাং আপনার ডায়েটে কোন কিছু পরিবর্তন করতে হলে আপনি অবশ্যই একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে তবেই খাবেন।

ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে লেখকের প্রতিক্রিয়া

ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির উপায় কি? তা এতক্ষণ আমরা আলোচনা করলাম। সবশেষে বলি, ফ্যাটি লিভারকে কখনোই হালকাভাবে নেবেন না বরং এটিকে অন্যান্য সিরিয়াস রোগের মত সিরিয়াস ভাবেই নেওয়া উচিত। তা না হলে ফ্যাটি লিভার থেকে ভবিষ্যতে আপনার ক্রনিক হেপাটাইটিস বা নন- অ্যালকোহলিক হেপাটাইটিসের মতো রোগ হতে পারে।
 
শুধু তাই নয়, সময়মতো ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসা না করালে এক পর্যায়ে আপনার লিভার সিরোসিস এমনকি লিভার ক্যান্সারও হতে পারে। তাই বলবো ফ্যাটি লিভার নিয়ে যেমন আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, তেমনি অবহেলা করার মতোও কোন জায়গা নেই। আপনার একটি সঠিক সিদ্ধান্তই হতে পারে আপনার সুস্বাস্থ্যের চাবিকাঠি। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পিন পয়েন্ট ম্যাক্স এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url